alt

সম্পাদকীয়

মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা : জেলেদের খাদ্য সহায়তার ঘাটতি ও সমাধানের পথ

: সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

মা ইলিশ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রতি বছর মেঘনাসহ বিভিন্ন নদীতে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ইলিশ সংরক্ষণে জেলেদের ওপর আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিভিন্ন সময় উঠেছে নানা প্রশ্ন, যার মধ্যে একটি প্রধান অভিযোগ হলোÑ জেলেরা পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা পান না। সম্প্রতি চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মেঘনা নদীতে মা ইলিশ রক্ষার অভিযানে হামলার ঘটনাটি এই সমস্যার আরও গভীর বাস্তবতা তুলে ধরেছে।

সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি জেলেকে নিষেধাজ্ঞার সময়ে ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হয়। অনেক জেলে অভিযোগ করেন, এই সহায়তা যথেষ্ট নয়। অনেক ক্ষেত্রে সহায়তা সময়মতো পৌঁছায় না, আবার কখনোবা সহায়তা প্রাপ্তির প্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় অনেক জেলে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। এর ফলে জেলেরা বাধ্য হয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরার ঝুঁকিপূর্ণ পথ বেছে নেন।

জেলেরা সাধারণত মৌসুমি শ্রমিক। তাদের মূল আয় ইলিশ ধরার ওপর নির্ভর করে। নিষেধাজ্ঞার সময় তারা যখন নদীতে নামতে পারেন না, তখন তাদের পরিবারে খাদ্য সংকট দেখা দেয়। ২৫ কেজি চাল একটি পরিবারকে কেবল কিছুদিনের জন্য টিকিয়ে রাখতে পারে, কিন্তু এই সহায়তা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয়। অনেক জেলেই এ সময়ের মধ্যে বিকল্প কোনো আয়ের উৎস খুঁজে পান না। ফলে তারা ক্ষুধা আর অর্থনৈতিক চাপের কারণে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মা ইলিশ ধরার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজের দিকে পা বাড়ান।

ইলিশ সংরক্ষণের জন্য যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়, তা শুধু পরিবেশ রক্ষা বা মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির জন্য নয়, বরং এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক বিনিয়োগ। এই সংরক্ষণ প্রক্রিয়া সফল হলে দেশের ইলিশ উৎপাদন বাড়বে, যা স্থানীয় ও বৈশ্বিক বাজারে দেশের অবস্থানকে আরও মজবুত করবে। তবে এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে জেলেদের সহযোগিতা প্রয়োজন। তাদের খাদ্য সহায়তা যদি যথাযথভাবে না দেয়া হয়, তাহলে তারা জীবিকার জন্য আইন ভঙ্গ করতে বাধ্য হবে।

সরকারের উচিত জেলেদের খাদ্য সহায়তা বিষয়ে আরও গভীর মনোযোগ দেয়া এবং সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও যথাযথতা নিশ্চিত করা।

মা ইলিশ সংরক্ষণের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় উদ্যোগ তখনই সফল হবে, যখন এই প্রক্রিয়ায় জড়িত সবার প্রয়োজন ও বাস্তবতা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। জেলেদের সহযোগিতা ছাড়া এই উদ্যোগ সফল করা সম্ভব নয়। সুতরাং জেলেদের যথাযথ খাদ্য সহায়তা প্রদান, তাদের জন্য বিকল্প আয়ের উৎস সৃষ্টি এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করে মা ইলিশ সংরক্ষণ প্রকল্পের সাফল্য নিশ্চিত করতে হবে।

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

tab

সম্পাদকীয়

মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা : জেলেদের খাদ্য সহায়তার ঘাটতি ও সমাধানের পথ

সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

মা ইলিশ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রতি বছর মেঘনাসহ বিভিন্ন নদীতে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ইলিশ সংরক্ষণে জেলেদের ওপর আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিভিন্ন সময় উঠেছে নানা প্রশ্ন, যার মধ্যে একটি প্রধান অভিযোগ হলোÑ জেলেরা পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা পান না। সম্প্রতি চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মেঘনা নদীতে মা ইলিশ রক্ষার অভিযানে হামলার ঘটনাটি এই সমস্যার আরও গভীর বাস্তবতা তুলে ধরেছে।

সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি জেলেকে নিষেধাজ্ঞার সময়ে ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হয়। অনেক জেলে অভিযোগ করেন, এই সহায়তা যথেষ্ট নয়। অনেক ক্ষেত্রে সহায়তা সময়মতো পৌঁছায় না, আবার কখনোবা সহায়তা প্রাপ্তির প্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় অনেক জেলে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। এর ফলে জেলেরা বাধ্য হয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরার ঝুঁকিপূর্ণ পথ বেছে নেন।

জেলেরা সাধারণত মৌসুমি শ্রমিক। তাদের মূল আয় ইলিশ ধরার ওপর নির্ভর করে। নিষেধাজ্ঞার সময় তারা যখন নদীতে নামতে পারেন না, তখন তাদের পরিবারে খাদ্য সংকট দেখা দেয়। ২৫ কেজি চাল একটি পরিবারকে কেবল কিছুদিনের জন্য টিকিয়ে রাখতে পারে, কিন্তু এই সহায়তা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয়। অনেক জেলেই এ সময়ের মধ্যে বিকল্প কোনো আয়ের উৎস খুঁজে পান না। ফলে তারা ক্ষুধা আর অর্থনৈতিক চাপের কারণে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মা ইলিশ ধরার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজের দিকে পা বাড়ান।

ইলিশ সংরক্ষণের জন্য যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়, তা শুধু পরিবেশ রক্ষা বা মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির জন্য নয়, বরং এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক বিনিয়োগ। এই সংরক্ষণ প্রক্রিয়া সফল হলে দেশের ইলিশ উৎপাদন বাড়বে, যা স্থানীয় ও বৈশ্বিক বাজারে দেশের অবস্থানকে আরও মজবুত করবে। তবে এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে জেলেদের সহযোগিতা প্রয়োজন। তাদের খাদ্য সহায়তা যদি যথাযথভাবে না দেয়া হয়, তাহলে তারা জীবিকার জন্য আইন ভঙ্গ করতে বাধ্য হবে।

সরকারের উচিত জেলেদের খাদ্য সহায়তা বিষয়ে আরও গভীর মনোযোগ দেয়া এবং সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও যথাযথতা নিশ্চিত করা।

মা ইলিশ সংরক্ষণের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় উদ্যোগ তখনই সফল হবে, যখন এই প্রক্রিয়ায় জড়িত সবার প্রয়োজন ও বাস্তবতা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। জেলেদের সহযোগিতা ছাড়া এই উদ্যোগ সফল করা সম্ভব নয়। সুতরাং জেলেদের যথাযথ খাদ্য সহায়তা প্রদান, তাদের জন্য বিকল্প আয়ের উৎস সৃষ্টি এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করে মা ইলিশ সংরক্ষণ প্রকল্পের সাফল্য নিশ্চিত করতে হবে।

back to top