alt

বরিশাল মেয়র প্রার্থীদের হলফনামা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল : মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩

মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১০ জনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা ৬ জনের প্রদত্ত হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজের অংশীদার ও খুলনা ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোকন সেরনিয়াবাতের বাৎসরিক আয় ১০ লাখ টাকার উপরে। অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বছরে ৭ লাখ ৮৩ হাজার ১৫০ টাকা, যৌথ ব্যবসার ১০ শতাংশ লাভ থেকে ১ হাজার ৬৭২ টাকা, ব্যাংক আমানত থেকে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৭২ টাকা আয় রয়েছে। এছাড়া প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বছরে ৭ লাখ ৮৩ হাজার ১৫০ টাকা রয়েছে। প্রার্থীর নিজের খুলনায় ৪০ লাখ টাকা মূল্যের ৪ তলা একটি ভবন, ঢাকার ধানমন্ডিতে ১৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ১টি অ্যাপার্টমেন্ট, উত্তরায় ১৪ লাখ টাকা মূল্যের ৬টি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।

অন্যদিকে প্রার্থীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের ২ কোটি ৫০ লাখ ৮৩ হাজার ৮৭২ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৭২ টাকা, ২০ লাখ টাকার শেয়ার, ৩২ লাখ টাকা মূল্যের একটি মোটরগাড়ি, উপহার হিসেবে প্রাপ্ত ১০ ভরি স্বর্ণালংকার, ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, ২ লাখ ৫৪ হাজার টাকার আসবাবপত্র ও লাইসেন্সকৃত দুটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এছাড়া প্রার্থীর স্ত্রী লুনা আবদুল্লাহর নগদ ১ কোটি ৩৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত ১২ হাজার ৩৯৭ টাকা, ৪৯ লাখ টাকা মূল্যের একটি মোটরগাড়ি, উপহার হিসেবে প্রাপ্ত ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী এবং আড়াই লাখ টাকা মূল্যের আসবাবপত্র রয়েছে।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস অনেকগুলো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অংশীদার। হলফনামায় তিনি নিজেকে ইওকোহামা লেবেলস এন্ড প্রিন্টিং (বিডি) কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক, বরিশালস্থ সাউথ অ্যাপোলো মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক, সাউথ অ্যাপোলো ডায়গনস্টিক কমপ্লেক্স ও সাউথ অ্যাপোলো প্রোপার্টিজের পরিচালক বলে উল্লেখ করেছেন। ব্যবসা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সম্মানি থেকে বাৎসরিক আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা, চাকরির বেতন ভাতা থেকে আয় ৭৮ লাখ ৯৪ হাজার ৯২৭ টাকা, সঞ্চয়ী আমানতের মুনাফা ১ হাজার ১৯৬ টাকা আয় করেন। তাতে বাৎসরিক আয় দাঁড়ায় ৮০ লাখ টাকার উপরে। প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের আয় রয়েছে ২৮ লাখ ২০ হাজার টাকা।

এছাড়া অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ২ কোটি ২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৬ লাখ ৫৩ হাজার ২৩২ টাকা, ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ডায়গনস্টিক সেন্টারের ১২৫০টি শেয়ার, ৩৪ লাখ ৩৪ হাজার টাকা মূল্যের ৩৪৩৪টি মেডিকেল কলেজের শেয়ার, ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ১৫০০টি প্রোপার্টিজ শেয়ার, ৩৮ লাখ টাকা মূল্যের মোটরগাড়ি, ৬০ ভরি স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান ধাতুর অলংকার, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ফ্রিজ, টিভি, এসি, ওভেন এবং আসবাবপত্রের মধ্যে রয়েছে ৫১ হাজার ৫৬৫ টাকার খাট, আলমিরা, সোফা, ড্রেসিংটেবিলসহ অন্যান্য সামগ্রী। এছাড়া স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের নামে ব্যাংকে ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত ১০ লাখ ৭২ হাজার টাকা রয়েছে।

