alt

চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া যাবে না

মাসুদ রানা : বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

কোনো অবস্থাতেই নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছাড়া চেম্বারে অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া যাবে না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ অবেদনবিদ (অ্যানেসথেটিস্ট) ছাড়া যেকোনো ধরনের অস্ত্রোপচার করা যাবে না। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জারি করা এক অফিস আদেশে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান সেই অফিস আদেশ সই করেন। তাতে মোট ১০টি নির্দেশনা বা শর্ত জারি করা হয়েছে। এর ব্যত্যয় হলে লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ‘বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনার ক্ষেত্রে এসব শর্তাবলি আবশ্যিকভাবে প্রতিপালনের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর প্রধান কারণ অ্যানেসথেসিওলজিস্টদের দক্ষতার অভাব। এছাড়া অ্যানেসথেসিয়ার আগে ঠিকমতো রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করা এবং অপারেশন পরবর্তী জটিলতা মোকাবিলার সক্ষমতা না থাকাও মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলছেন তারা।

বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনার ক্ষেত্রে ১০টি শর্ত আবশ্যিকভাবে প্রতিপালনের নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

সেগুলো হচ্ছে : বেসরকারি ক্লিনিক/হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকের লাইসেন্সের কপি ওই প্রতিষ্ঠানের মূল প্রবেশপথের সামনে দৃশ্যমান স্থানে অবশ্যই স্থায়ীভাবে প্রদর্শন করতে হবে।

সব বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ওই প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ ও সরবরাহের জন্য একজন নির্ধারিত দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা বা কর্মচারী থাকতে হবে এবং তার ছবি ও মোবাইল নম্বর দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে।

যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল হিসেবে আছে কিন্তু শুধু ডায়াগনস্টিক অথবা হাসপাতালের লাইসেন্স রয়েছে, তারা লাইসেন্সপ্রাপ্ত ছাড়া কোনোভাবেই নামে উল্লেখিত সেবা দিতে পারবে না।

ডায়াগনস্টিক সেন্টার/প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রে যে ক্যাটারগরিতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত, শুধু সে ক্যাটাগরিতে নির্ধারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যতীত কোনোভাবেই অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাবে না। ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্যাথলজি/মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ও রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে হবে। ৫. বেসরকারি ক্লিনিক/হাসপাতালের ক্ষেত্রে লাইসেন্সের প্রকারভেদ ও শয্যাসংখ্যা অনুযায়ী সব শর্ত বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

হাসপাতাল/ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়োজিত সব চিকিৎসকের পেশাগত ডিগ্রির সনদগুলো, বিএমডিসির হালনাগাদ নিবন্ধন ও নিয়োগপত্রের কপি অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।

হাসপাতাল/ক্লিনিকের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের অপারেশন/সার্জারি/প্রসিডিউরের জন্য অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসককে সার্জনের সহকারী হিসেবে রাখতে হবে।

কোনো অবস্থাতেই লাইসেন্সপ্রাপ্ত/নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছাড়া চেম্বারে অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া যাবে না। বিএমডিসি (বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল) স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ অবেদনবিদ ছাড়া যেকোনো ধরনের অপারেশন/সার্জারি সব বেসরকারি নিবন্ধিত লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল/ক্লিনিকে লেবার রুম প্রটোকল অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

নিবন্ধিত/লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল/ক্লিনিকে অপারেশন থিয়েটারে অবশ্যই অপারেশন থিয়েটার এটিকেট (শিষ্টাচার) মেনে চলতে হবে।

এদিকে গত বছরের নভেম্বরে রাজধানীর নয়াবাজার এলাকায় মেডিপ্যাথ হাসপাতালে মেয়ে ফাতেমার (১২) নাকের পলিপ অপারেশন করাতে নিয়ে যান তার মা। কিন্তু পলিপ অপারেশন করতে গিয়ে মৃত্যু হয় ফাতেমার। ফাতেমার মায়ের অভিযোগ, মেয়েকে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে তিনি হাসপাতালে নিয়ে যান। তার মেয়ে কোনো অসুস্থ রোগী ছিল না। ফাতেমা তার সঙ্গে হেঁটে হাসপাতালে যায়।

