alt

জাতীয়

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে নির্মূল কমিটি কোনও প্রকার আপোস করবে না : শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি শহীদজায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী যেকনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি অতীতে যেভাবে সোচ্চার ছিল তেমনি ভবিষতেও থাকবে। ’৭২-এর সংবিধান পুনপ্রবর্তন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে নির্মূল কমিটি কোনও প্রকার আপোস করবে না।’

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

৮ম জাতীয় সম্মেলনে গৃহীত নতুন কর্মসূচি এবং নতুন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষনার জন্য এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদকে পরিচয় করিয়ে দেন নির্মূল কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা পরিষদের নবনির্বাচিত সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির।

নতুন কর্মসূচির বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দেন সংগঠনের নবনির্বাচিত সভাপতি শহীদজায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সংগঠনের অন্যতম উপদেষ্টা অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, নির্বাহী সভাপতি কাজী মুকুল, সাধারণ সম্পাদক নাট্যজন আসিফ মুনীর, সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল ও যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ব্লগার লেখক মারুফ রসূল।

নির্মূল কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও বেগবান করার জন্য সম্মেলনে নতুন কর্মসূচি যেমন আমরা গ্রহণ করেছি, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও ঢেলে সাজিয়েছি। ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত ৭ম জাতীয় সম্মেলনে নির্বাচিত ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির শতকরা ৬০ ভাগ সদস্যকে নতুন কমিটিতে রাখা হয়নি তাদের বয়সোচিত মন্থরতা কিংবা অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ার কারণে, যাদের একজন স্বয়ং আমি।

আমরা আগামীতে সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে ৮ম জাতীয় সম্মেলনে নির্বাচিত ৯১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করব।’

নির্মূল কমিটির সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন হয় কিন্তু আলামতের অভাবে তারা অনেক সময় সুষ্ঠু বিচার থেকে বঞ্চিত হয়। আমরা নির্মূল কমিটির চিকিৎসা সহায়ক কমিটি গঠন করেছি, যাতে ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যর্থতার কারণে ভিকটিমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হয়।’

নির্মূল কমিটির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক তাপস কান্তি বল বলেন, ‘মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ভিকটিমদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের জন্য নির্মূল কমিটির আইন সহায়ক কমিটি কাজ করছে। আগামীতে জেলায় জেলায় আইন সহায়ক কমিটি তৃণমূল পর্যায়ে নির্যাতিত মানুষকে আইনি সহযোগিতা প্রদান করবে।’

নির্মূল কমিটির নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের ভবিষ্যত কর্মসূচিগুলোর মধ্যে অনলাইনবিষয়ক কয়েকটি কর্মসূচির প্রতি গুরুত্বারোপ করে সংগঠনের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ব্লগার লেখক মারুফ রসূল বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মের নামে যেভাবে উগ্রবাদ ছড়ানো হচ্ছে, ফেসবুক ইউটিউবে ওয়াজের নামে যেভাবে ধর্ম ও জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গৃহীত হচ্ছে না। এ বিষয়ে আইনের যথাযথ প্রয়োগের দাবিতে রাজপথে যেমন আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে, তেমনি অনলাইনভিত্তিক কার্যক্রমও গ্রহণ করবে নির্মূল কমিটির নব-নির্বাচিত কেন্দ্রীয় পরিষদ। কারণ, যথাযথ কাউন্টার ন্যারেটিভ ছাড়া উগ্রবাদী গোষ্ঠীর ছড়ানো ধর্মান্ধ ও আধিপত্যবাদী এসব বক্তব্যের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া একা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এ কারণেই নির্মূল কমিটির নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদ এ বিষয়ে অনলাইনে ও অফলাইনে সমানভাবে তৎপর থাকবে।’

মারুফ রসূল আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে একপেশে ব্যবহার চলছে গত কয়েক বছর ধরে, তা ভবিষ্যতের বাংলাদেশের জন্য একটি অশনী সংকেত বলে মনে করছে নির্মূল কমিটির নব-নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদ। ওয়াজের নামে যারা ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, যারা মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে অপমান করে নানা সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট তৈরি করছে, বাঙালি সংস্কৃতির শাশ^ত উপাদানগুলো নিয়ে কটূক্তি করছে, তাদের বিরুদ্ধে এই আইনের কোনো কার্যকর প্রয়োগ আমরা দেখতে পাই না। উল্টোদিকে ‘ধর্মানুভূতির’ ধুয়া তুলে নানা সময় সাংবাদিক-ব্লগার-শিক্ষার্থী-সংস্কৃতিকর্মীসহ মুক্তচিন্তার মানুষদের হয়রানি করা হচ্ছে। নির্মূল কমিটি অতীতের ৫৭ ধারা এবং পরবর্তীতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানির শিকার ভিকটিমদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং তাঁদের আইনি সহায়তা দিয়েছে।’ তিনি, সরকারের কাছে মুক্তিসংগ্রামের ঐতিহাসিক আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র এবং নথিপত্রগুলোকে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানান।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে নির্মূল কমিটির নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের আগামী ৩ বছরের গৃহীত কর্মসূচি উপস্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক নাট্যজন আসিফ মুনীর।

জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও এর কার্যকারিতার গুরুত্বারোপ করে নির্মূল কমিটি উপদেষ্টা পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্য বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বক্তব্য প্রদান করেন।

নির্মূল কমিটি উপদেষ্টা পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্য অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন নির্মূল কমিটির আন্দোলনের গুরুত্ব এবং এর ভবিষ্যৎ কর্মপরিধি নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন।

সংগঠনের নবনির্বাচিত নির্বাহী সভাপতি কাজী মুকুল ৮ম জাতীয় সম্মেলনে নির্বাচিত ৯১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির নাম ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পী আবুল বারক আলভী, শিক্ষাবিদ মমতাজ লফিত, মানবাধিকার নেতা কাজল দেবনাথ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূ-তত্ত্ববিদ মো. মকবুল-এ ইলাহী চৌধুরী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান শহীদ। কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শওকত বাঙালি, বিভাগীয় সম্পাদক সাংবাদিক হারুন আর রশিদ, সহসাধারণ সম্পাদক চলচ্চিত্রনির্মাতা ইসমাত জাহান, ছাত্রনেতা পলাশ সরকার, ছাত্রনেতা আশেক মাহমুদ সোহান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সমাজকর্মী কামরুজ্জামান অপু, ছাত্রনেতা হারুণ অর রশিদ, ছাত্রনেতা অপূর্ব চক্রবর্তী, অর্থ সম্পাদক লেখক আলী আকবর টাবি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক শরীফ নুরজাহান, সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সাংবাদিক সুশীল মালাকার, প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক সাংবাদিক আবু সালেহ রণি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক চলচ্চিত্রনির্মাতা পিন্টু সাহা, পাঠাগার সম্পাদক সমাজকর্মী হাসনাত আব্দুল্লাহ বিপ্লব, সহ-প্রচার সম্পাদক চলচ্চিত্রনির্মাতা সাইফ উদ্দিন রুবেল প্রমুখ।

ছবি

রাখাইনে তীব্র হচ্ছে সংঘাত, বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে রোহিঙ্গারা

সরকার পতনের আন্দোলনে শতাধিক শ্রমিক নিহত : গণতদন্ত কমিটি

মুক্তিযুদ্ধ সংবিধান ও জাতীয় সংগীতকে কটাক্ষ : ৪৮ নাগরিকের নিন্দা ও প্রতিবাদ

বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কিছু করবে না অন্তর্বর্তী সরকার : ধর্ম উপদেষ্টা

গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তরে শিগগিরই কমিটি : উপদেষ্টা নাহিদ

ছবি

সীতাকুণ্ডে শিপ ইয়ার্ডে জাহাজ কাটার সময় বিস্ফোরণ, দগ্ধ ১২

বন্যায় ধানের আবাদ ও উৎপাদন কমতে পারে

ছবি

দীর্ঘমেয়াদি বন্যার কবলে লক্ষ্মীপুর, নানা দুর্ভোগে বানবাসিরা

ছবি

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবি প্রবাসী অধিকার আন্দোলনের

ছবি

নিউইয়র্কে মোদি-ইউনূস বৈঠকের প্রস্তাব, নয়াদিল্লির সিদ্ধান্ত অনিশ্চিত

ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম

সিলেটে ভারতে অনুপ্রবেশকালে আওয়ামী লীগ নেতা আটক

পীরগাছায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার নামে বিএনপি আহবায়কের মামলা, পাল্টা মামলা ও গ্রেপ্তারের দাবীতে থানার সামনে ছাত্রদের অবস্থান

মুক্তিযুদ্ধ সংবিধান ও জাতীয় সংগীতকে কটাক্ষ: ৪৮ বিশিষ্ট নাগরিকের নিন্দা ও প্রতিবাদ

ছবি

আন্দোলনে আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল ভার্সিটির নতুন রেজিস্ট্রার ডাঃ নজরুল

