ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে গণভোটই আগে হওয়া জরুরী। তিনি বলেছেন, নভেম্বরে গণভোট হলে এরপর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের জন্য যথেষ্ট সময় রয়েছে।
‘চূড়ান্ত রোডম্যাপ শুক্রবার’: আলী রীয়াজ
এক মাসেও হবে না: রাশেদ খান
৩ দলের ইগো ঐক্যের অন্তরায়: মঞ্জু
বুধবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে জামায়াতের নেয়েবে আমির বলেন, ‘গণভোট নভেম্বরের শেষের দিকেই হওয়া দরকার। আমাদের কাছে রেকর্ড আছে বাংলাদেশে ১৯ দিনের ব্যবধানেও গণভোট হয়েছে, এক মাসের ব্যবধানেও গণভোট হয়েছে। আজ অক্টোবরের ৮ তারিখ। অক্টোবরের আরও ২০ দিন আছে। নভেম্বরে যদি আমরা আরও ১৫ দিন ধরি, তাহলে ৩৫ দিন। নভেম্বরের ১৫ থেকে ১৮ তারিখের মধ্যে যদি আপনি গণভোট করে ফেলেন, দেড় মাস- এটা ভেরি এনাফ টাইম। নভেম্বরের শেষের দিকে বা ডিসেম্বরের ফার্স্ট উইকে যদি আপনি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন, তাহলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্য যথেষ্ট সময় আছে।’
আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘অনেকে বলেছেন গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হলে ভালো। আমরা বলেছি, না, গণভোট আলাদা বিষয়, জাতীয় নির্বাচন আলাদা বিষয় এবং দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গণভোট হবে আমাদের যে সমস্ত রিফর্মস হচ্ছে, সংস্কার হচ্ছে, জুলাই সনদ হিসেবে যেটাকে প্যাকেজ হিসেবে আমরা হ্যান্ডেল করছি, সেটাকে নিয়ে। সুতরাং গণভোটটা আগেই হয়ে যাওয়া দরকার।
তিনি বলেন, ‘জনগণ যদি অ্যাকসেপ্ট করে, সেই গণভোটের ভিত্তিতেই পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো হবে, নির্বাচন হবে। আর জনগণ যদি রিজেক্ট করে দেয়, তাহলে তো সেটা এখানেই শেষ হয়ে যাবে। সুতরাং, বিষয়টি খুব স্পষ্ট- বিফোর ইলেকশন এবং ইলেকশন তার ভিত্তিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কোনো কারণে যদি জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু না হয়, একই দিনে যদি আমি জুলাই চার্টারের ওপরে গণভোট করি, তাহলে সেটাও তো সুষ্ঠু হবে না। সুষ্ঠু যদি না হয়, তাহলে জুলাই চার্টারের রিফর্মসের যে ডিসিশনটায় আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, সেটাও এখানে কার্যকর হবে না।’
জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী ও আরও কিছু দল স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, গণভোটে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং নভেম্বরের ভেতরেই গণভোট আলাদাভাবে হয়ে যাওয়া দরকার। এটা সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ভোট। সবচেয়ে অল্প সময়ের ভোট। সবচেয়ে কম জটিল ভোট। আপনি শুধু ‘‘হ্যাঁ’’ বা ‘‘না’’ একটা বলে ফেলবেন। এটা যদি নভেম্বরে নিশ্চিত হয়ে যায়, তাহলে সেই ভিত্তিতেই আগামী ফেব্রুয়ারিতে আমরা জাতীয় নির্বাচন করব। একটার সঙ্গে আরেকটা ডিপেনডেন্ট থাকবে না।’
ব্রিফিংয়ে গণভোট নিয়ে জামায়াতের অবস্থানের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘জুলাই সনদের ভিত্তিতে একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হবে, যা এই সনদকে অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যান করবে। এই গণভোটের পরে ও জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত পার্লামেন্টের দুটি ক্ষমতা থাকবে—গাঠনিক ক্ষমতা ও সাধারণ সংসদীয় ক্ষমতা।’
তিনি বলেন, ‘সংসদ প্রথম অধিবেশনেই তার গাঠনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে জুলাই সনদকে গ্রহণ করে নেবে। এর সঙ্গে সঙ্গেই পার্লামেন্টের গাঠনিক ক্ষমতা বিলুপ্ত হয়ে যাবে এবং এটি একটি নিয়মিত সংসদ হিসেবে কাজ করবে। এই প্রক্রিয়া সংবিধান সংশোধনকে বৈধতা দেবে এবং নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে। যেহেতু গণভোটের মাধ্যমেই পার্লামেন্টকে গাঠনিক ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে, তাই সনদটি গৃহীত হওয়ার পর সংবিধান সংশোধনের জন্য আর কোনো গণভোটের প্রয়োজন হবে না।’
