জনবান্ধব ও কার্যকর সেবা নিশ্চিত করতে সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা আনা ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করার দাবি জানিয়েছেন ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের’ নেতারা। তারা প্রশাসনে ‘অনিয়ম ও অসমতা’ দূর করার দাবি জানিয়েছেন।
বক্তারা বলেন, পদ ছাড়া পদোন্নতি হওয়া বন্ধ করতে হবে, না হয় সব ক্যাডারের জন্য একই নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। উপসচিব পুলে যাওয়া সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মন্ত্রণালয়ে পদায়নেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘জন-আকাঙ্খা পূরণে প্রত্যাশিত সিভিল সার্ভিস’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’। পরে পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
কার্যকর জনসেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে নিজ নিজ ক্যাডারের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন করতে হবে উল্লেখ করে সেমিনারে বক্তারা আরও বলেন, বর্তমানে দেখা যায়- কৃষি ক্যাডার থেকে উপসচিব পুলে যাওয়া কর্মকর্তাকে নৌ-পরিবহনে, শিক্ষা থেকে যাওয়া কর্মকর্তাকে পানিসম্পদে, স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাকে তথ্য মন্ত্রণালয়ে পদায়িত করা হচ্ছে; পরে আবার বলা হচ্ছে যে ওই কর্মকর্তারা কর্মদক্ষ নন।
এই ধরণের পদায়নের ফলে পুলের মূল উদ্দেশ্য ব্যর্থ হচ্ছে এবং জাতিও অভিজ্ঞ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও বক্তারা বলেন। তারা বলেন, বৈষম্যহীন জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তা দিয়ে পরিচালনা এবং কোটামুক্ত মেধাভিত্তিক উপসচিব পুল অত্যন্ত জরুরি।
বক্তারা বলেন, প্রশাসনের সব স্তরে অনিয়ম, কোটাবৈষম্য, অসমতা দূর করে একটি গতিশীল জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়তে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। কোটা বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় করে গঠিত হয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। তাই সব ধরনের কোটা বিলোপের মাধ্যমে মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়তে তুলতে হবে।
দক্ষ, পেশাদার ও গতিশীল সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যথাসময়ে পদোন্নতিসহ সব ক্যাডারের মধ্যে সমতার প্রয়োজন মন্তব্য করে সেমিনারে বক্তারা বলেন, একই দেশে একটি ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদ না থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি পাবেন, আর অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদ থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি পাবেন না, এটা কোনো আধুনিক প্রশাসনব্যবস্থা হতে পারে না। এ অনিয়ম দূর করা উচিত। সব ধরনের কোটা বিলোপের মাধ্যমে মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়তে তুলতে হবে।
সব সেক্টরে একটি ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় সার্ভিসে পেশাদারিত্ব মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে দাবি করে বক্তারা বলেন, ‘সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অব্যবস্থাপনার ফলে সেক্টরগুলো কাঙ্খিত জনসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না।’ বৈষম্যহীন জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তার দ্বারা পরিচালনা এবং কোটামুক্ত মেধাভিত্তিক উপসচিব পুল অত্যন্ত জরুরি বলে বক্তারা মত ব্যক্ত করেন।
বিরাজমান প্রশাসনিক ‘অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার’ কারণে ২৫ ক্যাডারের প্রায় সব শীর্ষ পদে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন নেই দাবি করে বক্তারা বলেন, এতে সংশ্লিষ্ট ক্যাডার কর্মকর্তারা কাজের স্পৃহা হারিয়ে ফেলছেন।
এর ফলে জনগণ তাদের কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দাবি করে পেশাজীবী নেতারা বলেন, ‘দক্ষ, পেশাদার ও গতিশীল সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যথাসময়ে পদোন্নতিসহ সব ক্যাডারের মধ্যে সমতার প্রয়োজন রয়েছে। প্রশাসন ক্যাডারের ইচ্ছাকৃত সৃষ্ট জটিলতা ও ঔপনিবেশিক মনোভাব বলে মনে করেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা।’ সেজন্য এ অনিয়ম দূর করতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা।
পেশাজীবী নেতারা বলেন, ২৫ ক্যাডার সরকারকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সব ক্ষেত্রের উন্নয়নে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নে ব্যাপক অবদানের পরেও এসব ক্যাডারের কর্মকর্তারা বঞ্চিত। এই বঞ্চনা দূর করতে বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বর্তী সরকারকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।
নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, এজন্য রাষ্ট্র ও জনকল্যাণে কমিশন একটি আধুনিক সেবামূলক সিভিল সার্ভিস গঠনে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব পেশ করবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের’ আহ্বায়ক মুহাম্মদ আহসান হাবিবের সভাপতিত্বে সেমিনারে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা মুহম্মদ মফিজুর রহমান। সেমিনার সঞ্চালনা করেন পরিষদের সহসমন্বয়ক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন ও তাহসীন তাবাসসুম।
আলোচনায় অংশ নেন কলাম লেখক ফিরোজ আহমেদ, অধ্যাপক নাসরিন বেগম, আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল, অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ জেলা জজ শাহজাহান সাজু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক কাজী মাহবুবুর রহমান, ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদেকুর রহমান প্রমুখ।
