শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর ঢাকার এক এলাকায় প্রতীকী ফাঁসি দিচ্ছেন একদল উল্লসিত লোক -সোহরাব আলম
মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর সোমবার,(১৭ নভেম্বর ২০২৫) জুলাই আন্দোলনে নিহতদের পরিবার সদস্যরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এ সময় তারা অবিলম্বে রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জে জুলাই আন্দোলনে শহীদ আদিলের (১৫) বাবা মো. আবুল কালাম বলেন, আমরা এমন রায়ই আশা করেছিলাম। শেখ হাসিনা অবৈধভাবে ১৭ বছর ক্ষমতায় থেকে হাজারো মায়ের বুক খালি করেছে। খুন-গুমের দায়ে তার ১৭ বার ফাঁসির রায় হওয়া উচিত ছিল। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে দুই হাজার ছাত্র-জনতা হত্যার জন্য তার দুই হাজার বার ফাঁসি হওয়া দরকার। তারপরও আমরা প্রত্যাশিত রায় পেয়েছি। এখন শুধু দ্রুত কার্যকর করার উদ্যোগ চাই।
জুলাই আন্দোলনে শহীদ ছাত্রদল নেতা স্বজনের বাবা মো. জাকির হোসেন প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, আমি কথা বলতে পারছি না, যখন ফাঁসি কার্যকর হবে তখনই সন্তুষ্ট হবো। শুধু রায় নয়Ñ সব হত্যাকারীর ফাঁসি কার্যকর হলে তবেই আমি শান্তি পাব, এর আগে না।
শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে শহীদ আবু সাঈদের পরিবার। প্রতিক্রিয়ায় শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যরা পলাতক শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিদের দ্রুত দেশে এনে রায় কার্যকর করার দাবি জানান। শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বলেন, আমি রায়ে খুশি কিন্তু বিচার দেখতে চাই। আমি হুকুমদাতাসহ পুলিশের বিচার চাই। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই। ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে বাংলার মাটিতে নিয়ে এসে রায় কার্যকর করতে হবে।
আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমরা সবার বিচার চাই। যারা হুকুম দিয়েছে, যারা গুলি করেছে সবাইকে ফাঁসি দিতে হবে। আমি মা আজ বুঝতেছি ছেলে হারানোর কষ্ট। আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে আমার মতো অনেক মা-বোন-ভাই-সন্তান হারিয়েছে, স্বামীকে হারিয়েছে। অনেক জীবন সংসার শেষ হয়ে গেছে। এসবের বিচার হতে হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া রফিকুল ইসলাম রফিকের বাবা রহিজ উদ্দিন মিয়া। শিবালয় উপজেলার উলাইল ইউনিয়নের রূপসা গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি এ অনুভূতি প্রকাশ করেন। শহীদ রফিকের বাবা বলেন, শেখ
হাসিনার হুকুমে পুলিশ আমার ছেলেকে হত্যা করেছে, আমার ছেলের কি অপরাধ ছিল? সে-তো কোনো অপরাধ করেনি। কেন মারলো আমার ছেলেকে এর বিচার চাই।
রহিজ উদ্দিন বলেন, আজকে শেখ হাসিনার যে রায় হয়েছে তাতে আমি অনেক খুশি হয়েছি। তার হুকুমে পুলিশ ও তার লোকজন বাংলাদেশের অনেক মানুষকে হত্যা করছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেন রফিকুল ইসলাম রফিক (২২)। আন্দোলনের সম্মুখসারিতে ছিল এই শহীদ রফিক। হঠাৎ করেই আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন নেতা ও পাটুরিয়া নৌপুলিশ যৌথভাবে আক্রমণ করে ছাত্র-জনতার ওপর। ওই সময়ে রফিক সামনে থাকায় একটি গুলি এসে লাগে। এতে তিনি লুটিয়ে পড়েন।
শহীদ ইসমাইল হোসেন রাব্বির বাবা পেশায় ভ্যানচালক মিরাজ তালুকদার বলেন, শেখ হাসিনা যে অপরাধ করেছেন, ১০০ বার ফাঁসি দিলেও সেটা কম হয়ে যাবে। হাসিনার ফাঁসির রায়ে তারা সন্তুষ্ট। এই রায় দ্রুত কার্যকর দেখতে চান।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর ঢাকার এক এলাকায় প্রতীকী ফাঁসি দিচ্ছেন একদল উল্লসিত লোক -সোহরাব আলম
