alt

সম্পাদকীয়

পুরান ঢাকার রাসায়নিকের গুদামে আবার আগুন : এই দায় কার

: শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১

রাজধানীর পুরান ঢাকায় আরমানিটোলায় একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকান্ডে মারা গেছেন ৪ জন ও আহত হয়েছেন অন্তত ২১ জন। ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ভবনটির নিচতলায় অবস্থিত রাসায়নিকের গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। অগ্নিকান্ডের ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস।

উক্ত ভবনে যেসব রাসায়নিক পদার্থ ছিল সেগুলোকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা কিলিং এজেন্ট বলে মত দিয়েছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, কোন আবাসিক ভবনে এ ধরনের রাসায়নিক আসে কোথা থেকে আর বছরের পর বছরে সেখানে থাকেই বা কী করে। পুরান ঢাকায় রাসায়নিক গুদামের অস্তিত্ব রয়েছে যুগ যুগ ধরে। রাসায়নিকের গুদামের কারণে সেখানে প্রায়ই ছোট-বড় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ২০১০ সালে নিমতলীতে এমনই এক অগ্নিকান্ডে ১২৪ জন মারা যান। ২০১৯ সালে চুড়িহাট্টায় ৭১ জন অগ্নিকান্ডে মারা যান।

পুরান ঢাকার রাস্তাগুলো সরু। সেখানে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি নিয়ে যাওয়াই কঠিন হয়ে পড়ে। আরমানিটোলায় ভোর রাতে আগুন লাগায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়নি। দিনের বেলায় ব্যস্ত সময়ে আগুন লাগলে আরমানিটোলাও হয়ে উঠতে পারত আরেকটা নিমতলী বা চুড়িহাট্টা।

পুরান ঢাকায় বারবার কেন আগুন লাগছে সেটা একটা প্রশ্ন। অগ্নিকান্ডে হতাহতের ঘটনায় দায় আসলে কার? এগুলো কি শুধুই দুর্ঘটনা নাকি সংশ্লিষ্টদের অবহেলাজনিত মৃত্যু সেটা আমরা জানতে চাইব। পুরান ঢাকায় কোন অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলেই শুরু হয় দোষারোপের খেলা। সরকার আঙুল তোলে রাসায়নিকের ব্যবসায়ীদের দিকে। ব্যবসায়ীরা আঙুল তোলেস সরকারের দিকে। সরকার বলে, ব্যবসায়ীরা রাজি না হওয়ায় রাসায়নিক কারখানাগুলো সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয় না। ব্যবসায়ীরা বলেন, উপযুক্ত জায়গা পেলে তারা সরে যেতে রাজি আছেন। গুদাম বন্ধ করার লোক দেখানো অভিযান চলে কিছুদিন। গুদাম সরানোর পরিকল্পনার কথা জানা যায় কিন্তু এর বাস্তবায়ন আর হয় না।

আরমানিটোলায় আগুন লাগার ঘটনায় পুরান ঢাকা থকে রাসায়নিকের গুদামগুলো সরিয়ে নেয়ার কথা আবারও আলোচনা হচ্ছে। তবে এবারও সেটা বাস্তবায়ন হবে কিনা তা নিয়ে অনেকের মনে সন্দেহ আছে।

২০২২ সালের মধ্যে মুন্সীগঞ্জে রাসায়নিক শিল্পপল্লী প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা রয়েছে। বাস্তবে প্রকল্পের জমিতে মাটি ভরাটের কাজই শুরু হয়নি বলে গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে। শ্যামপুর আর টঙ্গীর কাঁঠালদিয়ায় দুটি অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম তৈরির কাজও এগোয়নি। নিমতলী অগ্নিকান্ডের ১১ বছর পরও কাজগুলো সম্পন্ন না হওয়ার কারণ খুঁজতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অগ্নিকান্ড থেকে জনগণের জানমাল রক্ষা করতে আসলেই আন্তরিক কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। সরকার আন্তরিক হলে রাসায়নিকের গুদাম গত প্রায় এক যুগেও সরানো যাবে না- সেটা হতে পারে না। পুরান ঢাকায় হাজারেরও বেশি ব্যবসায়ী রাসায়নিকের ব্যবসা করেন বলে জানা যায়। অভিযোগ রয়েছে, রাসায়নিক ব্যবসায়ীদের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে অনেক পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।

পুরান ঢাকার গুদামগুলোতে আছে কমবেশি পাঁচ হাজার রকমের রাসায়নিক। যার মধ্যে অতি দাহ্য রাসায়নিকও রয়েছে। সেখানে প্লাস্টিকের কারখানা ও গুদামের সংখ্যাও কম নয়। এ কারণে এলাকাটি বরাবরাই অগ্নিকান্ডের ঝুঁকিতে থাকে। যতদিন না রাসায়নিকের গুদামগুলো সেখান থেকে অন্যত্র পুরোপুরি সরানো হবে ততদিন এই ঝুঁকি কমবে না। সরকারকে অবশ্যই এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সাময়িক অভিযান চালিয়ে কিছুদিনের জন্য অবৈধ গুদাম বন্ধ করে সমাধান মিলবে না।