রোববার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
জনবান্ধব ও কার্যকর সেবা নিশ্চিত করতে সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা আনা ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করার দাবি জানিয়েছেন ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের’ নেতারা। তারা প্রশাসনে ‘অনিয়ম ও অসমতা’ দূর করার দাবি জানিয়েছেন।
বক্তারা বলেন, পদ ছাড়া পদোন্নতি হওয়া বন্ধ করতে হবে, না হয় সব ক্যাডারের জন্য একই নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। উপসচিব পুলে যাওয়া সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মন্ত্রণালয়ে পদায়নেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘জন-আকাঙ্খা পূরণে প্রত্যাশিত সিভিল সার্ভিস’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’। পরে পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
কার্যকর জনসেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে নিজ নিজ ক্যাডারের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন করতে হবে উল্লেখ করে সেমিনারে বক্তারা আরও বলেন, বর্তমানে দেখা যায়- কৃষি ক্যাডার থেকে উপসচিব পুলে যাওয়া কর্মকর্তাকে নৌ-পরিবহনে, শিক্ষা থেকে যাওয়া কর্মকর্তাকে পানিসম্পদে, স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাকে তথ্য মন্ত্রণালয়ে পদায়িত করা হচ্ছে; পরে আবার বলা হচ্ছে যে ওই কর্মকর্তারা কর্মদক্ষ নন।
এই ধরণের পদায়নের ফলে পুলের মূল উদ্দেশ্য ব্যর্থ হচ্ছে এবং জাতিও অভিজ্ঞ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও বক্তারা বলেন। তারা বলেন, বৈষম্যহীন জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তা দিয়ে পরিচালনা এবং কোটামুক্ত মেধাভিত্তিক উপসচিব পুল অত্যন্ত জরুরি।
বক্তারা বলেন, প্রশাসনের সব স্তরে অনিয়ম, কোটাবৈষম্য, অসমতা দূর করে একটি গতিশীল জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়তে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। কোটা বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় করে গঠিত হয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। তাই সব ধরনের কোটা বিলোপের মাধ্যমে মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়তে তুলতে হবে।
দক্ষ, পেশাদার ও গতিশীল সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যথাসময়ে পদোন্নতিসহ সব ক্যাডারের মধ্যে সমতার প্রয়োজন মন্তব্য করে সেমিনারে বক্তারা বলেন, একই দেশে একটি ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদ না থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি পাবেন, আর অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদ থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি পাবেন না, এটা কোনো আধুনিক প্রশাসনব্যবস্থা হতে পারে না। এ অনিয়ম দূর করা উচিত। সব ধরনের কোটা বিলোপের মাধ্যমে মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়তে তুলতে হবে।
সব সেক্টরে একটি ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় সার্ভিসে পেশাদারিত্ব মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে দাবি করে বক্তারা বলেন, ‘সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অব্যবস্থাপনার ফলে সেক্টরগুলো কাঙ্খিত জনসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না।’ বৈষম্যহীন জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তার দ্বারা পরিচালনা এবং কোটামুক্ত মেধাভিত্তিক উপসচিব পুল অত্যন্ত জরুরি বলে বক্তারা মত ব্যক্ত করেন।
বিরাজমান প্রশাসনিক ‘অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার’ কারণে ২৫ ক্যাডারের প্রায় সব শীর্ষ পদে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন নেই দাবি করে বক্তারা বলেন, এতে সংশ্লিষ্ট ক্যাডার কর্মকর্তারা কাজের স্পৃহা হারিয়ে ফেলছেন।
এর ফলে জনগণ তাদের কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দাবি করে পেশাজীবী নেতারা বলেন, ‘দক্ষ, পেশাদার ও গতিশীল সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যথাসময়ে পদোন্নতিসহ সব ক্যাডারের মধ্যে সমতার প্রয়োজন রয়েছে। প্রশাসন ক্যাডারের ইচ্ছাকৃত সৃষ্ট জটিলতা ও ঔপনিবেশিক মনোভাব বলে মনে করেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা।’ সেজন্য এ অনিয়ম দূর করতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা।
পেশাজীবী নেতারা বলেন, ২৫ ক্যাডার সরকারকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সব ক্ষেত্রের উন্নয়নে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নে ব্যাপক অবদানের পরেও এসব ক্যাডারের কর্মকর্তারা বঞ্চিত। এই বঞ্চনা দূর করতে বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বর্তী সরকারকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।
নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, এজন্য রাষ্ট্র ও জনকল্যাণে কমিশন একটি আধুনিক সেবামূলক সিভিল সার্ভিস গঠনে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব পেশ করবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের’ আহ্বায়ক মুহাম্মদ আহসান হাবিবের সভাপতিত্বে সেমিনারে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা মুহম্মদ মফিজুর রহমান। সেমিনার সঞ্চালনা করেন পরিষদের সহসমন্বয়ক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন ও তাহসীন তাবাসসুম।
আলোচনায় অংশ নেন কলাম লেখক ফিরোজ আহমেদ, অধ্যাপক নাসরিন বেগম, আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল, অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ জেলা জজ শাহজাহান সাজু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক কাজী মাহবুবুর রহমান, ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদেকুর রহমান প্রমুখ।