যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে হঠাৎ করে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া দু’টি ভুয়া ভিডিও সম্পর্কে সতর্ক করেছে দেশটির ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন বা এফবিআই।
সংবাদ মাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, সংস্থাটি বলেছে ওই ভিডিওগুলোর লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ তৈরি করা। সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তারা এর আগেও এ বিষয়ে অনেকবার সতর্ক করেছেন।
বিবিসি ভেরিফাই প্রমাণ পেয়েছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমন শত শত ভুয়া ভিডিও তৈরি হয়েছে, যার উৎস রাশিয়া। কেননা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এলেই রাশিয়ার ‘হস্তক্ষেপ’ কিংবা এ ধরণের অভিযোগ ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। বিশেষ করে, ২০১৬ সালের এবং ২০২০ সালের নির্বাচনে এ ধরনের তথ্য বেশি আলোচনায় এসেছিল।
এবারেও নির্বাচনকে সামনে রেখেও ‘রুশ তৎপরতা’র কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাগুলো। আগামী মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এমন কী আছে, যার জন্য সতর্কবার্তা দিলো এফবিআই? সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’-এ শনিবার এফবিআই বলেছে, দু’টি ভিডিও- ব্যালট প্রতারণা এবং আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডেমোক্র্যাট কমলা হ্যারিসের স্বামী ডাগ এমহফকে নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে।
ভুয়া ওই দু’টি ভিডিও দেখে মনে হবে এগুলো এফবিআই বানিয়েছে। ভিডিওর সঙ্গে সংস্থাটির লোগো জুড়ে দেয়া হয়েছে। তবে এটি বেশি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি বা খুব বেশি মানুষ এটি দেখেনি।
এফবিআই এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এসব ভিডিও অথেনটিক নয়, এফবিআই এগুলো করেনি এবং এগুলোতে মিথ্যা বলা হয়েছে’।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘এফবিআই কার্যক্রম নিয়ে ভুয়া কনটেন্ট তৈরি করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণার চেষ্টা হলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে হেয় করার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবিশ্বাস তৈরি করা’।
এফবিআই যেভাবে ভিডিওগুলোর কনটেন্টের বর্ণনা দিয়েছে, তার সঙ্গে এর আগে বছরের শুরুতে বিবিসি ভেরিফাই যে তিনশ’র মতো ভিডিও পেয়েছিল তার মিল আছে।
একটি অনলাইন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তখন এসব ভিডিও পাওয়া গিয়েছিল। ভিডিওতে বিশ্বাসযোগ্য করে গ্রাফিক্স উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া টেক্সটগুলো দেখে মনে হবে, এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থার পাশাপাশি বিবিসি, ফ্রান্স ২৪ ও ফক্স নিউজসহ অন্তত পঞ্চাশটি সংবাদ মাধ্যম থেকে নেয়া।
গত কয়েক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই অনলাইনে ভিডিও পোস্ট করা হচ্ছে এবং সম্প্রতি এটা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে জোর দিয়ে। এতে হ্যারিস সম্পর্কে মিথ্যা দাবি ও বিশৃঙ্খলা এবং ‘গৃহযুদ্ধ’ সম্পর্কে বার্তা দেয়া হচ্ছে।
ফিনল্যান্ডভিত্তিক অনলাইন অ্যানালিটিকাল কোম্পানি চেকফার্স্ট ওই ভিডিওগুলোর নেটওয়ার্ক সম্পর্কে স্বাধীনভাবে অনুসন্ধান করেছে। তারা দেখেছে যে, এর পেছনে আছে একটি রুশ মার্কেটিং এজেন্সি ও একটি রুশ আইপি এড্রেস।
লন চেকফার্স্টের প্রধান নির্বাহী গুইলাউমে কুস্টার বলেন, ‘আমরা এর সঙ্গে রাশিয়ার যোগসূত্র করতে পারি এবং কিছু বিষয় থেকে আমরা জানতে পারি যে এগুলো তৈরি করেছে রুশ একটি কোম্পানি। প্রমাণের আরেকটি সূত্র হলো ডেটা সেট। সেটা দেখে আমরা প্রমাণ পাই যে, যেখান থেকে ইমেইল পাঠানো হয়েছে সেটিও রাশিয়ায়’।
এর সঙ্গে যে ভিডিও তৈরি করা হয়েছে সেগুলো ব্যাপকভাবে ছড়ানো হয়েছে রাশিয়ান ভাষার টেলিগ্রাম চ্যানেলে।
