alt

একুশের বইমেলা

ষষ্ঠ দিনে নতুন বইয়ের সংখ্যা ১২১

বিশেষ চলাফেরায় অক্ষমদের জন্য বিনামূল্যে হুইলচেয়ার সেবা

খালেদ মাহমুদ : সোমবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ছবি: সোহরাব আলম

চলছে বাঙ্গালির প্রাণের অমর একুশে বইমেলা। বইপ্রেমী পাঠকদের পদচারণায় মুখরিত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। ছোট-বড় নির্বিশেষে সবাই মেলায় আসছেন, ঘুরছেন, দেখছেন, কিনছেন পছন্দের বিষয় ও লেখকের বই। কিন্তু বিপত্তি রয়েছে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষগুলোর জন্য। তারা অন্যদের মতো নিজের মতো করে মেলায় ঘুরতে পারেন না। প্রয়োজন হয় কারও সহযোগিতার।

তাদের এই বিশেষ চাহিদার কথা চিন্তা করে গত ৯ বছর ধরে বিনামূল্যে হুইলচেয়ার সেবা দিয়ে আসছে স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন ‘সুইস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’। বাংলা একাডেমি ও বিকাশের সহযোগিতায় তারা এ সেবাটি দিচ্ছে।

এ সেবার অংশ হিসেবে প্রতিদিন মেলার টিএসসি ও দোয়েল চত্বরে ২০টি হুইল চেয়ার থাকবে। পাশাপাশি এ কর্মসূচিতে ২০ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। প্রতিবন্ধী কিংবা চলাফেরা করতে অক্ষম যে কেউ বিনামূল্যে সেবাটি নিতে পারছেন।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বইমেলায় প্রবেশপথে দেখা মেলে সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে। প্রতিদিনের মতো সেবা দিতে ব্যস্ত তারা। তারা জানান, গত ৯ বছর ধরে বইমেলায় শারীরিক প্রতিবন্ধী ও যারা পায়ে হেঁটে চলাফেরা করতে অসুবিধা এমন দর্শনার্থীদের হুইলচেয়ার সেবা দিয়ে আসছেন তারা। এ বছর মেলার দ্বিতীয় দিন থেকে তারা এ সেবা দিচ্ছেন। স্বেচ্ছাসেবা দিয়ে আনন্দ ও মানসিক শান্তি পাচ্ছেন বলে জানান স্বেচ্ছাসেবীরা।

জানতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবক ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী জেসমিন আক্তার বলেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের মেলা ঘুরিয়ে দেখাতে পারার মাঝে একটা মানসিক আনন্দ ও আত্মতৃপ্তি রয়েছে। তারা আমাদের জন্য প্রাণভরে দোয়া করছেন। এটিই আমাদের কাছে বড় পাওয়া।

এ প্রসঙ্গে সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রধান সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত ৯ বছর ধরে আমরা অমর একুশে বইমেলায় শারীরিক প্রতিবন্ধী ও যারা পায়ে হেঁটে চলাফেরা করতে অসুবিধা এমন দর্শনার্থীদের হুইল চেয়ারের মাধ্যমে সেবা দিয়ে আসছি। এবছরও আমরা হুইল চেয়ারের মাধ্যমে উক্ত সেবা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। হাঁটতে পারেন না-এমন ব্যক্তিরা মেলার গেট পর্যন্ত কোনোভাবে পৌঁছাতে পারলেই আর চিন্তা নেই। আমরা কোন বিনিময় ছাড়া একজন শারীরিক প্রতিবন্ধীর যতক্ষণ পর্যন্ত ইচ্ছে হয়, ততক্ষন মেলায় ঘুরিয়ে নিয়ে আসি।

সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মুঈনুল আহসান ফয়সাল বলেন, মেলার দুই প্রান্ত টিএসসি ও দোয়েল চত্বরে মোট ২০টি হুইল চেয়ার আছে সেবা দেওয়ার জন্য। এবারের মেলাতেও হুইল চেয়ারগুলোর ব্যবস্থা করেছে বাংলা একাডেমি। এতে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছে সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবীরা। সার্বিক সহযোগিতায় করছে বিকাশ। মেলার শেষ দিন পর্যন্ত বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চলবে আমাদের এই সেবামূলক কার্যক্রম।

গতকালের অনুষ্ঠানসূচী

বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ কাজী রোজী এবং স্মরণ দিলারা হাশেম শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাসির আহমেদ এবং তপন রায়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আসলাম সানী, শাহেদ কায়েস, আনিসুর রহমান এবং শাহনাজ মুন্নী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অসীম সাহা।

