স্কোর:
বাংলাদেশ ৪৯.১ ওভারে ১৯৮/১০
ভারত ৩৫.২ ওভারে ১৩৫
বাংলাদেশ ৫৯ রানে জিতে চ্যাম্পিয়ন
টুর্নামেন্টের প্রথম নয় আসরে একবারও শিরোপা জিততে না পারা বাংলাদেশ গত আসরে খরা ঘোচানোর পর এবার জিতে নিল টানা দ্বিতীয় শিরোপা। এসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতকে উড়িয়ে শিরোপা ধরে রাখল বাংলাদেশ।
গতবছর সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ১৯৫ রানে হারিয়ে প্রথম অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জিতেছিল বাংলাদেশ। এবার অবশ্য উপলক্ষ্যটা আরও বড়। ক্রিকেটের পরাশক্তি ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার এশিয়ার সেরা হলো বাংলাদেশের যুবরা।
এমনিতেই এখন বাংলাদেশ ভারতের যেকোনো ম্যাচ মানেই মাঠের বাইরে তুমুল উত্তেজনা। তা যদি কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনাল হয়, তাহলে আরও চড়ে যায়। আর সাম্প্রতিক সময়ে দু’দেশের রাজনৈতিক হিসেব নিকেশও পারদে চড়ার মতো।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে যদিও বড় পুঁজি গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। ১৯৮ রানেই শেষ হয় ইনিংস। মাঝবিরতিতে সম্ভবনায় তাই এগিয়ে ছিল ভারতই। তবে বাংলাদেশের পেস বোলাররা এই রানকেই ভারতের সামনে এভারেস্টের মতো দাঁড় করায়।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ভারত। বাংলাদেশি বোলার আল ফাহাদের বলে আয়ূশ মাত্রে বোল্ড হোন ৮ বলে ১ রান করে। দলীয় সংগ্রহ তখন ৪ রান। এরপর টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় তারকা সদ্য আইপিএলে দল পাওয়া ১৩ বছর বয়সী বৈভব সূর্যবংশীকে তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে বাংলাদেশের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন বাহাতি পেসার মারুফ মৃধা।
ধুঁকতে থাকা ভারতীয় ব্যাটাররা কোনো পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশি বোলারদের সামনে একসময় ৯৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসা ভারত আর খেলায় ফিরতে পারেনি।
জয়ের সুবাস পেয়ে গ্যালারিতে উল্লাস চলছিল তখন থেকেই। আর ম্যাচ শেষ হতে জয়ের উচ্ছ্বাসে আবেগের স্রোত। শেষ উইকেটটি নিয়ে অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম হাঁটু গেঁড়ে বসে হাত দিয়ে ঢেকে রইলেন মুখ। আর অন্যরা তখন কেউ ডানা মেলে উড়ছেন, ছুটছেন দিগি¦দিক। লাল-সবুজের পতাকা দুই প্রান্তে ধরে ছুটে গেলেন দুজন। দুবাইয়ের গ্যালারি থেকে মাঠ, একাকার লাল-সবুজের শিরোপা উৎসবে।
ফাইনালে ভারত ১৯৯ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে, ৩৫.২ ওভারে অলআউট হবার আগে করতে পেরেছে মাত্র ১৩৯ রান। ফল বাংলাদেশ জয়ী ৫৯ রানে।
বাংলাদেশের পার্টটাইমার বোলার হয়ে যাওয়া অধিনায়ক আজিজুল হাকিম শেষের ৩ উইকেট দখল করেন ভারতের। এরমধ্যে ভয় জাগিয়ে তোলা ভারতের অধিনায়ক আমানকে কোনোভাবেই আউট করতে পারছিলেন না বাংলাদেশ। একপাশ আগলে রেখে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ভারতকে। বাংলাদেশের কাপ্তান আজিজুল হাকিম বাধ্য হয়ে নিজের হাতে তুলে নেন বল।
প্রথম ওভারেই আমান’কে বোল্ড আউট করে বলা জায় ভারতের কফিনে শেষ পেরেক বসিয়ে দেন।
