alt

সম্পাদকীয়

ভৈরব নদী বিপর্যয়ের দায় কার

: সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

যশোরের ভৈরব নদী যেন আজ বিপর্যয়ের আরেক নাম। যে নদী এক সময় এ অঞ্চলের জনজীবনের প্রাণ ছিল, তা এখন স্থানীয়দের অস্তিত্ব সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভয়াবহ নদী ভাঙনের ফলে অন্তত ৮০টি পরিবারের বাড়িঘর ও সহায়-সম্পত্তি নদীতে বিলীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় আট কোটি টাকার সম্পদ। এর পেছনে যে দুটি মূল কারণ রয়েছে তা হলোÑপানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অপরিণামদর্শী কর্মকা- এবং প্রভাবশালী বালুখেকোদের সীমাহীন লোভ। এই সংকট শুধু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য নয়, বরং এটি একটি বড় সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ভৈরব নদীতে ড্রেজিং কার্যক্রম চলাকালে প্রভাবশালী মহলের লাগামহীন বালু উত্তোলনের কারণে নদীর তীরভূমি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে। স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং প্রভাবশালী বালুখেকোদের নেতৃত্বে বছরের পর বছর এই অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন চলেছে। ফলে নদীর তলদেশে অসংখ্য গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে, যা ধসের মূল কারণ।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভাঙন শুরু হওয়ার পরও পাউবো সময়মতো তীর রক্ষার ব্যবস্থা নেয়নি। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী বারবার তাদের কাছে গেলেও তারা কার্যত হাত গুটিয়ে বসে থেকেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের বালু উত্তোলন নদীর স্বাভাবিক গঠন এবং আশপাশের মাটির স্থিতিশীলতা নষ্ট করে। ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পায়। ভবিষ্যতে এই এলাকায় যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ কষ্টসাধ্য হবে এবং এর স্থায়িত্ব নিয়েও সন্দেহ থাকবে।

ভৈরব নদীর এই বিপর্যয় প্রমাণ করে অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্প এবং প্রভাবশালীদের অনৈতিক কর্মকা- কিভাবে সমাজ ও পরিবেশের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর হতে হবে। বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকা-ের ব্যাপারে তদন্ত চালিয়ে দায়িত্বহীনতার প্রমাণ পেলে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন এবং আর্থিক সহায়তা দেয়া যায় কিনা সেটা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করা হবে বলে আমরা আশা করতে চাই।

ভৈরব নদীর ঘটনা আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। সময় এসেছে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে ভাবার এবং প্রকৃতির সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার। নইলে এই ধরনের বিপর্যয় আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনবে।

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ নারী দল : অভিনন্দন

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

উপজেলা স্বাস্থ্যসেবায় সংকট

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

tab

সম্পাদকীয়

ভৈরব নদী বিপর্যয়ের দায় কার

সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

যশোরের ভৈরব নদী যেন আজ বিপর্যয়ের আরেক নাম। যে নদী এক সময় এ অঞ্চলের জনজীবনের প্রাণ ছিল, তা এখন স্থানীয়দের অস্তিত্ব সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভয়াবহ নদী ভাঙনের ফলে অন্তত ৮০টি পরিবারের বাড়িঘর ও সহায়-সম্পত্তি নদীতে বিলীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় আট কোটি টাকার সম্পদ। এর পেছনে যে দুটি মূল কারণ রয়েছে তা হলোÑপানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অপরিণামদর্শী কর্মকা- এবং প্রভাবশালী বালুখেকোদের সীমাহীন লোভ। এই সংকট শুধু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য নয়, বরং এটি একটি বড় সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ভৈরব নদীতে ড্রেজিং কার্যক্রম চলাকালে প্রভাবশালী মহলের লাগামহীন বালু উত্তোলনের কারণে নদীর তীরভূমি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে। স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং প্রভাবশালী বালুখেকোদের নেতৃত্বে বছরের পর বছর এই অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন চলেছে। ফলে নদীর তলদেশে অসংখ্য গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে, যা ধসের মূল কারণ।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভাঙন শুরু হওয়ার পরও পাউবো সময়মতো তীর রক্ষার ব্যবস্থা নেয়নি। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী বারবার তাদের কাছে গেলেও তারা কার্যত হাত গুটিয়ে বসে থেকেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের বালু উত্তোলন নদীর স্বাভাবিক গঠন এবং আশপাশের মাটির স্থিতিশীলতা নষ্ট করে। ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পায়। ভবিষ্যতে এই এলাকায় যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ কষ্টসাধ্য হবে এবং এর স্থায়িত্ব নিয়েও সন্দেহ থাকবে।

ভৈরব নদীর এই বিপর্যয় প্রমাণ করে অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্প এবং প্রভাবশালীদের অনৈতিক কর্মকা- কিভাবে সমাজ ও পরিবেশের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর হতে হবে। বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকা-ের ব্যাপারে তদন্ত চালিয়ে দায়িত্বহীনতার প্রমাণ পেলে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন এবং আর্থিক সহায়তা দেয়া যায় কিনা সেটা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করা হবে বলে আমরা আশা করতে চাই।

ভৈরব নদীর ঘটনা আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। সময় এসেছে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে ভাবার এবং প্রকৃতির সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার। নইলে এই ধরনের বিপর্যয় আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনবে।

back to top