alt

সম্পাদকীয়

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই পাথর উত্তোলন : পরিবেশের সর্বনাশ

: শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

দেশের নদ-নদীগুলো প্রকৃতির অপার দান, যা শুধু কৃষি ও মৎস্য সম্পদে নয়, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, তিস্তা নদীসহ দেশের অনেক নদীতে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই পাথর ও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এসব কর্মকা- শুধু নদীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে না, তিস্তা ব্যারেজসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ক্ষতির আশঙ্কা বাড়াচ্ছে।

তিস্তা ব্যারেজের উজানে বালু ও পাথর উত্তোলন একটি চরম বিপজ্জনক প্রবণতা। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে সেচ কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। নদীর সামনে চর জেগে যাওয়ায় কৃষি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি তিস্তা ব্যারেজের দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্বও হুমকির মুখে পড়ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা কার্যকর করতে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোটখাতা এলাকায় একাধিক চক্র দীর্ঘদিন ধরে পাথর উত্তোলন করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের মদদে এই কার্যক্রম চলমান। প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। সম্প্রতি উত্তোলিত পাথরের স্তূপ জব্দ করলেও চক্রগুলো তাদের কার্যক্রম গোপনে চালিয়ে যাচ্ছে।

নদীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার ফলে ভূমিধস, নদীভাঙন, এবং স্থানীয় বাসস্থান ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। অপরিকল্পিতভাবে পাথর উত্তোলন পরিবেশের পাশাপাশি মানুষের জীবন-জীবিকাকেও বিপন্ন করছে। এমনকি, জীববৈচিত্র্যের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব অপরিসীম। তিস্তা নদীর মতো গুরুত্বপূর্ণ জলাশয় হুমকির মুখে পড়লে তার প্রভাব কেবল স্থানীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং দেশের সামগ্রিক পরিবেশ ও অর্থনীতিতেও এর ছাপ পড়বে।

আমরা বিশ্বাস করি, পরিবেশ রক্ষায় আপসের কোনো সুযোগ নেই। পরিবেশ-সংবেদনশীল এলাকাগুলোকে ‘পরিবেশ সংকটাপন্ন অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণা করা জরুরি। পাথর উত্তোলন বন্ধে কঠোর নজরদারি এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এসব অবৈধ কর্মকা-ে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই এই সমস্যার টেকসই সমাধান সম্ভব। পরিবেশের সুরক্ষা কোনো একক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নয়; এটি আমাদের সবার দায়িত্ব। তিস্তা নদী বাঁচাতে এবং দেশের পরিবেশ রক্ষা করতে হলে সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, এবং সাধারণ জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

বোয়ালখালী রেললাইন বাজার : জীবন ও নিরাপত্তার চরম সংকট

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুর্নীতি

আঠারোবাড়ী হাওরের সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

পাঠ্যবই বিতরণে বিলম্ব : শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আঘাত

কৃষিজমিতে কারখানা: ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

ওরস বন্ধ রাখাই কি একমাত্র সমাধান?

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা করুন

নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে গাফিলতি

ফসল রক্ষা বাঁধে অনিয়ম কাম্য নয়

রিওভাইরাস: আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

শুল্ক-কর এখন বাড়ানো কি জরুরি ছিল

নওগাঁর বর্জ্য পরিশোধনাগার প্রসঙ্গে

সড়ক দুর্ঘটনা : বেপরোয়া গতি আর অব্যবস্থাপনার মাশুল

সংরক্ষিত বনের গাছ রক্ষায় উদাসীনতার অভিযোগ আমলে নিন

চালের দাম বাড়ছে: সংকট আরও বাড়ার আগেই ব্যবস্থা নিন

বারইখালী ও বহরবুনিয়ার মানুষের দুর্ভোগ কবে দূর হবে

রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি : সমাধান কোথায়?

সময়ের সমীকরণে বেকারত্বের নতুন চিত্র

বরুড়ায় খালের দুর্দশা

টেকনাফে অপহরণ: স্থানীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ ও সমাধানের প্রয়োজনীয়তা

স্কুল মাঠে মাটি কাটার অভিযোগ

কিশোর গ্যাং : আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতা ও সামাজিক সংকট

বই বিতরণে স্বচ্ছতা প্রয়োজন

পরিবেশ রক্ষায় আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করুন

হাসপাতালের লোকবল সংকট দূর করুন

প্রাথমিক শিক্ষা : উন্নত জাতি গঠনে অপরিহার্য ভিত্তি

খেলার মাঠে কারখানা : পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্যের বিপদ

শীতের তীব্রতা : বিপন্ন মানুষ এবং সরকারের কর্তব্য

বনে কেন করাতকল

গণপিটুনির দুঃসহ চিত্র

কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক নিরাপত্তা

নববর্ষে মানবিক ও সমতার বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার

পরিযায়ী পাখি রক্ষায় ব্যবস্থা নিন

প্রবাসী কর্মীদের স্বাস্থ্য সমস্যা : সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে

অবৈধ ইটভাটার কারণে পরিবেশ ও কৃষির বিপর্যয়

পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন জরুরি

tab

সম্পাদকীয়

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই পাথর উত্তোলন : পরিবেশের সর্বনাশ

শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

দেশের নদ-নদীগুলো প্রকৃতির অপার দান, যা শুধু কৃষি ও মৎস্য সম্পদে নয়, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, তিস্তা নদীসহ দেশের অনেক নদীতে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই পাথর ও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এসব কর্মকা- শুধু নদীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে না, তিস্তা ব্যারেজসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ক্ষতির আশঙ্কা বাড়াচ্ছে।

তিস্তা ব্যারেজের উজানে বালু ও পাথর উত্তোলন একটি চরম বিপজ্জনক প্রবণতা। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে সেচ কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। নদীর সামনে চর জেগে যাওয়ায় কৃষি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি তিস্তা ব্যারেজের দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্বও হুমকির মুখে পড়ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা কার্যকর করতে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোটখাতা এলাকায় একাধিক চক্র দীর্ঘদিন ধরে পাথর উত্তোলন করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের মদদে এই কার্যক্রম চলমান। প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। সম্প্রতি উত্তোলিত পাথরের স্তূপ জব্দ করলেও চক্রগুলো তাদের কার্যক্রম গোপনে চালিয়ে যাচ্ছে।

নদীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার ফলে ভূমিধস, নদীভাঙন, এবং স্থানীয় বাসস্থান ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। অপরিকল্পিতভাবে পাথর উত্তোলন পরিবেশের পাশাপাশি মানুষের জীবন-জীবিকাকেও বিপন্ন করছে। এমনকি, জীববৈচিত্র্যের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব অপরিসীম। তিস্তা নদীর মতো গুরুত্বপূর্ণ জলাশয় হুমকির মুখে পড়লে তার প্রভাব কেবল স্থানীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং দেশের সামগ্রিক পরিবেশ ও অর্থনীতিতেও এর ছাপ পড়বে।

আমরা বিশ্বাস করি, পরিবেশ রক্ষায় আপসের কোনো সুযোগ নেই। পরিবেশ-সংবেদনশীল এলাকাগুলোকে ‘পরিবেশ সংকটাপন্ন অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণা করা জরুরি। পাথর উত্তোলন বন্ধে কঠোর নজরদারি এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এসব অবৈধ কর্মকা-ে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই এই সমস্যার টেকসই সমাধান সম্ভব। পরিবেশের সুরক্ষা কোনো একক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নয়; এটি আমাদের সবার দায়িত্ব। তিস্তা নদী বাঁচাতে এবং দেশের পরিবেশ রক্ষা করতে হলে সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, এবং সাধারণ জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

back to top