শিক্ষার্থী- জনতার অভ্যূত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন রকার সংবিধানসহ নানা ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করে। সেই কমিশনগুলোর সুপারিশমালা নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ ধারাবাহিক বৈঠক চালিয়ে যান। নানা আলোচনা-বিতর্কের পর নানা ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রশ্নে দলগুলো একমত হলেও তার বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে এখনো মতভেদ রয়ে গেছে।
*গণসংহতি*
নোট অব ডিসেন্টের (ভিন্নমত) মীমাংসা গণভোটের মাধ্যমে করার উদ্যোগ নিলে দেশে আরও অনৈক্য সৃষ্টি হবে বলে মন্তব্য করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের দিনই একইসঙ্গে গণভোট করা যেতে পারে,’ যা কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে সাকি বলেন, ‘দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমি সবাইকে মতভেদ ভুলে আবারও ঐকমত্যে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
*বিএনপির অবস্থান*
সংস্কার ইস্যুতে বিএনপিকে দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়ে বৈঠকের বিরতিতে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘বিএনপি মানুষকে বলছে, সংস্কার মানে। আবার নোট অব ডিসেন্ট দিচ্ছে। তার মানে সংস্কার মানছে না। তাদের এ বিষয়ে স্পষ্ট করতে হবে।’
*৩ দলের ইগো*
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘(অন্তর্বর্তী) সরকার যে তিন দলকে নিজেদের অংশ মনে করে এবং সঙ্গে করে নিউ ইয়র্ক সফরে নিয়ে গেছেন মনে হচ্ছে তাদের ইগো সমস্যাই এখন জাতীয় ঐক্যের অন্তরায়।’
‘গণভোট আয়োজনের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য দেখা গেলেও তা কবে হবে- জাতীয় নির্বাচনের আগে, নাকি একই দিনে- এ নিয়ে স্পষ্ট দ্বিধা-বিভক্তি রয়েছে। এ অবস্থায় সরকারের উচিত হবে সব পক্ষের মতামত শুনে গণভোটের সময়সূচি ঘোষণা করা।’
তিনি বলেন, “জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে- তা কি ‘সংবিধান আদেশ’, ‘অধ্যাদেশ’ নাকি ‘জুলাই সনদ আদেশ’ নামে জারি হবে- এ নিয়েও বিতর্ক চলছে। এসব বিতর্ক দেখে মনে হচ্ছে, কেউ কেউ পরোক্ষভাবে সীমান্তের ওপারের চাওয়াকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন।”
*এক মাসেও শেষ হবে না*
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় এখন যে ধরনের মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে, তাতে আরও এক মাস আলোচনা করলেও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে না।’
রাজনৈতিক দল এব রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমরা ৯টি রাজনৈতিক দল বসেছিলাম, আলোচনা করেছি। আমরা দেখলাম যে পরবর্তীতে আজকের এই ঐক্যমত কমিশনে তাদের মধ্যে ভিন্নমত।’
রাশেদ খান বলেন, ‘আমাদের রাজনীতিবিদদের এই ধরনের চরিত্র জনগণ পছন্দ করে না। আপনি সকালে একটা বলবেন, আপনি বিকেলে একটা বলবেন। আপনি আজকে একটা বলবেন, কালকে একটা বলবেন. এটা হতে পারে না।’
*চূড়ান্ত রোডম্যাপ শুক্রবার*
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ‘চূড়ান্ত রোডম্যাপ’ শুক্রবারের মধ্যে সরকারকে দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজ। বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের গণভোটের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। ফলে এখনকার পরিস্থিতিটা হচ্ছে, গণভোটের পথে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে আর কী কী পদক্ষেপ নিতে পারি, যেটা নিশ্চিত করে যে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
তিনি বলেন, ‘গত দিনের আলোচনায় যে অগ্রগতি হয়েছে, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা এক জায়গায় আসতে পেরেছি একটি ধাপ হিসেবে। মনে করি, আজকের আলোচনার মধ্যে বাকি যে অংশগুলো আছে সেগুলো আমরা নিষ্পত্তি করতে পারব। গোটা দেশ অপেক্ষা করছে, আমরা সকলে মিলে এমন একটি ঐকমত্যের জায়গায় পৌঁছতে পারব, যাতে করে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের পথরেখাটা নির্ধারিত হয়।’
