বিশ্ব যখন করোনায় নাকাল, ঠিক সেই সময় লিংকডইনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) দায়িত্ব নেন রায়ান রোসলানস্কি। তা ছিলো ২০২০ সালের কথা। তার আমলে করোনা মহামারির মধ্যেও পেশাদারদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির বিস্তৃতি আগের চেয়ে অনেক বেড়ে যায়। হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউয়ের সঙ্গে সম্প্রতি এসব নিয়েই কথা বলেছেন রায়ান।
লিংকডইনের সিইওর দায়িত্ব পাওয়া আমার জন্য বিরাট গৌরবের বিষয়। এ পর্যন্ত আসার পেছনে তিনটি বিষয়ের কথা আলাদা করে বলতে চাই।
প্রথমত : সৌভাগ্য। আমার সৌভাগ্য যে খুব ভালো একটি সময়ে, খুব আদর্শ একটি পরিবারে জন্মেছি। আমার পরিবার আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছে, সব চাহিদা পূরণ করেছে, দারুণ শিক্ষা দিয়েছে। দ্বিতীয় বিষটিও সৌভাগ্য। আমি পড়াশোনার বেলায় সৌভাগ্যবান ছিলাম। ১৯৯৬ সালের মতো দারুণ এক সময়ে আমি স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠি। ওই সময় সবে ইন্টারনেট মানুষের হাতের নাগালে আসতে শুরু করেছে। আমি নিজে নিজে কোডিং শিখতে শুরু করি, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে শুরু করি, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে শুরু করি। এই যে ছাত্রজীবনেই এমন দুর্দান্ত সুযোগগুলো পেলাম, এ তো ভাগ্যের জোরেই।
এবার আসি তৃতীয় বিষয়ে। এটিও আমি বলব সৌভাগ্য। ভাগ্যবান বলেই না দীর্ঘদিন ইয়াহুর মতো প্রতিষ্ঠানে জুনিয়র প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে জেফ ওয়েনারের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। এই জেফ ওয়েনারই পরে লিংকডইনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হয়েছিলেন। আর আমি ছিলাম তার অধীনে কাজ করা প্রথম কর্মী। অনেক দ্বিধা-দোটানা পেরিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। আর জীবনে এমন সব বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় ভাগ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমার বেলাতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ভাগ্যবান বলেই আজ এ পর্যায়ে পৌঁছাতে পেরেছি।
হাইব্রিড দুনিয়া : লিংকডইনে আমরা যে নীতিটি জোরালোভাবে মেনে চলি, তা হলো, কর্মক্ষেত্রে আমরা একে অপরকে বিশ্বাস করি। একে অন্যের খেয়াল রাখি। কোভিড-পরবর্তী নতুন স্বাভাবিক নিয়মে এটাই আমাদের ‘হাইব্রিড ওয়ার্ক’–এর মূলনীতি। হাইব্রিড ওয়ার্ক হলো স্থান নির্বিশেষে যেকোনো জায়গা থেকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নীতি, বিশ্বের অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানই এখন যা অনুসরণ করছে। এখন আমার অফিসের কোন কর্মী কোথায় বসে কাজ করছেন, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমার দেখার বিষয় হলো, সহকর্মীরা আমার মতো করেই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য আর নীতিকে ধারণ করছেন কি না।
আমি আমার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মা-বাবা নই, তাঁদের অভিভাবকও নই। তাদের কাজের তদারকি করা, অফিসে আসা-যাওয়ার সময়ের হিসাব করা এখন ভীষণ সেকেলে ব্যাপার। আমি আমার কর্মীদের ওপর আস্থা রাখি যে তাঁরা তাঁদের কাজটা সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে করবেন এবং সেরাটাই করবেন। এই আস্থাটুকু দিয়েই আমরা অনেকটা পথ এসেছি, অনেক সাফল্য পেয়েছি।