বাংলাদেশের শুরুটা তেমন ভালো ছিল না। ৪৯.১ ওভারে মাত্র ১৯৮ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল। সম্ভাবনা জাগিয়ে ও বড় ইনিংস খেলতে পারেনি আজিজুল হাকিমের দল। তাতে অবশ্য অখুশি হবার সুযোগ নেই।
১৬৭ রানে ৮ উইকেট হারানো বাংলাদেশ, নবম উইকেটের জুটিতে ফরিদ হাসান ও আল ফাহাদ ৩১ রান না করলে হয়তো আরও আগেই শেষ হতে পারতো।
তবে শুরুটা চমৎকার হয়েছিল বাংলাদেশের। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা জাওয়াদ আবরার ভারতের যুধাজিৎ গুহের বলে ছক্কা মেরে রানের খাতা খুলেছিলেন।
কিন্তু অন্যপ্রান্তে খেলা কালাম সিদ্দিকি হতাশ করেছেন বাংলাদেশি দর্শকদের। ১৬ বল খেলে ১ রান করে যুধাজিৎ এর বলে বোল্ড আউট হন তিনি। জাওয়াদ আবরার ৩৫ বলে ২০ রান করে আউট হোন চেতন শর্মার অসাধারণ বলে ক্যাচ দিয়ে।
এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার আজিজুল হাকিম। সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিসহ তার রান সংখ্যা ৪ ম্যাচে ২২৪। সেও ফাইনালে আশা জাগিয়ে প্রাপ্তি ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছেন। ১৬ রানে কিরন চর্মেলের বলে যুধাজিৎ এর হাতে ধরা পরলে অনেকটাই নিস্প্রভ হয়ে যায় বাংলাদেশের ড্রেসিং রুম।
তারপর মোহাম্মদ শিহাবের ধৈর্য শীল ব্যাটিং অনেকটা পথ দেখিয়েছে বাংলাদেশকে। সেমিফাইনালে ২৬ রান করা শিহাব মহাগুরুত্বপূর্ণ ৪০ রান করেন। রিজান হোসেন আউট হন ৪৭ রান করে। হঠাৎ করে বাংলাদেশ ব্যাটিং চাপে পরে ১৬৭ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে। পরে বাংলাদেশের ১৯৮ রান করাটাও ছিল টনিকের মতো। যা বোলারদের রসদ জুগিয়েছে লড়াই করার।
রোববার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
স্কোর:
বাংলাদেশ ৪৯.১ ওভারে ১৯৮/১০
ভারত ৩৫.২ ওভারে ১৩৫
বাংলাদেশ ৫৯ রানে জিতে চ্যাম্পিয়ন
টুর্নামেন্টের প্রথম নয় আসরে একবারও শিরোপা জিততে না পারা বাংলাদেশ গত আসরে খরা ঘোচানোর পর এবার জিতে নিল টানা দ্বিতীয় শিরোপা। এসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতকে উড়িয়ে শিরোপা ধরে রাখল বাংলাদেশ।
গতবছর সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ১৯৫ রানে হারিয়ে প্রথম অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জিতেছিল বাংলাদেশ। এবার অবশ্য উপলক্ষ্যটা আরও বড়। ক্রিকেটের পরাশক্তি ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার এশিয়ার সেরা হলো বাংলাদেশের যুবরা।
এমনিতেই এখন বাংলাদেশ ভারতের যেকোনো ম্যাচ মানেই মাঠের বাইরে তুমুল উত্তেজনা। তা যদি কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনাল হয়, তাহলে আরও চড়ে যায়। আর সাম্প্রতিক সময়ে দু’দেশের রাজনৈতিক হিসেব নিকেশও পারদে চড়ার মতো।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে যদিও বড় পুঁজি গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। ১৯৮ রানেই শেষ হয় ইনিংস। মাঝবিরতিতে সম্ভবনায় তাই এগিয়ে ছিল ভারতই। তবে বাংলাদেশের পেস বোলাররা এই রানকেই ভারতের সামনে এভারেস্টের মতো দাঁড় করায়।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ভারত। বাংলাদেশি বোলার আল ফাহাদের বলে আয়ূশ মাত্রে বোল্ড হোন ৮ বলে ১ রান করে। দলীয় সংগ্রহ তখন ৪ রান। এরপর টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় তারকা সদ্য আইপিএলে দল পাওয়া ১৩ বছর বয়সী বৈভব সূর্যবংশীকে তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে বাংলাদেশের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন বাহাতি পেসার মারুফ মৃধা।