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর সোমবার,(১৭ নভেম্বর ২০২৫) জুলাই আন্দোলনে নিহতদের পরিবার সদস্যরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এ সময় তারা অবিলম্বে রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জে জুলাই আন্দোলনে শহীদ আদিলের (১৫) বাবা মো. আবুল কালাম বলেন, আমরা এমন রায়ই আশা করেছিলাম। শেখ হাসিনা অবৈধভাবে ১৭ বছর ক্ষমতায় থেকে হাজারো মায়ের বুক খালি করেছে। খুন-গুমের দায়ে তার ১৭ বার ফাঁসির রায় হওয়া উচিত ছিল। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে দুই হাজার ছাত্র-জনতা হত্যার জন্য তার দুই হাজার বার ফাঁসি হওয়া দরকার। তারপরও আমরা প্রত্যাশিত রায় পেয়েছি। এখন শুধু দ্রুত কার্যকর করার উদ্যোগ চাই।
জুলাই আন্দোলনে শহীদ ছাত্রদল নেতা স্বজনের বাবা মো. জাকির হোসেন প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, আমি কথা বলতে পারছি না, যখন ফাঁসি কার্যকর হবে তখনই সন্তুষ্ট হবো। শুধু রায় নয়Ñ সব হত্যাকারীর ফাঁসি কার্যকর হলে তবেই আমি শান্তি পাব, এর আগে না।
শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে শহীদ আবু সাঈদের পরিবার। প্রতিক্রিয়ায় শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যরা পলাতক শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিদের দ্রুত দেশে এনে রায় কার্যকর করার দাবি জানান। শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বলেন, আমি রায়ে খুশি কিন্তু বিচার দেখতে চাই। আমি হুকুমদাতাসহ পুলিশের বিচার চাই। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই। ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে বাংলার মাটিতে নিয়ে এসে রায় কার্যকর করতে হবে।
আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমরা সবার বিচার চাই। যারা হুকুম দিয়েছে, যারা গুলি করেছে সবাইকে ফাঁসি দিতে হবে। আমি মা আজ বুঝতেছি ছেলে হারানোর কষ্ট। আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে আমার মতো অনেক মা-বোন-ভাই-সন্তান হারিয়েছে, স্বামীকে হারিয়েছে। অনেক জীবন সংসার শেষ হয়ে গেছে। এসবের বিচার হতে হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া রফিকুল ইসলাম রফিকের বাবা রহিজ উদ্দিন মিয়া। শিবালয় উপজেলার উলাইল ইউনিয়নের রূপসা গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি এ অনুভূতি প্রকাশ করেন। শহীদ রফিকের বাবা বলেন, শেখ
হাসিনার হুকুমে পুলিশ আমার ছেলেকে হত্যা করেছে, আমার ছেলের কি অপরাধ ছিল? সে-তো কোনো অপরাধ করেনি। কেন মারলো আমার ছেলেকে এর বিচার চাই।
রহিজ উদ্দিন বলেন, আজকে শেখ হাসিনার যে রায় হয়েছে তাতে আমি অনেক খুশি হয়েছি। তার হুকুমে পুলিশ ও তার লোকজন বাংলাদেশের অনেক মানুষকে হত্যা করছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেন রফিকুল ইসলাম রফিক (২২)। আন্দোলনের সম্মুখসারিতে ছিল এই শহীদ রফিক। হঠাৎ করেই আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন নেতা ও পাটুরিয়া নৌপুলিশ যৌথভাবে আক্রমণ করে ছাত্র-জনতার ওপর। ওই সময়ে রফিক সামনে থাকায় একটি গুলি এসে লাগে। এতে তিনি লুটিয়ে পড়েন।
শহীদ ইসমাইল হোসেন রাব্বির বাবা পেশায় ভ্যানচালক মিরাজ তালুকদার বলেন, শেখ হাসিনা যে অপরাধ করেছেন, ১০০ বার ফাঁসি দিলেও সেটা কম হয়ে যাবে। হাসিনার ফাঁসির রায়ে তারা সন্তুষ্ট। এই রায় দ্রুত কার্যকর দেখতে চান।