প্রাবন্ধিক বলেন, কবি, গীতিকার, নাট্যকার, গল্পকার কাজী রোজী আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের এক প্রগতিশীল সাহসী নারী, সদা প্রাণোচ্ছল এক লড়াকু জীবনযোদ্ধা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে সকল প্রগতিশীল আন্দোলন সংগ্রামে সম্মুখসারির কর্মী ছিলেন তিনি। অপরদিকে, বাংলাদেশের খ্যাতিমান ঔপন্যাসিকদের মধ্যে দিলারা হাশেম একটি বিশিষ্ট নাম। ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, কবি, অনুবাদক, সংবাদ পরিবেশক, সংগীতশিল্পী ইত্যাদি নানা অভিধায় তাঁকে অভিহিত করা যায়। তিনি মূলত নগরজীবন ও বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত সমাজে সুখ দুখ, স্বপ্ন সাধ, ভালোবাসা, হতাশ ও জীবনের বাস্তবতা তাঁর সাহিত্যে তুলে আনেন।

আলোচকবৃন্দ বলেন, কবি কাজী রোজী বাংলা সাহিত্যজগতে যেমন তাঁর প্রতিভার নজির রেখেছেন, তেমনি বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। শুধু সাহিত্যই নয়, কাজী রোজী আমাদের সামনে সাহসী জীবনের আদর্শও রেখে গেছেন। অন্যদিকে, স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বাংলা সাহিত্য জগতে অক্ষয় এক নাম দিলারা হাশেম। তাঁর সাহিত্যের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, নারীর দৃষ্টি দিয়ে তিনি ব্যক্তি ও সমাজকে দেখেছেন। নারীর সামাজিক অবস্থান ও পরিবেশ, লড়াই সংগ্রাম লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, অবমাননা প্রভৃতি তাঁর লেখায় মূর্ত হয়ে উঠেছে।

সভাপতির বক্তব্যে অসীম সাহা বলেন, জীবনের নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে কাজী রোজী যে নিরন্তর সংগ্রাম চালিছেন, তাতে তিনি সফল হয়েছেন। জীবনের অন্তর্গত রহস্য ও নিম্নশ্রেণির মানুষের সংগ্রাম দিলারা হাশেমের সাহিত্যকর্মে ওঠে এসেছে। আমাদের উচিত যথাসময়ে তাদের মতো গুণী মানুষের কাজের স্বীকৃতি ও সম্মান প্রদর্শন ।

আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন মোজাম্মেল হক নিয়োগী, রহীম শাহ, সত্যজিৎ রাহজমনার এবং ভূয়ার কবির। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি মাহবুব সাদিক, ফারুক মাহমুদ এবং আতাহার খান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, মাহিদুল ইসলাম এবং অনন্যা লাবনী।

আজকের অনুষ্ঠানমালা

বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণ : মাহবুব তালুকদার এবং আলী ইমাম শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন গাজী রহমান ও আহমাদ মাযহার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন লুৎফর রহমান রিটন, ড. নিমাই মণ্ডল, আমীরুল ইসলাম এবং ওমর কায়সার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ফরিদুর রেজা সাগর।

ছবি

কাব্যগ্রন্থ ‘একগুচ্ছ পঙ্ক্তিমালা’র মোড়ক উন্মোচন ও বাসপ পুরস্কার-২০২৫ প্রদান

ছবি

সিরাজগঞ্জে লালন সাঁইয়ের তিরোধান দিবসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

ছবি

লালনের তিরোধান দিবস: সাধুসঙ্গ, ভক্তদের পদচারণায় মুখর ছেঁউরিয়া

ছবি

কবি হাসান হাফিজের জন্মদিন উদযাপন

ছবি

কাজী নজরুল ইসলামের পুত্র বুলবুলের জন্মশতবর্ষ উদযাপন কলকাতায়

ছবি

সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর বরাদ্দ বাতিল, ‘শরৎ উৎসব’ করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি

সেন্ট যোসেফ স্কু‌লে ছায়ানটের ‘শরৎ উৎসব’ অনুষ্ঠিত

ছবি

শিল্পকলা একাডেমি পরিষদ ছাড়লেন আরো চারজন

ছবি

বাফা গুলশান-বাড্ডা শাখার নবীন বরণ ও বাৎসরিক সাংস্কৃতিক উৎসব সম্পন্ন

ছবি

কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক

এবার একুশে বইমেলা শুরু হবে ১৭ ডিসেম্বরে

সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে হবে

ছবি

রোটারি ঢাকা নর্থ ওয়েস্ট ভোকেশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ প্রদান

ছবি

দর্শক নে, ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে ময়মনসিংহের পূরবী সিনেমা হল

প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে পদত্যাগপত্র, চার শর্ত মানলে ফিরবেন জামিল আহমেদ

ছবি

বইমেলায় তপন কান্তি সরকারের বই ‘নতুন বিশ্বের নতুন ক্যারিয়ার’

