শ্রীলঙ্কায় প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ার বয়ে নিয়ে আসা ভারী বৃষ্টিতে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা, ভূমিধসে অন্তত ৪১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৩৩৬ জন।
দেশটির মধ্যাঞ্চলের বাসিন্দা নওয়াজ নাশরা স্মরণ করেন কীভাবে তিনি নিজেকে ও তার তিন বছর বয়সী কন্যাকে দুর্যোগের মধ্যে তার বাড়িতে আঘাত হানা ভূমিধস থেকে রক্ষা করেছিলেন। কন্যাকে বিছানার একটি চাদর দিয়ে মুড়ে নিয়ে দৌঁড়ে ঘর ছেড়ে পালান তিনি। গত শুক্রবার রাতে নাশরা ও তার সঙ্গে বসবাস করা তার গর্ভবতী বোন পরবর্তী ২০ মিনিট ধরে আলওয়াতুগোদা গ্রামের পাহাড়ের ঢাল দিয়ে নামতে থাকেন, কখনো কখনো হাঁটু পর্যন্ত কাঁদায় দেবে যায় তাদের পা, পরে আরও নিচে একটি মসজিদে পৌঁছাতে সক্ষম হন তারা। সেখানেই রাতটি পার করেন।
রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘ঘুটঘুটে অন্ধকার, তার মধ্যে আমরা শুধু বজ্রপাতের মতো শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। পাশের বাড়িটা আমাদের চোখের সামনেই ভেঙে পড়ে। কাউকে সতর্ক করার মতো কোনো সময় ছিল না।’
গতকাল মঙ্গলবার ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ারের তাণ্ডবে এই এলাকার প্রায় ১০টি বাড়ি উড়ে যায় এবং অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সম্প্রতি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রাণঘাতী কয়েকটি ঝড় বয়ে গেছে। এসব ঝড়ে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের বিশাল এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আলওয়াতুগোদা গ্রাম যেখানে অবস্থিত শ্রীলঙ্কার সেই ক্যান্ডি অঞ্চলে ৮৮ জনের মৃত্যু নথিবদ্ধ করা হয়েছে। এটি দেশটির এক অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা। এখানে নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত দেড়শ’ মানুষ। ক্যান্ডি অঞ্চলের ২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে ১৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুরো দেশজুড়ে ৩৩৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ১২ লাখ মানুষ। যেসব এলাকায় ভূমিধস হয়েছে সেখানে মাটিতে চাপা পড়া মৃতদেহ উদ্ধারে শত শত সেনা ও পুলিশ সদস্য কাজ করছেন।
পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটি, পাথর ও গাছের ভেঙে পড়া ডালসহ রাস্তায় রাস্তায় জমে থাকা বিভিন্ন আবর্জনা সরাতে কর্তৃপক্ষ গত মঙ্গলবার বুলডোজার ও অন্যান্য ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টেলিযোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতেও কাজ শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় প্রবল বাতাসে এসব সরবরাহ লাইন বিচ্ছিন হয়ে গিয়েছিল।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
শ্রীলঙ্কায় প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ার বয়ে নিয়ে আসা ভারী বৃষ্টিতে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা, ভূমিধসে অন্তত ৪১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৩৩৬ জন।
দেশটির মধ্যাঞ্চলের বাসিন্দা নওয়াজ নাশরা স্মরণ করেন কীভাবে তিনি নিজেকে ও তার তিন বছর বয়সী কন্যাকে দুর্যোগের মধ্যে তার বাড়িতে আঘাত হানা ভূমিধস থেকে রক্ষা করেছিলেন। কন্যাকে বিছানার একটি চাদর দিয়ে মুড়ে নিয়ে দৌঁড়ে ঘর ছেড়ে পালান তিনি। গত শুক্রবার রাতে নাশরা ও তার সঙ্গে বসবাস করা তার গর্ভবতী বোন পরবর্তী ২০ মিনিট ধরে আলওয়াতুগোদা গ্রামের পাহাড়ের ঢাল দিয়ে নামতে থাকেন, কখনো কখনো হাঁটু পর্যন্ত কাঁদায় দেবে যায় তাদের পা, পরে আরও নিচে একটি মসজিদে পৌঁছাতে সক্ষম হন তারা। সেখানেই রাতটি পার করেন।
রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘ঘুটঘুটে অন্ধকার, তার মধ্যে আমরা শুধু বজ্রপাতের মতো শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। পাশের বাড়িটা আমাদের চোখের সামনেই ভেঙে পড়ে। কাউকে সতর্ক করার মতো কোনো সময় ছিল না।’
গতকাল মঙ্গলবার ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ারের তাণ্ডবে এই এলাকার প্রায় ১০টি বাড়ি উড়ে যায় এবং অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সম্প্রতি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রাণঘাতী কয়েকটি ঝড় বয়ে গেছে। এসব ঝড়ে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের বিশাল এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আলওয়াতুগোদা গ্রাম যেখানে অবস্থিত শ্রীলঙ্কার সেই ক্যান্ডি অঞ্চলে ৮৮ জনের মৃত্যু নথিবদ্ধ করা হয়েছে। এটি দেশটির এক অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা। এখানে নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত দেড়শ’ মানুষ। ক্যান্ডি অঞ্চলের ২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে ১৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুরো দেশজুড়ে ৩৩৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ১২ লাখ মানুষ। যেসব এলাকায় ভূমিধস হয়েছে সেখানে মাটিতে চাপা পড়া মৃতদেহ উদ্ধারে শত শত সেনা ও পুলিশ সদস্য কাজ করছেন।
পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটি, পাথর ও গাছের ভেঙে পড়া ডালসহ রাস্তায় রাস্তায় জমে থাকা বিভিন্ন আবর্জনা সরাতে কর্তৃপক্ষ গত মঙ্গলবার বুলডোজার ও অন্যান্য ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টেলিযোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতেও কাজ শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় প্রবল বাতাসে এসব সরবরাহ লাইন বিচ্ছিন হয়ে গিয়েছিল।