alt

সম্পাদকীয়

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

: মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

এ বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশে অতিদারিদ্র্যের কাতারে সামিল হতে পারে আরও ৩০ লাখ মানুষ। বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে অতিদারিদ্র্যের হার ৯.৩ শতাংশে পৌঁছাবে এবং জাতীয় দারিদ্র্য হার বেড়ে ২২.৯ শতাংশে উন্নীত হওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছে। দেশের কোনো কোনো বিশ্লেষকও বলছেন দারিদ্র্য পরিস্থিতি ‘নাজুক’ হয়ে উঠছে।

দেশের মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। শ্রমবাজার দুর্বল হয়ে পড়েছে। ধীর হয়ে গেছে সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকা-। বৈশ্বিক মহামারী নোভেল করোনা ভাইরাসের পর থেকেই এই প্রবণতা দেখা দিয়েছে।

মূল্যস্ফীতি টানা তিন বছরের বেশি সময় ধরে মজুরি বৃদ্ধির হারকে ছাড়িয়ে গেছে, ফলে সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় ক্রমাগত কমছে। একই সঙ্গে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়া, অনানুষ্ঠানিক খাতের অনিরাপদ কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগের স্থবিরতা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী এমন পরিস্থিতিতে আছে যেখানে সামান্য ‘টোকা’ দিলেই তারা দারিদ্র্যের ফাঁদে পড়ে যায়। অর্থাৎ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অসুস্থতা, কিংবা সামান্য আয় কমার ধাক্কায় কোটি কোটি মানুষ জীবিকার চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, শুধু জাতীয় দারিদ্র্যই নয়, অতিদারিদ্র্যের হারও বাড়ছে। দিনে ২.১৫ ডলারের কম আয়ে জীবনযাপন করতে হচ্ছেÑ এমন মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১ কোটি ৫৮ লাখে দাঁড়াতে পারে। আর দরিদ্রের মোট সংখ্যা পৌঁছাতে পারে ৩ কোটি ৯০ লাখে।

গত তিন দশক ধরে বাংলাদেশ দারিদ্র্য নিরসনে বিশ্বে অনুকরণীয় ছিল, আজ সেই অগ্রগতি বিপরীতমুখী ঝুঁকিতে পড়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতির যে বর্ণনা এতদিন প্রচলিত ছিল, তার মধ্যে ফাঁকফোকর রয়েছে। অনেকেই কাগজে-কলমে দারিদ্র্যের বাইরে মনে হলেও বাস্তবে তারা চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছেন।

অর্থনীতিবিদদের মতে, চলতি বছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৩ শতাংশে নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে। একদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, অন্যদিকে বিনিয়োগ স্থবিরতা এবং শ্রমবাজারের দুর্বলতাÑ সমষ্টিগতভাবে অর্থনীতিতে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি করছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ কী। বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন বাজেটে দুর্নীতি ও অপচয় রোধ, সামাজিক নিরাপত্তা খাতের প্রসার এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। গরিব ও নিম্নআয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বজায় রাখতে সরাসরি সহায়তা বাড়াতে হবে।

অর্থনীতিতে আস্থা ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, এবং অর্থনৈতিক কর্মকা-ে গতি আনাই এখন সবচেয়ে জরুরি।

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

tab

সম্পাদকীয়

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

এ বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশে অতিদারিদ্র্যের কাতারে সামিল হতে পারে আরও ৩০ লাখ মানুষ। বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে অতিদারিদ্র্যের হার ৯.৩ শতাংশে পৌঁছাবে এবং জাতীয় দারিদ্র্য হার বেড়ে ২২.৯ শতাংশে উন্নীত হওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছে। দেশের কোনো কোনো বিশ্লেষকও বলছেন দারিদ্র্য পরিস্থিতি ‘নাজুক’ হয়ে উঠছে।

দেশের মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। শ্রমবাজার দুর্বল হয়ে পড়েছে। ধীর হয়ে গেছে সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকা-। বৈশ্বিক মহামারী নোভেল করোনা ভাইরাসের পর থেকেই এই প্রবণতা দেখা দিয়েছে।

মূল্যস্ফীতি টানা তিন বছরের বেশি সময় ধরে মজুরি বৃদ্ধির হারকে ছাড়িয়ে গেছে, ফলে সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় ক্রমাগত কমছে। একই সঙ্গে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়া, অনানুষ্ঠানিক খাতের অনিরাপদ কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগের স্থবিরতা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী এমন পরিস্থিতিতে আছে যেখানে সামান্য ‘টোকা’ দিলেই তারা দারিদ্র্যের ফাঁদে পড়ে যায়। অর্থাৎ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অসুস্থতা, কিংবা সামান্য আয় কমার ধাক্কায় কোটি কোটি মানুষ জীবিকার চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, শুধু জাতীয় দারিদ্র্যই নয়, অতিদারিদ্র্যের হারও বাড়ছে। দিনে ২.১৫ ডলারের কম আয়ে জীবনযাপন করতে হচ্ছেÑ এমন মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১ কোটি ৫৮ লাখে দাঁড়াতে পারে। আর দরিদ্রের মোট সংখ্যা পৌঁছাতে পারে ৩ কোটি ৯০ লাখে।

গত তিন দশক ধরে বাংলাদেশ দারিদ্র্য নিরসনে বিশ্বে অনুকরণীয় ছিল, আজ সেই অগ্রগতি বিপরীতমুখী ঝুঁকিতে পড়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতির যে বর্ণনা এতদিন প্রচলিত ছিল, তার মধ্যে ফাঁকফোকর রয়েছে। অনেকেই কাগজে-কলমে দারিদ্র্যের বাইরে মনে হলেও বাস্তবে তারা চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছেন।

অর্থনীতিবিদদের মতে, চলতি বছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৩ শতাংশে নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে। একদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, অন্যদিকে বিনিয়োগ স্থবিরতা এবং শ্রমবাজারের দুর্বলতাÑ সমষ্টিগতভাবে অর্থনীতিতে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি করছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ কী। বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন বাজেটে দুর্নীতি ও অপচয় রোধ, সামাজিক নিরাপত্তা খাতের প্রসার এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। গরিব ও নিম্নআয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বজায় রাখতে সরাসরি সহায়তা বাড়াতে হবে।

অর্থনীতিতে আস্থা ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, এবং অর্থনৈতিক কর্মকা-ে গতি আনাই এখন সবচেয়ে জরুরি।

back to top