শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররমের সামনে ইসলামী দলগুলোর বিক্ষোভ -সংবাদ
প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধ এবং স্বাধীন প্যালেস্টাইনে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন ইসলামি দল। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররম এলাকায় তারা বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে প্যালেস্টাইনিদের ওপর হামলা বন্ধ করাসহ বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের এক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল বাংলাদেশের ও প্যালেস্টাইনের পতাকা। হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ছিল তাদের হাতে।
নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ। এরপর বিভিন্ন দল ও সংগঠন একের পর এক মিছিল নিয়ে বের হতে থাকেন। এর মধ্যে ছিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ শান্তি সংঘ, তিসরী ইনসাফ দল, বাংলাদেশ ইসলামী যুব সংঘ, আল কুদ্?স কমিটি বাংলাদেশ, আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় ইমাম সমাজসহ অনেকে। মিছিলটি বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে শুরু করে পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগর গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা মর্মাহত, আমাদের হৃদয় রক্তাক্ত। যত দিন পর্যন্ত আল আকসা মুক্ত না হবে, লড়াই চলবে। অবিলম্বে প্যালেস্টাইনকে স্বাধীন করুন।’ তিনি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে আজ শনিবার মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
সমাবেশে ইসলামী যুব আন্দোলনের নেতারা বলেন, ইসরায়েল যে গণহত্যা চালাচ্ছে, তা মানবতার চরম লঙ্ঘন। এ অবস্থায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হলে তাদের সব পণ্য বয়কট করতে হবে। দেশের যেসব ব্যবসায়ী ইসরায়েলি পণ্য আমদানি করছেন, তাদের অনুরোধ করব এই ব্যবসা থেকে দ্রুত সরে আসুন। দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সবসময় প্যালেস্টাইনের পাশে থাকবে।
তারা আরও বলেন, বিশ্ব সন্ত্রাসী আমেরিকা ও ইসরায়েলের মদদে গাজায় যে গণহত্যা চলছে, তা আন্তর্জাতিক যুদ্ধনীতির পরিপন্থী। হামাসের সঙ্গে পারছে না বলে নিরীহ শিশু, নারী, সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। অথচ জাতিসংঘসহ কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে না। ওআইসিসহ সব সংস্থাকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।
বাংলাদেশ তিসরি ইনসাফ দলের বিক্ষোভ থেকে বলা হয়, গাজায় শিশুসহ অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা করে ইসরায়েল মানবতাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করতে হবে এবং প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তুলতে হবে।
জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশের নেতারা বলেন, ইসরায়েলের বর্বর হামলা দাজ্জালের আবির্ভাবের ইঙ্গিত দেয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। এখন মুসলমান হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ফরজ হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ইসলামী দলগুলোর আন্দোলনে আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাই।
তারা বলেন, বাংলাদেশের মতো অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রগুলোও যেন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। ইসরায়েলি পণ্যের তালিকা করে বর্জন নিশ্চিত করতে হবে। বিক্ষোভ শেষে কয়েকটি মিছিলে বিভিন্ন সংগঠন থেকে ইসরায়েলের প্রতি ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানিয়ে প্যালেস্টাইনের পাশে থাকার অঙ্গীকার করা হয়। বিক্ষোভ কর্মসূচিগুলো ঘিরে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য বায়তুল মোকাররম ও পল্টন এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলি বর্বরতায় নিহত
প্যালেস্টাইনিদের রূহের মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতা কামনায় দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। শুক্রবার জুমার নামাজের পর এই বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি প্যালেস্টাইনের গাজায় নির্মম গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী। অবরুদ্ধ গাজায় খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে নজিরবিহীন মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি এবং গাজাবাসীকে দুর্ভিক্ষের মুখে ফেলেছে।
ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বরোচিত গণহত্যায় মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে মন্তব্য করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভ্রাতৃপ্রতিম প্যালেস্টাইনের জনগণের প্রতি গভীর শোক, সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানাচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এজন্য দোয়া ও মোনাজাত আয়োজনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
সেই সঙ্গে প্যালেস্টাইনিদের প্রতি সংহতি, সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানাতে গিয়ে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি না হয়, সে বিষয়েও সতর্ক ও সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে সারা দেশের মানুষ। জেলা-উপজেলা শহরে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ নিজেদের অবস্থান থেকে রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদ মিছিল করেছেন ও সমাবেশে শামিল হয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার বৈশ্বিক ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের জেলায় জেলায় বিক্ষোভ মিছিল, স্লোগান-সমাবেশ ও ধর্মঘট পালন করা হয়।
শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররমের সামনে ইসলামী দলগুলোর বিক্ষোভ -সংবাদ
শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধ এবং স্বাধীন প্যালেস্টাইনে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন ইসলামি দল। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররম এলাকায় তারা বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে প্যালেস্টাইনিদের ওপর হামলা বন্ধ করাসহ বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের এক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল বাংলাদেশের ও প্যালেস্টাইনের পতাকা। হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ছিল তাদের হাতে।
নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ। এরপর বিভিন্ন দল ও সংগঠন একের পর এক মিছিল নিয়ে বের হতে থাকেন। এর মধ্যে ছিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ শান্তি সংঘ, তিসরী ইনসাফ দল, বাংলাদেশ ইসলামী যুব সংঘ, আল কুদ্?স কমিটি বাংলাদেশ, আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় ইমাম সমাজসহ অনেকে। মিছিলটি বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে শুরু করে পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগর গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা মর্মাহত, আমাদের হৃদয় রক্তাক্ত। যত দিন পর্যন্ত আল আকসা মুক্ত না হবে, লড়াই চলবে। অবিলম্বে প্যালেস্টাইনকে স্বাধীন করুন।’ তিনি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে আজ শনিবার মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
সমাবেশে ইসলামী যুব আন্দোলনের নেতারা বলেন, ইসরায়েল যে গণহত্যা চালাচ্ছে, তা মানবতার চরম লঙ্ঘন। এ অবস্থায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হলে তাদের সব পণ্য বয়কট করতে হবে। দেশের যেসব ব্যবসায়ী ইসরায়েলি পণ্য আমদানি করছেন, তাদের অনুরোধ করব এই ব্যবসা থেকে দ্রুত সরে আসুন। দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সবসময় প্যালেস্টাইনের পাশে থাকবে।
তারা আরও বলেন, বিশ্ব সন্ত্রাসী আমেরিকা ও ইসরায়েলের মদদে গাজায় যে গণহত্যা চলছে, তা আন্তর্জাতিক যুদ্ধনীতির পরিপন্থী। হামাসের সঙ্গে পারছে না বলে নিরীহ শিশু, নারী, সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। অথচ জাতিসংঘসহ কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে না। ওআইসিসহ সব সংস্থাকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।
বাংলাদেশ তিসরি ইনসাফ দলের বিক্ষোভ থেকে বলা হয়, গাজায় শিশুসহ অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা করে ইসরায়েল মানবতাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করতে হবে এবং প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তুলতে হবে।
জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশের নেতারা বলেন, ইসরায়েলের বর্বর হামলা দাজ্জালের আবির্ভাবের ইঙ্গিত দেয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। এখন মুসলমান হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ফরজ হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ইসলামী দলগুলোর আন্দোলনে আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাই।
তারা বলেন, বাংলাদেশের মতো অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রগুলোও যেন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। ইসরায়েলি পণ্যের তালিকা করে বর্জন নিশ্চিত করতে হবে। বিক্ষোভ শেষে কয়েকটি মিছিলে বিভিন্ন সংগঠন থেকে ইসরায়েলের প্রতি ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানিয়ে প্যালেস্টাইনের পাশে থাকার অঙ্গীকার করা হয়। বিক্ষোভ কর্মসূচিগুলো ঘিরে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য বায়তুল মোকাররম ও পল্টন এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলি বর্বরতায় নিহত
প্যালেস্টাইনিদের রূহের মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতা কামনায় দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। শুক্রবার জুমার নামাজের পর এই বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি প্যালেস্টাইনের গাজায় নির্মম গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী। অবরুদ্ধ গাজায় খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে নজিরবিহীন মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি এবং গাজাবাসীকে দুর্ভিক্ষের মুখে ফেলেছে।
ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বরোচিত গণহত্যায় মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে মন্তব্য করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভ্রাতৃপ্রতিম প্যালেস্টাইনের জনগণের প্রতি গভীর শোক, সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানাচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এজন্য দোয়া ও মোনাজাত আয়োজনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
সেই সঙ্গে প্যালেস্টাইনিদের প্রতি সংহতি, সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানাতে গিয়ে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি না হয়, সে বিষয়েও সতর্ক ও সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে সারা দেশের মানুষ। জেলা-উপজেলা শহরে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ নিজেদের অবস্থান থেকে রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদ মিছিল করেছেন ও সমাবেশে শামিল হয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার বৈশ্বিক ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের জেলায় জেলায় বিক্ষোভ মিছিল, স্লোগান-সমাবেশ ও ধর্মঘট পালন করা হয়।