ছবি

আমিরাতে বিক্ষোভ : ক্ষমা পাওয়া ৫৭ বাংলাদেশির মধ্যে ১৪ জন দেশে ফিরবেন আজ

ছবি

সীমান্তে ফেলানীর মতো হত্যাকাণ্ড আর চাই না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কিছু করবে না অন্তর্বর্তী সরকার

সরকার পতনের আন্দোলনে শতাধিক শ্রমিক নিহত : গণতদন্ত কমিটি

ছবি

নিউ ইয়র্কে মুহাম্মদ ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা, আওয়ামী লীগের বিক্ষোভের প্রস্তুতি

ছবি

গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তরে শিগগিরই কমিটি : উপদেষ্টা নাহিদ

দলীয় রাজনীতির কারণেই শ্রমিকদের বিক্ষোভ

ছবি

বাজারে স্বস্তি নেই, বেড়েই চলেছে পণ্যের দাম

ছবি

আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যার সমাধান হতে হবে : পিটিআইকে প্রধান উপদেষ্টা

সিলেটে ‘নিরাপত্তার কারণে’ স্থগিত ‘সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত’

ছবি

অধ্যাপক ডা.আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের নতুন পরিচালক

ছবি

‘চাকরীর আশায় কতোই পরীক্ষা দিয়েছি, শেষ পর্যন্ত ভাগ্য আমার সাথে এমন করলো’

ছবি

কুমিল্লায় সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিব ও সাবেক এমপি বাহারসহ ৪৩৩ জনের নামে মামলা

ছবি

সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান ৭ দিনের রিমান্ডে

ছবি

তিস্তা সমস্যার সমাধান চায় বাংলাদেশ: ইউনূস

ছবি

সাবেক নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান গ্রেপ্তার

ছবি

একযোগে জাতীয় সংগীত গেয়ে প্রতিবাদ জানাল উদীচী

ছবি

সেন্টমার্টিনে যেতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, এমন সিদ্ধান্ত নেয়নি পরিবেশ মন্ত্রণালয়

ছবি

‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘শহীদি মার্চে’ ধ্বনিত শ্লোগান

অধ্যক্ষকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে স্বাক্ষর নেয়া হলো পদত্যাগপত্রে

tab

জাতীয়

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে নির্মূল কমিটি কোনও প্রকার আপোস করবে না : শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি শহীদজায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী যেকনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি অতীতে যেভাবে সোচ্চার ছিল তেমনি ভবিষতেও থাকবে। ’৭২-এর সংবিধান পুনপ্রবর্তন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে নির্মূল কমিটি কোনও প্রকার আপোস করবে না।’

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

৮ম জাতীয় সম্মেলনে গৃহীত নতুন কর্মসূচি এবং নতুন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষনার জন্য এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদকে পরিচয় করিয়ে দেন নির্মূল কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা পরিষদের নবনির্বাচিত সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির।

নতুন কর্মসূচির বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দেন সংগঠনের নবনির্বাচিত সভাপতি শহীদজায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সংগঠনের অন্যতম উপদেষ্টা অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, নির্বাহী সভাপতি কাজী মুকুল, সাধারণ সম্পাদক নাট্যজন আসিফ মুনীর, সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল ও যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ব্লগার লেখক মারুফ রসূল।

নির্মূল কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও বেগবান করার জন্য সম্মেলনে নতুন কর্মসূচি যেমন আমরা গ্রহণ করেছি, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও ঢেলে সাজিয়েছি। ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত ৭ম জাতীয় সম্মেলনে নির্বাচিত ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির শতকরা ৬০ ভাগ সদস্যকে নতুন কমিটিতে রাখা হয়নি তাদের বয়সোচিত মন্থরতা কিংবা অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ার কারণে, যাদের একজন স্বয়ং আমি।

আমরা আগামীতে সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে ৮ম জাতীয় সম্মেলনে নির্বাচিত ৯১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করব।’

নির্মূল কমিটির সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন হয় কিন্তু আলামতের অভাবে তারা অনেক সময় সুষ্ঠু বিচার থেকে বঞ্চিত হয়। আমরা নির্মূল কমিটির চিকিৎসা সহায়ক কমিটি গঠন করেছি, যাতে ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যর্থতার কারণে ভিকটিমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হয়।’

নির্মূল কমিটির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক তাপস কান্তি বল বলেন, ‘মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ভিকটিমদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের জন্য নির্মূল কমিটির আইন সহায়ক কমিটি কাজ করছে। আগামীতে জেলায় জেলায় আইন সহায়ক কমিটি তৃণমূল পর্যায়ে নির্যাতিত মানুষকে আইনি সহযোগিতা প্রদান করবে।’