চেকফার্স্ট যে স্টাইল, বার্তা ও থিম ভিডিওর সঙ্গে পেয়েছে সেটি ক্রেমলিনের সঙ্গে যোগসূত্র আছে এমন আরেকটি কার্যক্রমের সঙ্গে মিলে যায় বলেও বিবিসি ভেরিফাই গবেষণা ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটা এখনও পরিষ্কার নয় যে, কারা ওই কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং এটি রাশিয়ার সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত কিনা।
বিষয়টি নিয়ে ওয়াশিংটনে রাশিয়ার দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ তার দেশের বিরুদ্ধে উঠেছে, সেটি ভিত্তিহীন। তাদের ভাষায়, ‘রাশিয়ার কৌশলের দিকে যত ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে তা একটি অপবাদ, যা যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির লড়াইয়ে ব্যবহারের জন্য তৈরি’।
এক্স-এর হিসেব অনুযায়ী ওই ভিডিও ক্লিপ দেখা হয়েছে লাখ লাখ বার। তবে যারা পোস্ট করেছে তাদের অনুসারী কম এবং অল্প মানুষই তাতে কমেন্ট করেছে। কিছু ‘বট’ অ্যাকাউন্ট থেকেও এটি দেখা হচ্ছে বলে বোঝা যায়।
এফবিআই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে এর বাইরেও তারা রাশিয়ার সঙ্গে যোগসূত্র আছে এমন প্রভাবশালী নেটওয়ার্ক সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি সংস্থা- এফবিআই, অফিস অফ দা ডিরেক্টর অফ ন্যাশনাল ইনটিলিজেন্স এবং দা সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি একটি ভাইরাল ভিডিওর উল্লেখ করে বলেছে, এতে হাইতি থেকে আসা একজন ভোট দিয়েছে এমন একটি মিথ্যা বর্ণনা দেয়া হয়েছে এবং এটি ‘রাশিয়া প্রভাবিত লোকজন’ তৈরি করেছে।
গত সপ্তাহে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলেছে একটি ভিডিও দেখানো হয়েছে যে, নির্বাচনী কর্মী মেইলে আসা ব্যালট ধ্বংস করছে যেগুলোতে পেনসিলভানিয়ায় ডনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেয়া হয়েছে বলে বোঝানো হয়েছে। সংস্থাগুলো বলছে, এগুলো রাশিয়ানদের তৈরি ও প্রচার করা।
সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে হঠাৎ করে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া দু’টি ভুয়া ভিডিও সম্পর্কে সতর্ক করেছে দেশটির ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন বা এফবিআই।
সংবাদ মাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, সংস্থাটি বলেছে ওই ভিডিওগুলোর লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ তৈরি করা। সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তারা এর আগেও এ বিষয়ে অনেকবার সতর্ক করেছেন।
বিবিসি ভেরিফাই প্রমাণ পেয়েছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমন শত শত ভুয়া ভিডিও তৈরি হয়েছে, যার উৎস রাশিয়া। কেননা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এলেই রাশিয়ার ‘হস্তক্ষেপ’ কিংবা এ ধরণের অভিযোগ ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। বিশেষ করে, ২০১৬ সালের এবং ২০২০ সালের নির্বাচনে এ ধরনের তথ্য বেশি আলোচনায় এসেছিল।
এবারেও নির্বাচনকে সামনে রেখেও ‘রুশ তৎপরতা’র কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাগুলো। আগামী মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এমন কী আছে, যার জন্য সতর্কবার্তা দিলো এফবিআই? সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’-এ শনিবার এফবিআই বলেছে, দু’টি ভিডিও- ব্যালট প্রতারণা এবং আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডেমোক্র্যাট কমলা হ্যারিসের স্বামী ডাগ এমহফকে নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে।
ভুয়া ওই দু’টি ভিডিও দেখে মনে হবে এগুলো এফবিআই বানিয়েছে। ভিডিওর সঙ্গে সংস্থাটির লোগো জুড়ে দেয়া হয়েছে। তবে এটি বেশি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি বা খুব বেশি মানুষ এটি দেখেনি।
