ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
ষাটের দশকের ছাত্ররাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের অগ্রসৈনিক, আওয়ামী লীগের এক সময়ের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
স্কয়ার হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইউসুফ সিদ্দিক জানান, তোফায়েল আহমেদ এখনো লাইফ সাপোর্টে আছেন, তবে তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সাড়া দিচ্ছে। তিনি বলেন, “উনার অবস্থা এখনো খুবই ক্রিটিক্যাল। তবে হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস ৩০ শতাংশের মতো কাজ করছে। অন্যান্য অঙ্গও কাজ করছে। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।”
এদিন বিকেলে হাসপাতালে তাকে দেখে এসে তার ভাইয়ের মেয়ে শামীমা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, “ওনার অবস্থা এখন ভালো, উনি চোখ খুলেছেন, কথা বলার চেষ্টাও করেছেন।”
বার্ধ্যক্যজনিত নানা জটিলতা নিয়ে প্রায় ১১ দিন ধরে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তোফায়েল আহমেদ। শনিবার রাতে কিছু সংবাদমাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হলেও, তা সত্য নয় বলে হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইউসুফ সিদ্দিক নিশ্চিত করেন।
তোফায়েল আহমেদের ব্যক্তিগত সহকারী আবুল খায়ের বলেন, “কয়েক দিনের তুলনায় ওনার অবস্থা উন্নতির দিকে। আজকে তুলনামূলকভাবে বেশ উন্নতি হয়েছে।”
পরিবারের এক সদস্য জানান, কয়েক বছর ধরেই হুইলচেয়ারে চলাফেরা করেন তোফায়েল আহমেদ। স্ট্রোকের কারণে তার শরীরের একাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বাঁ হাত ও পা অবশ হয়ে পড়ায় তিনি চলাফেরা অক্ষম হয়ে পড়েন।
১৯৪৩ সালের ২২ অক্টোবর ভোলা জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তোফায়েল আহমেদ। বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকাবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৬৮-৬৯ সালের উত্তাল সময়ে তিনি ছিলেন ডাকসুর ভিপি এবং সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। ওই গণআন্দোলনের চাপে পাকিস্তান সরকার ১৯৬৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমানসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সকল আসামিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
সেই বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত লাখো জনতার সমাবেশে শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়, যা ঘোষণা করেন তোফায়েল আহমেদ নিজেই।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীর অঞ্চলভিত্তিক চার প্রধানের একজন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি নয়বার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বশেষ তিনি ভোলা-১ আসনের এমপি ছিলেন।
দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পর তিনি সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন এবং বর্তমানে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান তাকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় নিজের রাজনৈতিক সচিব হিসেবে নিয়োগ দেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি আবারও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫
ষাটের দশকের ছাত্ররাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের অগ্রসৈনিক, আওয়ামী লীগের এক সময়ের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
স্কয়ার হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইউসুফ সিদ্দিক জানান, তোফায়েল আহমেদ এখনো লাইফ সাপোর্টে আছেন, তবে তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সাড়া দিচ্ছে। তিনি বলেন, “উনার অবস্থা এখনো খুবই ক্রিটিক্যাল। তবে হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস ৩০ শতাংশের মতো কাজ করছে। অন্যান্য অঙ্গও কাজ করছে। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।”
এদিন বিকেলে হাসপাতালে তাকে দেখে এসে তার ভাইয়ের মেয়ে শামীমা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, “ওনার অবস্থা এখন ভালো, উনি চোখ খুলেছেন, কথা বলার চেষ্টাও করেছেন।”
বার্ধ্যক্যজনিত নানা জটিলতা নিয়ে প্রায় ১১ দিন ধরে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তোফায়েল আহমেদ। শনিবার রাতে কিছু সংবাদমাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হলেও, তা সত্য নয় বলে হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইউসুফ সিদ্দিক নিশ্চিত করেন।
তোফায়েল আহমেদের ব্যক্তিগত সহকারী আবুল খায়ের বলেন, “কয়েক দিনের তুলনায় ওনার অবস্থা উন্নতির দিকে। আজকে তুলনামূলকভাবে বেশ উন্নতি হয়েছে।”
পরিবারের এক সদস্য জানান, কয়েক বছর ধরেই হুইলচেয়ারে চলাফেরা করেন তোফায়েল আহমেদ। স্ট্রোকের কারণে তার শরীরের একাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বাঁ হাত ও পা অবশ হয়ে পড়ায় তিনি চলাফেরা অক্ষম হয়ে পড়েন।
১৯৪৩ সালের ২২ অক্টোবর ভোলা জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তোফায়েল আহমেদ। বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকাবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৬৮-৬৯ সালের উত্তাল সময়ে তিনি ছিলেন ডাকসুর ভিপি এবং সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। ওই গণআন্দোলনের চাপে পাকিস্তান সরকার ১৯৬৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমানসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সকল আসামিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
সেই বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত লাখো জনতার সমাবেশে শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়, যা ঘোষণা করেন তোফায়েল আহমেদ নিজেই।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীর অঞ্চলভিত্তিক চার প্রধানের একজন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি নয়বার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বশেষ তিনি ভোলা-১ আসনের এমপি ছিলেন।
দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পর তিনি সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন এবং বর্তমানে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান তাকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় নিজের রাজনৈতিক সচিব হিসেবে নিয়োগ দেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি আবারও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।