রাষ্ট্র সংস্কারের যেসব প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, সেগুলো সঙ্কলিত করে তার সঙ্গে বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা যুক্ত করে ইতোমধ্যে জুলাই সনদের খসড়া চূড়ান্ত করেছে জাতীয় একমত্য কমিশন। কিন্তু এ সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে এই সনদ বাস্তবায়নের কথা বলে আসছিল। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েক দল চাইছিল, নির্বাচনের আগেই এ সনদ বাস্তবায়ন হোক। মূলত এ বিরোধ নিয়েই এক ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়। এ অচলাবস্থা নিরসনে গণভোটের প্রস্তাব তোলে জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা দলগুলো। শুরুতে গণভোটের বিরোধিতা করলেও পরে সে অবস্থান থেকে সরে আসে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এখন তারা বলছে, গণভোট হতে পারে, তবে সেটা হতে হবে সংসদ নির্বাচনের দিনেই; আলাদা ব্যালট পেপারে।
তবে জামায়াত জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট আয়োজনের বিষয়ে অনড়।
৫ অক্টোবর দলগুলোর সঙ্গে চতুর্থ দফা বৈঠকের পর আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গণভোট আয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলো ‘একমত’ হয়েছে। এরপর গণভোটের খুটিনাটি ও অন্যান্য বিষয় ঠিক করতে বুধবার আবার বসে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সূচনা বক্তব্যে আলী রিয়াজ বলেন, বৈঠকে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট কোনো প্রস্তাব যদি আসে, কমিশন সরকারকে সেটাই উপস্থাপন করবে।
তিনি বলেন, ‘কমিশন চাইবে যে সেটাই বাস্তবায়িত হোক। সকলের প্রচেষ্টায় অনেক দূর অগ্রগতি হয়েছে, গণভোটের ক্ষেত্রে আমরা সকলেই একমতে আসতে পেরেছি। আজকের আলোচনায় আমরা যদি চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছার ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াৃ গণভোটের জায়গায় যেতে হলে যে আইনি প্রক্রিয়া লাগবে, যাতে করে আমরা সেখানে পৌঁছাতে পারি, গণভোটটা অনুষ্ঠিত হতে পারে এবং কী কী বিষয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে, সেটার একটা ধারণা এসেছে।’
আলী রীয়াজ বলেন, ‘যেহেতু কিছু নোট অফ ডিসেন্ট আছে সেটাকে আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। সবগুলো একভাবে বিবেচনা করা যাবে, তা আমরা মনে করছি না। কারণ হচ্ছে যে সমস্ত রাজনৈতিক দল নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছেন, তারা তাদের অবস্থানের দিক থেকে দিয়েছেন। ফলে আমাদেরকে দেখতে হবে যে জনগণের যে সম্মতি, সে সম্মতির ক্ষেত্রে যেন তারা এটা জেনে শুনেই সম্মতি নিতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দলের এ বিষয়ে আপত্তি আছে যেটা জুলাই সনদে বিস্তৃতভাবে বলা হচ্ছে, কী কী কারণে কোন জায়গায় তাদের আপত্তি জায়গাটা আছে।’ আলী রীয়াজ বলেন, গণভোট অনুষ্ঠানের একটি সময়সীমা যদি রাজনৈতিক দলগুলো ঠিক করতে পারে, কমিশনের কাজ তাতে সহজ হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আজকে এই জায়গায় আমরা চূড়ান্ত করতে পারব। কিন্তু যদি প্রয়োজন হয়, আরো একদিন, বড় জোর দুদিন এজন্য ব্যয় করতে পারব। কিন্তু ১০ তারিখের মধ্যে আমরা এটা সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ দিতে চাই। আমরা আশা করছি সেটা দিতে পারব।’
কমিশনের সহ সভাপতি বলে, ‘আমরা চাই, আগামী ১৫-১৬ অক্টোবরের মধ্যে যাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই জাতীয় সনদে স্বাক্ষরের একটা অনুষ্ঠান করতে পারি। সেটা আমাদের লক্ষ্য, সেই সহযোগিতা করবেন ।’
কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। কমিশন সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, মো. আইয়ুব মিয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন) মনির হায়দার বৈঠক সঞ্চালনা করেন।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে গণভোটই আগে হওয়া জরুরী। তিনি বলেছেন, নভেম্বরে গণভোট হলে এরপর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের জন্য যথেষ্ট সময় রয়েছে।
