সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে পিএসসি সংশোধন করার পরও বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে অংশ নিতে আগ্রহ দেখায়নি কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান। সাতটি অনুসন্ধান কোম্পানি দরপত্র কিনলেও শেষ পর্যন্ত জমা দেয়নি কেউ। সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) বেলা একটায় দরপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হয়েছে।
ছয়মাস সময় দিয়ে গত ১০ মার্চ দরপত্র আহ্বান করেছিল পেট্রোবাংলা। সেপ্টেম্বরে সময় শেষ হওয়ার আগেই অংশগ্রহণ ‘আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে’ তিনমাস বাড়িয়ে ৯ ডিসেম্বর দরপত্র জমা দেয়ার সময় নির্ধারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার।
শেষ পর্যন্ত বিদেশি কোনো কোম্পানির সাড়া না পাওয়ায় ‘সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান’ আরও এক ধাপ পিছিয়ে গেল।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সাতটি আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা কোম্পানি দরপত্র কিনেছিল। দুটিটি কোম্পানি ডেটা (জরিপ তথ্য) কিনেছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউই দরপত্র জমা দেয়নি।
কেউ অংশ না নেয়ার কারণ প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, ‘কোনো কোম্পানি সেভাবে কিছু জানায়নি। ধারণা করা হচ্ছে গ্যাসের দরের বিষয়টি এখানে প্রভাবিত করে থাকতে পারে। গ্যাসের দর ক্রড অয়েলের দামের সঙ্গে ওঠানামা করার শর্ত রয়েছে। বর্তমানে ক্রড অয়েলের দাম ৭২ ডলারের মতো, এটা কারণ হলেও হতে পারে।’
দেশে চলমান গ্যাস সংকটে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাসের অভাবে শিল্প কারখানার উৎপাদনও ঝুঁকিতে রয়েছে। পেট্রোবাংলার হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে প্রকৃতিক গ্যাসের যে পরিমাণ মজুদ আছে, তা আগামী ছয়-সাত বছরেই ফুরিয়ে যাবে। নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার না হলে কঠিন জ্বালানি সংকট তৈরী হবে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাগরেই ভরসা খুঁজছে বাংলাদেশ। সেখানে গ্যাস আছে বলেও মনে করেন দেশের জ্বালানি খাত সংশ্লিষ্টরা। তবে উত্তোলন অধরাই থেকে যাচ্ছে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, ‘গ্যাসের অবস্থান নিয়ে কোনো সংশয় নেই, কোনো কোম্পানি এমন তথ্য জানায়নি। গ্যাস রয়েছে এটা অনেকটা নিশ্চিত। আমরা মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভের ডাটাও হাতে পেয়েছি, সেগুলোও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’
পরবর্তী করণীয় প্রসঙ্গে জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, সরকারের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি অবগত করানো হবে। এরপর প্রয়োজন হলে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনার ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরপর আবার দরপত্র আহ্বান করতে হবে।
২০১২ সালে মিয়ানমারের সঙ্গে এবং ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্র-বিরোধ নিষ্পত্তি হলেও বঙ্গোপসাগরে এখনো কোনো অনুসন্ধান কূপ খনন করতে পারেনি বাংলাদেশ। সাগরে এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হওয়া একমাত্র গ্যাসক্ষেত্র সাঙ্গুও পরিত্যক্ত হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের দুই প্রতিবেশী (ভারত ও মিয়ানমার) তাদের ব্লক থেকে গ্যাস তুলতে শুরু করেছে। বাংলাদেশও তাদের সমুদ্র ব্লকগুলোকে ২৬টি ব্লকে ভাগ করেছে। এরমধ্যে গভীর সমুদ্রে ১৫টি এবং অগভীর সমুদ্রে ১১টি ব্লক রয়েছে।
