alt

বিশ্ব ব্যবস্থা নির্ধারণের ভোটযুদ্ধ আজ

সৈয়দ মুহাম্মদ আজম : মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪

বিশ্বের বৃহৎ ক্ষমতাধর পদের লড়াই আজ। সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ যুদ্ধও এটা। আছে অনাকাক্সিক্ষত এক ভয়। কঠিন অনিশ্চয়তা। আজ যুক্তরাষ্ট্রের ভোটযুদ্বে প্রধান দুই প্রার্থী ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির ডনাল্ড ট্রাম্প। তারা ছাড়াও আরও চার প্রার্থী নির্বাচনে লড়াই করছেন। তারা হলেন ৭১ বছর বয়সী কর্নেল ওয়েস্ট (স্বতন্ত্র), জিল স্টেইন (৭৪) গ্রিন পার্টির, চেজ অলিভার (৩৯) লিবারটেরিয়ান পার্টির এবং ক্লডিয়া দে লা ক্রুজ পার্টি ফর সোস্যালিজম অ্যান্ড লিবারেশন পার্টির প্রার্থী। কিন্তু তাদের নিয়ে খুব একটা আলোচনা নেই। তবে এই চার প্রার্থী কোন রাজ্যে কত ভোট পাচ্ছেন তা নির্ধারণ করে দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের আগামীর প্রেসিডেন্ট কে হবেন।

প্রায় ৪০ বছরের মধ্যে এবারেটা ‘সবচেয়ে বড় মহারণ’ অনেকেই বলছেন। আজ মূল নির্বাচন হলেও দেশটিতে আগাম ভোট শুরু হয়েছে আগেই। প্রায় সাড়ে সাত কোটির বেশি ভোটার ইতোমধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এবার যুক্তরাষ্ট্রে ভোটার সংখ্যা ২৪ কোটি ৪০ লাখ। এই নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে পুরো বিশ্বব্যবস্থা। বিশ্বের অর্থনীতি, রাজনীতি, কূটনীতি সবই ঘুরে যেতে পারে। এজন্য বিশ্বের কোটি কোটি চোখ বিশ্বমোড়ল যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাকিয়ে আছে।

মার্কিন মিত্র ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ, ইসরায়েলি তা-বে বিপর্যস্ত গাজা ও লেবানন, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে। ইরান-ইসরায়েলও যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। তাইওয়ান নিয়ে চীনের সঙ্গে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে মার্কিন প্রশাসনের। নতুন করে সংকট সৃষ্টি হয়েছে ভারত ও কানাডার মধ্যে। বাইডেন ও ভারতের মোদি প্রশাসনের মধ্যেও কূটনৈতিক টানাপোড়েন চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখার চেষ্টা হচ্ছে ব্রিকস জোটে।

গৃহযুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদে জর্জরিত সুদান, মালি, সোমালিয়া, কঙ্গো, বুরকিনাফাসোসহ আফ্রিকার বহু দেশ। মার্কিন নির্বাচন নিয়ে চিন্তায় ইউরোপও। এই অঞ্চলে বেশিরভাগ সমর্থন যাচ্ছে কমলা হ্যারিসের কাছে। ডনাল্ড ট্রাম্প জিতলে ইউরোপ সংকটে পড়বে বলে মনে করছেন সেখানকার নেতারা। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি এবং অনেক জোটে প্রধান ভূমিকা রয়েছে। ফলে দেশে দেশে গণতন্ত্রের সংকট বাড়বে না কমবে তাও নির্ধারিত হতে পারে এই নির্বাচনের মাধ্যমে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প ও কমলার নীতি অনেকটাই বিপরীতিমুখী। ডেমোক্র্যাট হ্যারিস জয়লাভ করলে বিশ্ব রাজনীতি, কূটনীতি ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে হোয়াইট হাউজের বর্তমান নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গিতে তেমন পরিবর্তন না-ও হতে পারে। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতির ধারাবাহিকতাই অক্ষুণœ রাখবেন তিনি। তবে পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন হতে পারে পুনরায় ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে।

তখন ট্রাম্পের নীতি হবে ‘আমেরিকাই প্রথম’। অর্থাৎ তার পররাষ্ট্র, অর্থনীতি ও যুদ্ধনীতি পরিচালিত হবে ‘আগে আমেরিকা, পরে বাকি বিশ্ব’ নীতিতে। বিশ্লেষকরা বলেছেন, ট্রাম্পের এই নীতির অর্থ হচ্ছে যেখানে মার্কিন স্বার্থ নেই, কিংবা তার স্বার্থ বিঘিœত হবে, সেক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে মিত্রদের স্বার্থকেও গুরুত্ব দেবেন না তিনি। আর ট্রাম্পের এই অবস্থানেই মূলত শঙ্কিত মার্কিন মিত্র দেশগুলো।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্প ও হ্যারিস উভয়েই ৪৯ শতাংশ করে ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন। সমানে সমান। শুধুমাত্র ২ শতাংশ ভোটার কোনো মতামত জানাননি। সমর্থকরা গণতন্ত্র সুসংহত করা, গর্ভপাত ইস্যুতে ট্রাম্পের ওপর বিরক্ত। এবং হ্যারিসের সমর্থকরা বেশিরভাগই মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। আবার ট্রাম্পের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থক বিশ্বাস করেন যে, জাতি ভুল পথে চলেছে। তারা বাইডেনের কর্মকা-ে প্রচ- বিরক্ত এবং পুনরায় ট্রাম্পকে ভোট দিতে চান।

