ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে -এএফপি
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে হামাসকে রোববার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এই চুক্তি গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের অবসান ঘটাবে বলে তিনি মনে করছেন। যদিও সেই পরিকল্পনা ইসরায়েলকে গাজার কিছু অংশে স্বল্প মেয়াদে অবস্থানের সুযোগ করে দেবে। ফলে এই চুক্তি শেষ পর্যন্ত ইসরায়েলের আগ্রাসন থামিয়ে গাজায় শান্তি আনতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞ ও সমালোচকরা।
কারণ হিসেবে তারা মনে করছেন, গত বছর এমন একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পরও লেবাননে হামলা অব্যাহত রেখেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে সেটি বেশি দিন টেকেনি। এখন নতুন শান্তি পরিকল্পনার মধ্যেও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযান চলছে। যে কারণে এই চুক্তি আদতে যুদ্ধ থামাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আর যদি ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা ভেস্তে যায়, তবে ইসরায়েল অভিযান আরও জোরদার করবে, যা ইতোমধ্যে গাজাকে ধ্বংস করে দিয়েছে, প্রাণ গেছে ৬৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির। বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলের সমালোচনার মধ্যেও এটি ঘটবে। গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে জাতিসংঘের একটি কমিশন মানবাধিকার কর্মীদের কথার পুনরাবৃত্তি করে বলেছে, ইসরায়েলের গাজায় যা করছে তা আদতে গণহত্যা। এরপরই ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিতের প্রস্তাব করে। অগাস্টে জাতিসংঘ সমর্থিত একটি সংস্থা বলে, ইসরায়েলে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছে গাজায়।
সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলের মিত্র দেশ ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ফিলিস্তিনকে। তার আগে গত বছর নরওয়ে, স্পেন ও আয়ারল্যান্ড এই স্বীকৃতি দিয়েছে। ব্যক্তি হিসেবে বিভিন্ন দেশের নেতারাও ইসরায়েলের সমালোচনা করেছেন। গাজায় নৃশংসতা না থামালে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ গত মাসে বৈশ্বিক ক্রীড়া সংগঠনগুলো থেকে ইসরায়েলকে বহিষ্কারের আহ্বান জানান। মে মাসে স্লোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট নাতাশা পিরচ মুসার ইসরায়েলের আগ্রাসনকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দেন।
তাহলে এই দেশ ও সংগঠনগুলো একই অবস্থানে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়াই একত্রে ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণ থামানো এবং গাজা থেকে তাদের সরাতে পারবে?
বয়কট আর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার মত বিষয়গুলো কোনো কাজে আসবে? অথবা ব্যক্তি ভূমিকায় গাজায় আগ্রাসন বন্ধ করে শান্তি ফেরানো সম্ভব? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চারজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। তারা হলেন- ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক মাইকেল লিঙ্ক; ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধ্যাপক মাইকেল বেকার (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে কাজ করেছেন): সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ নিক কাল এবং লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ ও নিষেধাজ্ঞা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল বিয়ানচি।
জাতিসংঘ কী করতে পারে: আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক মাইকেল লিঙ্ক বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন থামাতে জাতিসংঘই হতে পারে সবথেকে কার্যকর পথ। জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে হামলা-আক্রমণ থামানোর উদাহরণও আছে।তিনি বলেন, “ইসরায়েলে ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘ কনভেনশন ও ১৯৯৮ সালের রোম সংবিধি লঙ্ঘন করেছে। এসব চুক্তিতে বিভিন্ন দেশ স্বাক্ষর করেছে। নিয়ম অনুযায়ী নৃশংসতা ও গণহত্যার ঘটনা থামাতে রাষ্ট্রগুলোর আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
