দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসনে রদবদল হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) নবনিযুক্ত উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন দায়িত্বে যোগদান করেন। খবর এটা নয়। খবর হচ্ছে, নবনিযুক্ত শিক্ষকদ্বয়কে শপথ পড়িয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
শপথ পড়ানোর এই ঘটনায় দেশে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। তবে শাবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের সই করা একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এটি কোনো শপথ অনুষ্ঠান ছিল না। ঘটনাটি যেভাবে আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছে প্রকৃতপক্ষে এমনটি হয়নি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে, নবনিযুক্ত উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ যোগদান করার পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা দেখা করতে যান। শিক্ষার্থীদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ পরিবেশটি হয়ে পড়ে শোকাবহ। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় হতাশা, দেশের চলমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তাদের উচ্চাশা ও নতুন প্রশাসন আসায় অতিমাত্রায় আবেগে আপ্লুত হয়ে জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ করে শাবি তথা দেশের জন্য কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ বাক্যগুলো সবার মুখে উচ্চারিত হয়েছে।
তবে শাবিপ্রবির সেই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নবনিযুক্ত উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে শপথবাক্য পাঠ করাচ্ছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক ও শাবিপ্রবির ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী পলাশ বখতিয়ার গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘স্যারদের সম্মতি নিয়ে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়েছে, স্যারদের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি ছিল না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা কীভাবে শিক্ষকদের শপথ পড়ায়, এই এখতিয়ার তারা কোথায় পেল সেটা আমরা জানতে চাইব। শিক্ষার্থীদের কাছে যদি শপথ নিতে হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাজ করবে কীভাবে সেই প্রশ্ন উঠেছে। অতীতে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের কথায় চলেছে। অন্তর্বর্তী সরকার আমলেও কি একই চিত্র দেখা যাবে?
কোনো ছাত্রসংগঠনের প্রভাবমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গড়ে তোলার জন্য আন্দোলন করা হয়েছিল। প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কি প্রভাবমুক্ত হতে পেরেছে নাকি এবার তাদেরকে আন্দোলনকারী সংগঠনের কথা মেনে চলতে হবে। প্রশাসন যদি নতজানু হয় তাহলে তারা বিশেষ কোনো শিক্ষার্থী গোষ্ঠীর অন্যায়-অপরাধের প্রতিকার করবে কীভাবে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে কীভাবে?
একদল শিক্ষার্থী এসে শপথবাক্য পাঠ করতে বলল আর অমনি শিক্ষকদ্বয় সেটাকে শিরোধার্যদ করলেন কী করে সেটা ভেবে আমরা বিস্মিত হই। এ ধরনের আজ্ঞাবাহী শিক্ষক দিয়ে আর যা-ই হোক প্রশাসন চালানো সম্ভব নয়। এই দুই শিক্ষকের উচিত অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করা।
আর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে ছড়ি ঘোরাতেই চায় তাহলে তাদেরকেই সেখানে নিয়োগের ব্যবস্থা করা হোক! তখন অন্তত তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃত্ববহির্ভূত আচরণের অভিযোগ উঠবে না।
সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসনে রদবদল হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) নবনিযুক্ত উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন দায়িত্বে যোগদান করেন। খবর এটা নয়। খবর হচ্ছে, নবনিযুক্ত শিক্ষকদ্বয়কে শপথ পড়িয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
শপথ পড়ানোর এই ঘটনায় দেশে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। তবে শাবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের সই করা একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এটি কোনো শপথ অনুষ্ঠান ছিল না। ঘটনাটি যেভাবে আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছে প্রকৃতপক্ষে এমনটি হয়নি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে, নবনিযুক্ত উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ যোগদান করার পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা দেখা করতে যান। শিক্ষার্থীদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ পরিবেশটি হয়ে পড়ে শোকাবহ। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় হতাশা, দেশের চলমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তাদের উচ্চাশা ও নতুন প্রশাসন আসায় অতিমাত্রায় আবেগে আপ্লুত হয়ে জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ করে শাবি তথা দেশের জন্য কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ বাক্যগুলো সবার মুখে উচ্চারিত হয়েছে।
তবে শাবিপ্রবির সেই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নবনিযুক্ত উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে শপথবাক্য পাঠ করাচ্ছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক ও শাবিপ্রবির ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী পলাশ বখতিয়ার গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘স্যারদের সম্মতি নিয়ে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়েছে, স্যারদের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি ছিল না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা কীভাবে শিক্ষকদের শপথ পড়ায়, এই এখতিয়ার তারা কোথায় পেল সেটা আমরা জানতে চাইব। শিক্ষার্থীদের কাছে যদি শপথ নিতে হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাজ করবে কীভাবে সেই প্রশ্ন উঠেছে। অতীতে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের কথায় চলেছে। অন্তর্বর্তী সরকার আমলেও কি একই চিত্র দেখা যাবে?
কোনো ছাত্রসংগঠনের প্রভাবমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গড়ে তোলার জন্য আন্দোলন করা হয়েছিল। প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কি প্রভাবমুক্ত হতে পেরেছে নাকি এবার তাদেরকে আন্দোলনকারী সংগঠনের কথা মেনে চলতে হবে। প্রশাসন যদি নতজানু হয় তাহলে তারা বিশেষ কোনো শিক্ষার্থী গোষ্ঠীর অন্যায়-অপরাধের প্রতিকার করবে কীভাবে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে কীভাবে?
একদল শিক্ষার্থী এসে শপথবাক্য পাঠ করতে বলল আর অমনি শিক্ষকদ্বয় সেটাকে শিরোধার্যদ করলেন কী করে সেটা ভেবে আমরা বিস্মিত হই। এ ধরনের আজ্ঞাবাহী শিক্ষক দিয়ে আর যা-ই হোক প্রশাসন চালানো সম্ভব নয়। এই দুই শিক্ষকের উচিত অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করা।
আর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে ছড়ি ঘোরাতেই চায় তাহলে তাদেরকেই সেখানে নিয়োগের ব্যবস্থা করা হোক! তখন অন্তত তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃত্ববহির্ভূত আচরণের অভিযোগ উঠবে না।