বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনের আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামজুড়ে ঝুলছে বিশাল ব্যানার, প্রার্থীদের প্রচারণায় জমজমাট পরিবেশ—তবু উৎসবের ছোঁয়া নেই কোথাও। অভিযোগ, অনিয়ম আর নাটকীয় সরে দাঁড়ানোর ঘটনায় নির্বাচনের আগেই যেন ফল নির্ধারিত হয়ে গেছে। ক্রিকেট মহলে তাই প্রশ্ন—এই ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কোথায়?
রাজধানীর একটি হোটেলে সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত হবে পরিচালক পদে ভোটগ্রহণ। তিনটি ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হবেন ২৩ পরিচালক, বাকি দুজন আসবেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নে। সন্ধ্যা ছয়টায় ঘোষণা করা হবে পরিচালকদের ফলাফল, আর সেদিন রাতেই সভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচনের ফল জানা যাবে।
তবে ভোটের আগেই দেশের ক্রিকেটজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিতর্ক। প্রার্থীদের মধ্যে ২১ জন ইতোমধ্যে সরে দাঁড়িয়েছেন। ক্লাব ক্যাটেগরির প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়জুর রহমান ভূঞা তো রাত দুইটার পর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এর আগে ৯ জন পরিচালক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনের আকর্ষণ এখন কেবল দুই জায়গায়—সাবেক ক্রিকেটারদের কোটা থেকে খালেদ মাসুদ পাইলট ও দেবব্রত পালের লড়াই, আর জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার রংপুর বিভাগের একটি পদ।
নাজমুল হাসান পাপন টানা তিনবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিসিবি সভাপতি হয়েছিলেন। এবার তার উত্তরসূরি আমিনুল ইসলাম বুলবুলও একই পথে এগোচ্ছেন। চার মাস আগে ফারুক আহমেদকে সরিয়ে অস্থায়ী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান আমিনুল। তখন বলেছিলেন, এটি “একটি ছোট ইনিংস”। এখন আবার বলছেন, ক্রীড়া উপদেষ্টা চাইলে তিনি দায়িত্বে থাকতে চান।
এই বক্তব্য থেকেই শুরু বিতর্ক। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ছায়া নিয়েই এখন নির্বাচনের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—বিসিবির ভোটে কি সরকারি প্রভাব কাজ করছে? অভিযোগ, তিনিই আড়ালে থেকে সভাপতি হিসেবে আমিনুলকে চূড়ান্ত করতে চেয়েছেন।
সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল শুরু থেকেই বলেছিলেন, সরকারের একটি অংশ নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আজকে ক্রিকেট শতভাগ হেরে গেছে। আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করুন, তারপর ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ করবেন।”
তামিমের সঙ্গে নাম প্রত্যাহার করা আরেক প্রার্থী ইসরাফিল খসরু বলেন, “নির্বাচনে নগ্ন হস্তক্ষেপ চলছে। সরকারের একটি গোষ্ঠী এখানে স্বেচ্ছাচারিতা করছে।”
শনিবার নির্বাচন বর্জন করে রাজশাহীর কাউন্সিলর হাসিবুল আলম বলেন, “আগের নির্বাচনের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি এখন চোখে পড়ছে। সুষ্ঠু ভোট নয়, এটা প্রহসনের নির্বাচন।” অভিযোগ করেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী সরকারঘনিষ্ঠ প্রার্থী ভোটারদের গোপনে ঢাকায় এনে রেখেছেন।
ঢাকার ৪৮টি ক্লাব শনিবার সংবাদ সম্মেলনে ছয়টি গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচনের তারিখ পেছানোর দাবি জানায়। নইলে তারা সব ধরনের লিগ বর্জনের হুমকি দেয়।
রাতের বেলায় ই-ভোটের আয়োজন, ভোটারদের হোটেলে এনে ভোট করিয়ে ফেলার অভিযোগও উঠেছে। এমনকি নির্বাচনের আগের রাতে ক্লাব ক্যাটেগরির ১২ পরিচালক চূড়ান্ত হয়ে গেছে বলেও জানা যায়। মেজর (অব.) ইমরোজ আহমেদ নিজেই সাংবাদিকদের বলেন, “সবকিছু আগে থেকেই সেট-আপ। এটা নির্বাচন নয়, নাটক।”
শেষ পর্যন্ত ক্লাব ক্যাটেগরিতে ৩০ প্রার্থীর জায়গায় মাঠে থাকছেন মাত্র ১৫ জন, যাদের মধ্যে ১২ জনই হবেন পরিচালক। বাকি কয়েকজন কেবল আনুষ্ঠানিকতার জন্য লড়ছেন।
সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনের আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামজুড়ে ঝুলছে বিশাল ব্যানার, প্রার্থীদের প্রচারণায় জমজমাট পরিবেশ—তবু উৎসবের ছোঁয়া নেই কোথাও। অভিযোগ, অনিয়ম আর নাটকীয় সরে দাঁড়ানোর ঘটনায় নির্বাচনের আগেই যেন ফল নির্ধারিত হয়ে গেছে। ক্রিকেট মহলে তাই প্রশ্ন—এই ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কোথায়?
