সরবরাহ কমায় বাজারে বেড়েছে শীতকাল ও গ্রীষ্মকাল উভয় ঋতুতে উৎপাদিত প্রায় সব সবজির দাম। এসব সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম, কেজিতে ১০ টাকা। পহেলা বৈশাখের আগেই চড়েছে ইলিশ মাছের দামও। বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকায়। অন্য মাছও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। মাংসের দামেও হেরফের লক্ষ করা যায়নি। তবে, ডিম-আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আছে। কয়েক দফায় বেড়ে যাওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘ঈদের পর সবজির দাম উড়াধুরা বাড়তাছে, কমার কোনো স্কোপ নাই।’ ‘দাম বাড়বো, আরও বাড়বো’। ‘সব হাইর্যাঙ্কে (সবজির দাম) চলে গেছে।’
‘দাম বাড়বো, আরও বাড়বো’
পহেলা বৈশাখের আগেই বেড়েছে ইলিশ মাছের দাম। ‘এক কেজি দুইশো গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ
৩ হাজার টাকা। ৭শ’ গ্রামের দাম ২ হাজার টাকা, ৫শ’ গ্রাম ১৪০০ টাকা। দাম আরও বাড়বে’
শুক্রবার রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে ও খুচরা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারভেদে শীতকালীন সবজি মুলা বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। দুই সপ্তাহ আগেও যা বিক্রি হয়েছিল ২০ টাকায়। মাঝারি আকারের এক পিস ফুলকপি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, যা পাওয়া যেত ২০ থেকে ২৫ টাকায়। একপিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা আর টমেটো ৪০ টাকায়। এসব সবজি ক্রেতাদের বেশ কিছুদিন স্বস্তি দিয়েছিল।
সবজির দামের বিষয়ে শ্যামলী কাঁচাবাজারে সবজি বিক্রেতা জামসেদ হোসাইন সংবাদকে বলেন, ‘সব হাইর্যাঙ্কে (সবজির দাম) চলে গেছে।’ এ বাজারে এক কেজি কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। এছাড়া ঝিঙ্গা ১২০ টাকা, চিকন আকারের কচুরলতি কেজি ১২০ টাকা, মোটা আকারের কচুরলতি ১০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, পটোল-ঢেঁড়স-চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, এক পিস জালি কুমড়া ৭০ টাকা আর এক কেজি কাঁচা পেঁপেও বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এক প্রশ্নের জবাবে
জামসেদের দোকানে সবজি কিনতে আসা মাসুদ সংবাদকে বলেন, ‘টমেটোর কেজি ৪০ টাকা ঠিক আছে। অন্যগুলার দাম (অন্যসব সবজি) বাড়তি!’
গত রমজানে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় লম্বা বেগুনের দাম বেড়ে কেজি বিক্রি হয়েছিল ১০০ টাকার ওপর। সেই দাম এখনও নামেনি। যা শুক্রবার ও বিক্রি হয়েছে কেজি ১০০ টাকায়। আর গোলাপি রঙের গোল বেগুন বিক্রি হয়েছে কেজি ১৩০ টাকায়। তবে রমজানে বেড়ে যাওয়া লেবুর দাম কমেছে। আবার রমজান থেকে দ্বিগুণ বেশি হয়েছে শসার দাম কেজি ১২০ টাকা।
রাজধানীর শ্যামলী কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. খোরশেদ আলম সংবাদকে বলেন, ‘ ঈদের পর সবজির দাম উড়াধুরা বাড়তাছে, কমার কোনো স্কোপ নাই। এতদিন সবজির সিজন ছিল, সরবরাহ বেশি ছিল এখন একটু সংকট।’
খুচরা বাজারে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। একই পেঁয়াজ ঈদের আগে বিক্রি হয়েছিল কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। ডিম-আলু এখনও স্বস্তি দিচ্ছে ক্রেতাদের। ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিম পাওয়া যাচ্ছে ১৩০ টাকায় আর এক কেজি আলু ৩০ টাকায়। মাছ-মাংসের দাম অপরিবর্তিত।
শ্যামলী কাঁচা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতা মো. কামাল উদ্দিন। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘দাম বাড়বো, আরও বাড়বো। শনিবার (শুক্রবার) পাইকারি বাজারে পাবনার পেঁয়াজ কেজি ৪৫ টাকা। আর পাইকারিতে ৪৫ টাকা কিনে আনলে বিক্রি করতে হবে কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। তাই কিনেও আনিনি, দোকানেও উঠাইনি। আগের কেনা পেঁয়াজেই বিক্রি করছি কেজি ৫০ টাকায়।’
