কৃষি ও সাধারণ মানুষের ওপর চাপ কমানোর দাবি ব্যবসায়ীদের
প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ওপর থেকে বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ‘বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন’ (বাপা)। এ দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে সংগঠনটি জানিয়েছে, দাবি না মানলে তারা সচিবালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাপার সভাপতি এম এ হাশেম বলেন, “ভ্যাট বাড়ালেই রাজস্ব আদায় বাড়ে না। বরং সাধারণ মানুষের ওপর আর্থিক চাপ বাড়ে। আমাদের দাবি মানা না হলে কারখানা বন্ধ করে দিতে হতে পারে।”
সম্প্রতি সরকার শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়িয়েছে। এর মধ্যে প্রক্রিয়াজাত খাবারের ভোক্তা পর্যায়ের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে বাজারে বিস্কুট, কেক, চাটনি, টমেটো পেস্ট, সসসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাবে।
বাপার নেতারা বলেন, প্রক্রিয়াজাত খাবারের উৎপাদন কৃষকের ওপর নির্ভরশীল। যদি এ খাতে সংকট দেখা দেয়, তবে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির সুযোগ হারাবে। এম এ হাশেম বলেন, “আমরা যদি টমেটো না কিনি, তাহলে কৃষকরা সেগুলো কোথায় বিক্রি করবে?”
সরকারের উদ্দেশ্যে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, “সরকার আমাদের সঙ্গে আলোচনা করলে আমরা রাজস্ব আদায়ের বিকল্প উপায় দেখাতে পারি। ভ্যাট বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।”
বাপার সাধারণ সম্পাদক ইকতাদুল হক বলেন, “ভ্যাট বাড়ানো হলে ৫-১০ টাকার প্যাকেটজাত খাদ্যপণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। এতে ভোক্তা ও উৎপাদক উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
এনবিআরের উদ্দেশে বাংলাদেশ বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভুইয়া বলেন, “সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর অনেক পথ রয়েছে। আমরা তা দেখাতে প্রস্তুত। আমাদের সঙ্গে বসুন।”
আকিজ ফুডস অ্যান্ড বেভারেজের পরিচালক সৈয়দ জহুরুল আলম বলেন, “৫ টাকার বিস্কুটে কোনো লাভ হয় না। আমরা এ ধরনের পণ্য তৈরি করি কেবল বাজারে টিকে থাকার জন্য। এখন ভ্যাট বাড়ালে পণ্যর দাম বাড়াতে হবে বা ওজন কমাতে হবে। দুই ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
এসিআই অ্যাগ্রো বিজনেসের প্রেসিডেন্ট এফ এইচ আনসারি বলেন, “কৃষি-প্রধান দেশে খাদ্যপণ্যে ভ্যাট থাকা উচিত নয়। দাম বাড়লে এর প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের ওপর।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশে ৮০-৯০ শতাংশ কাঁচামাল স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়। ফলে ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে পুরো কৃষি খাতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। দেশের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের রপ্তানি বাজার বর্তমানে ১ বিলিয়ন ডলার হলেও, এমন সিদ্ধান্ত রপ্তানির প্রবৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
বাপার নেতারা জানান, সারা দেশে প্রায় ৪০০ সদস্য প্রতিষ্ঠান এবং আরও ৫০০ ছোট প্রতিষ্ঠান প্রক্রিয়াজাত খাবার উৎপাদন করছে। এ খাতে শ্রমজীবী মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এসএমসি এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ নাসির, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের প্রধান অপারেটিং কর্মকর্তা পারভেজ সাইফুল ইসলামসহ প্রক্রিয়াজাত খাদ্য শিল্পের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীরা আশা প্রকাশ করেছেন যে সরকার ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে। সৈয়দ জহুরুল আলম বলেন, “এ সিদ্ধান্ত জনবান্ধব নয়। আমরা এনবিআরের কাছে অনুরোধ জানাই, আমাদের সঙ্গে আলোচনা করুন এবং যৌক্তিক সমাধান বের করুন।”
সম্মেলনে নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে ভ্যাট কমানো না হলে আমরা সড়কে নামব এবং সচিবালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করব।”