রাজধানীর একটি হোটেলে সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত হবে পরিচালক পদে ভোটগ্রহণ। তিনটি ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হবেন ২৩ পরিচালক, বাকি দুজন আসবেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নে। সন্ধ্যা ছয়টায় ঘোষণা করা হবে পরিচালকদের ফলাফল, আর সেদিন রাতেই সভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচনের ফল জানা যাবে।
তবে ভোটের আগেই দেশের ক্রিকেটজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিতর্ক। প্রার্থীদের মধ্যে ২১ জন ইতোমধ্যে সরে দাঁড়িয়েছেন। ক্লাব ক্যাটেগরির প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়জুর রহমান ভূঞা তো রাত দুইটার পর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এর আগে ৯ জন পরিচালক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনের আকর্ষণ এখন কেবল দুই জায়গায়—সাবেক ক্রিকেটারদের কোটা থেকে খালেদ মাসুদ পাইলট ও দেবব্রত পালের লড়াই, আর জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার রংপুর বিভাগের একটি পদ।
নাজমুল হাসান পাপন টানা তিনবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিসিবি সভাপতি হয়েছিলেন। এবার তার উত্তরসূরি আমিনুল ইসলাম বুলবুলও একই পথে এগোচ্ছেন। চার মাস আগে ফারুক আহমেদকে সরিয়ে অস্থায়ী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান আমিনুল। তখন বলেছিলেন, এটি “একটি ছোট ইনিংস”। এখন আবার বলছেন, ক্রীড়া উপদেষ্টা চাইলে তিনি দায়িত্বে থাকতে চান।
এই বক্তব্য থেকেই শুরু বিতর্ক। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ছায়া নিয়েই এখন নির্বাচনের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—বিসিবির ভোটে কি সরকারি প্রভাব কাজ করছে? অভিযোগ, তিনিই আড়ালে থেকে সভাপতি হিসেবে আমিনুলকে চূড়ান্ত করতে চেয়েছেন।
সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল শুরু থেকেই বলেছিলেন, সরকারের একটি অংশ নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আজকে ক্রিকেট শতভাগ হেরে গেছে। আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করুন, তারপর ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ করবেন।”
তামিমের সঙ্গে নাম প্রত্যাহার করা আরেক প্রার্থী ইসরাফিল খসরু বলেন, “নির্বাচনে নগ্ন হস্তক্ষেপ চলছে। সরকারের একটি গোষ্ঠী এখানে স্বেচ্ছাচারিতা করছে।”
শনিবার নির্বাচন বর্জন করে রাজশাহীর কাউন্সিলর হাসিবুল আলম বলেন, “আগের নির্বাচনের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি এখন চোখে পড়ছে। সুষ্ঠু ভোট নয়, এটা প্রহসনের নির্বাচন।” অভিযোগ করেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী সরকারঘনিষ্ঠ প্রার্থী ভোটারদের গোপনে ঢাকায় এনে রেখেছেন।
ঢাকার ৪৮টি ক্লাব শনিবার সংবাদ সম্মেলনে ছয়টি গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচনের তারিখ পেছানোর দাবি জানায়। নইলে তারা সব ধরনের লিগ বর্জনের হুমকি দেয়।
রাতের বেলায় ই-ভোটের আয়োজন, ভোটারদের হোটেলে এনে ভোট করিয়ে ফেলার অভিযোগও উঠেছে। এমনকি নির্বাচনের আগের রাতে ক্লাব ক্যাটেগরির ১২ পরিচালক চূড়ান্ত হয়ে গেছে বলেও জানা যায়। মেজর (অব.) ইমরোজ আহমেদ নিজেই সাংবাদিকদের বলেন, “সবকিছু আগে থেকেই সেট-আপ। এটা নির্বাচন নয়, নাটক।”
শেষ পর্যন্ত ক্লাব ক্যাটেগরিতে ৩০ প্রার্থীর জায়গায় মাঠে থাকছেন মাত্র ১৫ জন, যাদের মধ্যে ১২ জনই হবেন পরিচালক। বাকি কয়েকজন কেবল আনুষ্ঠানিকতার জন্য লড়ছেন।