ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির উত্থানে ‘জাতীয় কনভেনশন’ করার ঘোষণা দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাংলাদেশ জাসদসহ বাম ঘরানার গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল দলগুলো। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আগামী ২৯ নভেম্বর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে।
দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে দেশে পর্যায়ক্রমে নৌকা-ধানের শীষ-দাঁড়িপাল্লা-লাঙ্গল ইত্যাদি মার্কার সরকার এবং সামরিক সরকারের অপশাসন ও দুঃশাসন চলেছে। দেশ নির্যাতিত, রুগ্ন, গভীর সংকট ও ধ্বংসের মুখোমুখি। মানুষ মুক্তি চায় -বজলুর রশীদ ফিরোজ
শনিবার,(১৫ নভেম্বর ২০২৫) দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কার্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, বাম ঘরানার রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্যোগে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির বিস্তারিত কর্মসূচি প্রণয়ন এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে এ জাতীয় কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। তিনি বলেন, ‘সব দেশপ্রেমিক-গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল-বাম রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিরা, বিভিন্ন জাতিসত্তা, নারী সংগঠন, শ্রম-কর্ম-পেশার সংগঠনগুলো, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সবার মিলিত শক্তিতে আমরা জনগণের বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় জনগণের বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার উদ্দেশে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় কনভেনশন। দেশের চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্দোলন-সংগ্রাম এবং আসন্ন নির্বাচনে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে এ কনভেনশনের আয়োজন করা হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা করে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে দেশে পর্যায়ক্রমে নৌকা-ধানের শীষ-দাঁড়িপাল্লা-লাঙ্গল ইত্যাদি মার্কার সরকার এবং সামরিক সরকারের অপশাসন ও দুঃশাসন চলেছে। দেশ নির্যাতিত, রুগ্ন, গভীর সংকট ও ধ্বংসের মুখোমুখি। মানুষ মুক্তি চায়।’
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন সিপিবির সভাপতিম-লীর সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- সিপিবি সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাংলাদেশ জাসদের পক্ষে জনগণের বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির ৮টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধ রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করা; জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ব্যর্থ হতে না দেয়া, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সংগঠিত খুন গুম লুণ্ঠন ও সম্পদ পাচারের উপযুক্ত বিচার করা, নব্য-ফ্যাসিবাদ ও উগ্র ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান প্রতিরোধ; গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় জাতীয় সংসদের সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান ও নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখা; শোষণ, লুণ্ঠন, গুম, খুন, দখলবাজি, চাঁদাবাজি, দুর্নীতির বিপরীতে সন্ত্রাস অনাচার মুক্ত জনবান্ধব শাসন কায়েম।
প্রস্তাবনায় আরও রয়েছে কর্মসংস্থানভিত্তিক উন্নয়নকৌশল অবলম্বন, আধুনিক সর্বজনীন একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা আর দরিদ্রবান্ধব জনস্বাস্থ্যভিত্তিক সর্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়ন; বিদেশি শোষণের নিয়ন্ত্রণমুক্ত দেশ গড়ে তোলা। জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ করে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সব ধরনের বৈষম্যমুক্ত সমাজ-অর্থনীতি-রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা; আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নীতি মেনে চলা সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবিরোধী আগ্রাসন লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির উত্থানে ‘জাতীয় কনভেনশন’ করার ঘোষণা দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাংলাদেশ জাসদসহ বাম ঘরানার গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল দলগুলো। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আগামী ২৯ নভেম্বর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে।
দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে দেশে পর্যায়ক্রমে নৌকা-ধানের শীষ-দাঁড়িপাল্লা-লাঙ্গল ইত্যাদি মার্কার সরকার এবং সামরিক সরকারের অপশাসন ও দুঃশাসন চলেছে। দেশ নির্যাতিত, রুগ্ন, গভীর সংকট ও ধ্বংসের মুখোমুখি। মানুষ মুক্তি চায় -বজলুর রশীদ ফিরোজ
শনিবার,(১৫ নভেম্বর ২০২৫) দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কার্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, বাম ঘরানার রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্যোগে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির বিস্তারিত কর্মসূচি প্রণয়ন এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে এ জাতীয় কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। তিনি বলেন, ‘সব দেশপ্রেমিক-গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল-বাম রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিরা, বিভিন্ন জাতিসত্তা, নারী সংগঠন, শ্রম-কর্ম-পেশার সংগঠনগুলো, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সবার মিলিত শক্তিতে আমরা জনগণের বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় জনগণের বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার উদ্দেশে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় কনভেনশন। দেশের চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্দোলন-সংগ্রাম এবং আসন্ন নির্বাচনে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে এ কনভেনশনের আয়োজন করা হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা করে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে দেশে পর্যায়ক্রমে নৌকা-ধানের শীষ-দাঁড়িপাল্লা-লাঙ্গল ইত্যাদি মার্কার সরকার এবং সামরিক সরকারের অপশাসন ও দুঃশাসন চলেছে। দেশ নির্যাতিত, রুগ্ন, গভীর সংকট ও ধ্বংসের মুখোমুখি। মানুষ মুক্তি চায়।’
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন সিপিবির সভাপতিম-লীর সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- সিপিবি সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাংলাদেশ জাসদের পক্ষে জনগণের বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির ৮টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধ রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করা; জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ব্যর্থ হতে না দেয়া, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সংগঠিত খুন গুম লুণ্ঠন ও সম্পদ পাচারের উপযুক্ত বিচার করা, নব্য-ফ্যাসিবাদ ও উগ্র ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান প্রতিরোধ; গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় জাতীয় সংসদের সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান ও নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখা; শোষণ, লুণ্ঠন, গুম, খুন, দখলবাজি, চাঁদাবাজি, দুর্নীতির বিপরীতে সন্ত্রাস অনাচার মুক্ত জনবান্ধব শাসন কায়েম।
প্রস্তাবনায় আরও রয়েছে কর্মসংস্থানভিত্তিক উন্নয়নকৌশল অবলম্বন, আধুনিক সর্বজনীন একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা আর দরিদ্রবান্ধব জনস্বাস্থ্যভিত্তিক সর্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়ন; বিদেশি শোষণের নিয়ন্ত্রণমুক্ত দেশ গড়ে তোলা। জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ করে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সব ধরনের বৈষম্যমুক্ত সমাজ-অর্থনীতি-রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা; আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নীতি মেনে চলা সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবিরোধী আগ্রাসন লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলা।