করোনার ভারতীয় স্ট্রেইন
প্রতিবেশী ভারতে গত কয়েকদিন ধরে করোনার সংক্রমণ ও এতে মৃত্যুর হারে নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। দেশটিতে গত রোববার করোনায় মারা গেছে ২ হাজার ৮০৬ জন এবং ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৫৩১ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। সেখানে করোনাভাইরাসের নতুন দুটি স্ট্রেইন বি ১.৬১৭ ও বি ১.৬১৮ তৈরি হওয়ায় বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ আকাশ ও স্থলপথে ভারতের সঙ্গে পণ্যাবাহী যানবাহন ছাড়া সব ধরনের চলাচল বন্ধ রেখেছে। জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশ ভারতের সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করেছে। করোনার ভারতীয় ধরন নিয়ে ইউরোপে সতর্কতা জারি হয়েছে।
ভারতীয় স্ট্রেইন কতটা বিপজ্জনক সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কোন দেশের বিজ্ঞানীরাই। ভারতে তৈরি হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইনকে ‘অনুসন্ধানের আওতাধীন স্ট্রেইন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাজ্যের জনস্বাস্থ্য বিভাগ। যুক্তরাষ্ট্রের লুজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে করোনাভাইরাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি পরিবর্তন ঘটেছে। এজন্য গবেষকরা একে ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ বলছেন । এর মধ্যে একটি পরিবর্তনের ফলে করোনাভাইরাসের প্রকৃতি দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে তৈরি স্ট্রেইনের সঙ্গে মিলে যায়। শরীরে করোনার বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিকে এই স্ট্রেইন ফাঁকি দিতে সক্ষম হলেও হতে পারে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর), বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিএইচআরএফ) বিজ্ঞানীরা দেশে এখনো করোনার ভারতীয় স্ট্রেইনের দেখা পাননি বলে জানা যাচ্ছে।
এখন পর্যন্ত করোনার ভারতীয় স্ট্রেইনের উপস্থিতি না মিললেও বাংলাদেশকে শঙ্কামুক্ত মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, করোনার একেকটি স্ট্রেইন কখন, কীভাবে বিস্তৃত হবে সেটা বলা কঠিন। তাই সতর্ক না থাকলে ঘটতে পারে সমূহ বিপদ। এক দেশের স্ট্রেইন আরেক দেশে বিস্তৃত হওয়ার নজির বিশ্বজুড়েই রয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দুই সপ্তাহর জন্য বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে সীমান্ত বন্ধ হলেও পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল করবে, কিছু মানুষের যাওয়া-আসা হবেই। স্থলবন্দরে করোনা পরীক্ষা, কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চত করা অত্যন্ত জরুরি। তবে এক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। ভারত থেকে আসা ২৯ জন বাংলাদেশি কভিড-১৯ পজিটিভ হলে তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে রাখা হয়। ১০ জন সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে অবশ্য তাদের ধরে সেখানে ফিরিয়ে নেয়া হয়। এই ঘটনায় স্থলবন্দর দিয়ে আসা মানুষের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। স্থলবন্দরে দ্রুত কঠোর কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
সীমান্তে আসা ভারতীয় পণ্যবাহী পরিবহনের চালক-শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে স্থানীয়দের সঙ্গে মেলামেশা করছে বলে জানা গেছে। তারা যেন মাস্ক পরে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে সেটা যে কোন মূল্যে নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে যে কোন শৈথিল্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। সীমান্তে আগত মানুষের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে। পাশাপাশি পণ্যের আমদানি-রপ্তানি যেন ব্যাহত না হয় সেটাও নিশ্চিত করা জরুরি।
করোনার ভারতীয় স্ট্রেইন
বুধবার, ২৮ এপ্রিল ২০২১
প্রতিবেশী ভারতে গত কয়েকদিন ধরে করোনার সংক্রমণ ও এতে মৃত্যুর হারে নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। দেশটিতে গত রোববার করোনায় মারা গেছে ২ হাজার ৮০৬ জন এবং ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৫৩১ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। সেখানে করোনাভাইরাসের নতুন দুটি স্ট্রেইন বি ১.৬১৭ ও বি ১.৬১৮ তৈরি হওয়ায় বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ আকাশ ও স্থলপথে ভারতের সঙ্গে পণ্যাবাহী যানবাহন ছাড়া সব ধরনের চলাচল বন্ধ রেখেছে। জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশ ভারতের সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করেছে। করোনার ভারতীয় ধরন নিয়ে ইউরোপে সতর্কতা জারি হয়েছে।
ভারতীয় স্ট্রেইন কতটা বিপজ্জনক সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কোন দেশের বিজ্ঞানীরাই। ভারতে তৈরি হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইনকে ‘অনুসন্ধানের আওতাধীন স্ট্রেইন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাজ্যের জনস্বাস্থ্য বিভাগ। যুক্তরাষ্ট্রের লুজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে করোনাভাইরাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি পরিবর্তন ঘটেছে। এজন্য গবেষকরা একে ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ বলছেন । এর মধ্যে একটি পরিবর্তনের ফলে করোনাভাইরাসের প্রকৃতি দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে তৈরি স্ট্রেইনের সঙ্গে মিলে যায়। শরীরে করোনার বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিকে এই স্ট্রেইন ফাঁকি দিতে সক্ষম হলেও হতে পারে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর), বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিএইচআরএফ) বিজ্ঞানীরা দেশে এখনো করোনার ভারতীয় স্ট্রেইনের দেখা পাননি বলে জানা যাচ্ছে।
এখন পর্যন্ত করোনার ভারতীয় স্ট্রেইনের উপস্থিতি না মিললেও বাংলাদেশকে শঙ্কামুক্ত মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, করোনার একেকটি স্ট্রেইন কখন, কীভাবে বিস্তৃত হবে সেটা বলা কঠিন। তাই সতর্ক না থাকলে ঘটতে পারে সমূহ বিপদ। এক দেশের স্ট্রেইন আরেক দেশে বিস্তৃত হওয়ার নজির বিশ্বজুড়েই রয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দুই সপ্তাহর জন্য বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে সীমান্ত বন্ধ হলেও পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল করবে, কিছু মানুষের যাওয়া-আসা হবেই। স্থলবন্দরে করোনা পরীক্ষা, কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চত করা অত্যন্ত জরুরি। তবে এক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। ভারত থেকে আসা ২৯ জন বাংলাদেশি কভিড-১৯ পজিটিভ হলে তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে রাখা হয়। ১০ জন সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে অবশ্য তাদের ধরে সেখানে ফিরিয়ে নেয়া হয়। এই ঘটনায় স্থলবন্দর দিয়ে আসা মানুষের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। স্থলবন্দরে দ্রুত কঠোর কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
সীমান্তে আসা ভারতীয় পণ্যবাহী পরিবহনের চালক-শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে স্থানীয়দের সঙ্গে মেলামেশা করছে বলে জানা গেছে। তারা যেন মাস্ক পরে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে সেটা যে কোন মূল্যে নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে যে কোন শৈথিল্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। সীমান্তে আগত মানুষের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে। পাশাপাশি পণ্যের আমদানি-রপ্তানি যেন ব্যাহত না হয় সেটাও নিশ্চিত করা জরুরি।