স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া জমি ও ৫ তলা ভবনের অংশ। যৌথ মালিকানায় ২ একরের বেশি কৃষিজমি রয়েছে। অন্যদিকে এই প্রার্থীর একটি বেসরকারি ব্যাংকের নিকট থেকে ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৫৫ টাকার গৃহ সংস্কার ঋণ নেয়া আছে। তার বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তবে তার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ রয়েছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী সৈয়দ মো. ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে অতীতে ৫টি ফৌজদারি মামলা থাকলেও সব ক’টি মামলাই নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। মাদ্রাসার শিক্ষকতা পেশা থেকে বছরে সর্বোচ্চ আয় ৭ লাখ ৬ হাজার টাকা। এ ছাড়াও তিনি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে বছরে ৩ লাখ ৬ হাজার টাকা এবং ব্যবসা থেকে বার্ষিক ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা আয় করেন। তাতে তার বার্ষিক মোট আয় দাঁড়ায় ১৪ লাখ টাকা। প্রার্থীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৪৩ লাখ টাকা ৭৪ হাজার ৫১৬ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১ লাখ ২১ হাজার ৭৬৯ টাকা। এছাড়া তার ফ্রিজ, এসি, ফ্যান, ওভেন, মোবাইল, খাট, আলমিরা, চেয়ার-টেবিল, শোকেজ রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ১টি বাড়ি, ২টি অ্যাপার্টমেন্ট, বেশ কিছু কৃষি ও অকৃষি জমি রয়েছে। তিনি হলফনামায় তার স্ত্রী এবং নির্ভরশীলদের সম্পদের বিবরণ দেননি। তবে ঋণগ্রস্ত নন এবং তার কোন দেনা নেই। এই প্রার্থীর হাতে নগদ ৪৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা থাকা সত্ত্বেও তিনি তার বড় ভাইসহ অন্যদের টাকায় নির্বাচন করবেন বলে উল্লেখ করেছেন।

জাকের পার্টির প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে অতীতে বা বর্তমানে কোন ফৌজদারি মামলা ছিল না ও নেই। তার বাৎসরিক আয় প্রায় ১৫ লাখ টাকা। এছাড়া প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের চাকরি থেকে বছরে আয় হয় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে একটি প্রাইভেট কার, একটি মোটরসাইকেল, কিছু ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও আসবাবপত্র রয়েছে। এছাড়া তার স্ত্রীর নগদ ৩ লাখ টাকা, ছেলের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। স্থাবর সম্পদে নিজের, স্ত্রীর ও নির্ভরশীলদের কিছু অকৃষি জমি, ইয়াকুব আলী সুপার মার্কেটের আয়ের এক তৃতীয়াংশের মালিক থাকা, এছাড়া দোকানের ভাড়াটিয়াদের জামানত ব্যতীত আর কোন দায় দেনা নেই বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি স্ত্রীর টাকা ব্যয় করে নির্বাচন করবেন বলে উল্লেখ করেছেন।

অন্যদিকে সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রুপন তার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তার বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারি মামলা নেই। তিনি নিজেকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে দাবি করে বছরে আয় বলেছেন ৪ লাখ ৩১ হাজার এবং ব্যাংক সুদ থেকে ১ হাজার ৯৩৬ টাকা আয় হয় বলে দাবি করেছেন।

তার অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রিভার আইল্যান্ড ইন্ট্রিগেশন লি. এর ১৬৫৪.৮৮ শতাংশ কৃষিজমির মধ্যে পাঁচ ভাগের এক ভাগ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি তার স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের আয়ের কোন বিবরণ দেননি। প্রার্থী নিজে কোন প্রতিষ্ঠানে ঋণগ্রস্ত না হলেও তার মা ও বোনের নিকট ২৫ লাখ টাকার দেনাগ্রস্ত আছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী হোসেন হাওলাদারের বাৎসরিক আয় ৬ লাখ টাকার মতো। তার কাছে ইসদ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১৮ লাখ টাকা, দুটি ট্রাক, একটি মোটরগাড়ি, দুটি মোটরসাইকেল, ১০ ভরি স্বর্ণলংকার, টিভি, ফ্রিজ, ওভেন, ওয়াশিংমেশিন, এসি, খাট, সোফা, সোকেজ, ওয়ারড্রফ, ড্রেসিংটেবিল, রয়েছে। এছাড়া প্রার্থীর স্ত্রীর ১০ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। নিজের একটি দোতলা দালান, পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে কৃষি ও অকৃষি জমি পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। একটি বেসরকারি ব্যাংকের কাছ থেকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ৯ কোটি টাকার সিসি ঋণ নেয়া আছে।