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী বাঙালিরা একসময় মূলত ডেমোক্র্যাটদেরই বেশি ভোট দিত। এখন দিন পাল্টেছে। রিপাবলিকানদের সমর্থক বাঙালিদেরও দেখা মিলছে। তবে অনেকেই বলছেন, ডেমোক্র্যাট আর রিপাবলিকানদের মধ্যে খুব বড় কোনো পার্থক্য নেই। রিপাবলিকানরা অনেক বেশি ধনীবান্ধব। বিশেষ করে ট্রাম্প তো ধনীদের জন্য বিশেষ কর সুবিধা দেবেন বলে ঘোষণা করেছেন। সে তুলনায় ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় এলে গরীব মানুষের কিছুটা সুবিধা হয় বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু সেটা জনজীবনে কতোটা প্রভাব ফেলে, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।

মার্কিন নির্বাচনেও দক্ষিণ এশিয়ার মতো টাকার খেলার ভয়ঙ্কর শক্তি আছে। বিশেষ করে ধনী এবং শেতাঙ্গদের হাতেই রয়েছে ক্ষমতা। মিডিয়ার সিংহভাগও তাদের দখলে। এ সময় মিডিয়ার প্রভাবের কথা কে না জানে! ধনীরা যদি তাদের মতো করে দাবার ঘুঁটি চালতে চায়, তাহলে বাধা দেয়ার মতো যথেষ্ট অস্ত্র ডেমোক্রেটদের আছে কিনা, সেটাও প্রশ্ন।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন গণতান্ত্রিক। এ নির্বাচনে কোনো দাঙ্গা স্মরণকালে হয়েছে বলে জানা যায় না। কিন্তু ট্রাম্প এই ধারা শুরু করেছেন ২০২১ সালে। তাছাড়া তিনি নির্বাচিত হলেও আশঙ্কার ব্যাপার আছে। তার বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাট সরকার যেভাবে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তিনিও ঠিক একই রকম ব্যবস্থা নিতে পারেন। অর্থাৎ প্রতিহিংসার আশঙ্কা করছেন ডেমোক্রেট নেতারা। যদিও এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কড়াকড়ি করা হেেয়ছে।

ছবি

ভেনেজুয়েলার মাদকবাহী জলযানে মার্কিন হামলা, নিহত ৩

ছবি

ইসরায়েলি আগ্রাসন ঠেকাতে মুসলিম দেশগুলোকে যৌথ সামরিক জোটের আহ্বান ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর

ছবি

ইউরোপকে সতর্ক করল রাশিয়া

ছবি

ওয়াকফ সংশোধনী আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

ছবি

তালেবান সরকারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছে জার্মানি

ছবি

১০ হাজার ইসরায়লি সেনাকে মানসিক রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে

ছবি

দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানে বিপুল সমর্থন, নারাজ যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল

ছবি

নেপালে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবিতে আবারও রাস্তায় জেন জি

ছবি

নেপালে বিক্ষোভে সহিংসতা: নিহত ৭২, আহত দুই হাজারের বেশি

ছবি

তেল কেনা বন্ধ করলেই রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে চার্লি কার্কের সমালোচনাকারীদের ওপর ক্ষুব্ধ আইনপ্রণেতারা

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়ার মহড়া ‘খারাপ পরিণতি’ ডেকে আনবে

ছবি

লন্ডনে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে এক লাখের বেশি মানুষ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ

ছবি

গাজা ছেড়েছে আরও আড়াই লাখ মানুষ

ছবি

বিপর্যস্ত নেপালের পর্যটন খাত, ২ দিনে ক্ষতি ২৫০০ কোটি রুপি

ছবি

নেপাল: দায়িত্ব নিয়েই নির্বাচনের তারিখ জানিয়ে দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান

ছবি

আফগানিস্তানে বন্দি থাকা মার্কিন নাগরিকদের বিষয় নিয়ে কাবুলে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা

