দীর্ঘ ১১ বছর পর মাকে পেয়ে ছেলের কান্না -সংবাদ
অবশেষে ১১ বছর পর মাতৃভূমির মাটিতে ফিরলো শান্তনা বেগম (৪৫)। ভারতে পাচারের শিকার শান্তনা বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন। তিনি দীর্ঘ ১১ বছর নিখোঁজ ছিল। এতো বছর পর কাছে পেয়ে মাকে ছেলে ও বোন তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করতে থাকে। সেখানে আনন্দ-বেদনার এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
মঙ্গলবার, (১১ নভেম্বর ২০২৫) বিকেলে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করেন। এ সময় দুই দেশের বিজিবি, বিএসএফ, পুলিশ ও মানবাধিকার সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ফেরত আসা নারী শান্তনা গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উত্তর রাজিবপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বামী স্থানীয় একটি আদালতে মুহুরীর কাজ করতেন।
শান্তনার পরিবারের লোকজন জানান, শান্তনা মানসিক প্রতিবন্ধী ছিল। দাম্পত্য জীবনে তিনি ৪টি পুত্র সন্তানের জননী। ১১ বছর আগে নিখোঁজ হন তিনি। দেশে অনেক খোঁজাখুঁজি করে তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরিবার থেকে শান্তনা প্রায় সময় নিখোঁজ হতেন। পরে খোঁজ পাওয়া যেতো।
যেভাবে ফিরলেন শান্তনা
সর্বশেষ নিখোঁজের ১১ বছর পর ভারতের কানপুরের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে গত বছরের ১৭ জুলাই তার সন্ধান পান পশ্চিমবঙ্গের ‘ঈশ্বর সংকল্প’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ক তপন প্রধান। তপন প্রধান এবং বাংলাদেশের ফটো সাংবাদিক শামসুল হুদার সহায়তায় শান্তনা আজ দেশে ফিরল। একেবারেই নিজ উদ্যোগে শামসুল হুদা দীর্ঘদিন ধরে মূল পেশার পাশাপাশি ক্রসবর্ডার মিসিং পিপলদের খুঁজে বের করার কাজটি করে আসছেন।
যার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শান্তনাকে পাওয়া যায় সেই শামসুল হুদা বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘ঈশ্বর সংকল্প’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ক তপন প্রধানের মাধ্যমে শান্তনার খোঁজ পাই। শান্তনা শুধু তার স্বামীর নাম এবং ঠিকানা বলতে পারতো। কিভাবে সে ভারতে গেলো তার কোন বর্ননা সে বলতে পারতো না। পরে তার দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী দীর্ঘ প্রচেষ্টায় তার স্থানীয় চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান মন্ডলকে ফোন করেন শামসুল হুদা। তার পর পেয়ে যান মেয়েটির বাবা আব্দুল সালাম আকন্দকে। শুরু হয় শান্তনার দেশে ফেরার কার্যক্রম। এবার দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে আজ শান্তনাকে দেশে ফেরত আনা হলো।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখান থেকে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার নামের এনজিও সংস্থা তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে।
এনজিও সংস্থা জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার যশোরের ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর শফিকুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে আসা শান্তনাকে থানার কার্যক্রম শেষে সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে আসা শান্তনার ছেলে ও বোনের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
শান্তনার ভাই মজনু মিয়া জানান, দীর্ঘ ১১ বছর আগে পাচার হয়ে ভারতে যায় আমার বোন শান্তনা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘ঈশ্বর সংকল্প’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ক তপন প্রধানের প্রচেষ্টায় মানসিক প্রতিবন্ধী বোন শান্তনাকে আজ দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। বোনকে পেয়ে আমরা খুব খুশি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
দীর্ঘ ১১ বছর পর মাকে পেয়ে ছেলের কান্না -সংবাদ
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
অবশেষে ১১ বছর পর মাতৃভূমির মাটিতে ফিরলো শান্তনা বেগম (৪৫)। ভারতে পাচারের শিকার শান্তনা বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন। তিনি দীর্ঘ ১১ বছর নিখোঁজ ছিল। এতো বছর পর কাছে পেয়ে মাকে ছেলে ও বোন তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করতে থাকে। সেখানে আনন্দ-বেদনার এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
মঙ্গলবার, (১১ নভেম্বর ২০২৫) বিকেলে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করেন। এ সময় দুই দেশের বিজিবি, বিএসএফ, পুলিশ ও মানবাধিকার সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ফেরত আসা নারী শান্তনা গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উত্তর রাজিবপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বামী স্থানীয় একটি আদালতে মুহুরীর কাজ করতেন।
শান্তনার পরিবারের লোকজন জানান, শান্তনা মানসিক প্রতিবন্ধী ছিল। দাম্পত্য জীবনে তিনি ৪টি পুত্র সন্তানের জননী। ১১ বছর আগে নিখোঁজ হন তিনি। দেশে অনেক খোঁজাখুঁজি করে তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরিবার থেকে শান্তনা প্রায় সময় নিখোঁজ হতেন। পরে খোঁজ পাওয়া যেতো।
যেভাবে ফিরলেন শান্তনা
সর্বশেষ নিখোঁজের ১১ বছর পর ভারতের কানপুরের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে গত বছরের ১৭ জুলাই তার সন্ধান পান পশ্চিমবঙ্গের ‘ঈশ্বর সংকল্প’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ক তপন প্রধান। তপন প্রধান এবং বাংলাদেশের ফটো সাংবাদিক শামসুল হুদার সহায়তায় শান্তনা আজ দেশে ফিরল। একেবারেই নিজ উদ্যোগে শামসুল হুদা দীর্ঘদিন ধরে মূল পেশার পাশাপাশি ক্রসবর্ডার মিসিং পিপলদের খুঁজে বের করার কাজটি করে আসছেন।
যার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শান্তনাকে পাওয়া যায় সেই শামসুল হুদা বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘ঈশ্বর সংকল্প’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ক তপন প্রধানের মাধ্যমে শান্তনার খোঁজ পাই। শান্তনা শুধু তার স্বামীর নাম এবং ঠিকানা বলতে পারতো। কিভাবে সে ভারতে গেলো তার কোন বর্ননা সে বলতে পারতো না। পরে তার দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী দীর্ঘ প্রচেষ্টায় তার স্থানীয় চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান মন্ডলকে ফোন করেন শামসুল হুদা। তার পর পেয়ে যান মেয়েটির বাবা আব্দুল সালাম আকন্দকে। শুরু হয় শান্তনার দেশে ফেরার কার্যক্রম। এবার দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে আজ শান্তনাকে দেশে ফেরত আনা হলো।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখান থেকে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার নামের এনজিও সংস্থা তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে।
এনজিও সংস্থা জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার যশোরের ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর শফিকুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে আসা শান্তনাকে থানার কার্যক্রম শেষে সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে আসা শান্তনার ছেলে ও বোনের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
শান্তনার ভাই মজনু মিয়া জানান, দীর্ঘ ১১ বছর আগে পাচার হয়ে ভারতে যায় আমার বোন শান্তনা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘ঈশ্বর সংকল্প’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ক তপন প্রধানের প্রচেষ্টায় মানসিক প্রতিবন্ধী বোন শান্তনাকে আজ দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। বোনকে পেয়ে আমরা খুব খুশি।