বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি এখনই নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, “আপনি যদি কালকেই নির্বাচন করেন, আমরা রেডি।”
মঙ্গলবার (১০ জুন) সকালে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, “বিএনপি কোনো বিপ্লবী দল নয়। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় যেতে চাই। যখন সবাই চাইবে, একমত হবে, তখনই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।”
সম্প্রতি থাইল্যান্ডে চোখের অস্ত্রোপচার শেষে দেশে ফেরা বিএনপি মহাসচিব ঈদের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো কথা বলেন। তিনি রাজনীতি, নির্বাচন, ইউনূস-তারেক বৈঠক, অন্তর্বর্তী সরকার, সংস্কার কমিশনসহ নানা বিষয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দেন।
---
‘ডিসেম্বরে নির্বাচন সম্ভব’
বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে ফখরুল বলেন, “আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া সম্ভব। আমিও তাই মনে করি।”
তবে সরকারের ঘোষিত এপ্রিলের সম্ভাব্য নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, “রোজার মাস ও ঈদের কারণে এপ্রিল আদর্শ সময় নয়। তীব্র গরম, ঝড়-বৃষ্টি, ইফতার পার্টি—সব মিলিয়ে প্রার্থীদের জন্য ব্যয়ও দ্বিগুণ হবে। এটা কোনোভাবেই অনুকূল নয়।”
ইউনূস-তারেক বৈঠকে ‘সমাধানের সুযোগ’
যুক্তরাজ্য সফররত প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আসন্ন বৈঠক প্রসঙ্গে ফখরুল আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “এটাই সঠিক সময় ও জায়গা—যেখানে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হতে পারে।”
তিনি বলেন, “এ বৈঠকের মাধ্যমে রাজনৈতিক অচলাবস্থার বড় কোনো সমাধান আসতে পারে, যদিও মুহূর্তেই সবকিছু পাল্টে যাবে এমনটি মনে করি না।”
‘সরকার আন্তরিক, তবে অভিজ্ঞ নয়’
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, “তাদের আন্তরিকতার অভাব আছে বলে মনে করি না। তবে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কম। তাদের ওপর চাপ রয়েছে এবং নতুন চিন্তাধারা নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করছে।”
তিনি মনে করেন, দুই নেতার (তারেক-ইউনূস) বৈঠকের মাধ্যমে একটি বড় সুযোগ তৈরি হতে পারে। তবে এই সুযোগ কতটা কাজে লাগানো যায়, তা সময়ই বলবে।
‘টিক মার্ক দিয়ে রাজনীতি হয় না’
সংস্কার কমিশনের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এটা অনেকটা স্কুলে টিক মার্ক দেওয়ার মতো। রাজনীতি এভাবে হয় না। আমরা বলেছি, কেউ পরপর দুইবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। আবার এক বছর বিরতি দিয়ে তৃতীয়বার হতে পারবেন—এর বেশি না।”
‘বিএনপিকে কেউ শেষ করতে পারেনি’
বিএনপির অস্তিত্ব নিয়ে নানা নেতিবাচক প্রচারণার প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, “বিএনপি একটা বাস্তবতা। একে সহজে শেষ করা যায় না, কখনও যায়নি।”
তিনি বলেন, “আমরা দলে সংস্কার এনেছি, পরিবর্তনের কাজ করেছি। অথচ কেউ কেউ শুধু নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।”
‘কেয়ারটেকার ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয়’
ফখরুল বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের দিনই খালেদা জিয়া বলেছিলেন—এটি চিরস্থায়ীভাবে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে। এখন সবাই বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার দরকার।”
তিনি বলেন, “আমাদের রাজনৈতিক বাস্তবতায় আমরা একে অপরকে বিশ্বাস করি না। তাই নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।”
‘শরিকদের আসনে ছাড় দেবে বিএনপি’
নির্বাচনে শরিকদের আসন ছাড়ার বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সংসদীয় রাজনীতিতে এটা স্বাভাবিক। আমরা জাতীয় সরকার গঠনের লক্ষ্যেই এগোচ্ছি।”
তবে জামায়াতে ইসলামী বা জাতীয় নাগরিক পার্টিকে(এনসিপি) । আসন ছাড়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ ধরনের আলোচনা আমার জানা নেই।”
‘আওয়ামী লীগ এখন আর নেই’
আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, “ওরা তো নাই। আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী তো বিএনপি। নির্যাতন, নিপীড়ন, ফ্যাসিবাদ—সব কিছুর শিকার আমরা।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে। ছবি: সংগৃহীত
মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫
বিএনপি এখনই নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, “আপনি যদি কালকেই নির্বাচন করেন, আমরা রেডি।”
মঙ্গলবার (১০ জুন) সকালে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, “বিএনপি কোনো বিপ্লবী দল নয়। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় যেতে চাই। যখন সবাই চাইবে, একমত হবে, তখনই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।”
সম্প্রতি থাইল্যান্ডে চোখের অস্ত্রোপচার শেষে দেশে ফেরা বিএনপি মহাসচিব ঈদের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো কথা বলেন। তিনি রাজনীতি, নির্বাচন, ইউনূস-তারেক বৈঠক, অন্তর্বর্তী সরকার, সংস্কার কমিশনসহ নানা বিষয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দেন।
---
‘ডিসেম্বরে নির্বাচন সম্ভব’
বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে ফখরুল বলেন, “আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া সম্ভব। আমিও তাই মনে করি।”
তবে সরকারের ঘোষিত এপ্রিলের সম্ভাব্য নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, “রোজার মাস ও ঈদের কারণে এপ্রিল আদর্শ সময় নয়। তীব্র গরম, ঝড়-বৃষ্টি, ইফতার পার্টি—সব মিলিয়ে প্রার্থীদের জন্য ব্যয়ও দ্বিগুণ হবে। এটা কোনোভাবেই অনুকূল নয়।”
ইউনূস-তারেক বৈঠকে ‘সমাধানের সুযোগ’
যুক্তরাজ্য সফররত প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আসন্ন বৈঠক প্রসঙ্গে ফখরুল আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “এটাই সঠিক সময় ও জায়গা—যেখানে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হতে পারে।”
তিনি বলেন, “এ বৈঠকের মাধ্যমে রাজনৈতিক অচলাবস্থার বড় কোনো সমাধান আসতে পারে, যদিও মুহূর্তেই সবকিছু পাল্টে যাবে এমনটি মনে করি না।”
‘সরকার আন্তরিক, তবে অভিজ্ঞ নয়’
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, “তাদের আন্তরিকতার অভাব আছে বলে মনে করি না। তবে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কম। তাদের ওপর চাপ রয়েছে এবং নতুন চিন্তাধারা নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করছে।”
তিনি মনে করেন, দুই নেতার (তারেক-ইউনূস) বৈঠকের মাধ্যমে একটি বড় সুযোগ তৈরি হতে পারে। তবে এই সুযোগ কতটা কাজে লাগানো যায়, তা সময়ই বলবে।
‘টিক মার্ক দিয়ে রাজনীতি হয় না’
সংস্কার কমিশনের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এটা অনেকটা স্কুলে টিক মার্ক দেওয়ার মতো। রাজনীতি এভাবে হয় না। আমরা বলেছি, কেউ পরপর দুইবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। আবার এক বছর বিরতি দিয়ে তৃতীয়বার হতে পারবেন—এর বেশি না।”
‘বিএনপিকে কেউ শেষ করতে পারেনি’
বিএনপির অস্তিত্ব নিয়ে নানা নেতিবাচক প্রচারণার প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, “বিএনপি একটা বাস্তবতা। একে সহজে শেষ করা যায় না, কখনও যায়নি।”
তিনি বলেন, “আমরা দলে সংস্কার এনেছি, পরিবর্তনের কাজ করেছি। অথচ কেউ কেউ শুধু নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।”
‘কেয়ারটেকার ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয়’
ফখরুল বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের দিনই খালেদা জিয়া বলেছিলেন—এটি চিরস্থায়ীভাবে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে। এখন সবাই বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার দরকার।”
তিনি বলেন, “আমাদের রাজনৈতিক বাস্তবতায় আমরা একে অপরকে বিশ্বাস করি না। তাই নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।”
‘শরিকদের আসনে ছাড় দেবে বিএনপি’
নির্বাচনে শরিকদের আসন ছাড়ার বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সংসদীয় রাজনীতিতে এটা স্বাভাবিক। আমরা জাতীয় সরকার গঠনের লক্ষ্যেই এগোচ্ছি।”
তবে জামায়াতে ইসলামী বা জাতীয় নাগরিক পার্টিকে(এনসিপি) । আসন ছাড়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ ধরনের আলোচনা আমার জানা নেই।”
‘আওয়ামী লীগ এখন আর নেই’
আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, “ওরা তো নাই। আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী তো বিএনপি। নির্যাতন, নিপীড়ন, ফ্যাসিবাদ—সব কিছুর শিকার আমরা।”