আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এ পর্যায়ে দেওয়া প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্কে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘কমান্ড রেসনসিবিলিটি’ প্রমাণিত হয়েছে।
শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে করা এই মামলায় মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। শুনানি বুধবারও চলবে।
গত রোববার পটভূমি তুলে ধরে প্রসিকিউশন যুক্তিতর্ক শুরু করে। মামলায় আনা পাঁচ অভিযোগের মধ্যে তিন দিনের যুক্তিতর্কে দুইটির ওপর তাজুল ইসলাম বিস্তারিত যুক্তি উপস্থাপন করেন। মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রমাণের জন্য প্রসিকিউশন ‘ওয়াইডস্প্রেড অ্যাটাক’ (ব্যাপক আক্রমণ) এবং ‘সিস্টেম্যাটিক অ্যাটাক’ (পদ্ধতিগত আক্রমণ) প্রমাণের ওপর জোর দিয়েছেন। তিন দিনের যুক্তিতর্কে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এ দুটি বিষয় প্রমাণিত হয়েছে বলে কৌঁসুলি দাবি করেন।
‘রোম স্ট্যাটিউট অব দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট’-এর ৭ অনুচ্ছেদে মানবতাবিরোধী অপরাধের সংজ্ঞা দেওয়া আছে, যেখানে ‘ওয়াইডস্প্রেড অ্যাটাক’ এবং ‘সিস্টেম্যাটিক অ্যাটাক’-এর কথা বলা হয়েছে। প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের দাবি, এই দুই ধরনের অপরাধ শেখ হাসিনা করেছেন।
যুক্তিতর্কের দ্বিতীয় দিনে ‘ওয়াইডস্প্রেড অ্যাটাক’ প্রমাণের জন্য কৌঁসুলি ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই থেকে ৫ অগাস্ট পর্যন্ত সময়ের ঘটনা তুলে ধরেন। ওই সময়ের বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হামলায় সরকারের বিভিন্ন বাহিনী ও আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের জড়িত থাকার বিষয় তুলে ধরেন।
সিস্টেম্যাটিক অ্যাটাক প্রমাণের জন্য প্রধান কৌঁসুলি শেখ হাসিনার সঙ্গে হাসানুল হক ইনু, শেখ ফজলে নূর তাপস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামলের কথপোকথনের অডিও আদালতে শোনান। এই অডিওতে প্রণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার, হেলিকপ্টার থেকে ছত্রীসেনা নামানো ও বোমা মারা, আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার, বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা ও দায় চাপানোর তথ্য রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলাও পরিকল্পিত বলে প্রধান কৌঁসুলি উল্লেখ করেন।
তৃতীয় দিনের যুক্তিতর্কে ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে করা সংবাদ সম্মেলন দেখানো হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মোবাইল ফোনে ধারণ করা নয়টি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। ভিডিওতে গুলি করে একজনকে হত্যা, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড, যাত্রাবাড়ীতে একজনকে গুলি করে হত্যা, রামপুরায় কার্নিশে একজনকে হত্যা, চানখাঁরপুলে পুলিশের সরাসরি গুলির দৃশ্য এবং নিহত তরুণের লাশ পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে ফেলে দেয়ার দৃশ্য রয়েছে। প্রসিকিউশনের দাবি, হাজার হাজার ভিডিও রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি বাছাই করে প্রদর্শন করা হয়েছে।
একটি পুলিশের ওয়্যারলেস ম্যাসেজও শোনানো হয়, যেখানে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার নির্দেশ রয়েছে। প্রধান কৌঁসুলি বলেন, “এসব সাক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার নির্দেশ, পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের নির্দেশ—সবকিছু রয়েছে। এতে ধারাবাহিক নির্দেশনায় পরিকল্পিত হামলার বিষয় প্রমাণিত হয়।
মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ রয়েছে। গত ১০ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার ৫৪তম এবং শেষ সাক্ষী ছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীর। গত ৬ অক্টোবর আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন তার জেরা শেষ করেন।
মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এ পর্যায়ে দেওয়া প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্কে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘কমান্ড রেসনসিবিলিটি’ প্রমাণিত হয়েছে।
শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে করা এই মামলায় মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। শুনানি বুধবারও চলবে।
গত রোববার পটভূমি তুলে ধরে প্রসিকিউশন যুক্তিতর্ক শুরু করে। মামলায় আনা পাঁচ অভিযোগের মধ্যে তিন দিনের যুক্তিতর্কে দুইটির ওপর তাজুল ইসলাম বিস্তারিত যুক্তি উপস্থাপন করেন। মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রমাণের জন্য প্রসিকিউশন ‘ওয়াইডস্প্রেড অ্যাটাক’ (ব্যাপক আক্রমণ) এবং ‘সিস্টেম্যাটিক অ্যাটাক’ (পদ্ধতিগত আক্রমণ) প্রমাণের ওপর জোর দিয়েছেন। তিন দিনের যুক্তিতর্কে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এ দুটি বিষয় প্রমাণিত হয়েছে বলে কৌঁসুলি দাবি করেন।
‘রোম স্ট্যাটিউট অব দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট’-এর ৭ অনুচ্ছেদে মানবতাবিরোধী অপরাধের সংজ্ঞা দেওয়া আছে, যেখানে ‘ওয়াইডস্প্রেড অ্যাটাক’ এবং ‘সিস্টেম্যাটিক অ্যাটাক’-এর কথা বলা হয়েছে। প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের দাবি, এই দুই ধরনের অপরাধ শেখ হাসিনা করেছেন।
যুক্তিতর্কের দ্বিতীয় দিনে ‘ওয়াইডস্প্রেড অ্যাটাক’ প্রমাণের জন্য কৌঁসুলি ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই থেকে ৫ অগাস্ট পর্যন্ত সময়ের ঘটনা তুলে ধরেন। ওই সময়ের বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হামলায় সরকারের বিভিন্ন বাহিনী ও আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের জড়িত থাকার বিষয় তুলে ধরেন।
সিস্টেম্যাটিক অ্যাটাক প্রমাণের জন্য প্রধান কৌঁসুলি শেখ হাসিনার সঙ্গে হাসানুল হক ইনু, শেখ ফজলে নূর তাপস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামলের কথপোকথনের অডিও আদালতে শোনান। এই অডিওতে প্রণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার, হেলিকপ্টার থেকে ছত্রীসেনা নামানো ও বোমা মারা, আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার, বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা ও দায় চাপানোর তথ্য রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলাও পরিকল্পিত বলে প্রধান কৌঁসুলি উল্লেখ করেন।
তৃতীয় দিনের যুক্তিতর্কে ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে করা সংবাদ সম্মেলন দেখানো হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মোবাইল ফোনে ধারণ করা নয়টি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। ভিডিওতে গুলি করে একজনকে হত্যা, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড, যাত্রাবাড়ীতে একজনকে গুলি করে হত্যা, রামপুরায় কার্নিশে একজনকে হত্যা, চানখাঁরপুলে পুলিশের সরাসরি গুলির দৃশ্য এবং নিহত তরুণের লাশ পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে ফেলে দেয়ার দৃশ্য রয়েছে। প্রসিকিউশনের দাবি, হাজার হাজার ভিডিও রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি বাছাই করে প্রদর্শন করা হয়েছে।
একটি পুলিশের ওয়্যারলেস ম্যাসেজও শোনানো হয়, যেখানে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার নির্দেশ রয়েছে। প্রধান কৌঁসুলি বলেন, “এসব সাক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার নির্দেশ, পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের নির্দেশ—সবকিছু রয়েছে। এতে ধারাবাহিক নির্দেশনায় পরিকল্পিত হামলার বিষয় প্রমাণিত হয়।
মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ রয়েছে। গত ১০ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার ৫৪তম এবং শেষ সাক্ষী ছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীর। গত ৬ অক্টোবর আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন তার জেরা শেষ করেন।