দীর্ঘ চার বছরের জরুরি শাসনের পর, জুলাইয়ের শেষের দিকে মিায়ানমারের সেনা শাসক অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়। ঘোষণায় ২৮ ডিসেম্বর থেকে বহু ধাপের নির্বাচন আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। আর এরপর থেকেই জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং ঘন ঘন বিদেশ সফর করছেন। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে এ পর্যন্ত তিনি যতবার বিদেশ সফরে গিয়েছেন, গত ছয় মাসে তার তুলনায় অনেক বেশি বিদেশ সফর করেছেন।
মিন অং হ্লাইংয়ের এসব সফর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিতর্কিত নির্বাচনের জন্য সমর্থন জোগাড় করতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। গত ছয় মাসে তিনি চীন ও রাশিয়ায় দুবার করে সফর করেছেন। আর থাইল্যান্ড, বেলারুশ এবং সর্বশেষ কাজাখস্তানে একবার করে ভ্রমণ করেছেন।
এসব সফরে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। গত মার্চ মাসে এক প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের পর থেকেই বিভিন্ন দেশ সফর করার পরিকল্পনা করেন তিনি। ক্রাইসিস গ্রুপের সিনিয়র মিায়ানমার উপদেষ্টা রিচার্ড হর্সি বলেছেন, ‘এই বছর মিন অং হ্লাইংয়ের ঘন ঘন বিদেশ সফর তার বাড়তি আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন—তার বিরুদ্ধে উচ্চ পর্যায়ের হুমকি কমে গেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান উন্নত হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক একঘরে অবস্থা কিছুটা সহজ হয়েছে।’ তার এই মন্তব্য ইঙ্গিত করে যে সেনাবাহিনী কিছু শহরের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে।
জান্তা মুখপাত্র রয়টার্সের মন্তব্যের জন্য ফোন কলের জবাব দেননি। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম মিন অং হ্লাইংয়ের আন্তর্জাতিক সফরগুলোকে প্রথম পাতায় বড় করে প্রকাশ করেছে এবং সেগুলোকে দেশের জন্য ইতিবাচক উন্নয়ন হিসেবে বর্ণনা করেছে। জান্তা মুখপাত্র জাও মিন টুন রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমকে বলেছেন, সেনাপ্রধানের সর্বশেষ চীন, রাশিয়া ও কাজাখস্তান সফরে, তিনটি দেশই মিায়ানমারের নির্বাচনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।’
সেনা অভ্যুত্থান এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের পর মিায়ানমারকে একঘরে করে অনেক দেশ। কিছু দেশ মিায়ানমার জেনারেলদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এমনকি ১০ সদস্যবিশিষ্ট দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংস্থা আসিয়ান সম্মেলনেও মিন অং হ্লাইং এবং তার শীর্ষ মন্ত্রীদের নিষিদ্ধ করা হয়। আসিয়ানের অন্তর্ভুক্ত মিায়ানমারও।
অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন জাতীয় সশস্ত্র বিদ্রোহের মুখোমুখি হয়ে জান্তা প্রধানের নিজ দেশের ভেতরে চলাফেরাও ছিল খুব সীমিত। নির্বাচন ঘোষণার পরও যুদ্ধ চলমান রয়েছে। যুদ্ধ চলতে থাকায় ভোটগ্রহণ সম্ভবত দেশের প্রায় অর্ধেক অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ডজনখানেক বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছে কেবল নির্বাচিত সেনাপন্থি দলগুলো—যা পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা কুড়িয়েছে। পশ্চিমাদের মতে, এই নির্বাচন আসলে মিন অং হ্লাইংয়ের ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার জন্য একটি প্রহসন।
রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ছয় মাসে প্রায় সব বৈঠকেই বিদেশি নেতাদের কাছে মিন অং হ্লাইং সেনাবাহিনীর আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা জোর দিয়ে বলেছেন।
শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫
দীর্ঘ চার বছরের জরুরি শাসনের পর, জুলাইয়ের শেষের দিকে মিায়ানমারের সেনা শাসক অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়। ঘোষণায় ২৮ ডিসেম্বর থেকে বহু ধাপের নির্বাচন আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। আর এরপর থেকেই জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং ঘন ঘন বিদেশ সফর করছেন। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে এ পর্যন্ত তিনি যতবার বিদেশ সফরে গিয়েছেন, গত ছয় মাসে তার তুলনায় অনেক বেশি বিদেশ সফর করেছেন।
মিন অং হ্লাইংয়ের এসব সফর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিতর্কিত নির্বাচনের জন্য সমর্থন জোগাড় করতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। গত ছয় মাসে তিনি চীন ও রাশিয়ায় দুবার করে সফর করেছেন। আর থাইল্যান্ড, বেলারুশ এবং সর্বশেষ কাজাখস্তানে একবার করে ভ্রমণ করেছেন।
এসব সফরে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। গত মার্চ মাসে এক প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের পর থেকেই বিভিন্ন দেশ সফর করার পরিকল্পনা করেন তিনি। ক্রাইসিস গ্রুপের সিনিয়র মিায়ানমার উপদেষ্টা রিচার্ড হর্সি বলেছেন, ‘এই বছর মিন অং হ্লাইংয়ের ঘন ঘন বিদেশ সফর তার বাড়তি আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন—তার বিরুদ্ধে উচ্চ পর্যায়ের হুমকি কমে গেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান উন্নত হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক একঘরে অবস্থা কিছুটা সহজ হয়েছে।’ তার এই মন্তব্য ইঙ্গিত করে যে সেনাবাহিনী কিছু শহরের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে।
জান্তা মুখপাত্র রয়টার্সের মন্তব্যের জন্য ফোন কলের জবাব দেননি। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম মিন অং হ্লাইংয়ের আন্তর্জাতিক সফরগুলোকে প্রথম পাতায় বড় করে প্রকাশ করেছে এবং সেগুলোকে দেশের জন্য ইতিবাচক উন্নয়ন হিসেবে বর্ণনা করেছে। জান্তা মুখপাত্র জাও মিন টুন রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমকে বলেছেন, সেনাপ্রধানের সর্বশেষ চীন, রাশিয়া ও কাজাখস্তান সফরে, তিনটি দেশই মিায়ানমারের নির্বাচনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।’
সেনা অভ্যুত্থান এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের পর মিায়ানমারকে একঘরে করে অনেক দেশ। কিছু দেশ মিায়ানমার জেনারেলদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এমনকি ১০ সদস্যবিশিষ্ট দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংস্থা আসিয়ান সম্মেলনেও মিন অং হ্লাইং এবং তার শীর্ষ মন্ত্রীদের নিষিদ্ধ করা হয়। আসিয়ানের অন্তর্ভুক্ত মিায়ানমারও।
অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন জাতীয় সশস্ত্র বিদ্রোহের মুখোমুখি হয়ে জান্তা প্রধানের নিজ দেশের ভেতরে চলাফেরাও ছিল খুব সীমিত। নির্বাচন ঘোষণার পরও যুদ্ধ চলমান রয়েছে। যুদ্ধ চলতে থাকায় ভোটগ্রহণ সম্ভবত দেশের প্রায় অর্ধেক অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ডজনখানেক বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছে কেবল নির্বাচিত সেনাপন্থি দলগুলো—যা পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা কুড়িয়েছে। পশ্চিমাদের মতে, এই নির্বাচন আসলে মিন অং হ্লাইংয়ের ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার জন্য একটি প্রহসন।
রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ছয় মাসে প্রায় সব বৈঠকেই বিদেশি নেতাদের কাছে মিন অং হ্লাইং সেনাবাহিনীর আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা জোর দিয়ে বলেছেন।