alt

সম্পাদকীয়

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

: মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

উপকূলীয় অঞ্চল, বিশেষ করে কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে প্যারাবনের মতো প্রাকৃতিক সম্পদের অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো দুর্যোগ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে প্যারাবনের পরিবেশগত গুরুত্ব অপরিসীম। অথচ এই বনভূমিই এখন ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালীদের লোভনীয় টার্গেটে পরিণত হয়েছে। চিংড়িঘের, লবণের মাঠ কিংবা অন্য অবৈধ স্থাপনার জন্য নির্বিচারে গাছ কেটে বন উজাড় করা হচ্ছেÑএ যেন আমাদের অস্তিত্বকে নিজের হাতেই কুপিয়ে ফেলার নামান্তর।

সংবাদ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতোমধ্যে ৩০০ একরেরও বেশি ম্যানগ্রোভ বন দখল হয়ে গেছে, যেখানে প্রশাসনের ভূমিকায় কার্যকর কোনো ইতিবাচক সাড়া নেই। আদালতে মামলা হচ্ছে, অভিযুক্তদের নাম তালিকাভুক্ত হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে কেউ গ্রেপ্তার হচ্ছে না; বরং আগাম জামিনে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

আশঙ্কার বিষয় হলো, এই পরিবেশবিধ্বংসী কর্মকা- শুধু স্থানীয় পর্যায়ের ব্যক্তিদের দ্বারা নয়, বরং রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, আইনজীবী, এমনকি বনবিভাগ ও পুলিশের কিছু সদস্যের সরাসরি সহযোগিতায় সংঘটিত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যাদের রাষ্ট্র রক্ষা করার দায়িত্ব দিয়েছে, তারাই যদি রাষ্ট্রের সম্পদ ধ্বংসে যুক্ত হয়, তাহলে এই ব্যর্থতা শুধু একটি প্রশাসনিক দুর্বলতা নয়, বরং এটি একটি নৈতিক ও রাষ্ট্রিক ব্যর্থতা।

এখানে প্রশ্ন ওঠেÑঅন্তর্বর্তী সরকার কেন এই পরিবেশ সংকটকে উপেক্ষা করছে? কেন স্থানীয় প্রশাসন ও বনবিভাগ দৃশ্যমান কোনো সাফল্য দেখাতে পারছে না? যেখানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা বলে, বাস্তবে তা কেবল কাগুজে বুলি বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।

প্যারাবন শুধু গাছের সমষ্টি নয়; এটি উপকূলের প্রাকৃতিক ঢাল, জীববৈচিত্র্যের আশ্রয়স্থল এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলার এক অন্যতম হাতিয়ার। এই বন ধ্বংস হলে কেবল পরিবেশ নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হবে স্থানীয় জনগণ, মাছ ও জীবজগত, এমনকি পুরো দেশের জলবায়ু ব্যবস্থাও। অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি সমাজে দুর্নীতির সংস্কৃতি আরও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে।

এই প্রেক্ষাপটে আমাদের জোর দাবি, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বনবিভাগ ও বিচার বিভাগকে সমন্বিতভাবে দ্রুত এবং কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্যারাবন রক্ষায় একদিকে যেমন অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের আওতায় কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, অন্যদিকে স্থানীয় পর্যায়ে নাগরিক সচেতনতা ও পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন জোরদার করতে হবে।

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

tab

সম্পাদকীয়

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

উপকূলীয় অঞ্চল, বিশেষ করে কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে প্যারাবনের মতো প্রাকৃতিক সম্পদের অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো দুর্যোগ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে প্যারাবনের পরিবেশগত গুরুত্ব অপরিসীম। অথচ এই বনভূমিই এখন ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালীদের লোভনীয় টার্গেটে পরিণত হয়েছে। চিংড়িঘের, লবণের মাঠ কিংবা অন্য অবৈধ স্থাপনার জন্য নির্বিচারে গাছ কেটে বন উজাড় করা হচ্ছেÑএ যেন আমাদের অস্তিত্বকে নিজের হাতেই কুপিয়ে ফেলার নামান্তর।

সংবাদ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতোমধ্যে ৩০০ একরেরও বেশি ম্যানগ্রোভ বন দখল হয়ে গেছে, যেখানে প্রশাসনের ভূমিকায় কার্যকর কোনো ইতিবাচক সাড়া নেই। আদালতে মামলা হচ্ছে, অভিযুক্তদের নাম তালিকাভুক্ত হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে কেউ গ্রেপ্তার হচ্ছে না; বরং আগাম জামিনে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

আশঙ্কার বিষয় হলো, এই পরিবেশবিধ্বংসী কর্মকা- শুধু স্থানীয় পর্যায়ের ব্যক্তিদের দ্বারা নয়, বরং রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, আইনজীবী, এমনকি বনবিভাগ ও পুলিশের কিছু সদস্যের সরাসরি সহযোগিতায় সংঘটিত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যাদের রাষ্ট্র রক্ষা করার দায়িত্ব দিয়েছে, তারাই যদি রাষ্ট্রের সম্পদ ধ্বংসে যুক্ত হয়, তাহলে এই ব্যর্থতা শুধু একটি প্রশাসনিক দুর্বলতা নয়, বরং এটি একটি নৈতিক ও রাষ্ট্রিক ব্যর্থতা।

এখানে প্রশ্ন ওঠেÑঅন্তর্বর্তী সরকার কেন এই পরিবেশ সংকটকে উপেক্ষা করছে? কেন স্থানীয় প্রশাসন ও বনবিভাগ দৃশ্যমান কোনো সাফল্য দেখাতে পারছে না? যেখানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা বলে, বাস্তবে তা কেবল কাগুজে বুলি বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।

প্যারাবন শুধু গাছের সমষ্টি নয়; এটি উপকূলের প্রাকৃতিক ঢাল, জীববৈচিত্র্যের আশ্রয়স্থল এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলার এক অন্যতম হাতিয়ার। এই বন ধ্বংস হলে কেবল পরিবেশ নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হবে স্থানীয় জনগণ, মাছ ও জীবজগত, এমনকি পুরো দেশের জলবায়ু ব্যবস্থাও। অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি সমাজে দুর্নীতির সংস্কৃতি আরও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে।

এই প্রেক্ষাপটে আমাদের জোর দাবি, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বনবিভাগ ও বিচার বিভাগকে সমন্বিতভাবে দ্রুত এবং কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্যারাবন রক্ষায় একদিকে যেমন অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের আওতায় কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, অন্যদিকে স্থানীয় পর্যায়ে নাগরিক সচেতনতা ও পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন জোরদার করতে হবে।

back to top