ছবি

আমলাতন্ত্র চলবে না, প্রয়োজনে ডিসি অফিস ঘেরাও করবেন: মির্জা ফখরুল

জুলাই সনদ সইয়ে অনিশ্চয়তা: সিপিবি, এনসিপি, গণফোরামের আপত্তি

ছবি

জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনুস

ছবি

সংশোধিত খসড়া না পেলে জুলাই সনদে সই করবে না বাম ধারার চার দল

ছবি

জাতির কাছে সব কিছু স্পষ্ট করে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আহ্বান এনসিপি’র সদস্য সচিব আখতার হোসেনের

ছবি

‘প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভারসাম্য নষ্ট হলে রাষ্ট্র ঝুঁকিতে পড়বে’ — প্রধান উপদেষ্টাকে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের সতর্কবার্তা

ছবি

সৈয়দপুরে সিপিবির পথসভা অনুষ্ঠিত

ছবি

বিএনপির ৩১ দফা বাস্তয়নে তারেক মুন্সীর গণসংযোগ

ছবি

তফসিলের আগেই গণভোটের দাবি ইসলামী আন্দোলনের

ছবি

জামায়াতের নভেম্বরে গণভোট দাবি ‘অন্য কোনো মাস্টারপ্ল্যান কি না’: প্রশ্ন রিজভীর

ছবি

আগামী নির্বাচনেই দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে: মির্জা ফখরুল ইসলাম

ছবি

শাপলায় অনড় এনসিপি, ‘নিজস্ব পদ্ধতির’ কথা জানালো ইসি

‘ষড়যন্ত্রে লিপ্ত’ উপদেষ্টাদের নাম ও কণ্ঠ রেকর্ড থাকার দাবি, জনসমক্ষে প্রকাশের হুঁশিয়ারি জামায়াত নেতার

ছবি

জাতীয় লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের অস্তিত্ব যাচাইয়ে পুনঃতদন্ত কমিটি গঠন

ছবি

১৯ অক্টোবরের মধ্যে প্রতীক বাছাইয়ের নির্দেশ এনসিপিকে

ছবি

রাজনীতিতে আসছি সেবা করতে, ব্যবসা করতে না: মাসুদুজ্জামান

ছবি

পিআরের বিষয়টি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত: ফখরুল

ছবি

আওয়ামী লীগ নেতা আহসানের ‘মুক্তিতে বাধা নেই’

ছবি

আমরা উচ্চ কক্ষে পিআরের পক্ষে, নিম্ন কক্ষে নই: সারজিস

ছবি

আগামী মাসেই গণভোটের দাবি জামায়াতে ইসলামী, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তিন ঘণ্টার বৈঠক

ছবি

নির্বাচন: ১০০ আসনে এবি পার্টির প্রার্থী চূড়ান্ত

ছবি

ক্ষোভ ঝাড়তে গিয়ে যে উপমা ব্যবহার করেছি, সেটা করা উচিত হয়নি: ফেসবুক পোস্টে সারজিস

ছবি

পিআরের দাবিতে আন্দোলন: নির্বাচন ‘বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র’ দেখছেন ফখরুল

পঞ্চগড়ে এনসিপির কর্মসূচিতে বিদ্যুৎ–বিভ্রাট, নেসকোর কর্মকর্তাদের কলিজা ছিঁড়ে ফেলার হুমকি সারজিসের

ছবি

ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই, তবে সমতার ভিত্তিতে: ফখরুল

ছবি

জামালপুরে এলডিবি মনোনীত সদর আসনে এমপি প্রার্থী মুহাম্মদ মাসুদ হোসাইনের গণসংযোগ শুরু

ছবি

বিচার না হলে বাহিনী জনগণের প্রতিষ্ঠান হবে না: এনসিপি নেতা আখতার হোসেন

ছবি

শাপলা প্রতীক নিয়ে বিতর্কের মধ্যে রংপুর-৬ আসনে এনসিপির হয়ে প্রচারণায় তাকিয়া জাহান চৌধুরী

ছবি

তারেক রহমানের নেতৃত্বে বহুমূখী কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে: কর্নেল আজাদ

ছবি

আদর্শ সমাজ গঠনে কাজ করছে জামায়াত

ছবি

কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কর্মী সমাবেশে পুলিশ-নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ

ছবি

বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে মতামত চাওয়ায় ‘অশুভ উদ্দেশ্য’ দেখছে জাসদ

ছবি

গণভোটে পিআর পদ্ধতির প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জামায়াতের