ভূমিধসের হুমকি ও প্রস্তুতি

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ নারী দল : অভিনন্দন

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

উপজেলা স্বাস্থ্যসেবায় সংকট

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

tab

সম্পাদকীয়

পুরান ঢাকার রাসায়নিকের গুদামে আবার আগুন : এই দায় কার

শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১

রাজধানীর পুরান ঢাকায় আরমানিটোলায় একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকান্ডে মারা গেছেন ৪ জন ও আহত হয়েছেন অন্তত ২১ জন। ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ভবনটির নিচতলায় অবস্থিত রাসায়নিকের গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। অগ্নিকান্ডের ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস।

উক্ত ভবনে যেসব রাসায়নিক পদার্থ ছিল সেগুলোকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা কিলিং এজেন্ট বলে মত দিয়েছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, কোন আবাসিক ভবনে এ ধরনের রাসায়নিক আসে কোথা থেকে আর বছরের পর বছরে সেখানে থাকেই বা কী করে। পুরান ঢাকায় রাসায়নিক গুদামের অস্তিত্ব রয়েছে যুগ যুগ ধরে। রাসায়নিকের গুদামের কারণে সেখানে প্রায়ই ছোট-বড় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ২০১০ সালে নিমতলীতে এমনই এক অগ্নিকান্ডে ১২৪ জন মারা যান। ২০১৯ সালে চুড়িহাট্টায় ৭১ জন অগ্নিকান্ডে মারা যান।

পুরান ঢাকার রাস্তাগুলো সরু। সেখানে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি নিয়ে যাওয়াই কঠিন হয়ে পড়ে। আরমানিটোলায় ভোর রাতে আগুন লাগায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়নি। দিনের বেলায় ব্যস্ত সময়ে আগুন লাগলে আরমানিটোলাও হয়ে উঠতে পারত আরেকটা নিমতলী বা চুড়িহাট্টা।

পুরান ঢাকায় বারবার কেন আগুন লাগছে সেটা একটা প্রশ্ন। অগ্নিকান্ডে হতাহতের ঘটনায় দায় আসলে কার? এগুলো কি শুধুই দুর্ঘটনা নাকি সংশ্লিষ্টদের অবহেলাজনিত মৃত্যু সেটা আমরা জানতে চাইব। পুরান ঢাকায় কোন অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলেই শুরু হয় দোষারোপের খেলা। সরকার আঙুল তোলে রাসায়নিকের ব্যবসায়ীদের দিকে। ব্যবসায়ীরা আঙুল তোলেস সরকারের দিকে। সরকার বলে, ব্যবসায়ীরা রাজি না হওয়ায় রাসায়নিক কারখানাগুলো সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয় না। ব্যবসায়ীরা বলেন, উপযুক্ত জায়গা পেলে তারা সরে যেতে রাজি আছেন। গুদাম বন্ধ করার লোক দেখানো অভিযান চলে কিছুদিন। গুদাম সরানোর পরিকল্পনার কথা জানা যায় কিন্তু এর বাস্তবায়ন আর হয় না।

আরমানিটোলায় আগুন লাগার ঘটনায় পুরান ঢাকা থকে রাসায়নিকের গুদামগুলো সরিয়ে নেয়ার কথা আবারও আলোচনা হচ্ছে। তবে এবারও সেটা বাস্তবায়ন হবে কিনা তা নিয়ে অনেকের মনে সন্দেহ আছে।

২০২২ সালের মধ্যে মুন্সীগঞ্জে রাসায়নিক শিল্পপল্লী প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা রয়েছে। বাস্তবে প্রকল্পের জমিতে মাটি ভরাটের কাজই শুরু হয়নি বলে গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে। শ্যামপুর আর টঙ্গীর কাঁঠালদিয়ায় দুটি অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম তৈরির কাজও এগোয়নি। নিমতলী অগ্নিকান্ডের ১১ বছর পরও কাজগুলো সম্পন্ন না হওয়ার কারণ খুঁজতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অগ্নিকান্ড থেকে জনগণের জানমাল রক্ষা করতে আসলেই আন্তরিক কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। সরকার আন্তরিক হলে রাসায়নিকের গুদাম গত প্রায় এক যুগেও সরানো যাবে না- সেটা হতে পারে না। পুরান ঢাকায় হাজারেরও বেশি ব্যবসায়ী রাসায়নিকের ব্যবসা করেন বলে জানা যায়। অভিযোগ রয়েছে, রাসায়নিক ব্যবসায়ীদের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে অনেক পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।

পুরান ঢাকার গুদামগুলোতে আছে কমবেশি পাঁচ হাজার রকমের রাসায়নিক। যার মধ্যে অতি দাহ্য রাসায়নিকও রয়েছে। সেখানে প্লাস্টিকের কারখানা ও গুদামের সংখ্যাও কম নয়। এ কারণে এলাকাটি বরাবরাই অগ্নিকান্ডের ঝুঁকিতে থাকে। যতদিন না রাসায়নিকের গুদামগুলো সেখান থেকে অন্যত্র পুরোপুরি সরানো হবে ততদিন এই ঝুঁকি কমবে না। সরকারকে অবশ্যই এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সাময়িক অভিযান চালিয়ে কিছুদিনের জন্য অবৈধ গুদাম বন্ধ করে সমাধান মিলবে না।

back to top