ধুঁকতে থাকা ভারতীয় ব্যাটাররা কোনো পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশি বোলারদের সামনে একসময় ৯৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসা ভারত আর খেলায় ফিরতে পারেনি।
জয়ের সুবাস পেয়ে গ্যালারিতে উল্লাস চলছিল তখন থেকেই। আর ম্যাচ শেষ হতে জয়ের উচ্ছ্বাসে আবেগের স্রোত। শেষ উইকেটটি নিয়ে অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম হাঁটু গেঁড়ে বসে হাত দিয়ে ঢেকে রইলেন মুখ। আর অন্যরা তখন কেউ ডানা মেলে উড়ছেন, ছুটছেন দিগি¦দিক। লাল-সবুজের পতাকা দুই প্রান্তে ধরে ছুটে গেলেন দুজন। দুবাইয়ের গ্যালারি থেকে মাঠ, একাকার লাল-সবুজের শিরোপা উৎসবে।
ফাইনালে ভারত ১৯৯ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে, ৩৫.২ ওভারে অলআউট হবার আগে করতে পেরেছে মাত্র ১৩৯ রান। ফল বাংলাদেশ জয়ী ৫৯ রানে।
বাংলাদেশের পার্টটাইমার বোলার হয়ে যাওয়া অধিনায়ক আজিজুল হাকিম শেষের ৩ উইকেট দখল করেন ভারতের। এরমধ্যে ভয় জাগিয়ে তোলা ভারতের অধিনায়ক আমানকে কোনোভাবেই আউট করতে পারছিলেন না বাংলাদেশ। একপাশ আগলে রেখে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ভারতকে। বাংলাদেশের কাপ্তান আজিজুল হাকিম বাধ্য হয়ে নিজের হাতে তুলে নেন বল।
প্রথম ওভারেই আমান’কে বোল্ড আউট করে বলা জায় ভারতের কফিনে শেষ পেরেক বসিয়ে দেন।
বাংলাদেশের শুরুটা তেমন ভালো ছিল না। ৪৯.১ ওভারে মাত্র ১৯৮ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল। সম্ভাবনা জাগিয়ে ও বড় ইনিংস খেলতে পারেনি আজিজুল হাকিমের দল। তাতে অবশ্য অখুশি হবার সুযোগ নেই।
১৬৭ রানে ৮ উইকেট হারানো বাংলাদেশ, নবম উইকেটের জুটিতে ফরিদ হাসান ও আল ফাহাদ ৩১ রান না করলে হয়তো আরও আগেই শেষ হতে পারতো।
তবে শুরুটা চমৎকার হয়েছিল বাংলাদেশের। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা জাওয়াদ আবরার ভারতের যুধাজিৎ গুহের বলে ছক্কা মেরে রানের খাতা খুলেছিলেন।
কিন্তু অন্যপ্রান্তে খেলা কালাম সিদ্দিকি হতাশ করেছেন বাংলাদেশি দর্শকদের। ১৬ বল খেলে ১ রান করে যুধাজিৎ এর বলে বোল্ড আউট হন তিনি। জাওয়াদ আবরার ৩৫ বলে ২০ রান করে আউট হোন চেতন শর্মার অসাধারণ বলে ক্যাচ দিয়ে।
এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার আজিজুল হাকিম। সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিসহ তার রান সংখ্যা ৪ ম্যাচে ২২৪। সেও ফাইনালে আশা জাগিয়ে প্রাপ্তি ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছেন। ১৬ রানে কিরন চর্মেলের বলে যুধাজিৎ এর হাতে ধরা পরলে অনেকটাই নিস্প্রভ হয়ে যায় বাংলাদেশের ড্রেসিং রুম।
তারপর মোহাম্মদ শিহাবের ধৈর্য শীল ব্যাটিং অনেকটা পথ দেখিয়েছে বাংলাদেশকে। সেমিফাইনালে ২৬ রান করা শিহাব মহাগুরুত্বপূর্ণ ৪০ রান করেন। রিজান হোসেন আউট হন ৪৭ রান করে। হঠাৎ করে বাংলাদেশ ব্যাটিং চাপে পরে ১৬৭ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে। পরে বাংলাদেশের ১৯৮ রান করাটাও ছিল টনিকের মতো। যা বোলারদের রসদ জুগিয়েছে লড়াই করার।