alt

রাজনীতি

সংসদের পিআর পদ্ধতি ও আল্লাহর ওপর আস্থার দাবি তুলে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রধান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আগামী নির্বাচনকে ঘিরে ইসলামপন্থি দলগুলোর ঐক্যের বার্তা পাওয়া গেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে। নিজেদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার দাবি করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন জোটবদ্ধভাবে করার ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন ইসলামপন্থি দলের নেতারা।

সংস্কার, বিচার ও সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের দাবিতে শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এই মহাসমাবেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সমালোচনাও উঠে আসে।

সমাবেশের মূল পর্ব শুরু হয় দুপুর ২টায়। তার আগেই বিভিন্ন জেলা ও মহানগর পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন। সকাল ১০টায় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের প্রথম পর্ব শুরু হয়। দুপুরের আগেই উদ্যানে ভিড় উপচে পড়ে।

সকাল থেকেই শাহবাগ, মৎস্যভবন, প্রেস ক্লাব, দোয়েল চত্বর, শহীদ মিনার এলাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। উদ্যানে প্রবেশের ফটকে দীর্ঘ জটলা দেখা যায়। জায়গা না পেয়ে অনেকে মৎস্য ভবন মোড়ে বসানো এলইডি স্ক্রিনে সমাবেশ দেখেন।

সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাই পীর) সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, “গণ-আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। আগামী নির্বাচনে ইসলামপন্থিরাই হবে প্রধান রাজনৈতিক শক্তি। আমি শুরু থেকেই ইসলামপন্থি সকল ভোট এক বাক্সে আনার কথা বলেছি।”

তিনি বলেন, “শুধু ইসলামী দল নয়, অনেক দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলও এক বাক্স নীতিতে আসতে পারে। কার্যকর ঐক্য গড়তে পারলে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব ইসলামপন্থিদের হাতে আসবে। রাষ্ট্রের মূলনীতি ও সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোটের আয়োজন করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা রাষ্ট্রে সুশাসন, জবাবদিহিতা, ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন চাই। সরকার যেসব সংস্কার, বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার নিয়ে দায়িত্ব নিয়েছে, সেগুলো পালনে অটল থাকতে হবে। আমরা পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো।”

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “আজ ইসলামী দল ও স্কলারদের মধ্যে ভিন্নমত থাকা সত্ত্বেও ঐক্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই ঐক্যের রূপকারদের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।”

তিনি বলেন, “আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। প্রধান উপদেষ্টাকে বলবো, পক্ষপাত করবেন না। স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে দিতে হবে এবং ১ থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে।"

তিনি আরও বলেন, “ড. ইউনুসের ভূমিকা নিয়ে জাতির মধ্যে সংশয় রয়েছে। তাকে সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচনে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। জাতির উদ্দেশে এক কথা আর দলীয় বৈঠকে আরেক কথা বললে নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।”

সমাবেশ থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ১৬ দফা দাবি ঘোষণা করে। দলটির মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান এই ঘোষণা পাঠ করেন।

দলটির ১৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:

সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন।

সংসদের উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন।

জুলাই সনদ ও শোষণমুক্ত রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐকমত্য।

স্বৈরাচার ও দলীয় কর্তৃত্ববাদ রোধে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার।

প্রশাসনে ফ্যাসিবাদী প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করা।

পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার ও পালাতকদের ফিরিয়ে আনার কূটনৈতিক উদ্যোগ।

পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে দৃশ্যমান পদক্ষেপ।

সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুন রোধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা।

ভারতের সঙ্গে করা সব চুক্তি প্রকাশ ও দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল।

জাতীয় নির্বাচনের আগে সব পর্যায়ের স্থানীয় নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা।

দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি ও সন্ত্রাসীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।

তফসিল ঘোষণার আগে গ্রহণযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিত করা।

রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।

ইসলাম ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ববিরোধী কার্যকলাপে আইনি ব্যবস্থা।

দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজদের প্রতিহত করে জাতীয় ঐক্য গঠন।

রাষ্ট্রের সর্বস্তরে ইসলামের আলোকিত আদর্শ বাস্তবায়নের আহ্বান।

সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বক্তব্য দেন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, বোধিজ্ঞান ভাবনাকেন্দ্রের সভাপতি দয়াল কুমার বড়ুয়া, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, জামায়াতের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মূসা বিন ইজহার, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমাদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজী, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালাল উদ্দীন, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী এবং এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু।