ছবি

রাশিয়ার ড্রোন হামলা কোনো ভুল ছিল না: পোল্যান্ড

ছবি

উত্তর কোরিয়ায় বিদেশি চলচ্চিত্র দেখলেও মৃত্যুদণ্ড

ছবি

ইসরায়েলি হামলার পর ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী

ছবি

নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হলেন সুশীলা কারকি

ছবি

হামাসমুক্ত স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে ভোট

ছবি

কেন নেপালের এ সংকট দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

ছবি

পাকিস্তানে জঙ্গিদের হামলায় ১২ সেনা নিহত

ছবি

নেপালে নির্বাচন ৫ মার্চ

ছবি

জাতিসংঘে দুই-রাষ্ট্র সমাধানের ঘোষণায় বিপুল সমর্থন

ছবি

কঙ্গোতে পৃথক দুই নৌকা দুর্ঘটনায় ১৯৩ জনের মৃত্যু

ছবি

নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হলেন সুশীলা কারকি

ছবি

বিদেশি সিনেমা দেখায় উত্তর কোরিয়ায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বেড়েছে: জাতিসংঘ

ছবি

চার্লি কার্কের হত্যাকারীকে ধরিয়ে দিলে ১ লাখ ডলার পুরস্কার

ছবি

পশ্চিমবঙ্গের তরুণদের নেপাল থেকে শিক্ষা নেয়ার আহ্বান বিজেপি নেতার, পাল্টা একাধিক এফআইআর

ছবি

প্যালেস্টাইন বলে কোনো রাষ্ট্র থাকবে না, এ ভূমি আমাদের: নেতানিয়াহু

ছবি

ব্রাজিলে অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রের দায়ে বলসোনারোকে ২৭ বছরের কারাদণ্ড

ছবি

ভারতের ১৫তম উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন সিপি রাধাকৃষ্ণান

ছবি

গাজায় ত্রাণ শিবিরের পাহারায় ঘৃণাবাহী মার্কিন বাইকার গ্যাং

ছবি

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় একদিনে নিহত আরও ৭২ ফিলিস্তিনি

tab

news » international

বিশ্ব ব্যবস্থা নির্ধারণের ভোটযুদ্ধ আজ

সৈয়দ মুহাম্মদ আজম

মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪

বিশ্বের বৃহৎ ক্ষমতাধর পদের লড়াই আজ। সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ যুদ্ধও এটা। আছে অনাকাক্সিক্ষত এক ভয়। কঠিন অনিশ্চয়তা। আজ যুক্তরাষ্ট্রের ভোটযুদ্বে প্রধান দুই প্রার্থী ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির ডনাল্ড ট্রাম্প। তারা ছাড়াও আরও চার প্রার্থী নির্বাচনে লড়াই করছেন। তারা হলেন ৭১ বছর বয়সী কর্নেল ওয়েস্ট (স্বতন্ত্র), জিল স্টেইন (৭৪) গ্রিন পার্টির, চেজ অলিভার (৩৯) লিবারটেরিয়ান পার্টির এবং ক্লডিয়া দে লা ক্রুজ পার্টি ফর সোস্যালিজম অ্যান্ড লিবারেশন পার্টির প্রার্থী। কিন্তু তাদের নিয়ে খুব একটা আলোচনা নেই। তবে এই চার প্রার্থী কোন রাজ্যে কত ভোট পাচ্ছেন তা নির্ধারণ করে দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের আগামীর প্রেসিডেন্ট কে হবেন।

প্রায় ৪০ বছরের মধ্যে এবারেটা ‘সবচেয়ে বড় মহারণ’ অনেকেই বলছেন। আজ মূল নির্বাচন হলেও দেশটিতে আগাম ভোট শুরু হয়েছে আগেই। প্রায় সাড়ে সাত কোটির বেশি ভোটার ইতোমধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এবার যুক্তরাষ্ট্রে ভোটার সংখ্যা ২৪ কোটি ৪০ লাখ। এই নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে পুরো বিশ্বব্যবস্থা। বিশ্বের অর্থনীতি, রাজনীতি, কূটনীতি সবই ঘুরে যেতে পারে। এজন্য বিশ্বের কোটি কোটি চোখ বিশ্বমোড়ল যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাকিয়ে আছে।

মার্কিন মিত্র ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ, ইসরায়েলি তা-বে বিপর্যস্ত গাজা ও লেবানন, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে। ইরান-ইসরায়েলও যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। তাইওয়ান নিয়ে চীনের সঙ্গে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে মার্কিন প্রশাসনের। নতুন করে সংকট সৃষ্টি হয়েছে ভারত ও কানাডার মধ্যে। বাইডেন ও ভারতের মোদি প্রশাসনের মধ্যেও কূটনৈতিক টানাপোড়েন চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখার চেষ্টা হচ্ছে ব্রিকস জোটে।

গৃহযুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদে জর্জরিত সুদান, মালি, সোমালিয়া, কঙ্গো, বুরকিনাফাসোসহ আফ্রিকার বহু দেশ। মার্কিন নির্বাচন নিয়ে চিন্তায় ইউরোপও। এই অঞ্চলে বেশিরভাগ সমর্থন যাচ্ছে কমলা হ্যারিসের কাছে। ডনাল্ড ট্রাম্প জিতলে ইউরোপ সংকটে পড়বে বলে মনে করছেন সেখানকার নেতারা। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি এবং অনেক জোটে প্রধান ভূমিকা রয়েছে। ফলে দেশে দেশে গণতন্ত্রের সংকট বাড়বে না কমবে তাও নির্ধারিত হতে পারে এই নির্বাচনের মাধ্যমে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প ও কমলার নীতি অনেকটাই বিপরীতিমুখী। ডেমোক্র্যাট হ্যারিস জয়লাভ করলে বিশ্ব রাজনীতি, কূটনীতি ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে হোয়াইট হাউজের বর্তমান নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গিতে তেমন পরিবর্তন না-ও হতে পারে। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতির ধারাবাহিকতাই অক্ষুণœ রাখবেন তিনি। তবে পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন হতে পারে পুনরায় ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে।

তখন ট্রাম্পের নীতি হবে ‘আমেরিকাই প্রথম’। অর্থাৎ তার পররাষ্ট্র, অর্থনীতি ও যুদ্ধনীতি পরিচালিত হবে ‘আগে আমেরিকা, পরে বাকি বিশ্ব’ নীতিতে। বিশ্লেষকরা বলেছেন, ট্রাম্পের এই নীতির অর্থ হচ্ছে যেখানে মার্কিন স্বার্থ নেই, কিংবা তার স্বার্থ বিঘিœত হবে, সেক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে মিত্রদের স্বার্থকেও গুরুত্ব দেবেন না তিনি। আর ট্রাম্পের এই অবস্থানেই মূলত শঙ্কিত মার্কিন মিত্র দেশগুলো।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্প ও হ্যারিস উভয়েই ৪৯ শতাংশ করে ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন। সমানে সমান। শুধুমাত্র ২ শতাংশ ভোটার কোনো মতামত জানাননি। সমর্থকরা গণতন্ত্র সুসংহত করা, গর্ভপাত ইস্যুতে ট্রাম্পের ওপর বিরক্ত। এবং হ্যারিসের সমর্থকরা বেশিরভাগই মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। আবার ট্রাম্পের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থক বিশ্বাস করেন যে, জাতি ভুল পথে চলেছে। তারা বাইডেনের কর্মকা-ে প্রচ- বিরক্ত এবং পুনরায় ট্রাম্পকে ভোট দিতে চান।

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী বাঙালিরা একসময় মূলত ডেমোক্র্যাটদেরই বেশি ভোট দিত। এখন দিন পাল্টেছে। রিপাবলিকানদের সমর্থক বাঙালিদেরও দেখা মিলছে। তবে অনেকেই বলছেন, ডেমোক্র্যাট আর রিপাবলিকানদের মধ্যে খুব বড় কোনো পার্থক্য নেই। রিপাবলিকানরা অনেক বেশি ধনীবান্ধব। বিশেষ করে ট্রাম্প তো ধনীদের জন্য বিশেষ কর সুবিধা দেবেন বলে ঘোষণা করেছেন। সে তুলনায় ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় এলে গরীব মানুষের কিছুটা সুবিধা হয় বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু সেটা জনজীবনে কতোটা প্রভাব ফেলে, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।

মার্কিন নির্বাচনেও দক্ষিণ এশিয়ার মতো টাকার খেলার ভয়ঙ্কর শক্তি আছে। বিশেষ করে ধনী এবং শেতাঙ্গদের হাতেই রয়েছে ক্ষমতা। মিডিয়ার সিংহভাগও তাদের দখলে। এ সময় মিডিয়ার প্রভাবের কথা কে না জানে! ধনীরা যদি তাদের মতো করে দাবার ঘুঁটি চালতে চায়, তাহলে বাধা দেয়ার মতো যথেষ্ট অস্ত্র ডেমোক্রেটদের আছে কিনা, সেটাও প্রশ্ন।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন গণতান্ত্রিক। এ নির্বাচনে কোনো দাঙ্গা স্মরণকালে হয়েছে বলে জানা যায় না। কিন্তু ট্রাম্প এই ধারা শুরু করেছেন ২০২১ সালে। তাছাড়া তিনি নির্বাচিত হলেও আশঙ্কার ব্যাপার আছে। তার বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাট সরকার যেভাবে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তিনিও ঠিক একই রকম ব্যবস্থা নিতে পারেন। অর্থাৎ প্রতিহিংসার আশঙ্কা করছেন ডেমোক্রেট নেতারা। যদিও এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কড়াকড়ি করা হেেয়ছে।

back to top