কৃষি ও সাধারণ মানুষের ওপর চাপ কমানোর দাবি ব্যবসায়ীদের
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ওপর থেকে বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ‘বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন’ (বাপা)। এ দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে সংগঠনটি জানিয়েছে, দাবি না মানলে তারা সচিবালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাপার সভাপতি এম এ হাশেম বলেন, “ভ্যাট বাড়ালেই রাজস্ব আদায় বাড়ে না। বরং সাধারণ মানুষের ওপর আর্থিক চাপ বাড়ে। আমাদের দাবি মানা না হলে কারখানা বন্ধ করে দিতে হতে পারে।”
সম্প্রতি সরকার শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়িয়েছে। এর মধ্যে প্রক্রিয়াজাত খাবারের ভোক্তা পর্যায়ের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে বাজারে বিস্কুট, কেক, চাটনি, টমেটো পেস্ট, সসসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাবে।
বাপার নেতারা বলেন, প্রক্রিয়াজাত খাবারের উৎপাদন কৃষকের ওপর নির্ভরশীল। যদি এ খাতে সংকট দেখা দেয়, তবে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির সুযোগ হারাবে। এম এ হাশেম বলেন, “আমরা যদি টমেটো না কিনি, তাহলে কৃষকরা সেগুলো কোথায় বিক্রি করবে?”
সরকারের উদ্দেশ্যে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, “সরকার আমাদের সঙ্গে আলোচনা করলে আমরা রাজস্ব আদায়ের বিকল্প উপায় দেখাতে পারি। ভ্যাট বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।”
বাপার সাধারণ সম্পাদক ইকতাদুল হক বলেন, “ভ্যাট বাড়ানো হলে ৫-১০ টাকার প্যাকেটজাত খাদ্যপণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। এতে ভোক্তা ও উৎপাদক উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
এনবিআরের উদ্দেশে বাংলাদেশ বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভুইয়া বলেন, “সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর অনেক পথ রয়েছে। আমরা তা দেখাতে প্রস্তুত। আমাদের সঙ্গে বসুন।”
আকিজ ফুডস অ্যান্ড বেভারেজের পরিচালক সৈয়দ জহুরুল আলম বলেন, “৫ টাকার বিস্কুটে কোনো লাভ হয় না। আমরা এ ধরনের পণ্য তৈরি করি কেবল বাজারে টিকে থাকার জন্য। এখন ভ্যাট বাড়ালে পণ্যর দাম বাড়াতে হবে বা ওজন কমাতে হবে। দুই ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
এসিআই অ্যাগ্রো বিজনেসের প্রেসিডেন্ট এফ এইচ আনসারি বলেন, “কৃষি-প্রধান দেশে খাদ্যপণ্যে ভ্যাট থাকা উচিত নয়। দাম বাড়লে এর প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের ওপর।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশে ৮০-৯০ শতাংশ কাঁচামাল স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়। ফলে ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে পুরো কৃষি খাতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। দেশের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের রপ্তানি বাজার বর্তমানে ১ বিলিয়ন ডলার হলেও, এমন সিদ্ধান্ত রপ্তানির প্রবৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
বাপার নেতারা জানান, সারা দেশে প্রায় ৪০০ সদস্য প্রতিষ্ঠান এবং আরও ৫০০ ছোট প্রতিষ্ঠান প্রক্রিয়াজাত খাবার উৎপাদন করছে। এ খাতে শ্রমজীবী মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এসএমসি এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ নাসির, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের প্রধান অপারেটিং কর্মকর্তা পারভেজ সাইফুল ইসলামসহ প্রক্রিয়াজাত খাদ্য শিল্পের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীরা আশা প্রকাশ করেছেন যে সরকার ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে। সৈয়দ জহুরুল আলম বলেন, “এ সিদ্ধান্ত জনবান্ধব নয়। আমরা এনবিআরের কাছে অনুরোধ জানাই, আমাদের সঙ্গে আলোচনা করুন এবং যৌক্তিক সমাধান বের করুন।”
সম্মেলনে নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে ভ্যাট কমানো না হলে আমরা সড়কে নামব এবং সচিবালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করব।”