আমাদের অফিস সব সময় খোলা থাকে। অনেক কর্মী অফিসে এসে কাজ করেন। তাদের কাজের সুবিধার জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা অফিসে আছে। কিন্তু আমরা দেখেছি, অফিসে আসার বাধ্যবাধকতার চেয়ে ‘হাইব্রিড ওয়ার্ক’ নীতিতেই কর্মীদের সেরাটা পাওয়া যায়।
একটা মজার কথা বলি, কিছুদিন আগে লন্ডনে মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলার সঙ্গে আলাপ করছিলাম। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া মাইক্রোসফটের তথ্য বলছে, কোভিড–পরবর্তী নতুন স্বাভাবিকে ‘হাইব্রিড ওয়ার্ক’ নীতিতে কর্মীদের সক্ষমতা আগের চেয়ে ৮৭ শতাংশ বেড়ে গেছে। কিন্তু অপর দিকে ৮৫ শতাংশ ব্যবস্থাপক মনে করেন, কর্মীদের কার্যক্ষমতা আগের চেয়ে কমে গেছে।
এই বিপরীতমুখী মন্তব্যের কারণ কী হতে পারে? আমি মনে করি, কয়েক বছর আগে সবাই যখন অফিসে বসে কাজ করতেন, তখন ব্যবস্থাপকের কাজ ছিল ঘুরে ঘুরে সবার কাজ ও অবস্থানের তদারকি করা। অর্থাৎ, কর্মীকে সশরীর চোখে দেখে নিশ্চিত করা হতো, তিনি কাজের মধ্যে আছেন কি নেই। ব্যবস্থাপকদের কাজের বড় একটা অংশই ছিল অফিসে সবার উপস্থিতি নিশ্চিত করা। কিন্তু বর্তমান হাইব্রিড ওয়ার্ক নীতিতে ব্যবস্থাপনা আর নেতৃত্বের ধরন অনেকটাই বদলে গেছে। আমি মনে করি, কর্মীর শারীরিকভাবে অফিসে উপস্থিতির চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। অফিসে উপস্থিতির চেয়েও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে ওই কর্মী আদতে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও নীতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন কি না। শারীরিক উপস্থিতির চেয়ে, প্রতিষ্ঠানের জন্য তার নৈতিক অবস্থান নিশ্চিত করাই হাইব্রিড ওয়ার্কের যুগে সবচেয়ে কার্যকরী। প্রক্রিয়ার চেয়ে আমাদের বেশি মনযোগ দিতে হবে ফলাফলে। পরিষ্কার থাকতে হবে নিজেদের লক্ষ্যের ব্যাপারে। আমরা আসলে কী চাই? কীভাবে চাই? কর্মীরা নিজের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করছেন কি না, সাফল্য চাইলে সেদিকেই আমাদের নজর দিতে হবে। সেটা তিনি অফিসে বসেই আনুন বা অফিসের বাইরে থেকে, তা নিয়ে ব্যবস্থাপকের মাথা ঘামানোর কারণ নেই।
নেতৃত্ব : বর্তমান সময়ে নেতৃত্ব দেওয়া ভীষণ কঠিন, চ্যালেঞ্জিং। তবে একজন সফল নেতা প্রতিকূল সময়ের মধ্যেও সুযোগ বের করে নিতে পারেন। প্রশ্ন আসতে পারে, কী করে সফল নেতা হওয়া যায়। নেতৃত্ব দুভাবে দেওয়া যায়। এক. সহনশীল নেতা হয়ে। দুই. প্রতিক্রিয়াশীল নেতা হয়ে। বিশ্বাস করুন, সিইও হিসেবে প্রতিদিন অন্তত এমন ১০টি জটিল সিদ্ধান্ত আমাকে নিতে হয়, যেসবের মুখোমুখি আমি জীবনেও হইনি। সফল হওয়ার টোটকা তো দিতে পারব না, তবে এটা বলতে পারব যে আমি ওই ১০ ধরনের জটিল সিদ্ধান্ত কীভাবে নিই। আমি সিদ্ধান্তগুলো নিই সহনশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে। প্রতিকূল অবস্থায় অনেক নেতাই হয়তো মিইয়ে যান, গুটিয়ে আনেন কাজের পরিসর। কিন্তু সহনশীল নেতা প্রতিকূল অবস্থাতে আরও সহিষ্ণু হয়ে ওঠেন। তাঁরা পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু থমকে যান না, থামতে দেন না।
আর এই সহনশীল নেতৃত্বেই একজন দলনেতা দক্ষতাকে সব সময় এগিয়ে রাখেন। ডিগ্রি, সনদ, সুপারিশ দিয়ে দক্ষতা মূল্যায়ন এখন সেকেলে ধারণা। যে নেতারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন, সফলতা তাদের হাতেই ধরা দিয়েছে। সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক পদে বসাতে পারলে বিশ্বের শ্রমবাজারে সমতা আসবে।
সূত্র: হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ
ইংরেজি থেকে অনূদিত
সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩
বিশ্ব যখন করোনায় নাকাল, ঠিক সেই সময় লিংকডইনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) দায়িত্ব নেন রায়ান রোসলানস্কি। তা ছিলো ২০২০ সালের কথা। তার আমলে করোনা মহামারির মধ্যেও পেশাদারদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির বিস্তৃতি আগের চেয়ে অনেক বেড়ে যায়। হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউয়ের সঙ্গে সম্প্রতি এসব নিয়েই কথা বলেছেন রায়ান।
লিংকডইনের সিইওর দায়িত্ব পাওয়া আমার জন্য বিরাট গৌরবের বিষয়। এ পর্যন্ত আসার পেছনে তিনটি বিষয়ের কথা আলাদা করে বলতে চাই।
প্রথমত : সৌভাগ্য। আমার সৌভাগ্য যে খুব ভালো একটি সময়ে, খুব আদর্শ একটি পরিবারে জন্মেছি। আমার পরিবার আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছে, সব চাহিদা পূরণ করেছে, দারুণ শিক্ষা দিয়েছে। দ্বিতীয় বিষটিও সৌভাগ্য। আমি পড়াশোনার বেলায় সৌভাগ্যবান ছিলাম। ১৯৯৬ সালের মতো দারুণ এক সময়ে আমি স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠি। ওই সময় সবে ইন্টারনেট মানুষের হাতের নাগালে আসতে শুরু করেছে। আমি নিজে নিজে কোডিং শিখতে শুরু করি, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে শুরু করি, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে শুরু করি। এই যে ছাত্রজীবনেই এমন দুর্দান্ত সুযোগগুলো পেলাম, এ তো ভাগ্যের জোরেই।
এবার আসি তৃতীয় বিষয়ে। এটিও আমি বলব সৌভাগ্য। ভাগ্যবান বলেই না দীর্ঘদিন ইয়াহুর মতো প্রতিষ্ঠানে জুনিয়র প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে জেফ ওয়েনারের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। এই জেফ ওয়েনারই পরে লিংকডইনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হয়েছিলেন। আর আমি ছিলাম তার অধীনে কাজ করা প্রথম কর্মী। অনেক দ্বিধা-দোটানা পেরিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। আর জীবনে এমন সব বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় ভাগ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমার বেলাতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ভাগ্যবান বলেই আজ এ পর্যায়ে পৌঁছাতে পেরেছি।
হাইব্রিড দুনিয়া : লিংকডইনে আমরা যে নীতিটি জোরালোভাবে মেনে চলি, তা হলো, কর্মক্ষেত্রে আমরা একে অপরকে বিশ্বাস করি। একে অন্যের খেয়াল রাখি। কোভিড-পরবর্তী নতুন স্বাভাবিক নিয়মে এটাই আমাদের ‘হাইব্রিড ওয়ার্ক’–এর মূলনীতি। হাইব্রিড ওয়ার্ক হলো স্থান নির্বিশেষে যেকোনো জায়গা থেকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নীতি, বিশ্বের অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানই এখন যা অনুসরণ করছে। এখন আমার অফিসের কোন কর্মী কোথায় বসে কাজ করছেন, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমার দেখার বিষয় হলো, সহকর্মীরা আমার মতো করেই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য আর নীতিকে ধারণ করছেন কি না।
আমি আমার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মা-বাবা নই, তাঁদের অভিভাবকও নই। তাদের কাজের তদারকি করা, অফিসে আসা-যাওয়ার সময়ের হিসাব করা এখন ভীষণ সেকেলে ব্যাপার। আমি আমার কর্মীদের ওপর আস্থা রাখি যে তাঁরা তাঁদের কাজটা সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে করবেন এবং সেরাটাই করবেন। এই আস্থাটুকু দিয়েই আমরা অনেকটা পথ এসেছি, অনেক সাফল্য পেয়েছি।