এরপর গত ৩১ ডিসেম্বর খৎনার জন্য রাজধানীর বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ানকে নিয়ে যায় তার অভিভাবক। সকাল ৯টার দিকে শিশুটিকে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া হয়। তবে অনুমতি ছাড়াই ‘ফুল অ্যানেসথেসিয়া’ (জেনারেল) দিয়ে চিকিৎসক আয়ানের খৎনা করান বলে অভিযোগ করা হয়। পরে জ্ঞান না ফেরায় তাকে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। এরপর ৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে চিকিৎসক আয়ানকে মৃত ঘোষণা করে।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডির বেসরকারি ল্যাব এইড হাসপাতালে পেটে গ্যাসের সমস্যায় এন্ডোস্কপি করাতে গিয়ে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে রাহিব রেজা নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগ, ল্যাব এইড হাসপাতালে পরীক্ষার রিপোর্ট না দেখেই রাহিব রেজাকে অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োগ করা হয়। শারীরিক জটিলতার মধ্যেই এন্ডোস্কপি করা হয়। যে কারণে তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় এবং একপর্যায়ে শারীরিক অবস্থা আরও জটিল হয়। তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান।

সর্বশেষ গত মঙ্গলবার মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খৎনা করাতে গিয়ে প্রাণ যায় আরেক শিশু আয়হামের। এ তিন ঘটনাতেই অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার পর আর জ্ঞান ফেরেনি শিশুদের। খৎনা বা নাকের পলিপ অপারেশনের মতো ছোট সার্জারিতেও রোগীর মৃত্যু থামছেই না।

সোসাইটি অব অ্যানেসথিওলজিস্ট ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যান্ড পেইন মেডিসিনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কাওছার সরদার বলেন, ‘কতটুকু ঝুঁকি আছে সেটি নির্ণয়ের জন্য হার্ট, ফুসফুসসহ শরীরের অন্য অবস্থা কী সেটি অ্যাসেস করে একটি প্রি-অ্যানেস্থেটিক চেকআপ করাতে হয়। কিন্তু পেরিফেরাল যেসব ক্লিনিক আছে সেগুলোতে এই হার শূন্য।’ ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব সোসাইটিস অব অ্যানেসথেসিওলজিস্টের মতে, প্রতি লাখ মানুষের জন্য অ্যানেসথিওলজিস্ট প্রয়োজন ৫ জন। কিন্তু দেশে অ্যানেসথিওলজিস্ট আছে দুই হাজারের কিছু বেশি, যা খুবই অপ্রতুল। ডা. কাওছার সরদার বলেন, ‘প্রায়ই দেখা যায়, এসব অঘটনগুলো যেখানে ঘটে সেখানে অ্যানেসথিওলজিস্ট নয় এই রকম ফিজিশিয়ান বা সে কোনো চিকিৎসকও না সে অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে দিচ্ছে।’ দেশে প্রতি বছর অ্যানেসথেসিয়া জটিলতায় কত মৃত্যু হয় তারও কোনো হিসাব নেই কারো কাছে।

শিশু আহনাফের মৃত্যু : তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিএমডিসিকে নির্দেশ

মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে (জেএস হাসপাতাল) সুন্নতে খৎনা করাতে এসে শিশু আহনাফ তাহমিন আয়হামের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত করে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে (বিএমডিসি) নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ বিভাগের পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসানের সই করা এক চিঠিতে এ নির্দেশ দেয়া হয়।

এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেক-আপ সেন্টারে সুন্নতে খৎনার সময় শিশু আহনাফ তাহমিন আয়হাম এর মৃত্যুতে সুন্নতে খৎনার সঙ্গে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের আলোকে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ডা. ইশতিয়াক আজাদ, ডা. মাহবুব মোর্শেদ ও ডা. এসএম মোক্তাদিরের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করে অত্র দপ্তরকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো। এতে মহাপরিচালক মহোদয়ের অনুমোদন রয়েছে।

গত মঙ্গলবার জেএস হাসপাতাল খৎনার সময় শিশু আহনাফ তাহমিন আয়হামের মৃত্যু হয়। ওই দিন রাতেই শিশুটির বাবা মোহাম্মদ ফখরুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। মামলায় জে এস হাসপাতালের ডা. এস এম মুক্তাদিরসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে পুলিশ জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ডা. এস এম মোক্তাদির হোসেন ও চিকিৎসক মাহাবুব মোরশেদকে গ্রেপ্তার করে।

