alt

গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তীব্র শীতের আতঙ্ক

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম : শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫

সবাই জানত কী ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু ঝড়ের সময় দক্ষিণ গাজার উপকূলে শত শত তাঁবুর বাসিন্দাদের তেমন কিছু করার ছিল না। ৬২ বছর বয়সী সাবাহ আল-ব্রিম তাঁর এক মেয়ে ও কয়েকজন নাতি-নাতনি নিয়ে তাদের বর্তমান আশ্রয়ে বসা অবস্থায় ছিলেন। এটা ছিল ত্রিপল ও কাঠের তৈরি অস্থায়ী স্থাপনা। গত সপ্তাহে যখন গাজাজুড়ে প্রবল বাতাস ও বৃষ্টিপাত শুরু হয়, তখন তারা এভাবেই চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন।

পরিস্থিতির বর্ণনা করত গিয়ে সাবাহ বলেন, ‘সবকিছু ভেঙে পড়েছিল। আমরা আশ্রয়স্থল মেরামত করেছিলাম। কিন্তু রাতে প্রবল বৃষ্টিতে আবার তা ভেঙে পড়ে। আমাদের সব জিনিসপত্র ভিজে যায়। বাতাস বয়ে যাওয়ার দিনটি আমাদের জন্য একটি কালো দিন ছিল।’ মূলত খান ইউনিসের বাসিন্দা সাবাহ বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরুর পর থেকে তিনি একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

দক্ষিণ গাজার সংকীর্ণ উপকূলীয় অঞ্চল আল-মাওয়াসিতে তাঁবু বানিয়ে বসবাস করছেন প্রায় পাঁচ লাখ ফিলিস্তিনি। তাদের জন্য আসন্ন শীত এক ভয়াবহ আতঙ্ক। কারণ, শীত মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নেই তাদের। না আছে ঠান্ডা বাতাস ঠেকানোর ঘর, না কোনো গরম কাপড়।

গতকাল বৃহস্পতিবার দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহের ঝড় গাজার ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনির মানবিক সংকটকে আরও একবার উন্মুক্ত করেছে। সহায়তা সংস্থাগুলো বলছে, এ বাস্তুচ্যুতদের জন্য আশ্রয় হলো সবচেয়ে জরুরি। গাজার বেশির ভাগ বাড়িঘর ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংস, অথবা বাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অনেকের বাড়ি ইসরায়েলের দখল করা ‘হলুদ রেখা’র ভেতরে। ওই স্থানে তারা আর যেতে পারেন না। গাজার আয়তন এখন আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। চাষের জমি নেই; বাসেরও জায়গা নেই। ঝড়ের পর খালি পায়ে শিশুরা কাদাযুক্ত মাটিতে চলাফেরা করে; নারীরা খোলা আকাশের নিচে রান্না করেন। কেউ কেউ ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন, এমনকি যেসব ভবন ধসের ঝুঁকিতে ছিল, সেগুলোতেও তারা গেছেন। গাজার বাসিন্দা ও মানবিক সহায়তা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ২০ দফায় গাজায় ‘পূর্ণ সহায়তা’ পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু যা পৌঁছাচ্ছে, তা একেবারেই অপর্যাপ্ত। আন্তর্জাতিক এক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা কি ভালো? হ্যাঁ, এই অর্থে যে, মানুষ আর অনাহারে মরছে না। এটা কি যথেষ্ট? একেবারেই না। আমাদের কাছে তাঁবু ও ত্রিপলের বিশাল মজুত আছে। কিন্তু আমরা সেগুলো (গাজার) ভেতরে আনতে পারছি না।’

ইসরায়েল মিসর থেকে রাফা স্থলবন্দর হয়ে গাজায় ত্রাণের ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেয় না। এ কারণে মিসর ও জর্ডান সীমান্তে শত শত ত্রাণবাহী ট্রাক আটকে আছে। ফলে উপত্যকায় নিত্যপণ্যের জোগানের ঘাটতি রয়েই গেছে। ফিলিস্তিনিদের কাছে নগদ অর্থ নেই। খাবার, ওষুধ বা দুর্লভ রান্নার গ্যাস কিনতে পারছেন না।

