alt

সম্পাদকীয়

চট্টগ্রামে খাবার পানির নমুনায় টাইফয়েডের জীবাণু : জনস্বাস্থ্যের জন্য অশুভ বার্তা

: সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় খাবার পানির নমুনায় টাইফয়েডের জীবাণুর উপস্থিতি দেখা গেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদলের পরিচালিত গবেষণায় ১৫০টি নমুনার মধ্যে ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশে এই জীবাণু শনাক্ত হয়েছে, যার ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট। এই তথ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, টাইফয়েড জীবাণুর বেশিরভাগই তিনটি প্রধান এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জিন ধারণ করে। যদিও কো-ট্রাইমক্সাজল এবং সিপ্রোফ্লক্সাসিন কিছু ক্ষেত্রে কার্যকর, কিন্তু এই জীবাণুর প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমাগত বাড়ছে। এর অর্থ হলো, প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো অচিরেই অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে। নতুন ওষুধ উদ্ভাবন করতে সময় ও অর্থের প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট জীবাণু দ্রুত বিস্তার লাভ করলে সাধারণ পানিবাহিত রোগ মহামারিতে রূপ নিতে পারে। টাইফয়েড আক্রান্ত শিশুরা মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতায় পড়তে পারে, এমনকি এতে মৃত্যুর ঝুঁকিও রয়েছে।

দেশে পানিবাহিত রোগের ইতিহাস দীর্ঘ। কিন্তু এখন মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট জীবাণুর আবির্ভাব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। শহরাঞ্চলের পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে অবহেলা ও অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণের ফলে এ ধরনের দূষণ বাড়ছে। খাবার পানির সঠিক মান বজায় রাখতে প্রাতিষ্ঠানিক তদারকি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

পানিতে টাইফয়েড জীবাণুর উপস্থিতি যে সংকট তৈরি করেছে সেটা মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে পানির গুণগতমান নিশ্চিত করা দরকার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পানির মান পরীক্ষা ও জীবাণুনাশক পদ্ধতির সঠিক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। পানি দূষণের মূল কারণগুলো নির্মূল করার জন্য সুষ্ঠু স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

চট্টগ্রামের এই গবেষণার ফলাফল শুধু একটি শহরের সমস্যা- এমনটা ভাবার কারণ নেই। দেশের অন্যত্র এই সমস্যা রয়েছে কিনা সেটা গবেষণা করে দেখা জরুরি। পাশাপাশি মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট জীবাণুর বিস্তার ঠেকাতে গবেষণার সুযোগ বাড়ানো ও নতুন এন্টিবায়োটিক উদ্ভাবনে জোর দিতে হবে। পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

নাগরিকদের নিরাপদ পানি ব্যবহারের বিষয়ে সচেতন করা জরুরি। এজন্য প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে।

খাবার পানির দূষণ রোধে এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাই জনস্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর নীতি প্রণয়ন, এর যথাযথ বাস্তবায়ন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব।

বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট : কারণ কী

মোরেলগঞ্জে ওয়াশব্লক নির্মাণে বিলম্ব কেন

খাল রক্ষায় দৃঢ় অঙ্গীকার থাকতে হবে

দামুড়হুদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল ঘাটতি দূর করুন

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই পাথর উত্তোলন : পরিবেশের সর্বনাশ

ট্রান্সফরমার চুরি রোধে ব্যবস্থা নিন

এলপি গ্যাসের মূল্য নিয়ে নৈরাজ্য : সমাধান কোথায়?

পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম ও কিছু চ্যালেঞ্জ

পাহাড়ে বৈষম্য দূর করতে শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন দরকার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায় তাহলে কার?

