আমনের ভরা মৌসুমেও চালের দাম বৃদ্ধি একটি গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, মোটা ও মাঝারি চালের দাম এক সপ্তাহে কেজিতে তিন থেকে চার টাকা বেড়েছে। যদিও খাদ্য উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন যে, আমন ধান বাজারে এলে চালের দাম কমবে। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
আমনের ভরা মৌসুমেও চালের দাম বাড়ার প্রধান কারণ হিসেবে বাণিজ্য উপদেষ্টা সাময়িক মজুতদারিকে দায়ী করেছেন। তবে অনেকে মনে করেন, আমনের উৎপাদন আশানুরূপ না হওয়া এবং সরকারের পর্যাপ্ত মজুত গড়ে তুলতে না পারা এ সংকটের মূলে রয়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, চালের দাম বাড়ার ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশাঙ্কা রয়েছে, যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিশেষভাবে সংকটজনক।
চাল আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে চাল আমদানির খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি খাতে আমদানি লাভজনক নয়। যদিও সরকার ভারত, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার এবং পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি করার উদ্যোগ নিয়েছে, তবু তা চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়।
সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মজুতের অভাব বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করতে বড় প্রতিবন্ধকতা। বর্তমানে সরকারের চালের মজুত মাত্র আট লাখ টন, যা চাহিদার তুলনায় কম। এছাড়া, সরকার নির্ধারিত মূল্য কেজিপ্রতি ৪৭ টাকা থাকায় মিলমালিকরা সরকারি গুদামে চাল সরবরাহে আগ্রহী নয়। ফলে বাজারে সরবরাহ কমে যাচ্ছে, যা দামের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। সাময়িক মজুতদারি বন্ধে কঠোর নজরদারি ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রয়োজন। বাজারে মনিটরিং বাড়াতে খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত কার্যক্রম জরুরি। স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানো জরুরি। কৃষকদের জন্য সারের মূল্য ও জ্বালানি খরচ কমিয়ে উৎপাদন খরচ হ্রাস করতে হবে। পাশাপাশি, সরকারি ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা জরুরি। চাল আমদানিতে দু-একটি দেশের ওপর নির্ভর না করে মাল্টি-সোর্সিং নীতি গ্রহণ করা যায় কিনা সেটা ভেবে দেখার সময় এসেছে। চাল আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের সহজলভ্যতা বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা যেতে পারে। নিম্ন আয়ের জনগণের জন্য ওএমএস (খোলাবাজারে চাল বিক্রি) কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করা উচিত।
সংকট সমাধানে দায়সারা উদ্যোগ নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। সরকার, মিলমালিক এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমন্বয় বাড়িয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নইলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় আরও চাপ সৃষ্টি করবে।
শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
আমনের ভরা মৌসুমেও চালের দাম বৃদ্ধি একটি গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, মোটা ও মাঝারি চালের দাম এক সপ্তাহে কেজিতে তিন থেকে চার টাকা বেড়েছে। যদিও খাদ্য উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন যে, আমন ধান বাজারে এলে চালের দাম কমবে। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
আমনের ভরা মৌসুমেও চালের দাম বাড়ার প্রধান কারণ হিসেবে বাণিজ্য উপদেষ্টা সাময়িক মজুতদারিকে দায়ী করেছেন। তবে অনেকে মনে করেন, আমনের উৎপাদন আশানুরূপ না হওয়া এবং সরকারের পর্যাপ্ত মজুত গড়ে তুলতে না পারা এ সংকটের মূলে রয়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, চালের দাম বাড়ার ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশাঙ্কা রয়েছে, যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিশেষভাবে সংকটজনক।
চাল আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে চাল আমদানির খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি খাতে আমদানি লাভজনক নয়। যদিও সরকার ভারত, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার এবং পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি করার উদ্যোগ নিয়েছে, তবু তা চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়।
সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মজুতের অভাব বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করতে বড় প্রতিবন্ধকতা। বর্তমানে সরকারের চালের মজুত মাত্র আট লাখ টন, যা চাহিদার তুলনায় কম। এছাড়া, সরকার নির্ধারিত মূল্য কেজিপ্রতি ৪৭ টাকা থাকায় মিলমালিকরা সরকারি গুদামে চাল সরবরাহে আগ্রহী নয়। ফলে বাজারে সরবরাহ কমে যাচ্ছে, যা দামের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। সাময়িক মজুতদারি বন্ধে কঠোর নজরদারি ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রয়োজন। বাজারে মনিটরিং বাড়াতে খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত কার্যক্রম জরুরি। স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানো জরুরি। কৃষকদের জন্য সারের মূল্য ও জ্বালানি খরচ কমিয়ে উৎপাদন খরচ হ্রাস করতে হবে। পাশাপাশি, সরকারি ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা জরুরি। চাল আমদানিতে দু-একটি দেশের ওপর নির্ভর না করে মাল্টি-সোর্সিং নীতি গ্রহণ করা যায় কিনা সেটা ভেবে দেখার সময় এসেছে। চাল আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের সহজলভ্যতা বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা যেতে পারে। নিম্ন আয়ের জনগণের জন্য ওএমএস (খোলাবাজারে চাল বিক্রি) কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করা উচিত।
সংকট সমাধানে দায়সারা উদ্যোগ নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। সরকার, মিলমালিক এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমন্বয় বাড়িয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নইলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় আরও চাপ সৃষ্টি করবে।