আলজাজিরা জানায়, গাজায় গতকাল বৃহস্পতিবার এক দিনে ইসরায়েলের হামলায় ১২ শিশু, আট নারীসহ ৩২ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। আহত হয়েছেন ৮৮ জন। এর মধ্যে দক্ষিণ গাজার বানি সুহেইল এলাকায় বিমান হামলায় তিনজন নিহত হন। খান ইউনিসের আবাসান আল-ক্যাবিরায় একজন নিহত হয়েছেন। গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরায়েল ৩১২ জনকে হত্যা করেছে; ৭৬০ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে,আল-জাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খুদারি বৃহস্পতিবার গাজা সিটি থেকে জানান, ইসরায়েলি সৈন্যরা শুজায়েয়ার পূর্বাঞ্চলে নতুন অবস্থান চিহ্নিত করতে হলুদ রঙের ব্লক ও সাইনবোর্ড বসাচ্ছিল। খুদারি বলেন, ‘তবে পুরো সীমানা চিহ্নিত করা হয়নি। ফলে অনেক ফিলিস্তিনি জানেই না ঠিক কোথায় রয়েছে এই লাইন।’ এই প্রতিবেদক আরও বলেন, ‘শুজায়েয়ায় নতুন অগ্রসরতার ফলে আরও বেশি মানুষ তাদের ঘরে ফিরতে পারছে না। মানুষ বলছে, তাদের ধীরে ধীরে পশ্চিম দিকে ঠেলে এক খাঁচার মধ্যে আটকে ফেলা হচ্ছে।’

হলুদ রেখা লঙ্ঘনের এই খবর নিয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে পুরো গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা ফের তীব্র হয়ে উঠেছে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় নতুন আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও ৮৮ জন।

চিকিৎসকরা জানান, খান ইউনিসের পূর্বে বানি সুউহেইলার এক বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনজন নিহত হয়েছে, নিহতদের মধ্যে এক শিশু কন্যাও ছিল। আহত হয়েছে আরও ১৫ জন। আল-জাজিরার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে ইসরায়েল অন্তত ৪০০ বার এই চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। ৩৬ বছর বয়সী বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি মোহাম্মদ হামদুন্না এএফপিকে বলেন, ‘প্রতিদিনই মানুষ মরছে, গোলাবর্ষণ থামে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো তাঁবুতে থাকি। শহরগুলো ধ্বংসস্তূপ, সব সীমান্ত বন্ধ, জীবনের ন্যূনতম চাহিদাগুলোও নেই।’

ছবি

তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য: বন্ধ শত শত স্কুল, ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়

ছবি

ডিসেম্বর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় কম বয়সীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ

ছবি

তেল অন্বেষণে সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ বানাবে পাকিস্তান

ছবি

ইউক্রেনকে পুতিনের কাছে আত্মসমর্পণ করতেই কি যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাব

ছবি

ব্রাজিলে জলবায়ু সম্মেলনস্থলে আগুন, আলোচনা স্থগিত

ছবি

রুশ বাহিনীর হামলায় ইউক্রেনের এক শহরে এক রাতে নিহত ২৫

ছবি

আগামী বছর জলবায়ু সম্মেলন কপ৩১ আয়োজনের দায়িত্ব পেল তুরস্ক

ছবি

ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে নতুন মার্কিন কাঠামো, স্বস্তিতে নেই জেলেনস্কি

ছবি

ভারতকে ৯৩ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

দুই ধাপে চুক্তি সম্পন্ন করতে চায় ব্রাজিল

ছবি

প্রতিষ্ঠানটি আসলে চালাচ্ছে কারা

ছবি

পশ্চিম ইউক্রেইনের টার্নোপিলে রাশিয়ার ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা: শিশু সহ নিহত ২৫

ছবি

রাখাইনে সংঘাত তীব্র, আরাকান আর্মির হামলায় ৩০ জান্তা সেনা নিহত

ছবি

রাখাইনে সংঘাত তীব্র, আরাকান আর্মির হামলায় ৩০ জান্তা সেনা নিহত

ছবি

মহাকাশে আরও তীব্র হচ্ছে সামরিক প্রতিযোগিতা

ছবি

গাজায় ঐতিহাসিক প্রাসাদ ধ্বংস, ২০ হাজারের বেশি প্রত্নবস্তু লুট

ছবি

হামাসকে গাজা থেকে বহিষ্কারের আহ্বান নেতানিয়াহুর

ছবি

সৌদি আরবকে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ঘোষণা করলেন ট্রাম্প

ছবি

সংবিধান সংশোধনীর পর পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের হাতে কত ক্ষমতা গেল