এইডস : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়

ডেঙ্গুতে নভেম্বরে রেকর্ড মৃত্যু : সতর্কতার সময় এখনই

রাজধানীতে ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণহানি : দায় কার

সয়াবিন তেল সংকট : কারসাজি অভিযোগের সুরাহা করুন

শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য

সাত কলেজের চতুর্থ বর্ষে ফাইনাল পরীক্ষায় সময় বিভ্রাট

রেলওয়ের জমির অপব্যবহার কাম্য নয়

গ্রাহক সেবায় কেন পিছিয়ে তিতাস গ্যাস

মহাসড়কে ময়লার ভাগাড় : পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের সংকট

নারীর প্রতি সহিংসতার শেষ কোথায়

জনস্বাস্থ্যের প্রতি উদাসীনতা : চিকিৎসা যন্ত্রপাতির অপব্যবহার

অবৈধ রেলক্রসিং : মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে জরুরি ব্যবস্থা

রক্তদহ বিল : পরিবেশ বিপর্যয়ের করুণ চিত্র

পোশাক শিল্পে নারী শ্রমিকের অংশগ্রহণ কমছে কেন, প্রতিকার কী

পিপিআর নির্মূল ও ক্ষুরা রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

বাকু জলবায়ু সম্মেলন ও উন্নয়নশীল দেশের অধিকার

সেতুটি সংস্কার করুন

কুকুরের কামড় : ভ্যাকসিনের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করুন

লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসি : জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি

পরিযায়ী পাখি রক্ষা করতে হবে

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে উপকূল

সেতুগুলো চলাচল উপযোগী করুন

ব্যাটারিচালিত রিকশা : সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে

বীজ আলুর বাড়তি দামে কৃষকের হতাশা

টেকসই স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক সংকট দূর করা জরুরি

সাময়িকী কবিতা

tab

সম্পাদকীয়

চট্টগ্রামে খাবার পানির নমুনায় টাইফয়েডের জীবাণু : জনস্বাস্থ্যের জন্য অশুভ বার্তা

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় খাবার পানির নমুনায় টাইফয়েডের জীবাণুর উপস্থিতি দেখা গেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদলের পরিচালিত গবেষণায় ১৫০টি নমুনার মধ্যে ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশে এই জীবাণু শনাক্ত হয়েছে, যার ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট। এই তথ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, টাইফয়েড জীবাণুর বেশিরভাগই তিনটি প্রধান এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জিন ধারণ করে। যদিও কো-ট্রাইমক্সাজল এবং সিপ্রোফ্লক্সাসিন কিছু ক্ষেত্রে কার্যকর, কিন্তু এই জীবাণুর প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমাগত বাড়ছে। এর অর্থ হলো, প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো অচিরেই অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে। নতুন ওষুধ উদ্ভাবন করতে সময় ও অর্থের প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট জীবাণু দ্রুত বিস্তার লাভ করলে সাধারণ পানিবাহিত রোগ মহামারিতে রূপ নিতে পারে। টাইফয়েড আক্রান্ত শিশুরা মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতায় পড়তে পারে, এমনকি এতে মৃত্যুর ঝুঁকিও রয়েছে।

দেশে পানিবাহিত রোগের ইতিহাস দীর্ঘ। কিন্তু এখন মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট জীবাণুর আবির্ভাব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। শহরাঞ্চলের পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে অবহেলা ও অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণের ফলে এ ধরনের দূষণ বাড়ছে। খাবার পানির সঠিক মান বজায় রাখতে প্রাতিষ্ঠানিক তদারকি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

পানিতে টাইফয়েড জীবাণুর উপস্থিতি যে সংকট তৈরি করেছে সেটা মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে পানির গুণগতমান নিশ্চিত করা দরকার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পানির মান পরীক্ষা ও জীবাণুনাশক পদ্ধতির সঠিক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। পানি দূষণের মূল কারণগুলো নির্মূল করার জন্য সুষ্ঠু স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

চট্টগ্রামের এই গবেষণার ফলাফল শুধু একটি শহরের সমস্যা- এমনটা ভাবার কারণ নেই। দেশের অন্যত্র এই সমস্যা রয়েছে কিনা সেটা গবেষণা করে দেখা জরুরি। পাশাপাশি মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট জীবাণুর বিস্তার ঠেকাতে গবেষণার সুযোগ বাড়ানো ও নতুন এন্টিবায়োটিক উদ্ভাবনে জোর দিতে হবে। পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

নাগরিকদের নিরাপদ পানি ব্যবহারের বিষয়ে সচেতন করা জরুরি। এজন্য প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে।

খাবার পানির দূষণ রোধে এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাই জনস্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর নীতি প্রণয়ন, এর যথাযথ বাস্তবায়ন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব।

back to top