alt

জাতীয়

বিদেশি ভাষা শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও মাতৃভাষা শিক্ষার মাধ্যম হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজনে বিদেশি ভাষা শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও মাতৃভাষা শিক্ষার মাধ্যম হওয়া উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘মাতৃভাষায় শিক্ষা নিতে পারলে সেই শিক্ষাটা গ্রহণ করা, জানা-বোঝা অনেক সহজ হয়।’

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত চার দিনব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার জন্য মাতৃভাষাটা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মাতৃভাষায় শিক্ষা নিতে পারলে সেই শিক্ষাটা গ্রহণ করা, জানা-বোঝা অনেক সহজ হয়।’

‘কর্মক্ষেত্র যেহেতু এখন সারা বিশ্ব, তাই সারা বিশ্বটা এখন বলতে গেলে এত কাছে চলে এসেছে যে, একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। সেখানে আমাদের কর্মক্ষেত্রে অনেক ভাষা শেখার প্রয়োজন আছে। কিন্তু, আমি দেখেছি আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা অনেক মেধাবী। তাদের জন্য দুটি-তিনটি ভাষা শেখা অনেক কষ্টের কিছু না। অনেকে মাতৃভাষাসহ দুই-তিনটি ভাষায় কথা বলতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার মাধ্যমটা মাতৃভাষায় হওয়া উচিত। পাশাপাশি অন্যান্য ভাষা শিক্ষার সুযোগটাও থাকতে হবে। কারণ, পৃথিবীর সব দেশেই এটা থাকে।’

‘কিন্তু, দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের সমাজে দেখা যাচ্ছে, স্কুলে পড়াবে; কিন্তু কিন্ডারগার্টেন শুনলে খুব খুশি হয়, সেখানে পড়াতে হবে। অথচ, আমাদের প্রাইমারি শিক্ষার স্কুল বিল্ডিংগুলো নতুনভাবে করে দিচ্ছি, শিক্ষকদের ভালো ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে, শিক্ষার ভালো ব্যবস্থা আছে। সেটা রেখে ওই নামের পেছনে ছোটা এবং তার জন্য পয়সা খরচ করতে চায়। এটাও আরেকটা বিষয়। সাথে সাথে আবার কোনো পরিবার বিদেশে থেকে এমন হয়ে যায় যে, নিজের মাতৃভাষাটাকে পরিত্যাগ করতে পারলেই যেন বেঁচে যায়।’

বিশ্বজুড়ে মাতৃভাষা যে হারিয়ে যাচ্ছে সেগুলো যাতে হারিয়ে না যায় সে আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এগুলো সংরক্ষণ করা, গবেষণা করা, জীবন জীবিকার জন্য মানুষকে অনেক ভাষা শিখতে হয়। মাতৃভাষাকে সংরক্ষণ করা, এটা প্রত্যেকটা জাতির কর্তব্য বলে আমি মনে করি। সেই লক্ষ্য থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলব।

“আজকে সেই মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ইউনেস্কো কর্তৃক ক্যাটাগরি দুই তে উন্নীত হতে পেরেছি।

তিনি বলেন, এক সময় আমাদের কিছু জ্ঞানী গুণী বলেছিলেন যে অনুবাদের দরকার নেই। আমি কিন্তু সেটা বিশ্বাস করি না। আমি মনে করি অনুবাদ একান্তভাবে দরকার। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষা আমাদের শিল্প, আমাদের সাহিত্য, আমাদের লেখা, সেগুলো যত বেশি অনুবাদ হবে, বাংলাদেশের বা বাঙালি জাতিকে মানুষ তত জানতে পারবে। তত বেশি বুঝতে পারবে। তথ্য বেশি শিখতে পারবে৷ পাশাপাশি আমরাও অন্য ভাষাকে মাতৃভাষা পড়ব সেটাকে যতটা অন্তরে উপলব্ধি করতে পারব, সেটা অন্য কোনো বাসায় পারব না।