‘চূড়ান্ত রোডম্যাপ শুক্রবার’: আলী রীয়াজ
এক মাসেও হবে না: রাশেদ খান
৩ দলের ইগো ঐক্যের অন্তরায়: মঞ্জু
বুধবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে জামায়াতের নেয়েবে আমির বলেন, ‘গণভোট নভেম্বরের শেষের দিকেই হওয়া দরকার। আমাদের কাছে রেকর্ড আছে বাংলাদেশে ১৯ দিনের ব্যবধানেও গণভোট হয়েছে, এক মাসের ব্যবধানেও গণভোট হয়েছে। আজ অক্টোবরের ৮ তারিখ। অক্টোবরের আরও ২০ দিন আছে। নভেম্বরে যদি আমরা আরও ১৫ দিন ধরি, তাহলে ৩৫ দিন। নভেম্বরের ১৫ থেকে ১৮ তারিখের মধ্যে যদি আপনি গণভোট করে ফেলেন, দেড় মাস- এটা ভেরি এনাফ টাইম। নভেম্বরের শেষের দিকে বা ডিসেম্বরের ফার্স্ট উইকে যদি আপনি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন, তাহলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্য যথেষ্ট সময় আছে।’
আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘অনেকে বলেছেন গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হলে ভালো। আমরা বলেছি, না, গণভোট আলাদা বিষয়, জাতীয় নির্বাচন আলাদা বিষয় এবং দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গণভোট হবে আমাদের যে সমস্ত রিফর্মস হচ্ছে, সংস্কার হচ্ছে, জুলাই সনদ হিসেবে যেটাকে প্যাকেজ হিসেবে আমরা হ্যান্ডেল করছি, সেটাকে নিয়ে। সুতরাং গণভোটটা আগেই হয়ে যাওয়া দরকার।
তিনি বলেন, ‘জনগণ যদি অ্যাকসেপ্ট করে, সেই গণভোটের ভিত্তিতেই পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো হবে, নির্বাচন হবে। আর জনগণ যদি রিজেক্ট করে দেয়, তাহলে তো সেটা এখানেই শেষ হয়ে যাবে। সুতরাং, বিষয়টি খুব স্পষ্ট- বিফোর ইলেকশন এবং ইলেকশন তার ভিত্তিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কোনো কারণে যদি জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু না হয়, একই দিনে যদি আমি জুলাই চার্টারের ওপরে গণভোট করি, তাহলে সেটাও তো সুষ্ঠু হবে না। সুষ্ঠু যদি না হয়, তাহলে জুলাই চার্টারের রিফর্মসের যে ডিসিশনটায় আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, সেটাও এখানে কার্যকর হবে না।’
জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী ও আরও কিছু দল স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, গণভোটে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং নভেম্বরের ভেতরেই গণভোট আলাদাভাবে হয়ে যাওয়া দরকার। এটা সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ভোট। সবচেয়ে অল্প সময়ের ভোট। সবচেয়ে কম জটিল ভোট। আপনি শুধু ‘‘হ্যাঁ’’ বা ‘‘না’’ একটা বলে ফেলবেন। এটা যদি নভেম্বরে নিশ্চিত হয়ে যায়, তাহলে সেই ভিত্তিতেই আগামী ফেব্রুয়ারিতে আমরা জাতীয় নির্বাচন করব। একটার সঙ্গে আরেকটা ডিপেনডেন্ট থাকবে না।’
ব্রিফিংয়ে গণভোট নিয়ে জামায়াতের অবস্থানের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘জুলাই সনদের ভিত্তিতে একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হবে, যা এই সনদকে অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যান করবে। এই গণভোটের পরে ও জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত পার্লামেন্টের দুটি ক্ষমতা থাকবে—গাঠনিক ক্ষমতা ও সাধারণ সংসদীয় ক্ষমতা।’
তিনি বলেন, ‘সংসদ প্রথম অধিবেশনেই তার গাঠনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে জুলাই সনদকে গ্রহণ করে নেবে। এর সঙ্গে সঙ্গেই পার্লামেন্টের গাঠনিক ক্ষমতা বিলুপ্ত হয়ে যাবে এবং এটি একটি নিয়মিত সংসদ হিসেবে কাজ করবে। এই প্রক্রিয়া সংবিধান সংশোধনকে বৈধতা দেবে এবং নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে। যেহেতু গণভোটের মাধ্যমেই পার্লামেন্টকে গাঠনিক ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে, তাই সনদটি গৃহীত হওয়ার পর সংবিধান সংশোধনের জন্য আর কোনো গণভোটের প্রয়োজন হবে না।’
