শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা ও পাঠদান নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্নের উদয় হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কি খোলা নাকি বন্ধ সেটাই অনেকে বুঝে উঠতে পারছেন না।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে গত ১৬ জুলাই রাতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের নির্দেশনা দেয়। এরপর ১৭ জুলাই মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
পাঁচ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, “ছয় আগস্ট থেকে দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, স্কুল -কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে।”
ছয় আগস্ট সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খুলেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খুলেছে। যদিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল কম। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থীই ছিল না। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় হলে শিক্ষার্থীরা ফিরেছে। এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা বলছেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যত দ্রুত সম্ভব খুলে দিতে হবে।”
এসব ঘটনাপ্রবাহ মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। তারা জানতে চাইছেন যে, ছয় আগস্ট থেকে কি তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলেনি। আর যদি খুলে নাই থাকে তার কারণ কী? কবেইবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা বলছেন, “এখনো রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ নেই। শিক্ষার্থীরা রাস্তা ম্যানেজমেন্ট করছে। সেরকম প্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি না যে আমরা কালই খুলে দেব।”
আমরা জানতে চাইব, রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ না থাকার সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলার সম্পর্ক কী। রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ নেইইবা কেন। দেশের থানাগুলোতে পুলিশ ফিরতে শুরু করেছে কিন্তু রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ কেন নেই? তাদের ফেরার পরিবেশ কি এখনো তৈরি হয়নি?
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দায়িত্বই হচ্ছে, দেশে শৃঙ্খলা ফেরানো। সড়কও তার বাইরে নয়। আর শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে যার যে কাজ তাকে সেই কাজ করতে দিতে হবে। দেশে প্রতিটি কাজের জন্য সুনির্দীষ্ট বাহিনী বা প্রতিষ্ঠান আছে। তাদের পরিবর্তে অন্য কারও সেই কাজ করবার কোনো সুযোগ আইনত নেই।
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর কাজে অনেক সময় আইন প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে। বিধিবদ্ধ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ভিন্ন অন্য কেউ সেই আইন প্রয়োগ করতে পারে না। কাজেই যাদের সড়কে দায়িত্ব পালন করবার কথা তাদেরকেই সেই দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে। কেউ যদি আপৎকালে সেই দায়িত্ব পালন করে সেটাকে সাময়িকভাবে ভালো বলা যেতে পারে। তবে কারও পক্ষেই সেই দায়িত্ব অনির্দীষ্টকাল ধরে পালন করার সুযোগ নেই। দেশের আইন সেই সুযোগ কাউকেই দেয়নি।
দেশের কোনো একটি ক্ষেত্রে আইনের ব্যতয় ঘটিয়ে এটা আশা করা যায় না যে, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে ছিল। সাবেক সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করার পর তারা বারবার তা খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। যারা আন্দোলন করেছিলেন তারা এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রশ্নে কী অবস্থান নিয়েছেন সেটা জানা দরকার।
অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, “শিক্ষক সমাজের সাথে আলোচনা করা হবে। শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে এনে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।”
আমরা বলতে চাই, দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যেন নিজের কাজটি করতে পারে সেই ব্যবস্থা অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত করতে হবে।
পুলিশকে থানায় ফেরানো হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশকে রাস্তায় ফেরানো হোক। শিক্ষার্থীরা বইখাতা খুলুক।
রোববার, ১১ আগস্ট ২০২৪
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা ও পাঠদান নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্নের উদয় হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কি খোলা নাকি বন্ধ সেটাই অনেকে বুঝে উঠতে পারছেন না।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে গত ১৬ জুলাই রাতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের নির্দেশনা দেয়। এরপর ১৭ জুলাই মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
পাঁচ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, “ছয় আগস্ট থেকে দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, স্কুল -কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে।”
ছয় আগস্ট সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খুলেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খুলেছে। যদিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল কম। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থীই ছিল না। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় হলে শিক্ষার্থীরা ফিরেছে। এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা বলছেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যত দ্রুত সম্ভব খুলে দিতে হবে।”
এসব ঘটনাপ্রবাহ মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। তারা জানতে চাইছেন যে, ছয় আগস্ট থেকে কি তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলেনি। আর যদি খুলে নাই থাকে তার কারণ কী? কবেইবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা বলছেন, “এখনো রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ নেই। শিক্ষার্থীরা রাস্তা ম্যানেজমেন্ট করছে। সেরকম প্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি না যে আমরা কালই খুলে দেব।”
আমরা জানতে চাইব, রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ না থাকার সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলার সম্পর্ক কী। রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ নেইইবা কেন। দেশের থানাগুলোতে পুলিশ ফিরতে শুরু করেছে কিন্তু রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ কেন নেই? তাদের ফেরার পরিবেশ কি এখনো তৈরি হয়নি?
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দায়িত্বই হচ্ছে, দেশে শৃঙ্খলা ফেরানো। সড়কও তার বাইরে নয়। আর শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে যার যে কাজ তাকে সেই কাজ করতে দিতে হবে। দেশে প্রতিটি কাজের জন্য সুনির্দীষ্ট বাহিনী বা প্রতিষ্ঠান আছে। তাদের পরিবর্তে অন্য কারও সেই কাজ করবার কোনো সুযোগ আইনত নেই।
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর কাজে অনেক সময় আইন প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে। বিধিবদ্ধ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ভিন্ন অন্য কেউ সেই আইন প্রয়োগ করতে পারে না। কাজেই যাদের সড়কে দায়িত্ব পালন করবার কথা তাদেরকেই সেই দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে। কেউ যদি আপৎকালে সেই দায়িত্ব পালন করে সেটাকে সাময়িকভাবে ভালো বলা যেতে পারে। তবে কারও পক্ষেই সেই দায়িত্ব অনির্দীষ্টকাল ধরে পালন করার সুযোগ নেই। দেশের আইন সেই সুযোগ কাউকেই দেয়নি।
দেশের কোনো একটি ক্ষেত্রে আইনের ব্যতয় ঘটিয়ে এটা আশা করা যায় না যে, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে ছিল। সাবেক সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করার পর তারা বারবার তা খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। যারা আন্দোলন করেছিলেন তারা এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রশ্নে কী অবস্থান নিয়েছেন সেটা জানা দরকার।
অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, “শিক্ষক সমাজের সাথে আলোচনা করা হবে। শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে এনে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।”
আমরা বলতে চাই, দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যেন নিজের কাজটি করতে পারে সেই ব্যবস্থা অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত করতে হবে।
পুলিশকে থানায় ফেরানো হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশকে রাস্তায় ফেরানো হোক। শিক্ষার্থীরা বইখাতা খুলুক।