ঘটনার পরদিন জেএস হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে সিলগালা করে দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া দুজন চিকিৎসককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে দেয়া হয়েছে দুজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশও দেয়া হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আয়হামকে সুন্নতে খৎনা করানোর জন্য বাবা ফখরুল আলম হাতিরঝিল থানার জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসক এস এম মুক্তাদিরের কাছে নিয়ে যান। তিনি ওই সময় আয়হামের কিছু শারীরিক পরীক্ষা করাতে বলেন। পরে ওই হাসপাতালেই টেস্টগুলো করে ছেলেকে নিয়ে বাসায় চলে যান ফখরুল। রাতে চিকিৎসক ফোন করে জানান, রিপোর্টগুলো ভালো আছে। সুন্নতে খৎনা করতে কোনো সমস্যা নেই।

পরে মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টায় ছেলের সুন্নতে খৎনা করানোর জন্য স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ওই হাসপাতালে যান ফখরুল। ছেলেকে অপারেশন থিয়েটার নিয়ে যাওয়া হয়। ২০-২৫ মিনিট সময় লাগবে বলে জানিয়েছিল চিকিৎসকেরা। তবে ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় লাগায় ফখরুল ওটি রুমে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে নিষেধ করে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে বলা হয়। পরে ফখরুল জোর করে ওটি রুমে প্রবেশ করে দেখেন, তার ছেলে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। তার বুকে হাত দিয়ে চাপাচাপি করছে এবং নাকে ও মুখে নল দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তখন চিকিৎসক এস এম মোক্তাদিরকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সঠিক উত্তর দেননি। এরপর তাকে তখন জোর করে ওটি থেকে বের করে দেওয়া হয়। ঘণ্টা দুয়েক পর ফখরুল জোর করে ওটিতে প্রবেশ করে জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছে।

আহনাফের বাবা ফখরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চিকিৎসককে বলেছিলাম যেন, ফুল অ্যানেসথেসিয়া যেন না দেয়া হয়। তারপরও আমার ছেলের শরীরে সেটি পুশ করেন ডা. মোক্তাদির। আমি বারবার তাদের পায়ে ধরেছি। আমার ছেলেকে যেন ফুল অ্যানেসথেসিয়া না দেয়া হয়।’ ফখরুল বলেন, ‘আমার সন্তানকে অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই মৃত্যুর দায় মোক্তাদিরসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সবারই। আমি তাদের কঠোর শাস্তি চাই।’

ছবি

সাবেক বিচারপতিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ছবি

ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে আরও ১,০৬৯ জন

জামিনে মুক্তি পাওয়া আ’লীগ নেতারা অপরাধে জড়ালে কঠোর ব্যবস্থা: উপদেষ্টা

ছবি

তদন্ত প্রতিবেদন: পাইলটের ত্রুটির কারণে মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত হয়

ছবি

বাংলাদেশে পুলিশ সংস্কারে সহায়তার আগ্রহ আয়ারল্যান্ডের

ছবি

নির্বাচন হলে দেশে স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে, আশা সেনাবাহিনীর

ছবি

অগ্নিঝুঁকিতে বেনাপোল স্থলবন্দরের পণ্যাগার, ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ, নিরাপত্তা জোরদার

ছবি

নির্বাচন হলে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে, সেনাবাহিনী ফিরবে ব্যারাকে: জিওসি মাইনুর রহমান

ছবি

নিষিদ্ধ দলের মিছিলের চেষ্টা করলে আইনের কঠোর প্রয়োগ: প্রেস সচিব

দায়িত্ব পালনে অযোগ্যতা: হাই কোর্টের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারের অপসারণ

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে একদিনে প্রাণ গেল ১০ জনের

ছবি

আইসিটি মামলায় আটক ১৫ সেনা কর্মকর্তার চাকরি নিয়ে সেনাসদরের ব্যাখ্যা: “এটি একটি আইনগত প্রক্রিয়া”

ছবি

১৪ মাসে ৪০ বিচারবহির্ভূত হত্যা, আইনের মাধ্যমে ফয়সালা করা হবে: স্বরাষ্ট্র্র উপদেষ্টা

ছবি

আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি: বিএনপির আপত্তি আমলে নেয়নি অন্তর্বর্তী সরকার

কোটা আন্দোলনে হামলায় ঢাবির আরও ২৭৫ শিক্ষার্থী অভিযুক্ত

ছবি

নির্বাচন: দেড় লাখের মধ্যে ৪৮ হাজার পুলিশের প্রশিক্ষণ শেষ

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় তিনবারেও সাক্ষী হাজিরে ব্যর্থ প্রসিকিউশন

