alt

সম্পাদকীয়

দারিদ্র্যের উদ্বেগজনক চিত্র

: রোববার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগজক চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৪ কোটি ১৭ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যে বাস করছে। যদিও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে দারিদ্র্যের হার কিছুটা কম। ইউএনডিপির বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক আমাদের দেখাচ্ছে, দারিদ্র্যের পরিমাপ শুধু আয়ের ভিত্তিতে করা যথেষ্ট নয়। এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি এবং জীবনযাত্রার মানের মতো বিষয়ের ওপরও নির্ভরশীল।

প্রতিবেদনটি দেখিয়েছে যে, বাংলাদেশের দারিদ্র্যের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে মানুষের জীবনযাত্রার মানের নিম্নগতি। ৪৫ দশমিক ১ শতাংশ ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার মান দারিদ্র্যের কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এর পরেই শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার ঘাটতি রয়েছে। এটি থেকে স্পষ্ট যে, শুধু আর্থিক অগ্রগতি নয়, বরং মানবিক উন্নয়ন এবং মৌলিক সুযোগ-সুবিধার অভাব আমাদের দেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

বাংলাদেশের দারিদ্র্যের এই চিত্র বিশ্বজনীন দারিদ্র্য পরিস্থিতির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। বিশ্বের মোট দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ৮৩ শতাংশই আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বাস করেন। এমনকি ভারতেও দারিদ্র্য চরম পর্যায়ে রয়েছে। এতে বোঝা যায় যে, দারিদ্র্যের সমস্যা শুধু বাংলাদেশের একক সমস্যা নয়, বরং এটি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে একটি বৃহত্তর মানবিক সংকট।

গবেষকরা বলছেন, সংঘাত এবং দারিদ্র্য পরস্পরের সঙ্গে জড়িত। ৪৫ কোটি ৫০ লাখ মানুষ, যারা সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে বসবাস করছেন, চরম দারিদ্র্যের শিকার। বাংলাদেশে তুলনামূলকভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও আর্থিক সংকট এবং দুর্বল অবকাঠামো দারিদ্র্যের বিস্তারকে সীমিত করতে পারেনি।

দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে হলে সরকারকে বহুমাত্রিক উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে হবে। শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নয়, বরং শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করার লক্ষ্যে কার্যকর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দারিদ্র্যের ফাঁদ থেকে বের করে আনতে হলে শিশুদের পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।

দারিদ্র্য নিরসনের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিনিয়োগ অপরিহার্য। ইউএনডিপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘাতমুক্ত দেশগুলোয় দারিদ্র্য বিমোচনের হার তুলনামূলকভাবে বেশি। বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ হলেও, অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট আমাদের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। দারিদ্র্য থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, যথাযথ বিনিয়োগ এবং সমাজের সর্বস্তরে সমন্বিত উদ্যোগ। সরকার, বেসরকারি সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমেই দারিদ্র্যের এই অচলায়তন ভাঙা সম্ভব বলে আমরা বিশ্বাস করতে চাই।

সংরক্ষিত বনভূমিতে অবৈধ বালু উত্তোলন

মতপ্রকাশের কারণে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি!

আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ পানির প্রকল্প : একটি ভালো উদ্যোগ

মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা : জেলেদের খাদ্য সহায়তার ঘাটতি ও সমাধানের পথ

চড়া বাজারের চাপে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস

স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন জনবল সংকট দূর করুন

উন্নয়ন করতে হবে পরিবেশ রক্ষা করে

নদীর পাড় দখল : পরিবেশ এবং সমাজের জন্য এক মারাত্মক হুমকি

বিচার বিভাগের ওপর চাপ প্রয়োগ করা কাম্য নয়

অবৈধ ইটভাটা : আইনের অমান্যতা ও প্রশাসনের নীরবতা

ভবদহের জলাবদ্ধতা ও আত্মঘাতী প্রকল্পের বিপর্যয়

চায়না দুয়ারী জাল : জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি

চাল সংরক্ষণের সাইলো : অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

ইরামতি খাল ও রক্তদহ বিলের জলাবদ্ধতা : কৃষকদের দুর্দশার শেষ কোথায়?

মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা : টেকসই মৎস্যসম্পদ রক্ষার চ্যালেঞ্জ ও বাস্তবতা

জলাবদ্ধতার প্রভাব ও শিক্ষার ধারাবাহিকতা রক্ষা : জরুরি সমাধান প্রয়োজন

ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ও প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা

ডিএনডি এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে টেকসই পদক্ষেপ নিন

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি : সমাধান কোন পথে

উত্তরা মেইল ট্রেন পুনরায় চালু করুন

হাটবাজারে অবৈধ দখলের অবসান চাই

পশু জবাইয়ে অবকাঠামোর অভাব ও তদারকির ঘাটতি : স্বাস্থ্যঝুঁকিতে মানুষ

খাল রক্ষার সংকট : সমন্বয়হীনতা ও দায়িত্বহীনতা

টাঙ্গাইল পৌরসভার জলাবদ্ধতার সমাধান করুন

সুন্দরবনে বেড়েছে বাঘের সংখ্যা, এ সাফল্য ধরে রাখতে হবে

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ : ক্রমবর্ধমান হুমকি

বন্যার্তদের ত্রাণ সহায়তা বাড়ান

চশমা পরা ও মুখপোড়া হনুমান রক্ষায় উদ্যোগ চাই

উন্মুক্ত স্থানে মলমূত্র ত্যাগ বন্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ান

নির্বাচনের সময়সীমা স্পষ্ট করা দরকার

শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ দিন

দ্রব্যমূল্যে স্বস্তি নেই

মৌসুমি জলাবদ্ধতা থেকে ছৈয়ালবাড়ী ও মানিক্যপাড়ার বাসিন্দাদের মুক্তি দিন

হাতি যাবে কোথায়, খাবে কী?

হাওরে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করুন

tab

সম্পাদকীয়

দারিদ্র্যের উদ্বেগজনক চিত্র

রোববার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগজক চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৪ কোটি ১৭ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যে বাস করছে। যদিও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে দারিদ্র্যের হার কিছুটা কম। ইউএনডিপির বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক আমাদের দেখাচ্ছে, দারিদ্র্যের পরিমাপ শুধু আয়ের ভিত্তিতে করা যথেষ্ট নয়। এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি এবং জীবনযাত্রার মানের মতো বিষয়ের ওপরও নির্ভরশীল।

প্রতিবেদনটি দেখিয়েছে যে, বাংলাদেশের দারিদ্র্যের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে মানুষের জীবনযাত্রার মানের নিম্নগতি। ৪৫ দশমিক ১ শতাংশ ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার মান দারিদ্র্যের কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এর পরেই শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার ঘাটতি রয়েছে। এটি থেকে স্পষ্ট যে, শুধু আর্থিক অগ্রগতি নয়, বরং মানবিক উন্নয়ন এবং মৌলিক সুযোগ-সুবিধার অভাব আমাদের দেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

বাংলাদেশের দারিদ্র্যের এই চিত্র বিশ্বজনীন দারিদ্র্য পরিস্থিতির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। বিশ্বের মোট দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ৮৩ শতাংশই আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বাস করেন। এমনকি ভারতেও দারিদ্র্য চরম পর্যায়ে রয়েছে। এতে বোঝা যায় যে, দারিদ্র্যের সমস্যা শুধু বাংলাদেশের একক সমস্যা নয়, বরং এটি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে একটি বৃহত্তর মানবিক সংকট।

গবেষকরা বলছেন, সংঘাত এবং দারিদ্র্য পরস্পরের সঙ্গে জড়িত। ৪৫ কোটি ৫০ লাখ মানুষ, যারা সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে বসবাস করছেন, চরম দারিদ্র্যের শিকার। বাংলাদেশে তুলনামূলকভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও আর্থিক সংকট এবং দুর্বল অবকাঠামো দারিদ্র্যের বিস্তারকে সীমিত করতে পারেনি।

দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে হলে সরকারকে বহুমাত্রিক উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে হবে। শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নয়, বরং শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করার লক্ষ্যে কার্যকর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দারিদ্র্যের ফাঁদ থেকে বের করে আনতে হলে শিশুদের পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।

দারিদ্র্য নিরসনের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিনিয়োগ অপরিহার্য। ইউএনডিপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘাতমুক্ত দেশগুলোয় দারিদ্র্য বিমোচনের হার তুলনামূলকভাবে বেশি। বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ হলেও, অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট আমাদের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। দারিদ্র্য থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, যথাযথ বিনিয়োগ এবং সমাজের সর্বস্তরে সমন্বিত উদ্যোগ। সরকার, বেসরকারি সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমেই দারিদ্র্যের এই অচলায়তন ভাঙা সম্ভব বলে আমরা বিশ্বাস করতে চাই।

back to top