ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
‘অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের’ অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করার দুইদিনের মাথায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরীকে (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ওএসডি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার, (০৯ অক্টোবর ২০২৫) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এক প্রজ্ঞাপনে তাকে এনবিআরে সংযুক্ত রেখে ওএসডি করে।
প্রায় ৫ কোটি টাকার জ্ঞাত ‘আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য ‘গোপনের’ অভিযোগে বেলাল হোসাইনের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার দুদকের উপ-পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বেলাল হোসাইন তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৪ কোটি ৬০ লাখ ১৯ হাজার ৭১৩ টাকার সম্পদের ‘তথ্য গোপন’ করেছেন।
সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ‘দুর্নীতির মাধ্যমে’ এসব সম্পদ অর্জন করলেও তা প্রকাশ না করে ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য’ দিয়েছেন। এজাহারে বলা হয়, বেলাল হোসাইন জ্ঞাত ‘আয়বহির্ভূত’ মোট ৪ কোটি ৯৭ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৬ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন।
২০০৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তিনি এই ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জন করেন। এই কর্মকাণ্ড দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
পরে গতকাল বুধবার বেলাল হোসাইনকে এনবিআরের সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) থেকে সরিয়ে কাস্টমস, এক্সাইজ এবং মূল্য সংযোজন কর আপিল ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট করা হয়। তার একদিন পর তাকে সেখান থেকেও সরিয়ে ওএসডি করা হলো।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২২ সালের ১ জুন কমিশন থেকে বেলাল হোসাইনকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে নোটিশ (ফরম নম্বর ০০০৪১৪৭) দেয়া হয়। পরে সে বছরের ২৬ জুলাই তিনি দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। সেই বিবরণীতে বেলাল হোসাইন নিজের নামে ৮ কোটি ৮৩ লাখ ১১ হাজার ১৬৬ টাকার সম্পদের তথ্য দেন। এর মধ্যে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার ২৫০ টাকার স্থাবর এবং ৬ কোটি ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৬ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য দেন।
তবে দুদকের যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তার প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ ১৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ৮৭৯ টাকা। যার মধ্যে ১০ কোটি ৭৪ লাখ ৫৫ হাজার ৬২৯ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। বেলাল হোসাইন প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য ‘গোপন’ করেছেন বলে অনুসন্ধানে ওঠে আসে।দুদক বলেছে, অনুসন্ধানে এনবিআরের এই সদস্যের ৫ কোটি ৯০ লাখ ৩৩ হাজার ৪৬৬ টাকার গ্রহণযোগ্য দায়-দেনা পাওয়া গেছে। সেটি বাদ দিলে তার নিট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ কোটি ৫২ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৩ টাকা। অন্যদিকে ২০০৮-২০২৩ করবর্ষ পর্যন্ত তার আয়কর রিটার্ন বিশ্লেষণে দেখা যায় তিনি কর, পারিবারিক ব্যয় ও শেয়ারে লোকসানসহ মোট ৮ কোটি ৯৭ লাখ ১২ হাজার ১৩ টাকা ব্যয় দেখিয়েছেন। যেখানে তার বৈধ আয় দেখানো হয় ১১ কোটি ৫২ লাখ ৫৮ হাজার ৩০ টাকা।
অর্থাৎ ঘোষিত আয় ও ব্যয়ের তুলনায় তার ৪ কোটি ৯৭ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৬ টাকার সম্পদের বৈধ উৎস ‘পাওয়া যায়নি’। দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেলাল হোসাইন ‘অবৈধ’ অর্থে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন মৌজায় জমি, প্লট, ফ্ল্যাট ও শেয়ার কিনেছেন। যার মোট মূল্য প্রায় ৪ কোটি ৯৭ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৬ টাকা।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
‘অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের’ অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করার দুইদিনের মাথায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরীকে (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ওএসডি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার, (০৯ অক্টোবর ২০২৫) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এক প্রজ্ঞাপনে তাকে এনবিআরে সংযুক্ত রেখে ওএসডি করে।
প্রায় ৫ কোটি টাকার জ্ঞাত ‘আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য ‘গোপনের’ অভিযোগে বেলাল হোসাইনের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার দুদকের উপ-পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বেলাল হোসাইন তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৪ কোটি ৬০ লাখ ১৯ হাজার ৭১৩ টাকার সম্পদের ‘তথ্য গোপন’ করেছেন।
সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ‘দুর্নীতির মাধ্যমে’ এসব সম্পদ অর্জন করলেও তা প্রকাশ না করে ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য’ দিয়েছেন। এজাহারে বলা হয়, বেলাল হোসাইন জ্ঞাত ‘আয়বহির্ভূত’ মোট ৪ কোটি ৯৭ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৬ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন।
২০০৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তিনি এই ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জন করেন। এই কর্মকাণ্ড দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
পরে গতকাল বুধবার বেলাল হোসাইনকে এনবিআরের সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) থেকে সরিয়ে কাস্টমস, এক্সাইজ এবং মূল্য সংযোজন কর আপিল ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট করা হয়। তার একদিন পর তাকে সেখান থেকেও সরিয়ে ওএসডি করা হলো।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২২ সালের ১ জুন কমিশন থেকে বেলাল হোসাইনকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে নোটিশ (ফরম নম্বর ০০০৪১৪৭) দেয়া হয়। পরে সে বছরের ২৬ জুলাই তিনি দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। সেই বিবরণীতে বেলাল হোসাইন নিজের নামে ৮ কোটি ৮৩ লাখ ১১ হাজার ১৬৬ টাকার সম্পদের তথ্য দেন। এর মধ্যে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার ২৫০ টাকার স্থাবর এবং ৬ কোটি ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৬ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য দেন।
তবে দুদকের যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তার প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ ১৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ৮৭৯ টাকা। যার মধ্যে ১০ কোটি ৭৪ লাখ ৫৫ হাজার ৬২৯ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। বেলাল হোসাইন প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য ‘গোপন’ করেছেন বলে অনুসন্ধানে ওঠে আসে।দুদক বলেছে, অনুসন্ধানে এনবিআরের এই সদস্যের ৫ কোটি ৯০ লাখ ৩৩ হাজার ৪৬৬ টাকার গ্রহণযোগ্য দায়-দেনা পাওয়া গেছে। সেটি বাদ দিলে তার নিট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ কোটি ৫২ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৩ টাকা। অন্যদিকে ২০০৮-২০২৩ করবর্ষ পর্যন্ত তার আয়কর রিটার্ন বিশ্লেষণে দেখা যায় তিনি কর, পারিবারিক ব্যয় ও শেয়ারে লোকসানসহ মোট ৮ কোটি ৯৭ লাখ ১২ হাজার ১৩ টাকা ব্যয় দেখিয়েছেন। যেখানে তার বৈধ আয় দেখানো হয় ১১ কোটি ৫২ লাখ ৫৮ হাজার ৩০ টাকা।
অর্থাৎ ঘোষিত আয় ও ব্যয়ের তুলনায় তার ৪ কোটি ৯৭ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৬ টাকার সম্পদের বৈধ উৎস ‘পাওয়া যায়নি’। দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেলাল হোসাইন ‘অবৈধ’ অর্থে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন মৌজায় জমি, প্লট, ফ্ল্যাট ও শেয়ার কিনেছেন। যার মোট মূল্য প্রায় ৪ কোটি ৯৭ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৬ টাকা।