ছবি

পর্দা নেমেছে সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের

ছবি

পাঠাও-এর ‘অগ্রযাত্রার অগ্রদূত’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

শেষ মুহূর্তে স্থগিত ঘোষণা ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব

ছবি

হুমকির মুখে স্থগিত ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব

ছবি

শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব

ছবি

বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে কবি আয়েশা মুন্নির ‘গুলবাহার ভোর’

ছবি

সোনারগাঁয়ে লোককারুশিল্প মেলা, লুপ্তপ্রায় ঐতিহ্য শীতল পাটির প্রদর্শনী

ছবি

সোনারগাঁয়ে ছুটির দিনে লোকারন্য লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব

ছবি

বাংলা একাডেমি পুরস্কারের খবর নেই, এবার সরে গেলেন জুরি সদস্য

ছবি

কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ প্রত্যাখ্যান করেছেন

এবার দশজন পাচ্ছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।

ছবি

সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধন

ছবি

বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদীচী যশোর জেলা সংসদের ২২তম সম্মেলন শুরু

ছবি

ভিভো ও এসওএস এর যৌথ উদ্যোগে ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী

ছবি

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দিনব্যাপী চ্যারিটি মেলা

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রজাপতি মেলা অনুষ্ঠিত

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হককে জাতীয় অধ্যাপক করার দাবি

ছবি

শিল্পকলা একাডেমিতে চলচ্চিত্রের জন্য পৃথক বিভাগ চায় চলচ্চিত্রকর্মীরা

ছবি

শিল্পকর্মে বুড়িগঙ্গা পাড়ের জীবন

ছবি

শিল্পকর্মে বুড়িগঙ্গা পাড়ের জীবন

tab

একুশের বইমেলা

ষষ্ঠ দিনে নতুন বইয়ের সংখ্যা ১২১

বিশেষ চলাফেরায় অক্ষমদের জন্য বিনামূল্যে হুইলচেয়ার সেবা

খালেদ মাহমুদ

ছবি: সোহরাব আলম

সোমবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

চলছে বাঙ্গালির প্রাণের অমর একুশে বইমেলা। বইপ্রেমী পাঠকদের পদচারণায় মুখরিত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। ছোট-বড় নির্বিশেষে সবাই মেলায় আসছেন, ঘুরছেন, দেখছেন, কিনছেন পছন্দের বিষয় ও লেখকের বই। কিন্তু বিপত্তি রয়েছে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষগুলোর জন্য। তারা অন্যদের মতো নিজের মতো করে মেলায় ঘুরতে পারেন না। প্রয়োজন হয় কারও সহযোগিতার।

তাদের এই বিশেষ চাহিদার কথা চিন্তা করে গত ৯ বছর ধরে বিনামূল্যে হুইলচেয়ার সেবা দিয়ে আসছে স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন ‘সুইস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’। বাংলা একাডেমি ও বিকাশের সহযোগিতায় তারা এ সেবাটি দিচ্ছে।

এ সেবার অংশ হিসেবে প্রতিদিন মেলার টিএসসি ও দোয়েল চত্বরে ২০টি হুইল চেয়ার থাকবে। পাশাপাশি এ কর্মসূচিতে ২০ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। প্রতিবন্ধী কিংবা চলাফেরা করতে অক্ষম যে কেউ বিনামূল্যে সেবাটি নিতে পারছেন।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বইমেলায় প্রবেশপথে দেখা মেলে সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে। প্রতিদিনের মতো সেবা দিতে ব্যস্ত তারা। তারা জানান, গত ৯ বছর ধরে বইমেলায় শারীরিক প্রতিবন্ধী ও যারা পায়ে হেঁটে চলাফেরা করতে অসুবিধা এমন দর্শনার্থীদের হুইলচেয়ার সেবা দিয়ে আসছেন তারা। এ বছর মেলার দ্বিতীয় দিন থেকে তারা এ সেবা দিচ্ছেন। স্বেচ্ছাসেবা দিয়ে আনন্দ ও মানসিক শান্তি পাচ্ছেন বলে জানান স্বেচ্ছাসেবীরা।

জানতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবক ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী জেসমিন আক্তার বলেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের মেলা ঘুরিয়ে দেখাতে পারার মাঝে একটা মানসিক আনন্দ ও আত্মতৃপ্তি রয়েছে। তারা আমাদের জন্য প্রাণভরে দোয়া করছেন। এটিই আমাদের কাছে বড় পাওয়া।