ছবি

নভেম্বর মাসেও কমছে না ডেঙ্গু, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক

ছবি

সনদ, গণভোট: দলগুলোকে দ্রুত ‘সিদ্ধান্ত’ নেয়ার আহ্বান, নইলে পদক্ষেপ নেবে অন্তর্বর্তী সরকার

ছবি

ডেঙ্গু ও নিউমোনিয়ায় মাধবদীতে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি

ছবি

বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা খাতে তুরস্কের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ

বিটিআরসির প্রস্তাবিত নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে ইন্টারনেটের দাম বাড়বে: আইএসপিএবি

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৪৭ জন

ছবি

পঞ্চদশ সংশোধনী পুরো বাতিল চেয়ে আপিল

ছবি

দেশ কোন পথে যাবে, তা নির্ভর করছে আগামী নির্বাচনের ওপর: সিইসি

ছবি

গুলিবিদ্ধ নাদিমের পেট থেকে রক্ত ঝরছিল: তাবাসুম

ছবি

‘নির্বাচিত সরকার ছাড়া ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হবে না’

ছবি

গণভোট নিয়ে ঐক্যবদ্ধ সুপারিশ জানাতে এক সপ্তাহ সময় দিল সরকার

ছবি

বাপা-বেনের মতবিনিময়: তিস্তা প্রকল্পে স্বচ্ছতা, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও পরিবেশ রক্ষার দাবি

ছবি

কাতারের নিরাপত্তা হুমকির বিরুদ্ধে সংহতি পুনর্ব্যক্ত বাংলাদেশের

ছবি

সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে নেপালের প্রধান বিচারপতি

ছবি

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের দায়মুক্তির অবসান চায় এমএফসি

ছবি

ঝিলের জায়গায় থানা ভবন নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের

ছবি

বিদেশি এয়ারলাইন্স: জিএসএ নিয়োগ বহাল রাখার দাবি

ছবি

জেল হত্যা দিবস আজ

ছবি

তৃতীয় ধাপের হালনাগাদে ১৩ লাখের বেশি নতুন ভোটার: ইসি সচিব

tab

চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া যাবে না

মাসুদ রানা

বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

কোনো অবস্থাতেই নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছাড়া চেম্বারে অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া যাবে না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ অবেদনবিদ (অ্যানেসথেটিস্ট) ছাড়া যেকোনো ধরনের অস্ত্রোপচার করা যাবে না। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জারি করা এক অফিস আদেশে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান সেই অফিস আদেশ সই করেন। তাতে মোট ১০টি নির্দেশনা বা শর্ত জারি করা হয়েছে। এর ব্যত্যয় হলে লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ‘বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনার ক্ষেত্রে এসব শর্তাবলি আবশ্যিকভাবে প্রতিপালনের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর প্রধান কারণ অ্যানেসথেসিওলজিস্টদের দক্ষতার অভাব। এছাড়া অ্যানেসথেসিয়ার আগে ঠিকমতো রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করা এবং অপারেশন পরবর্তী জটিলতা মোকাবিলার সক্ষমতা না থাকাও মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলছেন তারা।

বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনার ক্ষেত্রে ১০টি শর্ত আবশ্যিকভাবে প্রতিপালনের নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

সেগুলো হচ্ছে : বেসরকারি ক্লিনিক/হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকের লাইসেন্সের কপি ওই প্রতিষ্ঠানের মূল প্রবেশপথের সামনে দৃশ্যমান স্থানে অবশ্যই স্থায়ীভাবে প্রদর্শন করতে হবে।

সব বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ওই প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ ও সরবরাহের জন্য একজন নির্ধারিত দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা বা কর্মচারী থাকতে হবে এবং তার ছবি ও মোবাইল নম্বর দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে।

যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল হিসেবে আছে কিন্তু শুধু ডায়াগনস্টিক অথবা হাসপাতালের লাইসেন্স রয়েছে, তারা লাইসেন্সপ্রাপ্ত ছাড়া কোনোভাবেই নামে উল্লেখিত সেবা দিতে পারবে না।

ডায়াগনস্টিক সেন্টার/প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রে যে ক্যাটারগরিতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত, শুধু সে ক্যাটাগরিতে নির্ধারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যতীত কোনোভাবেই অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাবে না। ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্যাথলজি/মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ও রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে হবে। ৫. বেসরকারি ক্লিনিক/হাসপাতালের ক্ষেত্রে লাইসেন্সের প্রকারভেদ ও শয্যাসংখ্যা অনুযায়ী সব শর্ত বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