ছবি

‘রাষ্ট্র সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, চিরস্থায়ী নয়’— বললেন বিএনপি নেতা

ছবি

আলোচনা, দোয়া, গণমিছিলসহ ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করবে জামায়াত

ছবি

সংস্কার ও পিআর পদ্ধতির দাবিতে সোহরাওয়ার্দীতে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেন উমামা ফাতেমা

ছবি

ছাত্র-জনতার গণপ্রতিরোধকে ‘মব’ বলা ফ্যাসিস্ট ষড়যন্ত্র: হেফাজত

ছবি

হাসনাতের ভিডিও পোস্ট ঘিরে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত, দুদকের পাল্টা সতর্কতা

ছবি

বটবাহিনীর সহযোগিতায় মুনাফেকি রাজনীতি করছে জামায়াত-শিবির: ছাত্রদল সভাপতি

ছবি

হাসনাতের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে তদন্তে দুদক

ছবি

স্বৈরাচার ঠেকাতে দরকার স্বাধীন নির্বাচন কমিশন: বিএনপি নেতা

ছবি

অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও কর্মী সভায় মারধর: এনসিপির মাদারীপুর জেলা ও সদর কমিটি স্থগিত

ছবি

‘চা-নাস্তার জন্য এক লাখ টাকা’ দাবি: মাহমুদা মিতুর অভিযোগে দুদকের প্রতিবাদ

ছবি

কে এম নূরুল হুদা হেনস্তা মামলায় জামিন পেলেন মোজাম্মেল, হানিফ ও কাইয়ুম

ছবি

“রাষ্ট্রপতি-প্রধান বিচারপতি বাদ, নিয়োগ কমিটিতে থাকছেন স্পিকার ও রাজনৈতিক নেতারা”

ছবি

ইশরাকের সমর্থকদের বিরুদ্ধে মারধর, হুমকি ও সাংবাদিক হয়রানির অভিযোগ

ছবি

দুদকের আবেদনে আদালতের আদেশ, হাছান মাহমুদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

দলের নিবন্ধন পেতে ইসিতে আবেদনের ‘হিড়িক’

১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়: একমত জামায়াত-এনসিপি, বিএনপিসহ ৩ দলের ভিন্নমত

নিবন্ধন ও প্রতীক নিয়ে নির্বাচন কমিশনে এনসিপির আবেদন

ছবি

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ: ঐকমত্যে অধিকাংশ দল, ভিন্নমত বিএনপি-এনডিএম-বিএলডিপির

ছবি

‘নিবন্ধনের শর্ত কঠিন, তবু প্রত্যাশা করছি অনুমোদন’: আবেদন জমায় ব্যস্ত দলগুলো

ছবি

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে বিএনপির আলোচনায় শুল্ক, বাণিজ্য, নির্বাচন

ছবি

সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে নতুন দল ‘বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি’

ছবি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিদায়ী জার্মান রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

ছবি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি বদলাবে— তবে কিভাবে, তাতে এখনো মতানৈক্য

ছবি

আচরণবিধি লঙ্ঘনে দেড় লাখ টাকা জরিমানা, প্রার্থিতা বাতিলের বিধান যুক্ত

ছবি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া নি‌য়ে আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন

ছবি

মোহাম্মদপুর থেকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম গ্রেপ্তার

ছবি

‘মৌলিক সংস্কার’ বিষয়ে মতানৈক্য হলে গণভোটে যেতে হবে: ইসলামী আন্দোলন

ছবি

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া

মেয়াদ শেষ, ইশরাকের আর শপথ নেওয়ার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা আসিফ

ছবি

গুরুত্ব হারানোর ভয়ে একটি দল নির্বাচনের সময় নিয়ে নারাজ: মির্জা ফখরুল

ছবি

ক্ষমতার ভারসাম্যে এনসিসির পক্ষে এনসিপি, প্রক্রিয়ায় দ্বিমত

ছবি

মশকনিধন কার্যক্রম উদ্বোধন, সেবা সচল রাখার প্রত্যয় ইশরাকের

ছবি

আলোচনার মাঝে হট্টগোল, কমিশনের হস্তক্ষেপে ফিরে এলেন দলীয় প্রতিনিধিরা

ছবি

ইউনূসের ‘নিরপেক্ষতা’ হারানোর অভিযোগে ঐকমত্য কমিশনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুললো জামায়াত

ছবি

একদিনের বিরতির পর সংলাপে জামায়াত, অন্য দলগুলোর সৌহার্দ্যপূর্ণ অভ্যর্থনা

tab

রাজনীতি

সংসদের পিআর পদ্ধতি ও আল্লাহর ওপর আস্থার দাবি তুলে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রধান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আগামী নির্বাচনকে ঘিরে ইসলামপন্থি দলগুলোর ঐক্যের বার্তা পাওয়া গেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে। নিজেদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার দাবি করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন জোটবদ্ধভাবে করার ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন ইসলামপন্থি দলের নেতারা।

সংস্কার, বিচার ও সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের দাবিতে শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এই মহাসমাবেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সমালোচনাও উঠে আসে।

সমাবেশের মূল পর্ব শুরু হয় দুপুর ২টায়। তার আগেই বিভিন্ন জেলা ও মহানগর পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন। সকাল ১০টায় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের প্রথম পর্ব শুরু হয়। দুপুরের আগেই উদ্যানে ভিড় উপচে পড়ে।

সকাল থেকেই শাহবাগ, মৎস্যভবন, প্রেস ক্লাব, দোয়েল চত্বর, শহীদ মিনার এলাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। উদ্যানে প্রবেশের ফটকে দীর্ঘ জটলা দেখা যায়। জায়গা না পেয়ে অনেকে মৎস্য ভবন মোড়ে বসানো এলইডি স্ক্রিনে সমাবেশ দেখেন।

সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাই পীর) সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, “গণ-আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। আগামী নির্বাচনে ইসলামপন্থিরাই হবে প্রধান রাজনৈতিক শক্তি। আমি শুরু থেকেই ইসলামপন্থি সকল ভোট এক বাক্সে আনার কথা বলেছি।”

তিনি বলেন, “শুধু ইসলামী দল নয়, অনেক দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলও এক বাক্স নীতিতে আসতে পারে। কার্যকর ঐক্য গড়তে পারলে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব ইসলামপন্থিদের হাতে আসবে। রাষ্ট্রের মূলনীতি ও সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোটের আয়োজন করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা রাষ্ট্রে সুশাসন, জবাবদিহিতা, ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন চাই। সরকার যেসব সংস্কার, বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার নিয়ে দায়িত্ব নিয়েছে, সেগুলো পালনে অটল থাকতে হবে। আমরা পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো।”

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “আজ ইসলামী দল ও স্কলারদের মধ্যে ভিন্নমত থাকা সত্ত্বেও ঐক্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই ঐক্যের রূপকারদের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।”

তিনি বলেন, “আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। প্রধান উপদেষ্টাকে বলবো, পক্ষপাত করবেন না। স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে দিতে হবে এবং ১ থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে।"

তিনি আরও বলেন, “ড. ইউনুসের ভূমিকা নিয়ে জাতির মধ্যে সংশয় রয়েছে। তাকে সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচনে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। জাতির উদ্দেশে এক কথা আর দলীয় বৈঠকে আরেক কথা বললে নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।”

সমাবেশ থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ১৬ দফা দাবি ঘোষণা করে। দলটির মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান এই ঘোষণা পাঠ করেন।

দলটির ১৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:

সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন।

সংসদের উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন।

জুলাই সনদ ও শোষণমুক্ত রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐকমত্য।

স্বৈরাচার ও দলীয় কর্তৃত্ববাদ রোধে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার।

প্রশাসনে ফ্যাসিবাদী প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করা।

পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার ও পালাতকদের ফিরিয়ে আনার কূটনৈতিক উদ্যোগ।

পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে দৃশ্যমান পদক্ষেপ।

সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুন রোধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা।

ভারতের সঙ্গে করা সব চুক্তি প্রকাশ ও দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল।

জাতীয় নির্বাচনের আগে সব পর্যায়ের স্থানীয় নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা।

দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি ও সন্ত্রাসীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।

তফসিল ঘোষণার আগে গ্রহণযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিত করা।

রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।

ইসলাম ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ববিরোধী কার্যকলাপে আইনি ব্যবস্থা।

দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজদের প্রতিহত করে জাতীয় ঐক্য গঠন।

রাষ্ট্রের সর্বস্তরে ইসলামের আলোকিত আদর্শ বাস্তবায়নের আহ্বান।

সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বক্তব্য দেন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, বোধিজ্ঞান ভাবনাকেন্দ্রের সভাপতি দয়াল কুমার বড়ুয়া, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, জামায়াতের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মূসা বিন ইজহার, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমাদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজী, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালাল উদ্দীন, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী এবং এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু।

back to top