আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ‘ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, ভারতীয় গণমাধ্যমের মিথ্যাচারের ওপর ভর করে বলা যায় না, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়নি। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত যুক্তি দিয়েও সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিচারহীনতাকে বৈধ করা যাবে না। ধর্মের নামে ফ্যাসিবাদী চর্চা সুফল বয়ে আনে না।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ে সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আলোচনা সভায় ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ সংখ্যালঘু নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি জানানো হয়। বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা বেড়েছে। এত বছরেও কোনো রাজনৈতিক দলই অসাম্প্রদায়িকতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
আলোচনায় অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ৫৩ বছরেও বাংলাদেশ মানুষের রাষ্ট্র হতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় থিতু হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধকে নস্যাৎ করে টেকা যাবে না। প্রতিটি সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের মধ্যে বৈষয়িক ব্যাপার, বিশেষ করে সংখ্যাগরিষ্ঠদের বৈষয়িক ব্যাপার জড়িত থাকে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ভারতের গণমাধ্যম মিথ্যাচার করেছে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন বলেন, এ মিথ্যার ওপর ভর করে বলা যাবে না যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়নি। নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, এই যুক্তি দিয়েও সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিচারহীনতাকে বৈধ করা যাবে না।
অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চার যুগ্ম সমন্বয়ক মনীন্দ্র কুমার নাথ। তাতে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্য নিরসনের বিষয়টি আদৌ সংস্কার–পরবর্তী সংবিধানে সুরক্ষিত থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলা হয়, স্বাধীনতার ৫৩ বছর হলেও কোনো রাজনৈতিক দলই অসাম্প্রদায়িকতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে সরকার পতনের পর শুধু সংখ্যালঘু হিসেবেও হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করেন
এএলআরডি নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশকে সব ধর্ম-মতবাদের মানুষের জন্য নিরাপদ করা সবার কর্তব্য।তিনি বলেন, মর্যাদা ও নিরাপত্তা সুরক্ষিত করার বিষয়টিকে এখনো সন্তোষজনক পর্যায়ে আনা যায়নি উল্লেখ করে শামসুল হুদা বলেন, এটা জাতীয় লজ্জা। এটা রাষ্ট্রসহ সবার ব্যর্থতা।
সংখ্যালঘুদের ‘ট্রাম্প কার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলে মন্তব্য করেন রাজধানীর রমনার সেন্ট মেরিস ক্যাথিড্রালের প্রধান পুরোহিত ফাদার আলবার্ট রোজারিও। তিনি বলেন, সংখ্যালঘু একটা ট্রাম্প কার্ড, যার ইচ্ছা সুবিধামতো ব্যবহার করে। ৫৩ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে রাষ্ট্র যথাযথভাবে মানুষের অধিকারের সুরক্ষা দিতে পেরেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, রাজপথ ছাড়া অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এ দেশে পরবর্তী প্রজন্মকে ভালো অবস্থান করে দিতে চাইলে রাজপথে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক, পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, কারিতাস উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক থিওফিল নকরেকসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঐক্য পরিষদের সভাপতিম-লীর সদস্য রঞ্জন কর্মকার।
শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ‘ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, ভারতীয় গণমাধ্যমের মিথ্যাচারের ওপর ভর করে বলা যায় না, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়নি। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত যুক্তি দিয়েও সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিচারহীনতাকে বৈধ করা যাবে না। ধর্মের নামে ফ্যাসিবাদী চর্চা সুফল বয়ে আনে না।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ে সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আলোচনা সভায় ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ সংখ্যালঘু নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি জানানো হয়। বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা বেড়েছে। এত বছরেও কোনো রাজনৈতিক দলই অসাম্প্রদায়িকতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
আলোচনায় অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ৫৩ বছরেও বাংলাদেশ মানুষের রাষ্ট্র হতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় থিতু হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধকে নস্যাৎ করে টেকা যাবে না। প্রতিটি সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের মধ্যে বৈষয়িক ব্যাপার, বিশেষ করে সংখ্যাগরিষ্ঠদের বৈষয়িক ব্যাপার জড়িত থাকে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ভারতের গণমাধ্যম মিথ্যাচার করেছে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন বলেন, এ মিথ্যার ওপর ভর করে বলা যাবে না যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়নি। নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, এই যুক্তি দিয়েও সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিচারহীনতাকে বৈধ করা যাবে না।
অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চার যুগ্ম সমন্বয়ক মনীন্দ্র কুমার নাথ। তাতে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্য নিরসনের বিষয়টি আদৌ সংস্কার–পরবর্তী সংবিধানে সুরক্ষিত থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলা হয়, স্বাধীনতার ৫৩ বছর হলেও কোনো রাজনৈতিক দলই অসাম্প্রদায়িকতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে সরকার পতনের পর শুধু সংখ্যালঘু হিসেবেও হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করেন
এএলআরডি নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশকে সব ধর্ম-মতবাদের মানুষের জন্য নিরাপদ করা সবার কর্তব্য।তিনি বলেন, মর্যাদা ও নিরাপত্তা সুরক্ষিত করার বিষয়টিকে এখনো সন্তোষজনক পর্যায়ে আনা যায়নি উল্লেখ করে শামসুল হুদা বলেন, এটা জাতীয় লজ্জা। এটা রাষ্ট্রসহ সবার ব্যর্থতা।
সংখ্যালঘুদের ‘ট্রাম্প কার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলে মন্তব্য করেন রাজধানীর রমনার সেন্ট মেরিস ক্যাথিড্রালের প্রধান পুরোহিত ফাদার আলবার্ট রোজারিও। তিনি বলেন, সংখ্যালঘু একটা ট্রাম্প কার্ড, যার ইচ্ছা সুবিধামতো ব্যবহার করে। ৫৩ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে রাষ্ট্র যথাযথভাবে মানুষের অধিকারের সুরক্ষা দিতে পেরেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, রাজপথ ছাড়া অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এ দেশে পরবর্তী প্রজন্মকে ভালো অবস্থান করে দিতে চাইলে রাজপথে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক, পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, কারিতাস উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক থিওফিল নকরেকসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঐক্য পরিষদের সভাপতিম-লীর সদস্য রঞ্জন কর্মকার।