হাসপাতাল/ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়োজিত সব চিকিৎসকের পেশাগত ডিগ্রির সনদগুলো, বিএমডিসির হালনাগাদ নিবন্ধন ও নিয়োগপত্রের কপি অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।

হাসপাতাল/ক্লিনিকের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের অপারেশন/সার্জারি/প্রসিডিউরের জন্য অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসককে সার্জনের সহকারী হিসেবে রাখতে হবে।

কোনো অবস্থাতেই লাইসেন্সপ্রাপ্ত/নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছাড়া চেম্বারে অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া যাবে না। বিএমডিসি (বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল) স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ অবেদনবিদ ছাড়া যেকোনো ধরনের অপারেশন/সার্জারি সব বেসরকারি নিবন্ধিত লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল/ক্লিনিকে লেবার রুম প্রটোকল অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

নিবন্ধিত/লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল/ক্লিনিকে অপারেশন থিয়েটারে অবশ্যই অপারেশন থিয়েটার এটিকেট (শিষ্টাচার) মেনে চলতে হবে।

এদিকে গত বছরের নভেম্বরে রাজধানীর নয়াবাজার এলাকায় মেডিপ্যাথ হাসপাতালে মেয়ে ফাতেমার (১২) নাকের পলিপ অপারেশন করাতে নিয়ে যান তার মা। কিন্তু পলিপ অপারেশন করতে গিয়ে মৃত্যু হয় ফাতেমার। ফাতেমার মায়ের অভিযোগ, মেয়েকে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে তিনি হাসপাতালে নিয়ে যান। তার মেয়ে কোনো অসুস্থ রোগী ছিল না। ফাতেমা তার সঙ্গে হেঁটে হাসপাতালে যায়।

এরপর গত ৩১ ডিসেম্বর খৎনার জন্য রাজধানীর বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ানকে নিয়ে যায় তার অভিভাবক। সকাল ৯টার দিকে শিশুটিকে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া হয়। তবে অনুমতি ছাড়াই ‘ফুল অ্যানেসথেসিয়া’ (জেনারেল) দিয়ে চিকিৎসক আয়ানের খৎনা করান বলে অভিযোগ করা হয়। পরে জ্ঞান না ফেরায় তাকে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। এরপর ৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে চিকিৎসক আয়ানকে মৃত ঘোষণা করে।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডির বেসরকারি ল্যাব এইড হাসপাতালে পেটে গ্যাসের সমস্যায় এন্ডোস্কপি করাতে গিয়ে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে রাহিব রেজা নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগ, ল্যাব এইড হাসপাতালে পরীক্ষার রিপোর্ট না দেখেই রাহিব রেজাকে অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োগ করা হয়। শারীরিক জটিলতার মধ্যেই এন্ডোস্কপি করা হয়। যে কারণে তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় এবং একপর্যায়ে শারীরিক অবস্থা আরও জটিল হয়। তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান।

সর্বশেষ গত মঙ্গলবার মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খৎনা করাতে গিয়ে প্রাণ যায় আরেক শিশু আয়হামের। এ তিন ঘটনাতেই অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার পর আর জ্ঞান ফেরেনি শিশুদের। খৎনা বা নাকের পলিপ অপারেশনের মতো ছোট সার্জারিতেও রোগীর মৃত্যু থামছেই না।

সোসাইটি অব অ্যানেসথিওলজিস্ট ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যান্ড পেইন মেডিসিনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কাওছার সরদার বলেন, ‘কতটুকু ঝুঁকি আছে সেটি নির্ণয়ের জন্য হার্ট, ফুসফুসসহ শরীরের অন্য অবস্থা কী সেটি অ্যাসেস করে একটি প্রি-অ্যানেস্থেটিক চেকআপ করাতে হয়। কিন্তু পেরিফেরাল যেসব ক্লিনিক আছে সেগুলোতে এই হার শূন্য।’ ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব সোসাইটিস অব অ্যানেসথেসিওলজিস্টের মতে, প্রতি লাখ মানুষের জন্য অ্যানেসথিওলজিস্ট প্রয়োজন ৫ জন। কিন্তু দেশে অ্যানেসথিওলজিস্ট আছে দুই হাজারের কিছু বেশি, যা খুবই অপ্রতুল। ডা. কাওছার সরদার বলেন, ‘প্রায়ই দেখা যায়, এসব অঘটনগুলো যেখানে ঘটে সেখানে অ্যানেসথিওলজিস্ট নয় এই রকম ফিজিশিয়ান বা সে কোনো চিকিৎসকও না সে অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে দিচ্ছে।’ দেশে প্রতি বছর অ্যানেসথেসিয়া জটিলতায় কত মৃত্যু হয় তারও কোনো হিসাব নেই কারো কাছে।