পহেলা বৈশাখের আগেই বেড়েছে ইলিশ মাছের দাম। শ্যামলী কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা মো. তুহিন সংবাদকে বলেন, ‘এক কেজি দুইশো গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ ৩ হাজার টাকা। ৭শ’ গ্রামের দাম ২ হাজার টাকা, ৫শ’ গ্রাম ১৪০০ টাকা। দাম আরও বাড়বে।’
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চাল কিনে বাসার উদ্দেশে ফিরছিলেন রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজ করা নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে ৫০০ টাকা দিন হাজরায় কাজ করা নেত্রকোনার রতন মিয়া। বর্তমানে স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন রাজধানীর সেগুনবাগিচায়। বাচ্চাদের পড়ালেখার জন্য ‘কম কম খেয়ে’ চলছেন। মাসে গড়ে ২০ দিন কাজ করে যে আয় করেন তার কিছু থাকে না।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘কষ্ট ভাই, কষ্ট! এইসব কইয়া লাভ নাই। আমগোরে গরিব মানুষেরে কষ্ট...!’
দাম কমা-বাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কী কমু। সবিরেতো তো দাম! ওরা যে রেট চায়, ঐইটা তো নিতে হবে, খাইতে হবো যেহেতু পেট আছে। খাওয়োন তো লাগবে, কিছু করার নেই। যদি ৭০ টাকা চায় খাইতে হইবো, নাখায়া উপায় নাই।’
শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
সরবরাহ কমায় বাজারে বেড়েছে শীতকাল ও গ্রীষ্মকাল উভয় ঋতুতে উৎপাদিত প্রায় সব সবজির দাম। এসব সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম, কেজিতে ১০ টাকা। পহেলা বৈশাখের আগেই চড়েছে ইলিশ মাছের দামও। বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকায়। অন্য মাছও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। মাংসের দামেও হেরফের লক্ষ করা যায়নি। তবে, ডিম-আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আছে। কয়েক দফায় বেড়ে যাওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘ঈদের পর সবজির দাম উড়াধুরা বাড়তাছে, কমার কোনো স্কোপ নাই।’ ‘দাম বাড়বো, আরও বাড়বো’। ‘সব হাইর্যাঙ্কে (সবজির দাম) চলে গেছে।’
‘দাম বাড়বো, আরও বাড়বো’
পহেলা বৈশাখের আগেই বেড়েছে ইলিশ মাছের দাম। ‘এক কেজি দুইশো গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ
৩ হাজার টাকা। ৭শ’ গ্রামের দাম ২ হাজার টাকা, ৫শ’ গ্রাম ১৪০০ টাকা। দাম আরও বাড়বে’
শুক্রবার রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে ও খুচরা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারভেদে শীতকালীন সবজি মুলা বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। দুই সপ্তাহ আগেও যা বিক্রি হয়েছিল ২০ টাকায়। মাঝারি আকারের এক পিস ফুলকপি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, যা পাওয়া যেত ২০ থেকে ২৫ টাকায়। একপিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা আর টমেটো ৪০ টাকায়। এসব সবজি ক্রেতাদের বেশ কিছুদিন স্বস্তি দিয়েছিল।
সবজির দামের বিষয়ে শ্যামলী কাঁচাবাজারে সবজি বিক্রেতা জামসেদ হোসাইন সংবাদকে বলেন, ‘সব হাইর্যাঙ্কে (সবজির দাম) চলে গেছে।’ এ বাজারে এক কেজি কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। এছাড়া ঝিঙ্গা ১২০ টাকা, চিকন আকারের কচুরলতি কেজি ১২০ টাকা, মোটা আকারের কচুরলতি ১০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, পটোল-ঢেঁড়স-চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, এক পিস জালি কুমড়া ৭০ টাকা আর এক কেজি কাঁচা পেঁপেও বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এক প্রশ্নের জবাবে
জামসেদের দোকানে সবজি কিনতে আসা মাসুদ সংবাদকে বলেন, ‘টমেটোর কেজি ৪০ টাকা ঠিক আছে। অন্যগুলার দাম (অন্যসব সবজি) বাড়তি!’
