ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুর রহমানের বাসায় ঢুকে তার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে এক দুর্বৃত্ত। বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টার দিকে নগরের ডাবতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্পার্ক ভিউ নামের দশতলা ভবনের পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন বিচারক।
নিহত স্কুলছাত্রের নাম তাওসিফ রহমান সুমন (১৬)। ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস।
এ ঘটনায় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার এবং হামলাকারী যুবকও আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভবনে ঢোকার সময় ওই যুবক দারোয়ানের কাছে থাকা খাতায় নিজের নাম লিখেছেন লিমন। বিচারক আব্দুর রহমান সম্পর্কে ভাই, এ পরিচয় দিয়ে তিনি পাঁচতলার ফ্ল্যাটে চলে যান।
ভবনের দারোয়ান মেসের আলী জানান, ওই যুবককে তিনি আগে কখনো দেখেননি। বিচারককে ভাই পরিচয় দেয়ায় তিনি ঢুকতে দেন। তবে তার আগে নাম ও মোবাইল নম্বর লিখিয়ে নেন। দুপুর আড়াইটার দিকে ওই যুবক ফ্ল্যাটে যান।
এর প্রায় ৩০ মিনিট পর ফ্ল্যাটের গৃহকর্মী দারোয়ানকে এসে জানান যে, ফ্ল্যাটে বিচারকের ছেলে ও স্ত্রীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এর মধ্যে ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারাও চলে আসেন। তারা সবাই ফ্ল্যাটে ঢুকে তিনজনকেই আহত পান। এরপর তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নিহত সুমনের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে আর হামলাকারী যুবক ও বিচারকের স্ত্রীকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়েছে।
ঘটনার পর বিকেল পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। তিনি জানান, হামলাকারী ব্যক্তির পকেটে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি চালক। তার সঙ্গে পূর্ববিরোধ থাকতে পারে।
পুলিশ কমিশনার জানান, সিলেটের সুরমা থানায় ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জিডি করেছিলেন তাসমিন নাহার। কেন এ ঘটনা ঘটেছে, তা তারা এখনও বিস্তারিত জানেন না।
বিচারকের ছেলেকে হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ আইন উপদেষ্টার
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমানের ভাড়া বাসায় সংঘটিত নৃশংস হামলার ঘটনায় তাঁর ছেলে তাওসিফ রহমান (সুমন) নিহত ও স্ত্রী তাসমিন নাহার গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
বৃহস্পতিবার,(১৩ নভেম্বর ২০২৫) রাতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ঘটনার পরপরই পুলিশকে দ্রুততম সময়ে জড়িত সব অপরাধীকে গ্রেপ্তার ও ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পরই সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়েছে।
আহত তাসমিন নাহারের চিকিৎসা যথাযথভাবে চলমান রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসার বিষয়ে নিবিড় নজরদারি করা হচ্ছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রয়েছে।
মর্মান্তিক এ ঘটনায় নিহত সুমনের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহত ব্যক্তির দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
বিচার বিভাগের সদস্য ও তাঁদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুর রহমানের বাসায় ঢুকে তার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে এক দুর্বৃত্ত। বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টার দিকে নগরের ডাবতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্পার্ক ভিউ নামের দশতলা ভবনের পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন বিচারক।
নিহত স্কুলছাত্রের নাম তাওসিফ রহমান সুমন (১৬)। ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস।
এ ঘটনায় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার এবং হামলাকারী যুবকও আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভবনে ঢোকার সময় ওই যুবক দারোয়ানের কাছে থাকা খাতায় নিজের নাম লিখেছেন লিমন। বিচারক আব্দুর রহমান সম্পর্কে ভাই, এ পরিচয় দিয়ে তিনি পাঁচতলার ফ্ল্যাটে চলে যান।
ভবনের দারোয়ান মেসের আলী জানান, ওই যুবককে তিনি আগে কখনো দেখেননি। বিচারককে ভাই পরিচয় দেয়ায় তিনি ঢুকতে দেন। তবে তার আগে নাম ও মোবাইল নম্বর লিখিয়ে নেন। দুপুর আড়াইটার দিকে ওই যুবক ফ্ল্যাটে যান।
এর প্রায় ৩০ মিনিট পর ফ্ল্যাটের গৃহকর্মী দারোয়ানকে এসে জানান যে, ফ্ল্যাটে বিচারকের ছেলে ও স্ত্রীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এর মধ্যে ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারাও চলে আসেন। তারা সবাই ফ্ল্যাটে ঢুকে তিনজনকেই আহত পান। এরপর তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নিহত সুমনের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে আর হামলাকারী যুবক ও বিচারকের স্ত্রীকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়েছে।
ঘটনার পর বিকেল পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। তিনি জানান, হামলাকারী ব্যক্তির পকেটে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি চালক। তার সঙ্গে পূর্ববিরোধ থাকতে পারে।
পুলিশ কমিশনার জানান, সিলেটের সুরমা থানায় ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জিডি করেছিলেন তাসমিন নাহার। কেন এ ঘটনা ঘটেছে, তা তারা এখনও বিস্তারিত জানেন না।
বিচারকের ছেলেকে হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ আইন উপদেষ্টার
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমানের ভাড়া বাসায় সংঘটিত নৃশংস হামলার ঘটনায় তাঁর ছেলে তাওসিফ রহমান (সুমন) নিহত ও স্ত্রী তাসমিন নাহার গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
বৃহস্পতিবার,(১৩ নভেম্বর ২০২৫) রাতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ঘটনার পরপরই পুলিশকে দ্রুততম সময়ে জড়িত সব অপরাধীকে গ্রেপ্তার ও ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পরই সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়েছে।
আহত তাসমিন নাহারের চিকিৎসা যথাযথভাবে চলমান রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসার বিষয়ে নিবিড় নজরদারি করা হচ্ছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রয়েছে।
মর্মান্তিক এ ঘটনায় নিহত সুমনের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহত ব্যক্তির দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
বিচার বিভাগের সদস্য ও তাঁদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।