এ প্রসঙ্গে সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রধান সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত ৯ বছর ধরে আমরা অমর একুশে বইমেলায় শারীরিক প্রতিবন্ধী ও যারা পায়ে হেঁটে চলাফেরা করতে অসুবিধা এমন দর্শনার্থীদের হুইল চেয়ারের মাধ্যমে সেবা দিয়ে আসছি। এবছরও আমরা হুইল চেয়ারের মাধ্যমে উক্ত সেবা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। হাঁটতে পারেন না-এমন ব্যক্তিরা মেলার গেট পর্যন্ত কোনোভাবে পৌঁছাতে পারলেই আর চিন্তা নেই। আমরা কোন বিনিময় ছাড়া একজন শারীরিক প্রতিবন্ধীর যতক্ষণ পর্যন্ত ইচ্ছে হয়, ততক্ষন মেলায় ঘুরিয়ে নিয়ে আসি।

সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মুঈনুল আহসান ফয়সাল বলেন, মেলার দুই প্রান্ত টিএসসি ও দোয়েল চত্বরে মোট ২০টি হুইল চেয়ার আছে সেবা দেওয়ার জন্য। এবারের মেলাতেও হুইল চেয়ারগুলোর ব্যবস্থা করেছে বাংলা একাডেমি। এতে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছে সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবীরা। সার্বিক সহযোগিতায় করছে বিকাশ। মেলার শেষ দিন পর্যন্ত বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চলবে আমাদের এই সেবামূলক কার্যক্রম।

গতকালের অনুষ্ঠানসূচী

বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ কাজী রোজী এবং স্মরণ দিলারা হাশেম শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাসির আহমেদ এবং তপন রায়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আসলাম সানী, শাহেদ কায়েস, আনিসুর রহমান এবং শাহনাজ মুন্নী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অসীম সাহা।

প্রাবন্ধিক বলেন, কবি, গীতিকার, নাট্যকার, গল্পকার কাজী রোজী আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের এক প্রগতিশীল সাহসী নারী, সদা প্রাণোচ্ছল এক লড়াকু জীবনযোদ্ধা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে সকল প্রগতিশীল আন্দোলন সংগ্রামে সম্মুখসারির কর্মী ছিলেন তিনি। অপরদিকে, বাংলাদেশের খ্যাতিমান ঔপন্যাসিকদের মধ্যে দিলারা হাশেম একটি বিশিষ্ট নাম। ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, কবি, অনুবাদক, সংবাদ পরিবেশক, সংগীতশিল্পী ইত্যাদি নানা অভিধায় তাঁকে অভিহিত করা যায়। তিনি মূলত নগরজীবন ও বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত সমাজে সুখ দুখ, স্বপ্ন সাধ, ভালোবাসা, হতাশ ও জীবনের বাস্তবতা তাঁর সাহিত্যে তুলে আনেন।

আলোচকবৃন্দ বলেন, কবি কাজী রোজী বাংলা সাহিত্যজগতে যেমন তাঁর প্রতিভার নজির রেখেছেন, তেমনি বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। শুধু সাহিত্যই নয়, কাজী রোজী আমাদের সামনে সাহসী জীবনের আদর্শও রেখে গেছেন। অন্যদিকে, স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বাংলা সাহিত্য জগতে অক্ষয় এক নাম দিলারা হাশেম। তাঁর সাহিত্যের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, নারীর দৃষ্টি দিয়ে তিনি ব্যক্তি ও সমাজকে দেখেছেন। নারীর সামাজিক অবস্থান ও পরিবেশ, লড়াই সংগ্রাম লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, অবমাননা প্রভৃতি তাঁর লেখায় মূর্ত হয়ে উঠেছে।

সভাপতির বক্তব্যে অসীম সাহা বলেন, জীবনের নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে কাজী রোজী যে নিরন্তর সংগ্রাম চালিছেন, তাতে তিনি সফল হয়েছেন। জীবনের অন্তর্গত রহস্য ও নিম্নশ্রেণির মানুষের সংগ্রাম দিলারা হাশেমের সাহিত্যকর্মে ওঠে এসেছে। আমাদের উচিত যথাসময়ে তাদের মতো গুণী মানুষের কাজের স্বীকৃতি ও সম্মান প্রদর্শন ।

আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন মোজাম্মেল হক নিয়োগী, রহীম শাহ, সত্যজিৎ রাহজমনার এবং ভূয়ার কবির। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি মাহবুব সাদিক, ফারুক মাহমুদ এবং আতাহার খান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, মাহিদুল ইসলাম এবং অনন্যা লাবনী।

আজকের অনুষ্ঠানমালা

বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণ : মাহবুব তালুকদার এবং আলী ইমাম শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন গাজী রহমান ও আহমাদ মাযহার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন লুৎফর রহমান রিটন, ড. নিমাই মণ্ডল, আমীরুল ইসলাম এবং ওমর কায়সার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ফরিদুর রেজা সাগর।

back to top