ছবি

আমলাতন্ত্রকে একটি দলের ‘পকেটে নেয়ার’ চেষ্টা হচ্ছে: ফখরুল

ছবি

মির্জা ফখরুলের সঙ্গে জার্মান রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

ছবি

ধানের শীষ নিয়ে অযথা টানাটানি কেন, প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের

tab

বরিশাল মেয়র প্রার্থীদের হলফনামা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩

মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১০ জনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা ৬ জনের প্রদত্ত হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজের অংশীদার ও খুলনা ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোকন সেরনিয়াবাতের বাৎসরিক আয় ১০ লাখ টাকার উপরে। অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বছরে ৭ লাখ ৮৩ হাজার ১৫০ টাকা, যৌথ ব্যবসার ১০ শতাংশ লাভ থেকে ১ হাজার ৬৭২ টাকা, ব্যাংক আমানত থেকে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৭২ টাকা আয় রয়েছে। এছাড়া প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বছরে ৭ লাখ ৮৩ হাজার ১৫০ টাকা রয়েছে। প্রার্থীর নিজের খুলনায় ৪০ লাখ টাকা মূল্যের ৪ তলা একটি ভবন, ঢাকার ধানমন্ডিতে ১৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ১টি অ্যাপার্টমেন্ট, উত্তরায় ১৪ লাখ টাকা মূল্যের ৬টি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।

অন্যদিকে প্রার্থীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের ২ কোটি ৫০ লাখ ৮৩ হাজার ৮৭২ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৭২ টাকা, ২০ লাখ টাকার শেয়ার, ৩২ লাখ টাকা মূল্যের একটি মোটরগাড়ি, উপহার হিসেবে প্রাপ্ত ১০ ভরি স্বর্ণালংকার, ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, ২ লাখ ৫৪ হাজার টাকার আসবাবপত্র ও লাইসেন্সকৃত দুটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এছাড়া প্রার্থীর স্ত্রী লুনা আবদুল্লাহর নগদ ১ কোটি ৩৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত ১২ হাজার ৩৯৭ টাকা, ৪৯ লাখ টাকা মূল্যের একটি মোটরগাড়ি, উপহার হিসেবে প্রাপ্ত ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী এবং আড়াই লাখ টাকা মূল্যের আসবাবপত্র রয়েছে।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস অনেকগুলো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অংশীদার। হলফনামায় তিনি নিজেকে ইওকোহামা লেবেলস এন্ড প্রিন্টিং (বিডি) কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক, বরিশালস্থ সাউথ অ্যাপোলো মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক, সাউথ অ্যাপোলো ডায়গনস্টিক কমপ্লেক্স ও সাউথ অ্যাপোলো প্রোপার্টিজের পরিচালক বলে উল্লেখ করেছেন। ব্যবসা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সম্মানি থেকে বাৎসরিক আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা, চাকরির বেতন ভাতা থেকে আয় ৭৮ লাখ ৯৪ হাজার ৯২৭ টাকা, সঞ্চয়ী আমানতের মুনাফা ১ হাজার ১৯৬ টাকা আয় করেন। তাতে বাৎসরিক আয় দাঁড়ায় ৮০ লাখ টাকার উপরে। প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের আয় রয়েছে ২৮ লাখ ২০ হাজার টাকা।

এছাড়া অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ২ কোটি ২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৬ লাখ ৫৩ হাজার ২৩২ টাকা, ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ডায়গনস্টিক সেন্টারের ১২৫০টি শেয়ার, ৩৪ লাখ ৩৪ হাজার টাকা মূল্যের ৩৪৩৪টি মেডিকেল কলেজের শেয়ার, ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ১৫০০টি প্রোপার্টিজ শেয়ার, ৩৮ লাখ টাকা মূল্যের মোটরগাড়ি, ৬০ ভরি স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান ধাতুর অলংকার, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ফ্রিজ, টিভি, এসি, ওভেন এবং আসবাবপত্রের মধ্যে রয়েছে ৫১ হাজার ৫৬৫ টাকার খাট, আলমিরা, সোফা, ড্রেসিংটেবিলসহ অন্যান্য সামগ্রী। এছাড়া স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের নামে ব্যাংকে ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত ১০ লাখ ৭২ হাজার টাকা রয়েছে।