নির্মূল কমিটির নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের ভবিষ্যত কর্মসূচিগুলোর মধ্যে অনলাইনবিষয়ক কয়েকটি কর্মসূচির প্রতি গুরুত্বারোপ করে সংগঠনের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ব্লগার লেখক মারুফ রসূল বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মের নামে যেভাবে উগ্রবাদ ছড়ানো হচ্ছে, ফেসবুক ইউটিউবে ওয়াজের নামে যেভাবে ধর্ম ও জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গৃহীত হচ্ছে না। এ বিষয়ে আইনের যথাযথ প্রয়োগের দাবিতে রাজপথে যেমন আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে, তেমনি অনলাইনভিত্তিক কার্যক্রমও গ্রহণ করবে নির্মূল কমিটির নব-নির্বাচিত কেন্দ্রীয় পরিষদ। কারণ, যথাযথ কাউন্টার ন্যারেটিভ ছাড়া উগ্রবাদী গোষ্ঠীর ছড়ানো ধর্মান্ধ ও আধিপত্যবাদী এসব বক্তব্যের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া একা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এ কারণেই নির্মূল কমিটির নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদ এ বিষয়ে অনলাইনে ও অফলাইনে সমানভাবে তৎপর থাকবে।’

মারুফ রসূল আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে একপেশে ব্যবহার চলছে গত কয়েক বছর ধরে, তা ভবিষ্যতের বাংলাদেশের জন্য একটি অশনী সংকেত বলে মনে করছে নির্মূল কমিটির নব-নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদ। ওয়াজের নামে যারা ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, যারা মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে অপমান করে নানা সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট তৈরি করছে, বাঙালি সংস্কৃতির শাশ^ত উপাদানগুলো নিয়ে কটূক্তি করছে, তাদের বিরুদ্ধে এই আইনের কোনো কার্যকর প্রয়োগ আমরা দেখতে পাই না। উল্টোদিকে ‘ধর্মানুভূতির’ ধুয়া তুলে নানা সময় সাংবাদিক-ব্লগার-শিক্ষার্থী-সংস্কৃতিকর্মীসহ মুক্তচিন্তার মানুষদের হয়রানি করা হচ্ছে। নির্মূল কমিটি অতীতের ৫৭ ধারা এবং পরবর্তীতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানির শিকার ভিকটিমদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং তাঁদের আইনি সহায়তা দিয়েছে।’ তিনি, সরকারের কাছে মুক্তিসংগ্রামের ঐতিহাসিক আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র এবং নথিপত্রগুলোকে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানান।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে নির্মূল কমিটির নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের আগামী ৩ বছরের গৃহীত কর্মসূচি উপস্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক নাট্যজন আসিফ মুনীর।

জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও এর কার্যকারিতার গুরুত্বারোপ করে নির্মূল কমিটি উপদেষ্টা পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্য বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বক্তব্য প্রদান করেন।

নির্মূল কমিটি উপদেষ্টা পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্য অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন নির্মূল কমিটির আন্দোলনের গুরুত্ব এবং এর ভবিষ্যৎ কর্মপরিধি নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন।

সংগঠনের নবনির্বাচিত নির্বাহী সভাপতি কাজী মুকুল ৮ম জাতীয় সম্মেলনে নির্বাচিত ৯১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির নাম ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পী আবুল বারক আলভী, শিক্ষাবিদ মমতাজ লফিত, মানবাধিকার নেতা কাজল দেবনাথ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূ-তত্ত্ববিদ মো. মকবুল-এ ইলাহী চৌধুরী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান শহীদ। কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শওকত বাঙালি, বিভাগীয় সম্পাদক সাংবাদিক হারুন আর রশিদ, সহসাধারণ সম্পাদক চলচ্চিত্রনির্মাতা ইসমাত জাহান, ছাত্রনেতা পলাশ সরকার, ছাত্রনেতা আশেক মাহমুদ সোহান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সমাজকর্মী কামরুজ্জামান অপু, ছাত্রনেতা হারুণ অর রশিদ, ছাত্রনেতা অপূর্ব চক্রবর্তী, অর্থ সম্পাদক লেখক আলী আকবর টাবি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক শরীফ নুরজাহান, সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সাংবাদিক সুশীল মালাকার, প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক সাংবাদিক আবু সালেহ রণি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক চলচ্চিত্রনির্মাতা পিন্টু সাহা, পাঠাগার সম্পাদক সমাজকর্মী হাসনাত আব্দুল্লাহ বিপ্লব, সহ-প্রচার সম্পাদক চলচ্চিত্রনির্মাতা সাইফ উদ্দিন রুবেল প্রমুখ।

back to top