ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী দীপু মনির আবারও চার দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত। সোমবার, (০৬ অক্টোবর ২০২৫) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে একজন পুলিশ কর্মকর্তা দীপু মনির ১০ দিন রিমান্ড চাইলে শুনানি শেষে আদালত চার দিনের রিমান্ড দেয়।
দীপু মনির কথার যে টোন, তাতে প্রমাণিত হয়, উনি যতটা অসুস্থ বলছেন, ততটা নন: পিপি
শুনানি শেষে দীপু মনির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিএমএম আদালতের হাজতখানা থেকে মাস্ক, হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরা অবস্থায় দীপু মনিকে আদালতে তোলা হয়। তাকে আসামির কাঠগড়ায় রাখা হয়। এ সময় তিনি মাথা নিচু করে থাকেন। পরে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান সেলিমের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। এর মধ্যেই দীপু মনির আইনজীবী গাজী ফয়সাল এজলাসে আসেন এবং তার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন।
সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে বিচারক এজলাসে আসেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে একজন পুলিশ কর্মকর্তা দীপু মনিকে ১০ দিন রিমান্ডে নেয়ার সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। পরে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকীও দীপু মনিকে রিমান্ডে নেয়ার সপক্ষে কথা বলেন।
পিপি বলেন, ‘মাননীয় আদালত, গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাছে হানিফ উড়াল সড়কের ঢালে মনির হোসেন নামের এক আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি দীপু মনি। হত্যাকাণ্ডের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।’
এরপর দীপু মনির আইনজীবী গাজী ফয়সাল বলেন, ‘মাননীয় আদালত, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে দীপু মনি কোনোভাবে জড়িত নন। তিনি গুরুতর অসুস্থ। তাকে আজ (সোমবার,) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীপু মনিকে নিয়ে আসা হয়েছে আদালতে এবং ১০ দিন রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।’
আইনজীবী গাজী ফয়সালের বক্তব্যের পর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা দীপু মনি নিজেই আদালতে কথা বলার অনুমতি চান। কথার একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘গত আগস্ট মাস থেকেই আমি অসুস্থ। আমার ব্রেইন পরীক্ষার জন্য একবার কারাগার থেকে তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে আমার সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় আবার আমাকে কারাগারে নিয়ে আসা হয়। সেই থেকে আজ আমাকে পরীক্ষা করাতে নিয়ে যাচ্ছে, কাল আমাকে পরীক্ষা করতে নিয়ে যাচ্ছে, এভাবেই ঘোরানো হচ্ছে আমাকে। আমাকে আর হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে না।’
ক্ষোভের সঙ্গে দীপু মনি জানান, তার শারীরিক যে অবস্থা, তাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা জরুরি। কারাগারে কীভাবে আছেন, সে ব্যাপারে দীপু মনি আদালতের কাছে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আছি। ১৫ দিন পর পর আমার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পাই। কিন্তু আমার আইনজীবীদের সঙ্গে আমি কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি না। এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছি, আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি মাত্র তিনবার। আমার নামে ৬০টির অধিক মামলা। আমার আয়কর আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করা খুব জরুরি। মামলার বিষয় নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গেই পরামর্শ করতে চাই। মামলার শুনানি শেষ হওয়ার পর আইনজীবীর সঙ্গে ২০ মিনিট কথা বলার সুযোগ দেয়ার অনুমতি প্রার্থনা করছি।’
এ পর্যায়ে দীপু মনির বক্তব্যের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি বলেন, ‘মাননীয় আদালত, একজন আসামিকে কারাবিধি অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়। দীপু মনিকেও একইভাবে কারাবিধি অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আর উনি আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন না, সেটি সঠিক নয়। কারণ, যখন ওনাদের আসামির কাঠগড়ায় আনা হয়, তখন তারা তাদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন। শুনানি শেষ হওয়ার পর আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।’
পিপির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দীপু মনি বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আপনি জানেন সম্প্রতি আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ুন মারা গেছেন। আমি জেনেছি, ওনাকে চারবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, পরে তিনি ঢাকা মেডিকেলে মারা যান। আমি বলছি, আমি অসুস্থ। আমার ব্রেইন পরীক্ষার প্রয়োজন। আমার সুচিকিৎসা প্রয়োজন। আমাদের কি মরিয়া প্রমাণ করতে হবে আমরা অসুস্থ?’