গত রমজানে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় লম্বা বেগুনের দাম বেড়ে কেজি বিক্রি হয়েছিল ১০০ টাকার ওপর। সেই দাম এখনও নামেনি। যা শুক্রবার ও বিক্রি হয়েছে কেজি ১০০ টাকায়। আর গোলাপি রঙের গোল বেগুন বিক্রি হয়েছে কেজি ১৩০ টাকায়। তবে রমজানে বেড়ে যাওয়া লেবুর দাম কমেছে। আবার রমজান থেকে দ্বিগুণ বেশি হয়েছে শসার দাম কেজি ১২০ টাকা।
রাজধানীর শ্যামলী কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. খোরশেদ আলম সংবাদকে বলেন, ‘ ঈদের পর সবজির দাম উড়াধুরা বাড়তাছে, কমার কোনো স্কোপ নাই। এতদিন সবজির সিজন ছিল, সরবরাহ বেশি ছিল এখন একটু সংকট।’
খুচরা বাজারে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। একই পেঁয়াজ ঈদের আগে বিক্রি হয়েছিল কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। ডিম-আলু এখনও স্বস্তি দিচ্ছে ক্রেতাদের। ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিম পাওয়া যাচ্ছে ১৩০ টাকায় আর এক কেজি আলু ৩০ টাকায়। মাছ-মাংসের দাম অপরিবর্তিত।
শ্যামলী কাঁচা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতা মো. কামাল উদ্দিন। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘দাম বাড়বো, আরও বাড়বো। শনিবার (শুক্রবার) পাইকারি বাজারে পাবনার পেঁয়াজ কেজি ৪৫ টাকা। আর পাইকারিতে ৪৫ টাকা কিনে আনলে বিক্রি করতে হবে কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। তাই কিনেও আনিনি, দোকানেও উঠাইনি। আগের কেনা পেঁয়াজেই বিক্রি করছি কেজি ৫০ টাকায়।’
পহেলা বৈশাখের আগেই বেড়েছে ইলিশ মাছের দাম। শ্যামলী কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা মো. তুহিন সংবাদকে বলেন, ‘এক কেজি দুইশো গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ ৩ হাজার টাকা। ৭শ’ গ্রামের দাম ২ হাজার টাকা, ৫শ’ গ্রাম ১৪০০ টাকা। দাম আরও বাড়বে।’
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চাল কিনে বাসার উদ্দেশে ফিরছিলেন রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজ করা নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে ৫০০ টাকা দিন হাজরায় কাজ করা নেত্রকোনার রতন মিয়া। বর্তমানে স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন রাজধানীর সেগুনবাগিচায়। বাচ্চাদের পড়ালেখার জন্য ‘কম কম খেয়ে’ চলছেন। মাসে গড়ে ২০ দিন কাজ করে যে আয় করেন তার কিছু থাকে না।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘কষ্ট ভাই, কষ্ট! এইসব কইয়া লাভ নাই। আমগোরে গরিব মানুষেরে কষ্ট...!’
দাম কমা-বাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কী কমু। সবিরেতো তো দাম! ওরা যে রেট চায়, ঐইটা তো নিতে হবে, খাইতে হবো যেহেতু পেট আছে। খাওয়োন তো লাগবে, কিছু করার নেই। যদি ৭০ টাকা চায় খাইতে হইবো, নাখায়া উপায় নাই।’