এখন আমাদের ডিজিটাল যুগ। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যুগ। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সও বাংলা ভাষায় ঢুকে যাবে-এসে গেছে, ব্যবহার হচ্ছে। প্রযুক্তি যত আসবে তার সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের ভাষাটাকেও সেইভাবে সামঞ্জস্যভাবে এগিয়ে যেতে হবে। এখন ডিজিটাল ডিভাইসে অনুবাদ করতে গিয়ে এমন কিছু উদ্ভট কিছু লিখে ফেলে, শেষে তার অর্থই খুঁজে পাওয়া যায় না। এই বিষয়গুলো তো নজর দেওয়া দরকার। অনুবাদ করতে গিয়ে আমাদের ভাষাটাকে বিকৃত করা হয়। ডিজিটাল ডিভাইস দিয়ে অনুবাদ করার পর আপনাদের দেখা উচিত, সংশোধন করা উচিত। যথাযথ সংশোধন করে যাতে বাজারে আসে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মাতৃভাষা রক্ষায় যারা আত্মত্যাগ করেছে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। বাঙালি জাতি রক্ত দিয়ে ভাষার মর্যাদা দিয়ে গেছে। নিজের ভাষা রক্ষা করার মধ্য দিয়ে একটা জাতীয় উন্নত জীবন পেতে পারে। আমাদের মাতৃভাষার কথা বলার অধিকারটুকু কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। একটা বিজাতীয় ভাষা আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তখন এই দেশে মানুষ মেনে নেয়নি।

মাতৃভাষার আন্দোলন শুরু হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার আইন বিভাগের ছাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উদ্যোগ নেন, তিনি ছাত্র সংগঠন গড়ে তোলেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। আরও কয়েকটি প্রগতীশীল সংগঠনকে নিয়ে ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন। জাতির পিতার উদ্যোগের ফলে এবং তার নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনের পথ দিয়েই আমরা আমাদের স্বাধীকার পেয়েছি। স্বাধীনতা পেয়েছি। স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা পেয়েছি। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র বাংলাদেশ হচ্ছে একটি ভাষার রাষ্ট্র। আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা নেতৃত্বে আমরা এই মর্যাদা অর্জন করেছি।

তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করার পর মূলত বাংলাদেশ, বাঙালির জাতি, বাঙালি সংস্কৃতিটা অনেকটা হারিয়ে যেতে বসে। যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের নাম বাংলা দেওয়া হয়েছিল এগুলো পরিবর্তন করে একটা ভিন্ন ভাষা নিয়ে আসার প্রচেষ্টা চালানো হয়। সেই জায়গা থেকে আজকে আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি।

ছবি

সুন্দরবনে বেড়েছে হরিণ, তবে থেমে নেই শিকার

প্রশাসনের সব স্তরে ‘অনিয়ম ও অসমতা’ নিরসনের দাবি

বাংলাদেশকে নিয়ে ২০২৪ সালে ভারতীয় অপতথ্যের প্রবাহ: বিশ্লেষণে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি

ছবি

শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদের সংকট: আদিবাসী গ্রাফিতি বিতর্কে প্রতিবাদ

ছবি

বনের ক্ষতি ও পরিবেশ সংকট: সরকারি–বেসরকারি প্রকল্পের প্রভাব

ছবি

উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের কোটার সমালোচনা

ছবি

এক বছরে ৩১০ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, মেয়েদের সংখ্যা বেশি

ছবি

লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন আরও ৪৭ বাংলাদেশি

ছবি

বিএফআইইউর সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাস গ্রেপ্তার

ছবি

সাড়ে পাঁচ মাসে ৪০ মাজারে হামলার তথ্য পেয়েছে পুলিশ : প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর

ছবি

পদ্ধতিগত সংস্কার ছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘন থামবে না: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্তে অভিমত নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার

ছবি

অবিবেচকভাবে ভ্যাট বাড়ানোয় আশ্চার্য হয়েছি : দেবপ্রিয়

ছবি

বিএফআইইউর সাবেক প্রধান মাসুদ গ্রেপ্তার

ছবি

পুলিশের বহরে যুক্ত হচ্ছে রাশিয়ান হেলিকপ্টার

ছবি

প্রতিদিন ফ্যাসিবাদ পুনরুৎপাদিত হচ্ছে, সতর্ক থাকতে বললেন সলিমুল্লাহ খান

ছবি

‘আদিবাসী’ শব্দ সরানো কর্তৃত্ববাদের এজেন্ডা বহাল রাখার ঘৃণ্য প্রয়াস: টিআইবি

ছবি

বাংলাদেশের জন্য পাঁচ বড় ঝুঁকি, শীর্ষে মূল্যস্ফীতি: ডব্লিউইএফ

ছবি

মায়ানমার থেকে এলো ২২ হাজার মেট্রিক টন চাল

ছবি

পুলিশের গুলিতেই মুগ্ধের মৃত্যু হয়েছে: স্নিগ্ধ

জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়ায় যা আছে

ছবি

ঘোষণাপত্র: আরও আলোচনা চান সবাই

ছবি

সুইজারল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

শেখ পরিবারের নামে থাকা ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন

ছবি

‘ঢাকা-দিল্লির চুক্তিগুলো ভারত প্রকাশ করলেও বাংলাদেশ করে না’

সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও বিচার দাবিতে ‘মার্চ ফর ফেলানী’ শুরু

ছবি

‘সংখ্যালঘু’ শিক্ষার্থীদের সমাবেশে হামলা, নিন্দা জানিয়ে বিচারের আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের

ছবি

‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার’ মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ, ছত্রভঙ্গ

ছবি

পুলিশ সংস্কারে বিশেষায়িত দলের সুপারিশ

ছবি

‘আদিবাসী’ গ্রাফিতি বাদ: প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা

পুলিশের শক্তি প্রয়োগের সীমা নির্ধারণ চায় সংস্কার কমিশন

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে নির্বাচন বাতিলের সুপারিশ

ছবি

বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম পরিবর্তন, তিন মূলনীতি বাদ, নতুন চার মূলনীতির সুপারিশ

এবার গণঅভ্যুত্থানের সনদ, তার ভিত্তিতেই নির্বাচন: ইউনূস

ছবি

‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ বদলে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ প্রস্তাব

ছবি

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা ও প্রধানমন্ত্রীত্বের সীমা সংক্রান্ত সুপারিশ পেশ

tab

জাতীয়

বিদেশি ভাষা শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও মাতৃভাষা শিক্ষার মাধ্যম হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজনে বিদেশি ভাষা শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও মাতৃভাষা শিক্ষার মাধ্যম হওয়া উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘মাতৃভাষায় শিক্ষা নিতে পারলে সেই শিক্ষাটা গ্রহণ করা, জানা-বোঝা অনেক সহজ হয়।’

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত চার দিনব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার জন্য মাতৃভাষাটা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মাতৃভাষায় শিক্ষা নিতে পারলে সেই শিক্ষাটা গ্রহণ করা, জানা-বোঝা অনেক সহজ হয়।’

‘কর্মক্ষেত্র যেহেতু এখন সারা বিশ্ব, তাই সারা বিশ্বটা এখন বলতে গেলে এত কাছে চলে এসেছে যে, একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। সেখানে আমাদের কর্মক্ষেত্রে অনেক ভাষা শেখার প্রয়োজন আছে। কিন্তু, আমি দেখেছি আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা অনেক মেধাবী। তাদের জন্য দুটি-তিনটি ভাষা শেখা অনেক কষ্টের কিছু না। অনেকে মাতৃভাষাসহ দুই-তিনটি ভাষায় কথা বলতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার মাধ্যমটা মাতৃভাষায় হওয়া উচিত। পাশাপাশি অন্যান্য ভাষা শিক্ষার সুযোগটাও থাকতে হবে। কারণ, পৃথিবীর সব দেশেই এটা থাকে।’

‘কিন্তু, দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের সমাজে দেখা যাচ্ছে, স্কুলে পড়াবে; কিন্তু কিন্ডারগার্টেন শুনলে খুব খুশি হয়, সেখানে পড়াতে হবে। অথচ, আমাদের প্রাইমারি শিক্ষার স্কুল বিল্ডিংগুলো নতুনভাবে করে দিচ্ছি, শিক্ষকদের ভালো ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে, শিক্ষার ভালো ব্যবস্থা আছে। সেটা রেখে ওই নামের পেছনে ছোটা এবং তার জন্য পয়সা খরচ করতে চায়। এটাও আরেকটা বিষয়। সাথে সাথে আবার কোনো পরিবার বিদেশে থেকে এমন হয়ে যায় যে, নিজের মাতৃভাষাটাকে পরিত্যাগ করতে পারলেই যেন বেঁচে যায়।’

