চট্টগ্রামে জোড়া খুনসহ একাধিক হত্যাকাণ্ডে আলোচনায় আসা ‘সন্ত্রাসী’ রায়হান এবার এক ব্যবসায়ীকে ‘ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারার’ হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে বিদেশি নম্বর থেকে ফোন ও এসএমএসের মাধ্যমে এ হুমকি আসে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ী ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম। এ ব্যবসায়ীর স্ত্রী এর আগে বড় সাজ্জাদ, রায়হান, ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্নাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা করেছিলেন।
হুমকি পাওয়া ইকরাম বলেন, ‘শুক্রবার (গতকাল) রাত ৮টার দিকে বিদেশি নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন ও এসএমএম দিয়ে আমাকে হুমকি দিয়েছে রায়হান।’ রাত ৮টা ১০ মিনিট থেকে ৮টা ৩৮ মিনিটের মধ্যে বেশ কয়েকটি এসএমএস আসার কথা বলছেন তিনি। মেসেজেগুলোতে লেখা হয় ‘খুব দ্রুত সময়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হবে। তোকে গুলি করে মারবো না, ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারবো। তোর মামলার এক নম্বর আসামি হব আমি।’
ইকরাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছি। বাসার সামনে পুলিশ সদস্যরা আছেন। আমাদের বলা হয়েছে, কোথাও গেলে যেন তাদের জানিয়ে রাখি।’ হুমকি পাওয়া ইকরাম ও তার স্ত্রীর দাবি, গত ১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা শপিং সিটি কমপ্লেক্স থেকে ছোট সাজ্জাদকে ধরতে তারা সহায়তা করেছিলেন।
ইকরাম ইট ও বালু সরবরাহের ব্যবসা করেন। আর তার স্ত্রী রুমা আক্তার স্মৃতি নগরীর একটি বুটিক ও বিউটি পার্লারের মালিক। গত ২০ মার্চ নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেছিলেন স্মৃতি। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, ১৭ মাচ (গর্ত) বড় সাজ্জাদ ভারতীয় একটি নম্বর থেকে ফোন করে তার কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে তিনি ‘ব্যবসা করতে পারবেন না’ বলে হুমকি দেন।
পরেরদিন অন্য আসামিরা সশরীরে গিয়ে এক কোটি টাকা দাবি করে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা না দিলে পরিবারের সদস্যদের ‘হত্যা করার হুমকি’ দেয় বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
শনিবার, স্মৃতি বলেন, ‘মামলা প্রত্যাহার করে নিতে এবং ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেয়ায় আমার স্বামীকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমরা এখন ভয়ে বের হতে পারছি না। আমরা জিডি করতে যাব।’
পাঁচলাইশ থানার ওসি মো. সোলায়মান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা শুনেছি। তাদের নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে। তারা থানায় আসবে বলেছে। তারা এলে জিডি নেয়া হবে। চট্টগ্রামে সরোয়ার হত্যা, জোড়া খুনসহ বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আলোচনায় আসেন রায়হান। নগরীর পাশাপাশি জেলার কয়েকটি হত্যাকাণ্ডে ও তার নাম আসে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে বিদেশে বসে চট্টগ্রামের অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণ করা সাজ্জাদ হোসেন ওরফে বড় সাজ্জাদের অন্যতম অনুসারী রায়হান।
প্রচার আছে, বড় সাজ্জাদের হয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণ করতেন ছোট সাজ্জাদ। ছোট সাজ্জাদ কারাগারে যাওয়ার পর বড় সাজ্জাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা
করেন এ রায়হান। গত ৫ নভেম্বর বায়েজিদ চালিতাতলী এলাকায় বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনি জনসভায় গুলি করে পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সরোয়ার হত্যা মামলায়ও আলোচনায় আসে রায়হানের নাম। ভিড়ের মধ্যে পেছন থেকে কাঁধে পিস্তল ঠেকিয়ে সরোয়ারকে গুলি করা ব্যক্তিটি রায়হান বলে ধারণা পরিবার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
গত ৩০ মার্চ ভোরে নগরীর বাকলিয়া এক্সেস রোডে প্রাইভেট কার থামিয়ে দুইজনকে গুলি করে খুন করা হয়। এ মামলায়ও আসে সন্ত্রাসী রায়হানের নাম। এছাড়া গত ২২ এপ্রিল রাউজানে রাউজান সদর ইউনিয়নের পূর্ব রাউজান ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গাজীপাড়ায় মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে মো. ইব্রাহীম (৩০) ও ২৫ অক্টোবর আলমগীর নামে দুই যুবদল কর্মীকে খুনের ঘটনাতেও নাম আসে রায়হানের।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
