ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
পতিত কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে সংঘটিত গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের সেনা হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত ‘বৈষম্যমূলক’ ও ন্যায় বিচারের পরিপন্থী বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ ধরনের সিদ্বান্ত সাংবিধানিক অঙ্গীকার ও আইনের সমান প্রয়োগের মানদণ্ডে প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছে এই সংস্থাটি। মঙ্গলবার,(১৪ অক্টোবর ২০২৫) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ‘বৈষম্যমূলক’ এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের ঠিক কোন বিবেচনায় ও যুক্তিতে অন্য অভিযুক্তদের থেকে পৃথক ব্যবস্থাপনায় রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে, সে বিষয়ে সরকারের ব্যাখা জানতে চেয়েছে তারা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারপ্রক্রিয়ায় ব্যক্তির পেশাগত পরিচয় বা পদমর্যাদা বিবেচনায় নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এভাবে কাউকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান বা মূল্যায়ন, ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।
অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা যদি যথানিয়মে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যবস্থায় কারা হেফাজতে থাকতে পারেন, তাহলে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের জন্য আলাদাভাবে বিশেষায়িত সাবজেলের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারের এই বৈষম্যমূলক আচরণ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে, যা ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারসহ জনমনে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে বিভ্রান্তির ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। বিবৃতিতে বিচারপ্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত ‘‘আইনের দৃষ্টিতে সমতা’’ ও সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইনের মৌলভিত্তি অনুযায়ী মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত কেউই বিশেষ কোনো সুবিধা লাভের উপযোগী নয়, যা সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।’
বাংলাদেশ রোম স্ট্যাটিউট অব দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট স্বাক্ষরকারী দেশ উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘যার ২৭ ধারায় (ইররেলিভেন্স অব অফিশিয়াল ক্যাপাসিটি) বলা আছে, ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় ও সামরিক অবস্থান নির্বিশেষে অভিযুক্তরা বিচারপ্রক্রিয়ায় বিশেষ কোনো সুবিধাপ্রাপ্ত হবে না। একইভাবে নুরেমবার্গ প্রিন্সিপল, যা আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধসংক্রান্ত আইনের ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এর পিন্সিপল-৩ অনুযায়ী দাপ্তরিক পদ বা অফিশিয়াল অবস্থান ও দায়িত্ব ব্যক্তির সংঘটিত অপরাধ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার বিবেচ্য হিসেবে পরিগণিত হবে না। এমনকি এ ব্যাপারে জাতীয় আইনের অধীনে সংশ্লিষ্ট দেশের সামরিক আইনে যা-ই উল্লেখ থাকুক না কেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের জন্য তা প্রযোজ্য হবে না।’
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রটেকশন অব অল পারসনস ফ্রম এনফোর্সড ডিসেপিয়ারেন্স (আইসিপিপিইডি)’ শীর্ষক গুমবিষয়ক জাতিসংঘের কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ, যেখানে ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সরকার অঙ্গীকার করেছে। এ ক্ষেত্রে বিচারপ্রক্রিয়ায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পেশাগত বা প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়, পদপদবি কিংবা সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
পতিত কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে সংঘটিত গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের সেনা হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত ‘বৈষম্যমূলক’ ও ন্যায় বিচারের পরিপন্থী বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ ধরনের সিদ্বান্ত সাংবিধানিক অঙ্গীকার ও আইনের সমান প্রয়োগের মানদণ্ডে প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছে এই সংস্থাটি। মঙ্গলবার,(১৪ অক্টোবর ২০২৫) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ‘বৈষম্যমূলক’ এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের ঠিক কোন বিবেচনায় ও যুক্তিতে অন্য অভিযুক্তদের থেকে পৃথক ব্যবস্থাপনায় রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে, সে বিষয়ে সরকারের ব্যাখা জানতে চেয়েছে তারা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারপ্রক্রিয়ায় ব্যক্তির পেশাগত পরিচয় বা পদমর্যাদা বিবেচনায় নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এভাবে কাউকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান বা মূল্যায়ন, ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।
অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা যদি যথানিয়মে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যবস্থায় কারা হেফাজতে থাকতে পারেন, তাহলে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের জন্য আলাদাভাবে বিশেষায়িত সাবজেলের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারের এই বৈষম্যমূলক আচরণ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে, যা ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারসহ জনমনে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে বিভ্রান্তির ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। বিবৃতিতে বিচারপ্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত ‘‘আইনের দৃষ্টিতে সমতা’’ ও সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইনের মৌলভিত্তি অনুযায়ী মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত কেউই বিশেষ কোনো সুবিধা লাভের উপযোগী নয়, যা সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।’
বাংলাদেশ রোম স্ট্যাটিউট অব দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট স্বাক্ষরকারী দেশ উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘যার ২৭ ধারায় (ইররেলিভেন্স অব অফিশিয়াল ক্যাপাসিটি) বলা আছে, ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় ও সামরিক অবস্থান নির্বিশেষে অভিযুক্তরা বিচারপ্রক্রিয়ায় বিশেষ কোনো সুবিধাপ্রাপ্ত হবে না। একইভাবে নুরেমবার্গ প্রিন্সিপল, যা আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধসংক্রান্ত আইনের ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এর পিন্সিপল-৩ অনুযায়ী দাপ্তরিক পদ বা অফিশিয়াল অবস্থান ও দায়িত্ব ব্যক্তির সংঘটিত অপরাধ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার বিবেচ্য হিসেবে পরিগণিত হবে না। এমনকি এ ব্যাপারে জাতীয় আইনের অধীনে সংশ্লিষ্ট দেশের সামরিক আইনে যা-ই উল্লেখ থাকুক না কেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের জন্য তা প্রযোজ্য হবে না।’
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রটেকশন অব অল পারসনস ফ্রম এনফোর্সড ডিসেপিয়ারেন্স (আইসিপিপিইডি)’ শীর্ষক গুমবিষয়ক জাতিসংঘের কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ, যেখানে ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সরকার অঙ্গীকার করেছে। এ ক্ষেত্রে বিচারপ্রক্রিয়ায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পেশাগত বা প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়, পদপদবি কিংবা সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।