উচ্ছৃঙ্খল জনতার আইন নিজেদের হাতে তুলে নেয়ার (মব জাস্টিস) অপসংস্কৃতি দীর্ঘদিনের সমস্যা। অতীতেও জনসাধারণের সম্মিলিত ক্ষোভের শিকার হয়েছেন অনেক ব্যক্তি। গণপিটুনিতে অনেক সময় মারা যান নিরীহ মানুষ। অনেক মৃত্যুর ঘটনার পর জানা যায়, জনতার হাতে পিটুনি খেয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি কোনো অপরাধ করেননি। নিছক গুজব বা সন্দেহের বশবর্তী হয়ে উচ্ছৃঙ্খল জনতা নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করেছে।
উচ্ছৃঙ্খল জনতার নির্মম-নিষ্ঠুর আচরণ অনেক সময় দেশের মানুষকে ব্যাপক নাড়া দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ যুবককে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা দেশবাসীকে হতবাক করেছে। গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও। সেসব ঘটনাও মানুষের মর্মবেদনা সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেন মব জাস্টিস স্থান করে নিল সেই প্রশ্ন উঠেছে।
দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বেশ কতগুলো মব জাস্টিসের ঘটনা ঘটেছে। অনেক ক্ষেত্রে জনমনে জমে থাকা দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহির্প্রকাশ ঘটছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। আবার এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমেও শৈথিল্য দেখা যাচ্ছে। যে কারণে কারও কারও এমন ধারণা হচ্ছে যে, এই সময় আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কোনো জবাবদিহি করতে হবে না। আবার অনেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ভরসা করতে পারেন না। যে কারণে তারা নিজের হাতে আইন তুলে নিতে উৎসাহী হন।
অনেক সময় হয়তো প্রকৃত অপরাধীও মব জাস্টিসের শিকার হন। তবে প্রতিটি মানুষেরই আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার রয়েছে। একজন অপরাধীর বিচার হতে পারে শুধু বিধিবদ্ধ আদালতে। কোনো অবস্থাতেই কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। কাউকে কোনো কারণে অপরাধী আখ্যা দিয়ে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা চলে না। এটা এক ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যা, যা আইনের শাসনের ধারণার পরিপন্থি।
মব জাস্টিস রোধ করার জন্য আইন রয়েছে। সেখানে কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে। তবে মব জাস্টিসের কোনো ঘটনায় কারও শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। গণপিটুনিতে এক নারীকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা এক রিটের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে আদালত গণপিটুনি রোধে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল। নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে কিনা সেটা আমরা জানতে চাইব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনে সমস্যা নেই তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ঠিকঠাক কাজ করে না। তদন্ত প্রক্রিয়া অনেক সময় সঠিক পথে এগোয় না। আদালতে সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজিরে গাফিলতি রয়েছে। মব জাস্টিস রোধ করতে হলে এই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার পথ বের করতে হবে। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় করতে হবে।
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
উচ্ছৃঙ্খল জনতার আইন নিজেদের হাতে তুলে নেয়ার (মব জাস্টিস) অপসংস্কৃতি দীর্ঘদিনের সমস্যা। অতীতেও জনসাধারণের সম্মিলিত ক্ষোভের শিকার হয়েছেন অনেক ব্যক্তি। গণপিটুনিতে অনেক সময় মারা যান নিরীহ মানুষ। অনেক মৃত্যুর ঘটনার পর জানা যায়, জনতার হাতে পিটুনি খেয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি কোনো অপরাধ করেননি। নিছক গুজব বা সন্দেহের বশবর্তী হয়ে উচ্ছৃঙ্খল জনতা নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করেছে।
উচ্ছৃঙ্খল জনতার নির্মম-নিষ্ঠুর আচরণ অনেক সময় দেশের মানুষকে ব্যাপক নাড়া দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ যুবককে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা দেশবাসীকে হতবাক করেছে। গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও। সেসব ঘটনাও মানুষের মর্মবেদনা সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেন মব জাস্টিস স্থান করে নিল সেই প্রশ্ন উঠেছে।
দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বেশ কতগুলো মব জাস্টিসের ঘটনা ঘটেছে। অনেক ক্ষেত্রে জনমনে জমে থাকা দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহির্প্রকাশ ঘটছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। আবার এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমেও শৈথিল্য দেখা যাচ্ছে। যে কারণে কারও কারও এমন ধারণা হচ্ছে যে, এই সময় আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কোনো জবাবদিহি করতে হবে না। আবার অনেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ভরসা করতে পারেন না। যে কারণে তারা নিজের হাতে আইন তুলে নিতে উৎসাহী হন।
অনেক সময় হয়তো প্রকৃত অপরাধীও মব জাস্টিসের শিকার হন। তবে প্রতিটি মানুষেরই আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার রয়েছে। একজন অপরাধীর বিচার হতে পারে শুধু বিধিবদ্ধ আদালতে। কোনো অবস্থাতেই কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। কাউকে কোনো কারণে অপরাধী আখ্যা দিয়ে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা চলে না। এটা এক ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যা, যা আইনের শাসনের ধারণার পরিপন্থি।
মব জাস্টিস রোধ করার জন্য আইন রয়েছে। সেখানে কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে। তবে মব জাস্টিসের কোনো ঘটনায় কারও শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। গণপিটুনিতে এক নারীকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা এক রিটের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে আদালত গণপিটুনি রোধে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল। নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে কিনা সেটা আমরা জানতে চাইব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনে সমস্যা নেই তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ঠিকঠাক কাজ করে না। তদন্ত প্রক্রিয়া অনেক সময় সঠিক পথে এগোয় না। আদালতে সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজিরে গাফিলতি রয়েছে। মব জাস্টিস রোধ করতে হলে এই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার পথ বের করতে হবে। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় করতে হবে।