আমাদের অফিস সব সময় খোলা থাকে। অনেক কর্মী অফিসে এসে কাজ করেন। তাদের কাজের সুবিধার জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা অফিসে আছে। কিন্তু আমরা দেখেছি, অফিসে আসার বাধ্যবাধকতার চেয়ে ‘হাইব্রিড ওয়ার্ক’ নীতিতেই কর্মীদের সেরাটা পাওয়া যায়।
একটা মজার কথা বলি, কিছুদিন আগে লন্ডনে মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলার সঙ্গে আলাপ করছিলাম। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া মাইক্রোসফটের তথ্য বলছে, কোভিড–পরবর্তী নতুন স্বাভাবিকে ‘হাইব্রিড ওয়ার্ক’ নীতিতে কর্মীদের সক্ষমতা আগের চেয়ে ৮৭ শতাংশ বেড়ে গেছে। কিন্তু অপর দিকে ৮৫ শতাংশ ব্যবস্থাপক মনে করেন, কর্মীদের কার্যক্ষমতা আগের চেয়ে কমে গেছে।
এই বিপরীতমুখী মন্তব্যের কারণ কী হতে পারে? আমি মনে করি, কয়েক বছর আগে সবাই যখন অফিসে বসে কাজ করতেন, তখন ব্যবস্থাপকের কাজ ছিল ঘুরে ঘুরে সবার কাজ ও অবস্থানের তদারকি করা। অর্থাৎ, কর্মীকে সশরীর চোখে দেখে নিশ্চিত করা হতো, তিনি কাজের মধ্যে আছেন কি নেই। ব্যবস্থাপকদের কাজের বড় একটা অংশই ছিল অফিসে সবার উপস্থিতি নিশ্চিত করা। কিন্তু বর্তমান হাইব্রিড ওয়ার্ক নীতিতে ব্যবস্থাপনা আর নেতৃত্বের ধরন অনেকটাই বদলে গেছে। আমি মনে করি, কর্মীর শারীরিকভাবে অফিসে উপস্থিতির চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। অফিসে উপস্থিতির চেয়েও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে ওই কর্মী আদতে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও নীতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন কি না। শারীরিক উপস্থিতির চেয়ে, প্রতিষ্ঠানের জন্য তার নৈতিক অবস্থান নিশ্চিত করাই হাইব্রিড ওয়ার্কের যুগে সবচেয়ে কার্যকরী। প্রক্রিয়ার চেয়ে আমাদের বেশি মনযোগ দিতে হবে ফলাফলে। পরিষ্কার থাকতে হবে নিজেদের লক্ষ্যের ব্যাপারে। আমরা আসলে কী চাই? কীভাবে চাই? কর্মীরা নিজের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করছেন কি না, সাফল্য চাইলে সেদিকেই আমাদের নজর দিতে হবে। সেটা তিনি অফিসে বসেই আনুন বা অফিসের বাইরে থেকে, তা নিয়ে ব্যবস্থাপকের মাথা ঘামানোর কারণ নেই।
নেতৃত্ব : বর্তমান সময়ে নেতৃত্ব দেওয়া ভীষণ কঠিন, চ্যালেঞ্জিং। তবে একজন সফল নেতা প্রতিকূল সময়ের মধ্যেও সুযোগ বের করে নিতে পারেন। প্রশ্ন আসতে পারে, কী করে সফল নেতা হওয়া যায়। নেতৃত্ব দুভাবে দেওয়া যায়। এক. সহনশীল নেতা হয়ে। দুই. প্রতিক্রিয়াশীল নেতা হয়ে। বিশ্বাস করুন, সিইও হিসেবে প্রতিদিন অন্তত এমন ১০টি জটিল সিদ্ধান্ত আমাকে নিতে হয়, যেসবের মুখোমুখি আমি জীবনেও হইনি। সফল হওয়ার টোটকা তো দিতে পারব না, তবে এটা বলতে পারব যে আমি ওই ১০ ধরনের জটিল সিদ্ধান্ত কীভাবে নিই। আমি সিদ্ধান্তগুলো নিই সহনশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে। প্রতিকূল অবস্থায় অনেক নেতাই হয়তো মিইয়ে যান, গুটিয়ে আনেন কাজের পরিসর। কিন্তু সহনশীল নেতা প্রতিকূল অবস্থাতে আরও সহিষ্ণু হয়ে ওঠেন। তাঁরা পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু থমকে যান না, থামতে দেন না।
আর এই সহনশীল নেতৃত্বেই একজন দলনেতা দক্ষতাকে সব সময় এগিয়ে রাখেন। ডিগ্রি, সনদ, সুপারিশ দিয়ে দক্ষতা মূল্যায়ন এখন সেকেলে ধারণা। যে নেতারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন, সফলতা তাদের হাতেই ধরা দিয়েছে। সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক পদে বসাতে পারলে বিশ্বের শ্রমবাজারে সমতা আসবে।
সূত্র: হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ
ইংরেজি থেকে অনূদিত