শিশু আহনাফের মৃত্যু : তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিএমডিসিকে নির্দেশ

মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে (জেএস হাসপাতাল) সুন্নতে খৎনা করাতে এসে শিশু আহনাফ তাহমিন আয়হামের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত করে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে (বিএমডিসি) নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ বিভাগের পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসানের সই করা এক চিঠিতে এ নির্দেশ দেয়া হয়।

এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেক-আপ সেন্টারে সুন্নতে খৎনার সময় শিশু আহনাফ তাহমিন আয়হাম এর মৃত্যুতে সুন্নতে খৎনার সঙ্গে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের আলোকে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ডা. ইশতিয়াক আজাদ, ডা. মাহবুব মোর্শেদ ও ডা. এসএম মোক্তাদিরের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করে অত্র দপ্তরকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো। এতে মহাপরিচালক মহোদয়ের অনুমোদন রয়েছে।

গত মঙ্গলবার জেএস হাসপাতাল খৎনার সময় শিশু আহনাফ তাহমিন আয়হামের মৃত্যু হয়। ওই দিন রাতেই শিশুটির বাবা মোহাম্মদ ফখরুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। মামলায় জে এস হাসপাতালের ডা. এস এম মুক্তাদিরসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে পুলিশ জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ডা. এস এম মোক্তাদির হোসেন ও চিকিৎসক মাহাবুব মোরশেদকে গ্রেপ্তার করে।

ঘটনার পরদিন জেএস হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে সিলগালা করে দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া দুজন চিকিৎসককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে দেয়া হয়েছে দুজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশও দেয়া হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আয়হামকে সুন্নতে খৎনা করানোর জন্য বাবা ফখরুল আলম হাতিরঝিল থানার জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসক এস এম মুক্তাদিরের কাছে নিয়ে যান। তিনি ওই সময় আয়হামের কিছু শারীরিক পরীক্ষা করাতে বলেন। পরে ওই হাসপাতালেই টেস্টগুলো করে ছেলেকে নিয়ে বাসায় চলে যান ফখরুল। রাতে চিকিৎসক ফোন করে জানান, রিপোর্টগুলো ভালো আছে। সুন্নতে খৎনা করতে কোনো সমস্যা নেই।

পরে মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টায় ছেলের সুন্নতে খৎনা করানোর জন্য স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ওই হাসপাতালে যান ফখরুল। ছেলেকে অপারেশন থিয়েটার নিয়ে যাওয়া হয়। ২০-২৫ মিনিট সময় লাগবে বলে জানিয়েছিল চিকিৎসকেরা। তবে ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় লাগায় ফখরুল ওটি রুমে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে নিষেধ করে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে বলা হয়। পরে ফখরুল জোর করে ওটি রুমে প্রবেশ করে দেখেন, তার ছেলে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। তার বুকে হাত দিয়ে চাপাচাপি করছে এবং নাকে ও মুখে নল দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তখন চিকিৎসক এস এম মোক্তাদিরকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সঠিক উত্তর দেননি। এরপর তাকে তখন জোর করে ওটি থেকে বের করে দেওয়া হয়। ঘণ্টা দুয়েক পর ফখরুল জোর করে ওটিতে প্রবেশ করে জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছে।

আহনাফের বাবা ফখরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চিকিৎসককে বলেছিলাম যেন, ফুল অ্যানেসথেসিয়া যেন না দেয়া হয়। তারপরও আমার ছেলের শরীরে সেটি পুশ করেন ডা. মোক্তাদির। আমি বারবার তাদের পায়ে ধরেছি। আমার ছেলেকে যেন ফুল অ্যানেসথেসিয়া না দেয়া হয়।’ ফখরুল বলেন, ‘আমার সন্তানকে অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই মৃত্যুর দায় মোক্তাদিরসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সবারই। আমি তাদের কঠোর শাস্তি চাই।’

back to top