“এখন পর্যন্ত সেই কাজটি কেবল করছে বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ ইয়েমেন (হুতিরা)। তারা ড্রোন ছুড়েছে, কেবল সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও জাহাজ চলাচল আটকে দিয়েছে।” ইতিহাসের বিভিন্ন যুদ্ধ সংঘাতে জাতিসংঘের ভূমিকা তুলে ধরে মাইকেল লিঙ্ক বলেন, ১৯৫০ সালে কোরিয়া যুদ্ধ থামাতে সাধারণ পরিষদ ‘ইউনাইটিং ফর পিস রেজোলিউশন পাস করে। এর আগে নিরাপত্তা পরিষদ উদ্যোগ নিলেও সোভিয়েত ইউনিয়নের ভিটোর কারণে তা প- হয়। তবে ‘ইউনাইটিং ফর পিস রেজোলিউশন’ সাধারণ পরিষদের শক্তিশালী সমর্থন পাওয়ার পর কোরিয়া সংঘাত বন্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের আইনি পথ খোলে। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাধীনতা ও স্থায়ী না হলেও একটি যুদ্ধবিরতির পথ তৈরি হয়ে যায়।
অধ্যাপক লিঙ্ক বলেন, “৭৫ বছর পরও সেই দৃষ্টান্ত ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি জাতিসংঘকে গাজায় সামরিক বাহিনী পাঠানোর কর্তৃত্ব দিতে পারে। মনে রাখবেন, এটি এমন একটি জায়গা, যার ব্যাপারে জাতিসংঘ রায় দিয়েছে, দখলকৃত অন্যান্য অঞ্চলের মত গাজাতেও ইসরায়েলের অবস্থানের কোনো জায়গা নেই। একবার ঢুকে পড়তে পারলে জাতিসংঘের বাহিনী মানবিক ত্রাণ সহায়তার কার্যক্রম চালাতে পারবে। অবকাঠামো পুনর্র্নিমাণ করতে পারবে। পানি, বিদ্যুতের মত পরিষেবা ঠিকঠাক করতে পারবে। সেইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারবে।”
তিনি বলেন, “জাতিসংঘ চার্টারের অনুচ্ছেদ ৬ অনুযায়ী নিয়ম লঙ্ঘনকারী সদস্যদের বের করে দিতে পারে এ সংস্থা। কিন্তু এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থন প্রয়োজন। ১৯৭০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জাতিসংঘ থেকে বের করে দেওয়ার বারবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য ভিটো দিলে তা সম্ভব হয়নি।
ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে -এএফপি
বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে হামাসকে রোববার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এই চুক্তি গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের অবসান ঘটাবে বলে তিনি মনে করছেন। যদিও সেই পরিকল্পনা ইসরায়েলকে গাজার কিছু অংশে স্বল্প মেয়াদে অবস্থানের সুযোগ করে দেবে। ফলে এই চুক্তি শেষ পর্যন্ত ইসরায়েলের আগ্রাসন থামিয়ে গাজায় শান্তি আনতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞ ও সমালোচকরা।
কারণ হিসেবে তারা মনে করছেন, গত বছর এমন একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পরও লেবাননে হামলা অব্যাহত রেখেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে সেটি বেশি দিন টেকেনি। এখন নতুন শান্তি পরিকল্পনার মধ্যেও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযান চলছে। যে কারণে এই চুক্তি আদতে যুদ্ধ থামাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আর যদি ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা ভেস্তে যায়, তবে ইসরায়েল অভিযান আরও জোরদার করবে, যা ইতোমধ্যে গাজাকে ধ্বংস করে দিয়েছে, প্রাণ গেছে ৬৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির। বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলের সমালোচনার মধ্যেও এটি ঘটবে। গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে জাতিসংঘের একটি কমিশন মানবাধিকার কর্মীদের কথার পুনরাবৃত্তি করে বলেছে, ইসরায়েলের গাজায় যা করছে তা আদতে গণহত্যা। এরপরই ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিতের প্রস্তাব করে। অগাস্টে জাতিসংঘ সমর্থিত একটি সংস্থা বলে, ইসরায়েলে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছে গাজায়।
সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলের মিত্র দেশ ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ফিলিস্তিনকে। তার আগে গত বছর নরওয়ে, স্পেন ও আয়ারল্যান্ড এই স্বীকৃতি দিয়েছে। ব্যক্তি হিসেবে বিভিন্ন দেশের নেতারাও ইসরায়েলের সমালোচনা করেছেন। গাজায় নৃশংসতা না থামালে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ গত মাসে বৈশ্বিক ক্রীড়া সংগঠনগুলো থেকে ইসরায়েলকে বহিষ্কারের আহ্বান জানান। মে মাসে স্লোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট নাতাশা পিরচ মুসার ইসরায়েলের আগ্রাসনকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দেন।
তাহলে এই দেশ ও সংগঠনগুলো একই অবস্থানে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়াই একত্রে ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণ থামানো এবং গাজা থেকে তাদের সরাতে পারবে?
