বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইল থেকে তোলা ছবি - রাজধানীর শনির আখড়া থেকে তোলা -সংবাদ
কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ডাকা ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে ঢাকায় বিরাজ করে চাপা আতঙ্ক। সকাল থেকেই রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, গণপরিবহন ও ভারী যানবাহনের সংখ্যা ছিল কম। তেমন যানজটও দেখা যায়নি। রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক বেশি।
যদিও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার,(১৩ নভেম্বর ২০২৫) সকালে খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মতিঝিলের কয়েকটি সড়ক ঘুরে দেখা যায়- ব্যক্তিগত গাড়ি, গণপরিবহন ও ভারী যানবাহনের সংখ্যা খুবই কম; তবে সাধারণ সরকারি কর্মদিবসের মতো সড়কে রিকশার উপস্থিতি দেখা গেছে।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে খিলগাঁও রেলগেইট থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত সড়কে দেখা গেছে, সড়কে যানবাহনের জটলা নেই; ব্যক্তিগত গাড়ি ও ভারী যানবাহনের চলাচল খুব একটা নেই। তবে যাত্রীবাহী ‘নাভানা’ গাড়ি চলাচল করলেও সেগুলোতে যাত্রীদের খুব একটা ভিড় দেখা যায়নি।
খিলগাঁও রেলগেইটে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী গোলাম কিবরিয়া জানান, খিলগাঁও থেকে শাহজাহানপুর পর্যন্ত সড়কের দুইপাশের ফুটপাত জুড়ে প্রতিদিন বসে অস্থায়ী দোকান ও হকার। এতে পথচারীদের চলাচল ব্যাহত হয়। আজ (বৃহস্পতিবার) এগুলো কম।
‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি কম ছিল। পাড়া-মহল্লার অনেক স্কুল নামমাত্র খোলা ছিল। স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। তবে শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক ছিল।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী শহিদুল আলম বলেন, তার ছেলে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মুগদা শাখায় পড়ে। সে ক্লাসে গিয়ে দেখে তার শাখার ৫৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৯ জন ক্লাসে উপস্থিত হয়েছে। এই স্কুলের বনশ্রী শাখার একজন অভিভাবক জানান,
‘অঘোষিতভাবে’ আগের দিন স্কুলের একাধিক শিক্ষক ‘লকডাউনে’ শিক্ষার্থীদের না আসার কথা বলেছেন। এজন্য তিনি সন্তানকে স্কুলে পাঠাননি।
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কদিন ধরেই রাজধানীসহ সারাদেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত। রায়ের তারিখ ঘোষণার প্রতিবাদে ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পক্ষে।
তবে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নানা পক্ষ থেকে প্রতিরোধের হুঁশিয়ারি আসে। বাড়ানো হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও তল্লাশি। এর মধ্যেও ঢাকাসহ বেশ কিছু জায়গায় বাসে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির টহল দেখা গেছে। তল্লাশি করা হয় সন্দেহভাজন পথচারীদের। এছাড়া বিএনপি ও জামায়াতের কর্মীদেরও রাজপথে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।
এদিকে নিরাপত্তার কড়াকড়ি থাকলেও প্রায় স্বাভাবিক ছিল সরকারি প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়। সেখানে বাড়তি নিরাপত্তা থাকলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় স্বাভাবিক উপস্থিতি দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সচিবালয় ঘিরে নিরাপত্তার কড়াকড়ি ছিল। সচিবালয়ের গেটে বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের উল্লেখ উপস্থিতি দেখা গেছে। সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর গেট ছাড়া বাকি সব গেট বন্ধ দেখা গেছে।
সচিবালয়ে প্রবেশকারীদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তারপর প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়। সঙ্গে ব্যাগ থাকলে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। তবে কোনো দর্শনার্থীকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। যদিও এমনিতেই বৃস্পতিবার দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ থাকে।
সচিবালয়ে কয়েকটি মন্ত্রণালয় ঘুরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাভাবিক উপস্থিতি দেখা গেছে। তবে কর্মকর্তাদের অনেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে সচিবালয়ে আসেননি। এজন্য সচিবালয়ের ভেতরে গাড়ির চাপ কম ছিল। চার নম্বর ভবনের উত্তর পাশে গাড়ি রাখার স্থান অনেকটাই ফাঁকা দেখা যায়।