চট্টগ্রামে জোড়া খুনসহ একাধিক হত্যাকাণ্ডে আলোচনায় আসা ‘সন্ত্রাসী’ রায়হান এবার এক ব্যবসায়ীকে ‘ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারার’ হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে বিদেশি নম্বর থেকে ফোন ও এসএমএসের মাধ্যমে এ হুমকি আসে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ী ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম। এ ব্যবসায়ীর স্ত্রী এর আগে বড় সাজ্জাদ, রায়হান, ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্নাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা করেছিলেন।
হুমকি পাওয়া ইকরাম বলেন, ‘শুক্রবার (গতকাল) রাত ৮টার দিকে বিদেশি নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন ও এসএমএম দিয়ে আমাকে হুমকি দিয়েছে রায়হান।’ রাত ৮টা ১০ মিনিট থেকে ৮টা ৩৮ মিনিটের মধ্যে বেশ কয়েকটি এসএমএস আসার কথা বলছেন তিনি। মেসেজেগুলোতে লেখা হয় ‘খুব দ্রুত সময়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হবে। তোকে গুলি করে মারবো না, ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারবো। তোর মামলার এক নম্বর আসামি হব আমি।’
ইকরাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছি। বাসার সামনে পুলিশ সদস্যরা আছেন। আমাদের বলা হয়েছে, কোথাও গেলে যেন তাদের জানিয়ে রাখি।’ হুমকি পাওয়া ইকরাম ও তার স্ত্রীর দাবি, গত ১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা শপিং সিটি কমপ্লেক্স থেকে ছোট সাজ্জাদকে ধরতে তারা সহায়তা করেছিলেন।
ইকরাম ইট ও বালু সরবরাহের ব্যবসা করেন। আর তার স্ত্রী রুমা আক্তার স্মৃতি নগরীর একটি বুটিক ও বিউটি পার্লারের মালিক। গত ২০ মার্চ নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেছিলেন স্মৃতি। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, ১৭ মাচ (গর্ত) বড় সাজ্জাদ ভারতীয় একটি নম্বর থেকে ফোন করে তার কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে তিনি ‘ব্যবসা করতে পারবেন না’ বলে হুমকি দেন।
পরেরদিন অন্য আসামিরা সশরীরে গিয়ে এক কোটি টাকা দাবি করে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা না দিলে পরিবারের সদস্যদের ‘হত্যা করার হুমকি’ দেয় বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
শনিবার, স্মৃতি বলেন, ‘মামলা প্রত্যাহার করে নিতে এবং ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেয়ায় আমার স্বামীকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমরা এখন ভয়ে বের হতে পারছি না। আমরা জিডি করতে যাব।’
পাঁচলাইশ থানার ওসি মো. সোলায়মান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা শুনেছি। তাদের নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে। তারা থানায় আসবে বলেছে। তারা এলে জিডি নেয়া হবে। চট্টগ্রামে সরোয়ার হত্যা, জোড়া খুনসহ বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আলোচনায় আসেন রায়হান। নগরীর পাশাপাশি জেলার কয়েকটি হত্যাকাণ্ডে ও তার নাম আসে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে বিদেশে বসে চট্টগ্রামের অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণ করা সাজ্জাদ হোসেন ওরফে বড় সাজ্জাদের অন্যতম অনুসারী রায়হান।
প্রচার আছে, বড় সাজ্জাদের হয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণ করতেন ছোট সাজ্জাদ। ছোট সাজ্জাদ কারাগারে যাওয়ার পর বড় সাজ্জাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা
করেন এ রায়হান। গত ৫ নভেম্বর বায়েজিদ চালিতাতলী এলাকায় বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনি জনসভায় গুলি করে পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সরোয়ার হত্যা মামলায়ও আলোচনায় আসে রায়হানের নাম। ভিড়ের মধ্যে পেছন থেকে কাঁধে পিস্তল ঠেকিয়ে সরোয়ারকে গুলি করা ব্যক্তিটি রায়হান বলে ধারণা পরিবার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
গত ৩০ মার্চ ভোরে নগরীর বাকলিয়া এক্সেস রোডে প্রাইভেট কার থামিয়ে দুইজনকে গুলি করে খুন করা হয়। এ মামলায়ও আসে সন্ত্রাসী রায়হানের নাম। এছাড়া গত ২২ এপ্রিল রাউজানে রাউজান সদর ইউনিয়নের পূর্ব রাউজান ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গাজীপাড়ায় মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে মো. ইব্রাহীম (৩০) ও ২৫ অক্টোবর আলমগীর নামে দুই যুবদল কর্মীকে খুনের ঘটনাতেও নাম আসে রায়হানের।