এসব ব্লকে গ্যাস উত্তোলনের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্রে চারটি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল। তার মধ্যে ২০১০ সালে গভীর সমুদ্রে দুটি ব্লকে কাজ নেয় কনোকো ফিলিপস। প্রতিষ্ঠানটি দ্বিমাত্রিক জরিপ চালালেও পরে গ্যাসের দাম নিয়ে মতবিরোধে ব্লক ছেড়ে দেয়। একইভাবে চুক্তির পর কাজ ছেড়ে চলে যায় অস্ট্রেলিয়ার স্যান্তোস।
কনোকোফিলিপস ও স্যান্তোস দাবি করেছিল যেন তাদের সঙ্গে যে চুক্তি করা হয়েছিল, গ্যাসের দাম যেন তা থেকে বাড়িয়ে দেয়া হয়। তাতে বাংলাদেশ সরকার রাজি না হওয়ায় তারা চলে যায়।
২০১৬ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার দাইয়ু কর্পোরেশনের (পস্কো দাইয়ু) সঙ্গে ১২ নম্বর ব্লকে গ্যাস উত্তোলনের উৎপাদন-অংশীদারিত্ব চুক্তি (পিএসসি) করে পেট্রোবাংলা।
এই ব্লকের পাশেই মিয়ানমার অংশে সমুদ্র থেকে গ্যাস তুলছে দাইয়ু।
গ্যাসের দাম নিয়ে মতবিরোধে দাইয়ু ব্লক ছেড়ে চলে যায়। এখন একমাত্র কোম্পানি হিসেবে অগভীর সমুদ্রের দুটি ব্লকে অনুসন্ধান চালাচ্ছে ভারতের কোম্পানি ওএনজিসি।
ব্লক ফেলে চলে যাওয়ার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অনুসন্ধান কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ ও স্বার্থ বিবেচনায় রেখে নতুন উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি)-২০২৩ চূড়ান্ত করা হয়। এতে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম নির্ধারিত না রেখে জ্বালানি তেলের দামের ১০ শতাংশ ধরা হয়। তেলের দাম বাড়লে গ্যাসের দামও বাড়বে, কমলে এটিও কমবে। এখন তেলের দাম ৭০ থেকে ৭২ ডলার, এতে গ্যাসের দাম হবে ৭ থেকে ৭ দশমিক ২ ডলার। দরপত্র ডাকার সময় তেলের দাম ছিল ৯০ ডলারের বেশি।
পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, গভীর সমুদ্রে ১৫টি ও অগভীর সমুদ্রে ৯টি ব্লকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। এতে অংশ নিতে ৫৫টি কোম্পানিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবার আগের চেয়ে বেশ কিছু সুবিধা বাড়ানো হয়। দরপত্রে দেশের স্বার্থের পাশাপাশি বিনিয়োগকারী কোম্পানির স্বার্থও দেখা হয়েছে।
দরপত্র আহ্বানের পর গত মে মাসে একটি সেমিনার আয়োজন করে পেট্রোবাংলা। এতে ১৫টির বেশি আন্তর্জাতিক কোম্পানি অংশ নেয়। সমুদ্রে ১২ হাজার কিলোমিটার লাইন এলাকায় টিজিএস ও স্লামবার্জার মিলে পরিচালিত বহুমাত্রিক ভূকম্পন (টুডি) জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করা হয় সেমিনারে।
পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানির মধ্যে মার্কিন কোম্পানি এক্সনমবিল ও শেভরন, মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস, নরওয়ে ও ফ্রান্সের যৌথ কোম্পানি টিজিএস অ্যান্ড স্লামবার্জার, জাপানের ইনপেক্স করপোরেশন ও জোগম্যাক, চীনের সিনুক, সিঙ্গাপুরের ক্রিস এনার্জি এবং ভারতের ওএনজিসি আগ্রহ প্রকাশ করে বিভিন্ন সময় পেট্রোবাংলার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এরমধ্যে সমুদ্রে বহুমাত্রিক জরিপের তথ্য কিনেছিল শেভরন, এক্সনমবিল, ইনপেক্স, সিনুক ও জোগোম্যাক। শেষ পর্যন্তু তাদের কেউ আসেনি দরপত্রে।
এবারের দরপত্র নিয়ে পেট্রোবাংলা বেশ আশাবাদী ছিল উল্লেখ করে সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘হতে পারে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই মূহুর্তে হয়ত কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতে চাইছে না।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪
সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে পিএসসি সংশোধন করার পরও বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে অংশ নিতে আগ্রহ দেখায়নি কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান। সাতটি অনুসন্ধান কোম্পানি দরপত্র কিনলেও শেষ পর্যন্ত জমা দেয়নি কেউ। সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) বেলা একটায় দরপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হয়েছে।
ছয়মাস সময় দিয়ে গত ১০ মার্চ দরপত্র আহ্বান করেছিল পেট্রোবাংলা। সেপ্টেম্বরে সময় শেষ হওয়ার আগেই অংশগ্রহণ ‘আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে’ তিনমাস বাড়িয়ে ৯ ডিসেম্বর দরপত্র জমা দেয়ার সময় নির্ধারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার।
শেষ পর্যন্ত বিদেশি কোনো কোম্পানির সাড়া না পাওয়ায় ‘সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান’ আরও এক ধাপ পিছিয়ে গেল।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সাতটি আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা কোম্পানি দরপত্র কিনেছিল। দুটিটি কোম্পানি ডেটা (জরিপ তথ্য) কিনেছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউই দরপত্র জমা দেয়নি।
কেউ অংশ না নেয়ার কারণ প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, ‘কোনো কোম্পানি সেভাবে কিছু জানায়নি। ধারণা করা হচ্ছে গ্যাসের দরের বিষয়টি এখানে প্রভাবিত করে থাকতে পারে। গ্যাসের দর ক্রড অয়েলের দামের সঙ্গে ওঠানামা করার শর্ত রয়েছে। বর্তমানে ক্রড অয়েলের দাম ৭২ ডলারের মতো, এটা কারণ হলেও হতে পারে।’
দেশে চলমান গ্যাস সংকটে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাসের অভাবে শিল্প কারখানার উৎপাদনও ঝুঁকিতে রয়েছে। পেট্রোবাংলার হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে প্রকৃতিক গ্যাসের যে পরিমাণ মজুদ আছে, তা আগামী ছয়-সাত বছরেই ফুরিয়ে যাবে। নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার না হলে কঠিন জ্বালানি সংকট তৈরী হবে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাগরেই ভরসা খুঁজছে বাংলাদেশ। সেখানে গ্যাস আছে বলেও মনে করেন দেশের জ্বালানি খাত সংশ্লিষ্টরা। তবে উত্তোলন অধরাই থেকে যাচ্ছে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, ‘গ্যাসের অবস্থান নিয়ে কোনো সংশয় নেই, কোনো কোম্পানি এমন তথ্য জানায়নি। গ্যাস রয়েছে এটা অনেকটা নিশ্চিত। আমরা মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভের ডাটাও হাতে পেয়েছি, সেগুলোও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’
পরবর্তী করণীয় প্রসঙ্গে জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, সরকারের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি অবগত করানো হবে। এরপর প্রয়োজন হলে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনার ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরপর আবার দরপত্র আহ্বান করতে হবে।
২০১২ সালে মিয়ানমারের সঙ্গে এবং ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্র-বিরোধ নিষ্পত্তি হলেও বঙ্গোপসাগরে এখনো কোনো অনুসন্ধান কূপ খনন করতে পারেনি বাংলাদেশ। সাগরে এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হওয়া একমাত্র গ্যাসক্ষেত্র সাঙ্গুও পরিত্যক্ত হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের দুই প্রতিবেশী (ভারত ও মিয়ানমার) তাদের ব্লক থেকে গ্যাস তুলতে শুরু করেছে। বাংলাদেশও তাদের সমুদ্র ব্লকগুলোকে ২৬টি ব্লকে ভাগ করেছে। এরমধ্যে গভীর সমুদ্রে ১৫টি এবং অগভীর সমুদ্রে ১১টি ব্লক রয়েছে।