এফবিআই এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এসব ভিডিও অথেনটিক নয়, এফবিআই এগুলো করেনি এবং এগুলোতে মিথ্যা বলা হয়েছে’।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘এফবিআই কার্যক্রম নিয়ে ভুয়া কনটেন্ট তৈরি করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণার চেষ্টা হলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে হেয় করার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবিশ্বাস তৈরি করা’।
এফবিআই যেভাবে ভিডিওগুলোর কনটেন্টের বর্ণনা দিয়েছে, তার সঙ্গে এর আগে বছরের শুরুতে বিবিসি ভেরিফাই যে তিনশ’র মতো ভিডিও পেয়েছিল তার মিল আছে।
একটি অনলাইন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তখন এসব ভিডিও পাওয়া গিয়েছিল। ভিডিওতে বিশ্বাসযোগ্য করে গ্রাফিক্স উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া টেক্সটগুলো দেখে মনে হবে, এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থার পাশাপাশি বিবিসি, ফ্রান্স ২৪ ও ফক্স নিউজসহ অন্তত পঞ্চাশটি সংবাদ মাধ্যম থেকে নেয়া।
গত কয়েক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই অনলাইনে ভিডিও পোস্ট করা হচ্ছে এবং সম্প্রতি এটা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে জোর দিয়ে। এতে হ্যারিস সম্পর্কে মিথ্যা দাবি ও বিশৃঙ্খলা এবং ‘গৃহযুদ্ধ’ সম্পর্কে বার্তা দেয়া হচ্ছে।
ফিনল্যান্ডভিত্তিক অনলাইন অ্যানালিটিকাল কোম্পানি চেকফার্স্ট ওই ভিডিওগুলোর নেটওয়ার্ক সম্পর্কে স্বাধীনভাবে অনুসন্ধান করেছে। তারা দেখেছে যে, এর পেছনে আছে একটি রুশ মার্কেটিং এজেন্সি ও একটি রুশ আইপি এড্রেস।
লন চেকফার্স্টের প্রধান নির্বাহী গুইলাউমে কুস্টার বলেন, ‘আমরা এর সঙ্গে রাশিয়ার যোগসূত্র করতে পারি এবং কিছু বিষয় থেকে আমরা জানতে পারি যে এগুলো তৈরি করেছে রুশ একটি কোম্পানি। প্রমাণের আরেকটি সূত্র হলো ডেটা সেট। সেটা দেখে আমরা প্রমাণ পাই যে, যেখান থেকে ইমেইল পাঠানো হয়েছে সেটিও রাশিয়ায়’।
এর সঙ্গে যে ভিডিও তৈরি করা হয়েছে সেগুলো ব্যাপকভাবে ছড়ানো হয়েছে রাশিয়ান ভাষার টেলিগ্রাম চ্যানেলে।
চেকফার্স্ট যে স্টাইল, বার্তা ও থিম ভিডিওর সঙ্গে পেয়েছে সেটি ক্রেমলিনের সঙ্গে যোগসূত্র আছে এমন আরেকটি কার্যক্রমের সঙ্গে মিলে যায় বলেও বিবিসি ভেরিফাই গবেষণা ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটা এখনও পরিষ্কার নয় যে, কারা ওই কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং এটি রাশিয়ার সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত কিনা।
বিষয়টি নিয়ে ওয়াশিংটনে রাশিয়ার দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ তার দেশের বিরুদ্ধে উঠেছে, সেটি ভিত্তিহীন। তাদের ভাষায়, ‘রাশিয়ার কৌশলের দিকে যত ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে তা একটি অপবাদ, যা যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির লড়াইয়ে ব্যবহারের জন্য তৈরি’।
এক্স-এর হিসেব অনুযায়ী ওই ভিডিও ক্লিপ দেখা হয়েছে লাখ লাখ বার। তবে যারা পোস্ট করেছে তাদের অনুসারী কম এবং অল্প মানুষই তাতে কমেন্ট করেছে। কিছু ‘বট’ অ্যাকাউন্ট থেকেও এটি দেখা হচ্ছে বলে বোঝা যায়।
এফবিআই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে এর বাইরেও তারা রাশিয়ার সঙ্গে যোগসূত্র আছে এমন প্রভাবশালী নেটওয়ার্ক সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি সংস্থা- এফবিআই, অফিস অফ দা ডিরেক্টর অফ ন্যাশনাল ইনটিলিজেন্স এবং দা সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি একটি ভাইরাল ভিডিওর উল্লেখ করে বলেছে, এতে হাইতি থেকে আসা একজন ভোট দিয়েছে এমন একটি মিথ্যা বর্ণনা দেয়া হয়েছে এবং এটি ‘রাশিয়া প্রভাবিত লোকজন’ তৈরি করেছে।
গত সপ্তাহে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলেছে একটি ভিডিও দেখানো হয়েছে যে, নির্বাচনী কর্মী মেইলে আসা ব্যালট ধ্বংস করছে যেগুলোতে পেনসিলভানিয়ায় ডনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেয়া হয়েছে বলে বোঝানো হয়েছে। সংস্থাগুলো বলছে, এগুলো রাশিয়ানদের তৈরি ও প্রচার করা।