দীপু মনির এ বক্তব্য শেষ হওয়ার পর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা সোলায়মান সেলিম রাগান্বিত হয়ে উচ্চস্বরে কথা বলতে শুরু করেন। এ সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা প্রসিকিউশন পক্ষের একজন আইনজীবী বলতে থাকেন, ‘আপনাদের হাতে রক্তের দাগ রয়েছে।’
পিপি বলেন, ‘দীপু মনির কথার যে টোন, তাতে প্রমাণিত হয়, উনি যতটা অসুস্থ বলছেন, ততটা নন।’
উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত দীপু মনির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পরে তাকে আবার আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি প্রিজনভ্যানে দীপু মনিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী দীপু মনির আবারও চার দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত। সোমবার, (০৬ অক্টোবর ২০২৫) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে একজন পুলিশ কর্মকর্তা দীপু মনির ১০ দিন রিমান্ড চাইলে শুনানি শেষে আদালত চার দিনের রিমান্ড দেয়।
দীপু মনির কথার যে টোন, তাতে প্রমাণিত হয়, উনি যতটা অসুস্থ বলছেন, ততটা নন: পিপি
শুনানি শেষে দীপু মনির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিএমএম আদালতের হাজতখানা থেকে মাস্ক, হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরা অবস্থায় দীপু মনিকে আদালতে তোলা হয়। তাকে আসামির কাঠগড়ায় রাখা হয়। এ সময় তিনি মাথা নিচু করে থাকেন। পরে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান সেলিমের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। এর মধ্যেই দীপু মনির আইনজীবী গাজী ফয়সাল এজলাসে আসেন এবং তার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন।
সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে বিচারক এজলাসে আসেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে একজন পুলিশ কর্মকর্তা দীপু মনিকে ১০ দিন রিমান্ডে নেয়ার সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। পরে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকীও দীপু মনিকে রিমান্ডে নেয়ার সপক্ষে কথা বলেন।
পিপি বলেন, ‘মাননীয় আদালত, গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাছে হানিফ উড়াল সড়কের ঢালে মনির হোসেন নামের এক আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি দীপু মনি। হত্যাকাণ্ডের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।’
এরপর দীপু মনির আইনজীবী গাজী ফয়সাল বলেন, ‘মাননীয় আদালত, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে দীপু মনি কোনোভাবে জড়িত নন। তিনি গুরুতর অসুস্থ। তাকে আজ (সোমবার,) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীপু মনিকে নিয়ে আসা হয়েছে আদালতে এবং ১০ দিন রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।’
আইনজীবী গাজী ফয়সালের বক্তব্যের পর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা দীপু মনি নিজেই আদালতে কথা বলার অনুমতি চান। কথার একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘গত আগস্ট মাস থেকেই আমি অসুস্থ। আমার ব্রেইন পরীক্ষার জন্য একবার কারাগার থেকে তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে আমার সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় আবার আমাকে কারাগারে নিয়ে আসা হয়। সেই থেকে আজ আমাকে পরীক্ষা করাতে নিয়ে যাচ্ছে, কাল আমাকে পরীক্ষা করতে নিয়ে যাচ্ছে, এভাবেই ঘোরানো হচ্ছে আমাকে। আমাকে আর হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে না।’
ক্ষোভের সঙ্গে দীপু মনি জানান, তার শারীরিক যে অবস্থা, তাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা জরুরি। কারাগারে কীভাবে আছেন, সে ব্যাপারে দীপু মনি আদালতের কাছে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আছি। ১৫ দিন পর পর আমার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পাই। কিন্তু আমার আইনজীবীদের সঙ্গে আমি কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি না। এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছি, আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি মাত্র তিনবার। আমার নামে ৬০টির অধিক মামলা। আমার আয়কর আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করা খুব জরুরি। মামলার বিষয় নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গেই পরামর্শ করতে চাই। মামলার শুনানি শেষ হওয়ার পর আইনজীবীর সঙ্গে ২০ মিনিট কথা বলার সুযোগ দেয়ার অনুমতি প্রার্থনা করছি।’
এ পর্যায়ে দীপু মনির বক্তব্যের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি বলেন, ‘মাননীয় আদালত, একজন আসামিকে কারাবিধি অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়। দীপু মনিকেও একইভাবে কারাবিধি অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আর উনি আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন না, সেটি সঠিক নয়। কারণ, যখন ওনাদের আসামির কাঠগড়ায় আনা হয়, তখন তারা তাদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন। শুনানি শেষ হওয়ার পর আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।’
পিপির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দীপু মনি বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আপনি জানেন সম্প্রতি আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ুন মারা গেছেন। আমি জেনেছি, ওনাকে চারবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, পরে তিনি ঢাকা মেডিকেলে মারা যান। আমি বলছি, আমি অসুস্থ। আমার ব্রেইন পরীক্ষার প্রয়োজন। আমার সুচিকিৎসা প্রয়োজন। আমাদের কি মরিয়া প্রমাণ করতে হবে আমরা অসুস্থ?’
দীপু মনির এ বক্তব্য শেষ হওয়ার পর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা সোলায়মান সেলিম রাগান্বিত হয়ে উচ্চস্বরে কথা বলতে শুরু করেন। এ সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা প্রসিকিউশন পক্ষের একজন আইনজীবী বলতে থাকেন, ‘আপনাদের হাতে রক্তের দাগ রয়েছে।’
পিপি বলেন, ‘দীপু মনির কথার যে টোন, তাতে প্রমাণিত হয়, উনি যতটা অসুস্থ বলছেন, ততটা নন।’
উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত দীপু মনির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পরে তাকে আবার আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি প্রিজনভ্যানে দীপু মনিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।