alt

সম্পাদকীয়

টিকা-বিভ্রান্তির অবসান ঘটান

: সোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১

করোনাভাইরাসের গণটিকাদান কর্মসূচি নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সরকার ২৬ এপ্রিল সোমবার থেকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। টিকার প্রথম ডোজ পাওয়া ১৩ লাখ মানুষ পরবর্তী ডোজ পাবে কিনা সেটা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। কারণ টিকার মজুত দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। এখন দেশে টিকার যে মজুত আছে তা বড়জোর ১৫ দিনের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। জরুরি সংকট মোকাবিলায় অন্তত ৫ থেকে ১০ লাখ টিকার প্রয়োজন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে এমনটাই জানা যাচ্ছে।

আবিষ্কারের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশে করোনার টিকা পেতে শুরু করেছিল। বিশ্বের অনেক দেশই এখনো টিকার মুখ দেখেনি। বাংলাদেশে টিকার মূল এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র উৎস ভারত। দেশটির উপহার দেয়া ৩৩ লাখ ডোজ ও সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা ৭০ লাখ টিকা দিয়ে শুরু হয় কর্মসূচি। যদিও চীন এ বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছিল। গত বছরের সেপ্টেম্বরেই দেশটি তাদের উদ্ভাবিত দুটি টিকা বাংলাদেশে ট্রায়ালের আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। ৫ লাখ ডোজ টিকা উপহারও দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এ নিয়ে দেশের নীতি-নির্ধারকরা দোলাচালে ভুগেছেন।

সরকার যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে টিকাদান কর্মসূচি নিয়েছে কিনা সেটা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন রয়েছে। হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের জন্য কী পরিমাণ টিকা লাগতে পারে সেটা সরকারের না জানবার কথা নয়। চাহিদা আর যোগানের হিসাব সংশ্লিষ্টরা কখনো মেলাতে পেরেছেন বলে মনে হয় না। ১৭ কোটি মানুষের ৮০ ভাগকে টিকার আওতায় আনার জন্য কেবল একটি উৎসের ওপর নির্ভর করে বসে থাকা সমীচীন হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী ভারত থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা যখন আনা যাচ্ছিল না তখনই সরকারের টনক নড়া উচিত ছিল। তাহলে হয়তো গণটিকাদান কর্মসূচি অনিশ্চয়তায় পড়ত না। করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে একসময় বিশ্ব রাজনীতি হবে, জাতীয়তাবাদের সংকট দেখা দেবে- এমন আশঙ্কার কথা শুরু থেকেই অনেকে বলে আসছিলেন।

সরকার এখন অবশ্য টিকা আমদানি ও সংগ্রহের জন্য বিকল্প উৎস খুঁজছে। রাশিয়া, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা পাওয়ার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের কথাও শোনা যাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় টিকার জরুরি মজুত গড়তে চীনের উদ্যোগে যে মঞ্চ গঠিত হয়েছে সেটাতে যোগ দিতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ। চীনা দূতাবাসকে চিঠি দিয়ে করোনাভাইরাসের টিকার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তবে নতুন উৎস থেকে টিকা পাওয়া নিয়েও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সরকারের উচ্চমহল থেকে একেকজন একেক বক্তব্য দিচ্ছেন। কেউ বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের চুক্তি হয়েছে। কেউ বলছেন, কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি এখনো হয়নি। রাশিয়া টিকার ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা ও অন্যান্য বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত দিলে তা গোপন রাখা হবে- এমন একটি ‘গোপনীয়তার’ চুক্তিতে সই করা হয়েছে কেবল। টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েও নানান রকম কথা শোনা যাচ্ছে। সরকারে কোন কোন সূত্র বলছে, ১৩ লাখ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ সময়মতো নাও পেতে পারে। কিন্তু একজন মন্ত্রী বলেছেন, প্রথম ডোজের মতো দ্বিতীয় ডোজের টিকাও যথাসময়ে দেয়া হবে।

নানান বিভ্রান্তিমূলক কথায় টিকা ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। করোনাভাইরাসের টিকা পাওয়া নিয়ে মানুষ অনিশ্চয়তায় ভুগছে। টিকা নিয়ে সরকার কী উদ্যোগ নিচ্ছে সেটা মানুষ স্পষ্ট করে জানতে চায়। যারা প্রথম ডোজ নিয়েছেন তারা সময়মতো দ্বিতীয় ডোজ পাবেন কিনা। যারা এখনো টিকার আওতায় আসেননি তারা কবে তা পাবেন- এসব বিষয়ে দায়িত্বশীল কোন একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্পষ্ট বক্তব্য রাখতে হবে। এ নিয়ে একেকজন একেকরকম বক্তব্য দিলে বিভ্রান্তি আরো বাড়বে।

