রাজধানী ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে সম্প্রতি যে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছিল, তা ছিল শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিআরটিএ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ডিএমপির যৌথ উদ্যোগে গত ১ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দেড় কিলোমিটার উত্তর থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণ পর্যন্ত মোট ৩ কিলোমিটার এলাকা ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু, এক মাসেরও বেশি সময় পর প্রকাশিত এক জরিপের ফলাফল শঙ্কা তৈরি করেছে। শব্দদূষণ কমার বদলে কিছু স্থানে তা আরও বেড়েছে।
বিমানবন্দর সড়ক একটি প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম হওয়ায়, এখানে গাড়ির চলাচল ও হর্ন বাজানো সহজেই শব্দদূষণের মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গবেষণায় একথাও উঠে এসেছে যে, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য শুধু এলাকা চিহ্নিত করলেই যথেষ্ট নয়; সচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যকর আইন প্রয়োগ প্রয়োজন। বর্তমানে, ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণার পরও বেশ কিছু কারণ রয়েছে যা শব্দদূষণের জন্য দায়ী। এর মধ্যে সচেতনতার অভাব, চালকদের এবং যাত্রীদের ‘নিরব এলাকা’ সম্পর্কে অজ্ঞতা, যানজট এবং ইউটার্নের কারণে সৃষ্ট শব্দদূষণ উল্লেখযোগ্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুযায়ী, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ ডেসিবেল এবং রাতে ৪০ ডেসিবেল শব্দের পরিমাণ থাকার কথা। অথচ, ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণার পরেও এসব এলাকায় শব্দের পরিমাণ ৮৬ ডেসিবেল পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু তাই নয়, যানজট, বাসস্ট্যান্ড ও বিমানবন্দরের মূল গেটের আশপাশে শব্দের মাত্রা বেড়েছে, যা আরও উদ্বেগজনক।
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আরও কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন। বিমানবন্দর সড়ক এবং তার আশপাশের এলাকা আরও সবুজায়ন করতে হবে। গাছপালা রোপণ এবং পরিবেশবান্ধব স্থাপত্য উন্নয়ন শব্দদূষণ হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণার আগে পুরোপুরি গবেষণা করা এবং প্রচারণার মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করা অপরিহার্য।
এছাড়া, পরিবহন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার সময় এসেছে। গাড়ির হর্ন বাজানো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, বিশেষ করে হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহার বন্ধ করা উচিত। চালকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা, পরিবহন লাইসেন্স প্রদানের আগে শব্দ সচেতনতা পরীক্ষা করা এবং ট্রাফিক আইন শক্তিশালী করা গুরুত্বপূর্ণ।
গণপরিবহন ব্যবস্থাকে উন্নত করা এবং ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমানো একটি কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে। বাইসাইকেল লাইন চালু করাও যানজট কমাতে সাহায্য করতে পারে। সব মিলিয়ে, শব্দদূষণকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এর জন্য একটি টেকসই এবং সমন্বিত পরিকল্পনার প্রয়োজন, যা শুধু আইনগত পদক্ষেপ নয়, সমাজের প্রতিটি স্তরের সচেতনতার মধ্য দিয়েও কার্যকর হতে পারে।
বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
রাজধানী ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে সম্প্রতি যে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছিল, তা ছিল শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিআরটিএ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ডিএমপির যৌথ উদ্যোগে গত ১ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দেড় কিলোমিটার উত্তর থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণ পর্যন্ত মোট ৩ কিলোমিটার এলাকা ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু, এক মাসেরও বেশি সময় পর প্রকাশিত এক জরিপের ফলাফল শঙ্কা তৈরি করেছে। শব্দদূষণ কমার বদলে কিছু স্থানে তা আরও বেড়েছে।
বিমানবন্দর সড়ক একটি প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম হওয়ায়, এখানে গাড়ির চলাচল ও হর্ন বাজানো সহজেই শব্দদূষণের মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গবেষণায় একথাও উঠে এসেছে যে, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য শুধু এলাকা চিহ্নিত করলেই যথেষ্ট নয়; সচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যকর আইন প্রয়োগ প্রয়োজন। বর্তমানে, ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণার পরও বেশ কিছু কারণ রয়েছে যা শব্দদূষণের জন্য দায়ী। এর মধ্যে সচেতনতার অভাব, চালকদের এবং যাত্রীদের ‘নিরব এলাকা’ সম্পর্কে অজ্ঞতা, যানজট এবং ইউটার্নের কারণে সৃষ্ট শব্দদূষণ উল্লেখযোগ্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুযায়ী, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ ডেসিবেল এবং রাতে ৪০ ডেসিবেল শব্দের পরিমাণ থাকার কথা। অথচ, ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণার পরেও এসব এলাকায় শব্দের পরিমাণ ৮৬ ডেসিবেল পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু তাই নয়, যানজট, বাসস্ট্যান্ড ও বিমানবন্দরের মূল গেটের আশপাশে শব্দের মাত্রা বেড়েছে, যা আরও উদ্বেগজনক।
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আরও কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন। বিমানবন্দর সড়ক এবং তার আশপাশের এলাকা আরও সবুজায়ন করতে হবে। গাছপালা রোপণ এবং পরিবেশবান্ধব স্থাপত্য উন্নয়ন শব্দদূষণ হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণার আগে পুরোপুরি গবেষণা করা এবং প্রচারণার মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করা অপরিহার্য।
এছাড়া, পরিবহন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার সময় এসেছে। গাড়ির হর্ন বাজানো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, বিশেষ করে হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহার বন্ধ করা উচিত। চালকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা, পরিবহন লাইসেন্স প্রদানের আগে শব্দ সচেতনতা পরীক্ষা করা এবং ট্রাফিক আইন শক্তিশালী করা গুরুত্বপূর্ণ।
গণপরিবহন ব্যবস্থাকে উন্নত করা এবং ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমানো একটি কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে। বাইসাইকেল লাইন চালু করাও যানজট কমাতে সাহায্য করতে পারে। সব মিলিয়ে, শব্দদূষণকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এর জন্য একটি টেকসই এবং সমন্বিত পরিকল্পনার প্রয়োজন, যা শুধু আইনগত পদক্ষেপ নয়, সমাজের প্রতিটি স্তরের সচেতনতার মধ্য দিয়েও কার্যকর হতে পারে।