শিক্ষার্থী- জনতার অভ্যূত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন রকার সংবিধানসহ নানা ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করে। সেই কমিশনগুলোর সুপারিশমালা নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ ধারাবাহিক বৈঠক চালিয়ে যান। নানা আলোচনা-বিতর্কের পর নানা ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রশ্নে দলগুলো একমত হলেও তার বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে এখনো মতভেদ রয়ে গেছে।
*গণসংহতি*
নোট অব ডিসেন্টের (ভিন্নমত) মীমাংসা গণভোটের মাধ্যমে করার উদ্যোগ নিলে দেশে আরও অনৈক্য সৃষ্টি হবে বলে মন্তব্য করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের দিনই একইসঙ্গে গণভোট করা যেতে পারে,’ যা কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে সাকি বলেন, ‘দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমি সবাইকে মতভেদ ভুলে আবারও ঐকমত্যে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
*বিএনপির অবস্থান*
সংস্কার ইস্যুতে বিএনপিকে দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়ে বৈঠকের বিরতিতে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘বিএনপি মানুষকে বলছে, সংস্কার মানে। আবার নোট অব ডিসেন্ট দিচ্ছে। তার মানে সংস্কার মানছে না। তাদের এ বিষয়ে স্পষ্ট করতে হবে।’
*৩ দলের ইগো*
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘(অন্তর্বর্তী) সরকার যে তিন দলকে নিজেদের অংশ মনে করে এবং সঙ্গে করে নিউ ইয়র্ক সফরে নিয়ে গেছেন মনে হচ্ছে তাদের ইগো সমস্যাই এখন জাতীয় ঐক্যের অন্তরায়।’
‘গণভোট আয়োজনের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য দেখা গেলেও তা কবে হবে- জাতীয় নির্বাচনের আগে, নাকি একই দিনে- এ নিয়ে স্পষ্ট দ্বিধা-বিভক্তি রয়েছে। এ অবস্থায় সরকারের উচিত হবে সব পক্ষের মতামত শুনে গণভোটের সময়সূচি ঘোষণা করা।’
তিনি বলেন, “জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে- তা কি ‘সংবিধান আদেশ’, ‘অধ্যাদেশ’ নাকি ‘জুলাই সনদ আদেশ’ নামে জারি হবে- এ নিয়েও বিতর্ক চলছে। এসব বিতর্ক দেখে মনে হচ্ছে, কেউ কেউ পরোক্ষভাবে সীমান্তের ওপারের চাওয়াকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন।”
*এক মাসেও শেষ হবে না*
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় এখন যে ধরনের মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে, তাতে আরও এক মাস আলোচনা করলেও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে না।’
রাজনৈতিক দল এব রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমরা ৯টি রাজনৈতিক দল বসেছিলাম, আলোচনা করেছি। আমরা দেখলাম যে পরবর্তীতে আজকের এই ঐক্যমত কমিশনে তাদের মধ্যে ভিন্নমত।’
রাশেদ খান বলেন, ‘আমাদের রাজনীতিবিদদের এই ধরনের চরিত্র জনগণ পছন্দ করে না। আপনি সকালে একটা বলবেন, আপনি বিকেলে একটা বলবেন। আপনি আজকে একটা বলবেন, কালকে একটা বলবেন. এটা হতে পারে না।’
*চূড়ান্ত রোডম্যাপ শুক্রবার*
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ‘চূড়ান্ত রোডম্যাপ’ শুক্রবারের মধ্যে সরকারকে দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজ। বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের গণভোটের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। ফলে এখনকার পরিস্থিতিটা হচ্ছে, গণভোটের পথে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে আর কী কী পদক্ষেপ নিতে পারি, যেটা নিশ্চিত করে যে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
তিনি বলেন, ‘গত দিনের আলোচনায় যে অগ্রগতি হয়েছে, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা এক জায়গায় আসতে পেরেছি একটি ধাপ হিসেবে। মনে করি, আজকের আলোচনার মধ্যে বাকি যে অংশগুলো আছে সেগুলো আমরা নিষ্পত্তি করতে পারব। গোটা দেশ অপেক্ষা করছে, আমরা সকলে মিলে এমন একটি ঐকমত্যের জায়গায় পৌঁছতে পারব, যাতে করে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের পথরেখাটা নির্ধারিত হয়।’