ছবি

ভারতীয়দের ভিসামুক্ত প্রবেশ বন্ধ করছে ইরান

ছবি

ব্রিটেনে নতুন আশ্রয়নীতি, ক্ষমতাসীন দলের ভেতরেই তীব্র আপত্তি

ছবি

এআই অন্ধভাবে বিশ্বাস করবেন না: সুন্দর পিচাই

ছবি

আফ্রিকার ৬ দেশে সেনা উপস্থিতি বাড়াচ্ছে রাশিয়া

ছবি

তহবিল ঘাটতি, প্রকট হচ্ছে ক্ষুধা সংকট, জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

ছবি

গাজা নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে কী আছে

ছবি

ভারতে ২৬টি হামলার নেতৃত্বদানকারী শীর্ষ মাওবাদী কমান্ডার হিদমা অভিযানে নিহত

ছবি

সড়ক দুর্ঘটনায় সৌদি আরবে ৪২ ভারতীয় ওমরাহযাত্রী নিহত

ছবি

ভেনেজুয়েলায় মাদুরোকে উৎখাতের প্রচেষ্টা ট্রাম্পের!

ছবি

ডান-বামে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে দ্বিতীয় দফায় গড়াল চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

ছবি

পাকিস্তানের ওপর অর্থনৈতিক নির্ভরতা কমাতে চায় আফগানিস্তান

ছবি

তাইওয়ান আক্রান্ত হলে চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাবে জাপান

ছবি

যুদ্ধবিরতির এক মাস পরও গাজার সুড়ঙ্গগুলোয় কেন আটকে আছেন হামাস

ছবি

শার্লটে অবৈধ অভিবাসীবিরোধী ফেডারেল অভিযান শুরু

ছবি

এবার মেক্সিকোতে জেন-জি ধাঁচে বিক্ষোভ

ছবি

সৌদি আরবে এক সপ্তাহে ২২ হাজারের বেশি বিদেশি গ্রেপ্তার

ছবি

ফিলিপাইনে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ, প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি

tab

গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তীব্র শীতের আতঙ্ক

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম

শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫

সবাই জানত কী ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু ঝড়ের সময় দক্ষিণ গাজার উপকূলে শত শত তাঁবুর বাসিন্দাদের তেমন কিছু করার ছিল না। ৬২ বছর বয়সী সাবাহ আল-ব্রিম তাঁর এক মেয়ে ও কয়েকজন নাতি-নাতনি নিয়ে তাদের বর্তমান আশ্রয়ে বসা অবস্থায় ছিলেন। এটা ছিল ত্রিপল ও কাঠের তৈরি অস্থায়ী স্থাপনা। গত সপ্তাহে যখন গাজাজুড়ে প্রবল বাতাস ও বৃষ্টিপাত শুরু হয়, তখন তারা এভাবেই চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন।

পরিস্থিতির বর্ণনা করত গিয়ে সাবাহ বলেন, ‘সবকিছু ভেঙে পড়েছিল। আমরা আশ্রয়স্থল মেরামত করেছিলাম। কিন্তু রাতে প্রবল বৃষ্টিতে আবার তা ভেঙে পড়ে। আমাদের সব জিনিসপত্র ভিজে যায়। বাতাস বয়ে যাওয়ার দিনটি আমাদের জন্য একটি কালো দিন ছিল।’ মূলত খান ইউনিসের বাসিন্দা সাবাহ বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরুর পর থেকে তিনি একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

দক্ষিণ গাজার সংকীর্ণ উপকূলীয় অঞ্চল আল-মাওয়াসিতে তাঁবু বানিয়ে বসবাস করছেন প্রায় পাঁচ লাখ ফিলিস্তিনি। তাদের জন্য আসন্ন শীত এক ভয়াবহ আতঙ্ক। কারণ, শীত মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নেই তাদের। না আছে ঠান্ডা বাতাস ঠেকানোর ঘর, না কোনো গরম কাপড়।