উপজেলা স্বাস্থ্যসেবায় সংকট

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

tab

সম্পাদকীয়

টিকা-বিভ্রান্তির অবসান ঘটান

সোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১

করোনাভাইরাসের গণটিকাদান কর্মসূচি নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সরকার ২৬ এপ্রিল সোমবার থেকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। টিকার প্রথম ডোজ পাওয়া ১৩ লাখ মানুষ পরবর্তী ডোজ পাবে কিনা সেটা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। কারণ টিকার মজুত দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। এখন দেশে টিকার যে মজুত আছে তা বড়জোর ১৫ দিনের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। জরুরি সংকট মোকাবিলায় অন্তত ৫ থেকে ১০ লাখ টিকার প্রয়োজন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে এমনটাই জানা যাচ্ছে।

আবিষ্কারের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশে করোনার টিকা পেতে শুরু করেছিল। বিশ্বের অনেক দেশই এখনো টিকার মুখ দেখেনি। বাংলাদেশে টিকার মূল এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র উৎস ভারত। দেশটির উপহার দেয়া ৩৩ লাখ ডোজ ও সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা ৭০ লাখ টিকা দিয়ে শুরু হয় কর্মসূচি। যদিও চীন এ বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছিল। গত বছরের সেপ্টেম্বরেই দেশটি তাদের উদ্ভাবিত দুটি টিকা বাংলাদেশে ট্রায়ালের আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। ৫ লাখ ডোজ টিকা উপহারও দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এ নিয়ে দেশের নীতি-নির্ধারকরা দোলাচালে ভুগেছেন।

সরকার যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে টিকাদান কর্মসূচি নিয়েছে কিনা সেটা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন রয়েছে। হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের জন্য কী পরিমাণ টিকা লাগতে পারে সেটা সরকারের না জানবার কথা নয়। চাহিদা আর যোগানের হিসাব সংশ্লিষ্টরা কখনো মেলাতে পেরেছেন বলে মনে হয় না। ১৭ কোটি মানুষের ৮০ ভাগকে টিকার আওতায় আনার জন্য কেবল একটি উৎসের ওপর নির্ভর করে বসে থাকা সমীচীন হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী ভারত থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা যখন আনা যাচ্ছিল না তখনই সরকারের টনক নড়া উচিত ছিল। তাহলে হয়তো গণটিকাদান কর্মসূচি অনিশ্চয়তায় পড়ত না। করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে একসময় বিশ্ব রাজনীতি হবে, জাতীয়তাবাদের সংকট দেখা দেবে- এমন আশঙ্কার কথা শুরু থেকেই অনেকে বলে আসছিলেন।

সরকার এখন অবশ্য টিকা আমদানি ও সংগ্রহের জন্য বিকল্প উৎস খুঁজছে। রাশিয়া, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা পাওয়ার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের কথাও শোনা যাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় টিকার জরুরি মজুত গড়তে চীনের উদ্যোগে যে মঞ্চ গঠিত হয়েছে সেটাতে যোগ দিতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ। চীনা দূতাবাসকে চিঠি দিয়ে করোনাভাইরাসের টিকার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তবে নতুন উৎস থেকে টিকা পাওয়া নিয়েও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সরকারের উচ্চমহল থেকে একেকজন একেক বক্তব্য দিচ্ছেন। কেউ বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের চুক্তি হয়েছে। কেউ বলছেন, কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি এখনো হয়নি। রাশিয়া টিকার ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা ও অন্যান্য বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত দিলে তা গোপন রাখা হবে- এমন একটি ‘গোপনীয়তার’ চুক্তিতে সই করা হয়েছে কেবল। টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েও নানান রকম কথা শোনা যাচ্ছে। সরকারে কোন কোন সূত্র বলছে, ১৩ লাখ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ সময়মতো নাও পেতে পারে। কিন্তু একজন মন্ত্রী বলেছেন, প্রথম ডোজের মতো দ্বিতীয় ডোজের টিকাও যথাসময়ে দেয়া হবে।

নানান বিভ্রান্তিমূলক কথায় টিকা ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। করোনাভাইরাসের টিকা পাওয়া নিয়ে মানুষ অনিশ্চয়তায় ভুগছে। টিকা নিয়ে সরকার কী উদ্যোগ নিচ্ছে সেটা মানুষ স্পষ্ট করে জানতে চায়। যারা প্রথম ডোজ নিয়েছেন তারা সময়মতো দ্বিতীয় ডোজ পাবেন কিনা। যারা এখনো টিকার আওতায় আসেননি তারা কবে তা পাবেন- এসব বিষয়ে দায়িত্বশীল কোন একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্পষ্ট বক্তব্য রাখতে হবে। এ নিয়ে একেকজন একেকরকম বক্তব্য দিলে বিভ্রান্তি আরো বাড়বে।

back to top