রাষ্ট্র সংস্কারের যেসব প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, সেগুলো সঙ্কলিত করে তার সঙ্গে বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা যুক্ত করে ইতোমধ্যে জুলাই সনদের খসড়া চূড়ান্ত করেছে জাতীয় একমত্য কমিশন। কিন্তু এ সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে এই সনদ বাস্তবায়নের কথা বলে আসছিল। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েক দল চাইছিল, নির্বাচনের আগেই এ সনদ বাস্তবায়ন হোক। মূলত এ বিরোধ নিয়েই এক ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়। এ অচলাবস্থা নিরসনে গণভোটের প্রস্তাব তোলে জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা দলগুলো। শুরুতে গণভোটের বিরোধিতা করলেও পরে সে অবস্থান থেকে সরে আসে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এখন তারা বলছে, গণভোট হতে পারে, তবে সেটা হতে হবে সংসদ নির্বাচনের দিনেই; আলাদা ব্যালট পেপারে।
তবে জামায়াত জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট আয়োজনের বিষয়ে অনড়।
৫ অক্টোবর দলগুলোর সঙ্গে চতুর্থ দফা বৈঠকের পর আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গণভোট আয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলো ‘একমত’ হয়েছে। এরপর গণভোটের খুটিনাটি ও অন্যান্য বিষয় ঠিক করতে বুধবার আবার বসে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সূচনা বক্তব্যে আলী রিয়াজ বলেন, বৈঠকে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট কোনো প্রস্তাব যদি আসে, কমিশন সরকারকে সেটাই উপস্থাপন করবে।
তিনি বলেন, ‘কমিশন চাইবে যে সেটাই বাস্তবায়িত হোক। সকলের প্রচেষ্টায় অনেক দূর অগ্রগতি হয়েছে, গণভোটের ক্ষেত্রে আমরা সকলেই একমতে আসতে পেরেছি। আজকের আলোচনায় আমরা যদি চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছার ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াৃ গণভোটের জায়গায় যেতে হলে যে আইনি প্রক্রিয়া লাগবে, যাতে করে আমরা সেখানে পৌঁছাতে পারি, গণভোটটা অনুষ্ঠিত হতে পারে এবং কী কী বিষয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে, সেটার একটা ধারণা এসেছে।’
আলী রীয়াজ বলেন, ‘যেহেতু কিছু নোট অফ ডিসেন্ট আছে সেটাকে আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। সবগুলো একভাবে বিবেচনা করা যাবে, তা আমরা মনে করছি না। কারণ হচ্ছে যে সমস্ত রাজনৈতিক দল নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছেন, তারা তাদের অবস্থানের দিক থেকে দিয়েছেন। ফলে আমাদেরকে দেখতে হবে যে জনগণের যে সম্মতি, সে সম্মতির ক্ষেত্রে যেন তারা এটা জেনে শুনেই সম্মতি নিতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দলের এ বিষয়ে আপত্তি আছে যেটা জুলাই সনদে বিস্তৃতভাবে বলা হচ্ছে, কী কী কারণে কোন জায়গায় তাদের আপত্তি জায়গাটা আছে।’ আলী রীয়াজ বলেন, গণভোট অনুষ্ঠানের একটি সময়সীমা যদি রাজনৈতিক দলগুলো ঠিক করতে পারে, কমিশনের কাজ তাতে সহজ হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আজকে এই জায়গায় আমরা চূড়ান্ত করতে পারব। কিন্তু যদি প্রয়োজন হয়, আরো একদিন, বড় জোর দুদিন এজন্য ব্যয় করতে পারব। কিন্তু ১০ তারিখের মধ্যে আমরা এটা সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ দিতে চাই। আমরা আশা করছি সেটা দিতে পারব।’
কমিশনের সহ সভাপতি বলে, ‘আমরা চাই, আগামী ১৫-১৬ অক্টোবরের মধ্যে যাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই জাতীয় সনদে স্বাক্ষরের একটা অনুষ্ঠান করতে পারি। সেটা আমাদের লক্ষ্য, সেই সহযোগিতা করবেন ।’
কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। কমিশন সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, মো. আইয়ুব মিয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন) মনির হায়দার বৈঠক সঞ্চালনা করেন।