বিশ্বজুড়ে মাতৃভাষা যে হারিয়ে যাচ্ছে সেগুলো যাতে হারিয়ে না যায় সে আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এগুলো সংরক্ষণ করা, গবেষণা করা, জীবন জীবিকার জন্য মানুষকে অনেক ভাষা শিখতে হয়। মাতৃভাষাকে সংরক্ষণ করা, এটা প্রত্যেকটা জাতির কর্তব্য বলে আমি মনে করি। সেই লক্ষ্য থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলব।

“আজকে সেই মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ইউনেস্কো কর্তৃক ক্যাটাগরি দুই তে উন্নীত হতে পেরেছি।

তিনি বলেন, এক সময় আমাদের কিছু জ্ঞানী গুণী বলেছিলেন যে অনুবাদের দরকার নেই। আমি কিন্তু সেটা বিশ্বাস করি না। আমি মনে করি অনুবাদ একান্তভাবে দরকার। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষা আমাদের শিল্প, আমাদের সাহিত্য, আমাদের লেখা, সেগুলো যত বেশি অনুবাদ হবে, বাংলাদেশের বা বাঙালি জাতিকে মানুষ তত জানতে পারবে। তত বেশি বুঝতে পারবে। তথ্য বেশি শিখতে পারবে৷ পাশাপাশি আমরাও অন্য ভাষাকে মাতৃভাষা পড়ব সেটাকে যতটা অন্তরে উপলব্ধি করতে পারব, সেটা অন্য কোনো বাসায় পারব না।

এখন আমাদের ডিজিটাল যুগ। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যুগ। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সও বাংলা ভাষায় ঢুকে যাবে-এসে গেছে, ব্যবহার হচ্ছে। প্রযুক্তি যত আসবে তার সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের ভাষাটাকেও সেইভাবে সামঞ্জস্যভাবে এগিয়ে যেতে হবে। এখন ডিজিটাল ডিভাইসে অনুবাদ করতে গিয়ে এমন কিছু উদ্ভট কিছু লিখে ফেলে, শেষে তার অর্থই খুঁজে পাওয়া যায় না। এই বিষয়গুলো তো নজর দেওয়া দরকার। অনুবাদ করতে গিয়ে আমাদের ভাষাটাকে বিকৃত করা হয়। ডিজিটাল ডিভাইস দিয়ে অনুবাদ করার পর আপনাদের দেখা উচিত, সংশোধন করা উচিত। যথাযথ সংশোধন করে যাতে বাজারে আসে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মাতৃভাষা রক্ষায় যারা আত্মত্যাগ করেছে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। বাঙালি জাতি রক্ত দিয়ে ভাষার মর্যাদা দিয়ে গেছে। নিজের ভাষা রক্ষা করার মধ্য দিয়ে একটা জাতীয় উন্নত জীবন পেতে পারে। আমাদের মাতৃভাষার কথা বলার অধিকারটুকু কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। একটা বিজাতীয় ভাষা আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তখন এই দেশে মানুষ মেনে নেয়নি।

মাতৃভাষার আন্দোলন শুরু হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার আইন বিভাগের ছাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উদ্যোগ নেন, তিনি ছাত্র সংগঠন গড়ে তোলেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। আরও কয়েকটি প্রগতীশীল সংগঠনকে নিয়ে ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন। জাতির পিতার উদ্যোগের ফলে এবং তার নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনের পথ দিয়েই আমরা আমাদের স্বাধীকার পেয়েছি। স্বাধীনতা পেয়েছি। স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা পেয়েছি। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র বাংলাদেশ হচ্ছে একটি ভাষার রাষ্ট্র। আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা নেতৃত্বে আমরা এই মর্যাদা অর্জন করেছি।

তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করার পর মূলত বাংলাদেশ, বাঙালির জাতি, বাঙালি সংস্কৃতিটা অনেকটা হারিয়ে যেতে বসে। যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের নাম বাংলা দেওয়া হয়েছিল এগুলো পরিবর্তন করে একটা ভিন্ন ভাষা নিয়ে আসার প্রচেষ্টা চালানো হয়। সেই জায়গা থেকে আজকে আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি।

back to top