স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া জমি ও ৫ তলা ভবনের অংশ। যৌথ মালিকানায় ২ একরের বেশি কৃষিজমি রয়েছে। অন্যদিকে এই প্রার্থীর একটি বেসরকারি ব্যাংকের নিকট থেকে ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৫৫ টাকার গৃহ সংস্কার ঋণ নেয়া আছে। তার বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তবে তার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ রয়েছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী সৈয়দ মো. ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে অতীতে ৫টি ফৌজদারি মামলা থাকলেও সব ক’টি মামলাই নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। মাদ্রাসার শিক্ষকতা পেশা থেকে বছরে সর্বোচ্চ আয় ৭ লাখ ৬ হাজার টাকা। এ ছাড়াও তিনি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে বছরে ৩ লাখ ৬ হাজার টাকা এবং ব্যবসা থেকে বার্ষিক ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা আয় করেন। তাতে তার বার্ষিক মোট আয় দাঁড়ায় ১৪ লাখ টাকা। প্রার্থীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৪৩ লাখ টাকা ৭৪ হাজার ৫১৬ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১ লাখ ২১ হাজার ৭৬৯ টাকা। এছাড়া তার ফ্রিজ, এসি, ফ্যান, ওভেন, মোবাইল, খাট, আলমিরা, চেয়ার-টেবিল, শোকেজ রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ১টি বাড়ি, ২টি অ্যাপার্টমেন্ট, বেশ কিছু কৃষি ও অকৃষি জমি রয়েছে। তিনি হলফনামায় তার স্ত্রী এবং নির্ভরশীলদের সম্পদের বিবরণ দেননি। তবে ঋণগ্রস্ত নন এবং তার কোন দেনা নেই। এই প্রার্থীর হাতে নগদ ৪৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা থাকা সত্ত্বেও তিনি তার বড় ভাইসহ অন্যদের টাকায় নির্বাচন করবেন বলে উল্লেখ করেছেন।

জাকের পার্টির প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে অতীতে বা বর্তমানে কোন ফৌজদারি মামলা ছিল না ও নেই। তার বাৎসরিক আয় প্রায় ১৫ লাখ টাকা। এছাড়া প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের চাকরি থেকে বছরে আয় হয় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে একটি প্রাইভেট কার, একটি মোটরসাইকেল, কিছু ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও আসবাবপত্র রয়েছে। এছাড়া তার স্ত্রীর নগদ ৩ লাখ টাকা, ছেলের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। স্থাবর সম্পদে নিজের, স্ত্রীর ও নির্ভরশীলদের কিছু অকৃষি জমি, ইয়াকুব আলী সুপার মার্কেটের আয়ের এক তৃতীয়াংশের মালিক থাকা, এছাড়া দোকানের ভাড়াটিয়াদের জামানত ব্যতীত আর কোন দায় দেনা নেই বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি স্ত্রীর টাকা ব্যয় করে নির্বাচন করবেন বলে উল্লেখ করেছেন।

অন্যদিকে সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রুপন তার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তার বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারি মামলা নেই। তিনি নিজেকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে দাবি করে বছরে আয় বলেছেন ৪ লাখ ৩১ হাজার এবং ব্যাংক সুদ থেকে ১ হাজার ৯৩৬ টাকা আয় হয় বলে দাবি করেছেন।

তার অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রিভার আইল্যান্ড ইন্ট্রিগেশন লি. এর ১৬৫৪.৮৮ শতাংশ কৃষিজমির মধ্যে পাঁচ ভাগের এক ভাগ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি তার স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের আয়ের কোন বিবরণ দেননি। প্রার্থী নিজে কোন প্রতিষ্ঠানে ঋণগ্রস্ত না হলেও তার মা ও বোনের নিকট ২৫ লাখ টাকার দেনাগ্রস্ত আছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী হোসেন হাওলাদারের বাৎসরিক আয় ৬ লাখ টাকার মতো। তার কাছে ইসদ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১৮ লাখ টাকা, দুটি ট্রাক, একটি মোটরগাড়ি, দুটি মোটরসাইকেল, ১০ ভরি স্বর্ণলংকার, টিভি, ফ্রিজ, ওভেন, ওয়াশিংমেশিন, এসি, খাট, সোফা, সোকেজ, ওয়ারড্রফ, ড্রেসিংটেবিল, রয়েছে। এছাড়া প্রার্থীর স্ত্রীর ১০ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। নিজের একটি দোতলা দালান, পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে কৃষি ও অকৃষি জমি পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। একটি বেসরকারি ব্যাংকের কাছ থেকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ৯ কোটি টাকার সিসি ঋণ নেয়া আছে।

back to top