বয়কট আর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার মত বিষয়গুলো কোনো কাজে আসবে? অথবা ব্যক্তি ভূমিকায় গাজায় আগ্রাসন বন্ধ করে শান্তি ফেরানো সম্ভব? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চারজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। তারা হলেন- ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক মাইকেল লিঙ্ক; ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধ্যাপক মাইকেল বেকার (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে কাজ করেছেন): সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ নিক কাল এবং লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ ও নিষেধাজ্ঞা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল বিয়ানচি।
জাতিসংঘ কী করতে পারে: আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক মাইকেল লিঙ্ক বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন থামাতে জাতিসংঘই হতে পারে সবথেকে কার্যকর পথ। জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে হামলা-আক্রমণ থামানোর উদাহরণও আছে।তিনি বলেন, “ইসরায়েলে ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘ কনভেনশন ও ১৯৯৮ সালের রোম সংবিধি লঙ্ঘন করেছে। এসব চুক্তিতে বিভিন্ন দেশ স্বাক্ষর করেছে। নিয়ম অনুযায়ী নৃশংসতা ও গণহত্যার ঘটনা থামাতে রাষ্ট্রগুলোর আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
“এখন পর্যন্ত সেই কাজটি কেবল করছে বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ ইয়েমেন (হুতিরা)। তারা ড্রোন ছুড়েছে, কেবল সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও জাহাজ চলাচল আটকে দিয়েছে।” ইতিহাসের বিভিন্ন যুদ্ধ সংঘাতে জাতিসংঘের ভূমিকা তুলে ধরে মাইকেল লিঙ্ক বলেন, ১৯৫০ সালে কোরিয়া যুদ্ধ থামাতে সাধারণ পরিষদ ‘ইউনাইটিং ফর পিস রেজোলিউশন পাস করে। এর আগে নিরাপত্তা পরিষদ উদ্যোগ নিলেও সোভিয়েত ইউনিয়নের ভিটোর কারণে তা প- হয়। তবে ‘ইউনাইটিং ফর পিস রেজোলিউশন’ সাধারণ পরিষদের শক্তিশালী সমর্থন পাওয়ার পর কোরিয়া সংঘাত বন্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের আইনি পথ খোলে। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাধীনতা ও স্থায়ী না হলেও একটি যুদ্ধবিরতির পথ তৈরি হয়ে যায়।
অধ্যাপক লিঙ্ক বলেন, “৭৫ বছর পরও সেই দৃষ্টান্ত ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি জাতিসংঘকে গাজায় সামরিক বাহিনী পাঠানোর কর্তৃত্ব দিতে পারে। মনে রাখবেন, এটি এমন একটি জায়গা, যার ব্যাপারে জাতিসংঘ রায় দিয়েছে, দখলকৃত অন্যান্য অঞ্চলের মত গাজাতেও ইসরায়েলের অবস্থানের কোনো জায়গা নেই। একবার ঢুকে পড়তে পারলে জাতিসংঘের বাহিনী মানবিক ত্রাণ সহায়তার কার্যক্রম চালাতে পারবে। অবকাঠামো পুনর্র্নিমাণ করতে পারবে। পানি, বিদ্যুতের মত পরিষেবা ঠিকঠাক করতে পারবে। সেইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারবে।”
তিনি বলেন, “জাতিসংঘ চার্টারের অনুচ্ছেদ ৬ অনুযায়ী নিয়ম লঙ্ঘনকারী সদস্যদের বের করে দিতে পারে এ সংস্থা। কিন্তু এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থন প্রয়োজন। ১৯৭০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জাতিসংঘ থেকে বের করে দেওয়ার বারবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য ভিটো দিলে তা সম্ভব হয়নি।