আতঙ্কে অনেক কর্মকর্তা ব্যক্তিগত গাড়ি আনেননি, বিকল্প উপায়ে তারা অফিসে এসেছেন বলে একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইল থেকে তোলা ছবি - রাজধানীর শনির আখড়া থেকে তোলা -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ডাকা ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে ঢাকায় বিরাজ করে চাপা আতঙ্ক। সকাল থেকেই রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, গণপরিবহন ও ভারী যানবাহনের সংখ্যা ছিল কম। তেমন যানজটও দেখা যায়নি। রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক বেশি।
যদিও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার,(১৩ নভেম্বর ২০২৫) সকালে খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মতিঝিলের কয়েকটি সড়ক ঘুরে দেখা যায়- ব্যক্তিগত গাড়ি, গণপরিবহন ও ভারী যানবাহনের সংখ্যা খুবই কম; তবে সাধারণ সরকারি কর্মদিবসের মতো সড়কে রিকশার উপস্থিতি দেখা গেছে।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে খিলগাঁও রেলগেইট থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত সড়কে দেখা গেছে, সড়কে যানবাহনের জটলা নেই; ব্যক্তিগত গাড়ি ও ভারী যানবাহনের চলাচল খুব একটা নেই। তবে যাত্রীবাহী ‘নাভানা’ গাড়ি চলাচল করলেও সেগুলোতে যাত্রীদের খুব একটা ভিড় দেখা যায়নি।
খিলগাঁও রেলগেইটে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী গোলাম কিবরিয়া জানান, খিলগাঁও থেকে শাহজাহানপুর পর্যন্ত সড়কের দুইপাশের ফুটপাত জুড়ে প্রতিদিন বসে অস্থায়ী দোকান ও হকার। এতে পথচারীদের চলাচল ব্যাহত হয়। আজ (বৃহস্পতিবার) এগুলো কম।
‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি কম ছিল। পাড়া-মহল্লার অনেক স্কুল নামমাত্র খোলা ছিল। স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। তবে শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক ছিল।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী শহিদুল আলম বলেন, তার ছেলে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মুগদা শাখায় পড়ে। সে ক্লাসে গিয়ে দেখে তার শাখার ৫৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৯ জন ক্লাসে উপস্থিত হয়েছে। এই স্কুলের বনশ্রী শাখার একজন অভিভাবক জানান,
‘অঘোষিতভাবে’ আগের দিন স্কুলের একাধিক শিক্ষক ‘লকডাউনে’ শিক্ষার্থীদের না আসার কথা বলেছেন। এজন্য তিনি সন্তানকে স্কুলে পাঠাননি।
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কদিন ধরেই রাজধানীসহ সারাদেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত। রায়ের তারিখ ঘোষণার প্রতিবাদে ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পক্ষে।
তবে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নানা পক্ষ থেকে প্রতিরোধের হুঁশিয়ারি আসে। বাড়ানো হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও তল্লাশি। এর মধ্যেও ঢাকাসহ বেশ কিছু জায়গায় বাসে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির টহল দেখা গেছে। তল্লাশি করা হয় সন্দেহভাজন পথচারীদের। এছাড়া বিএনপি ও জামায়াতের কর্মীদেরও রাজপথে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।
এদিকে নিরাপত্তার কড়াকড়ি থাকলেও প্রায় স্বাভাবিক ছিল সরকারি প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়। সেখানে বাড়তি নিরাপত্তা থাকলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় স্বাভাবিক উপস্থিতি দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সচিবালয় ঘিরে নিরাপত্তার কড়াকড়ি ছিল। সচিবালয়ের গেটে বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের উল্লেখ উপস্থিতি দেখা গেছে। সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর গেট ছাড়া বাকি সব গেট বন্ধ দেখা গেছে।
সচিবালয়ে প্রবেশকারীদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তারপর প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়। সঙ্গে ব্যাগ থাকলে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। তবে কোনো দর্শনার্থীকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। যদিও এমনিতেই বৃস্পতিবার দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ থাকে।
সচিবালয়ে কয়েকটি মন্ত্রণালয় ঘুরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাভাবিক উপস্থিতি দেখা গেছে। তবে কর্মকর্তাদের অনেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে সচিবালয়ে আসেননি। এজন্য সচিবালয়ের ভেতরে গাড়ির চাপ কম ছিল। চার নম্বর ভবনের উত্তর পাশে গাড়ি রাখার স্থান অনেকটাই ফাঁকা দেখা যায়।
আতঙ্কে অনেক কর্মকর্তা ব্যক্তিগত গাড়ি আনেননি, বিকল্প উপায়ে তারা অফিসে এসেছেন বলে একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।