গতকাল বৃহস্পতিবার দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহের ঝড় গাজার ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনির মানবিক সংকটকে আরও একবার উন্মুক্ত করেছে। সহায়তা সংস্থাগুলো বলছে, এ বাস্তুচ্যুতদের জন্য আশ্রয় হলো সবচেয়ে জরুরি। গাজার বেশির ভাগ বাড়িঘর ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংস, অথবা বাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অনেকের বাড়ি ইসরায়েলের দখল করা ‘হলুদ রেখা’র ভেতরে। ওই স্থানে তারা আর যেতে পারেন না। গাজার আয়তন এখন আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। চাষের জমি নেই; বাসেরও জায়গা নেই। ঝড়ের পর খালি পায়ে শিশুরা কাদাযুক্ত মাটিতে চলাফেরা করে; নারীরা খোলা আকাশের নিচে রান্না করেন। কেউ কেউ ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন, এমনকি যেসব ভবন ধসের ঝুঁকিতে ছিল, সেগুলোতেও তারা গেছেন। গাজার বাসিন্দা ও মানবিক সহায়তা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ২০ দফায় গাজায় ‘পূর্ণ সহায়তা’ পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু যা পৌঁছাচ্ছে, তা একেবারেই অপর্যাপ্ত। আন্তর্জাতিক এক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা কি ভালো? হ্যাঁ, এই অর্থে যে, মানুষ আর অনাহারে মরছে না। এটা কি যথেষ্ট? একেবারেই না। আমাদের কাছে তাঁবু ও ত্রিপলের বিশাল মজুত আছে। কিন্তু আমরা সেগুলো (গাজার) ভেতরে আনতে পারছি না।’

ইসরায়েল মিসর থেকে রাফা স্থলবন্দর হয়ে গাজায় ত্রাণের ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেয় না। এ কারণে মিসর ও জর্ডান সীমান্তে শত শত ত্রাণবাহী ট্রাক আটকে আছে। ফলে উপত্যকায় নিত্যপণ্যের জোগানের ঘাটতি রয়েই গেছে। ফিলিস্তিনিদের কাছে নগদ অর্থ নেই। খাবার, ওষুধ বা দুর্লভ রান্নার গ্যাস কিনতে পারছেন না।

আলজাজিরা জানায়, গাজায় গতকাল বৃহস্পতিবার এক দিনে ইসরায়েলের হামলায় ১২ শিশু, আট নারীসহ ৩২ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। আহত হয়েছেন ৮৮ জন। এর মধ্যে দক্ষিণ গাজার বানি সুহেইল এলাকায় বিমান হামলায় তিনজন নিহত হন। খান ইউনিসের আবাসান আল-ক্যাবিরায় একজন নিহত হয়েছেন। গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরায়েল ৩১২ জনকে হত্যা করেছে; ৭৬০ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে,আল-জাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খুদারি বৃহস্পতিবার গাজা সিটি থেকে জানান, ইসরায়েলি সৈন্যরা শুজায়েয়ার পূর্বাঞ্চলে নতুন অবস্থান চিহ্নিত করতে হলুদ রঙের ব্লক ও সাইনবোর্ড বসাচ্ছিল। খুদারি বলেন, ‘তবে পুরো সীমানা চিহ্নিত করা হয়নি। ফলে অনেক ফিলিস্তিনি জানেই না ঠিক কোথায় রয়েছে এই লাইন।’ এই প্রতিবেদক আরও বলেন, ‘শুজায়েয়ায় নতুন অগ্রসরতার ফলে আরও বেশি মানুষ তাদের ঘরে ফিরতে পারছে না। মানুষ বলছে, তাদের ধীরে ধীরে পশ্চিম দিকে ঠেলে এক খাঁচার মধ্যে আটকে ফেলা হচ্ছে।’

হলুদ রেখা লঙ্ঘনের এই খবর নিয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে পুরো গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা ফের তীব্র হয়ে উঠেছে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় নতুন আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও ৮৮ জন।

চিকিৎসকরা জানান, খান ইউনিসের পূর্বে বানি সুউহেইলার এক বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনজন নিহত হয়েছে, নিহতদের মধ্যে এক শিশু কন্যাও ছিল। আহত হয়েছে আরও ১৫ জন। আল-জাজিরার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে ইসরায়েল অন্তত ৪০০ বার এই চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। ৩৬ বছর বয়সী বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি মোহাম্মদ হামদুন্না এএফপিকে বলেন, ‘প্রতিদিনই মানুষ মরছে, গোলাবর্ষণ থামে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো তাঁবুতে থাকি। শহরগুলো ধ্বংসস্তূপ, সব সীমান্ত বন্ধ, জীবনের ন্যূনতম চাহিদাগুলোও নেই।’

back to top