এসব ব্লকে গ্যাস উত্তোলনের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্রে চারটি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল। তার মধ্যে ২০১০ সালে গভীর সমুদ্রে দুটি ব্লকে কাজ নেয় কনোকো ফিলিপস। প্রতিষ্ঠানটি দ্বিমাত্রিক জরিপ চালালেও পরে গ্যাসের দাম নিয়ে মতবিরোধে ব্লক ছেড়ে দেয়। একইভাবে চুক্তির পর কাজ ছেড়ে চলে যায় অস্ট্রেলিয়ার স্যান্তোস।
কনোকোফিলিপস ও স্যান্তোস দাবি করেছিল যেন তাদের সঙ্গে যে চুক্তি করা হয়েছিল, গ্যাসের দাম যেন তা থেকে বাড়িয়ে দেয়া হয়। তাতে বাংলাদেশ সরকার রাজি না হওয়ায় তারা চলে যায়।
২০১৬ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার দাইয়ু কর্পোরেশনের (পস্কো দাইয়ু) সঙ্গে ১২ নম্বর ব্লকে গ্যাস উত্তোলনের উৎপাদন-অংশীদারিত্ব চুক্তি (পিএসসি) করে পেট্রোবাংলা।
এই ব্লকের পাশেই মিয়ানমার অংশে সমুদ্র থেকে গ্যাস তুলছে দাইয়ু।
গ্যাসের দাম নিয়ে মতবিরোধে দাইয়ু ব্লক ছেড়ে চলে যায়। এখন একমাত্র কোম্পানি হিসেবে অগভীর সমুদ্রের দুটি ব্লকে অনুসন্ধান চালাচ্ছে ভারতের কোম্পানি ওএনজিসি।
ব্লক ফেলে চলে যাওয়ার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অনুসন্ধান কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ ও স্বার্থ বিবেচনায় রেখে নতুন উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি)-২০২৩ চূড়ান্ত করা হয়। এতে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম নির্ধারিত না রেখে জ্বালানি তেলের দামের ১০ শতাংশ ধরা হয়। তেলের দাম বাড়লে গ্যাসের দামও বাড়বে, কমলে এটিও কমবে। এখন তেলের দাম ৭০ থেকে ৭২ ডলার, এতে গ্যাসের দাম হবে ৭ থেকে ৭ দশমিক ২ ডলার। দরপত্র ডাকার সময় তেলের দাম ছিল ৯০ ডলারের বেশি।
পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, গভীর সমুদ্রে ১৫টি ও অগভীর সমুদ্রে ৯টি ব্লকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। এতে অংশ নিতে ৫৫টি কোম্পানিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবার আগের চেয়ে বেশ কিছু সুবিধা বাড়ানো হয়। দরপত্রে দেশের স্বার্থের পাশাপাশি বিনিয়োগকারী কোম্পানির স্বার্থও দেখা হয়েছে।
দরপত্র আহ্বানের পর গত মে মাসে একটি সেমিনার আয়োজন করে পেট্রোবাংলা। এতে ১৫টির বেশি আন্তর্জাতিক কোম্পানি অংশ নেয়। সমুদ্রে ১২ হাজার কিলোমিটার লাইন এলাকায় টিজিএস ও স্লামবার্জার মিলে পরিচালিত বহুমাত্রিক ভূকম্পন (টুডি) জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করা হয় সেমিনারে।
পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানির মধ্যে মার্কিন কোম্পানি এক্সনমবিল ও শেভরন, মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস, নরওয়ে ও ফ্রান্সের যৌথ কোম্পানি টিজিএস অ্যান্ড স্লামবার্জার, জাপানের ইনপেক্স করপোরেশন ও জোগম্যাক, চীনের সিনুক, সিঙ্গাপুরের ক্রিস এনার্জি এবং ভারতের ওএনজিসি আগ্রহ প্রকাশ করে বিভিন্ন সময় পেট্রোবাংলার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এরমধ্যে সমুদ্রে বহুমাত্রিক জরিপের তথ্য কিনেছিল শেভরন, এক্সনমবিল, ইনপেক্স, সিনুক ও জোগোম্যাক। শেষ পর্যন্তু তাদের কেউ আসেনি দরপত্রে।
এবারের দরপত্র নিয়ে পেট্রোবাংলা বেশ আশাবাদী ছিল উল্লেখ করে সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘হতে পারে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই মূহুর্তে হয়ত কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতে চাইছে না।’