alt

সম্পাদকীয়

টিকা দেয়ার পরিকল্পনায় গলদ থাকলে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ অর্জন করা সম্ভব হবে না

: শনিবার, ০৫ জুন ২০২১

নোভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ গড়ে তোলার দুটি পথ আছে। একটি হচ্ছে, দেশের সিংহভাগ মানুষের এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়া ও সুস্থ হয়ে ওঠা। অন্যটি হচ্ছে, ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষকে দুই ডোজ করে টিকা দেয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিংহভাগ জনগোষ্ঠীকে এই টিকা দিতে হবে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে। কারণ, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা অ্যান্টিবডি মানুষের শরীরে সক্রিয় থাকে কমবেশি এক বছর।

বাজেটে বলা হয়েছে, ৮০ ভাগ লোককে টিকার আওতায় আনা হবে। হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রাটা ঠিকই আছে। প্রশ্ন হচ্ছে, বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে এই লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে কিনা। দেশের জনসংখ্যা কমবেশি ১৭ কোটি। মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ হিসাবে সাড়ে ১৩ কোটিরও বেশি মানুষকে ২ ডোজ করে মোট ২৭ কোটিরও বেশি ডোজ টিকা দিতে হবে। এখন পর্যন্ত ১ কোটি ডোজের চেয়ে কিছু বেশি টিকা দেয়া হয়েছে। দেশে টিকা দেয়া শুরু হয়েছে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে। বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে সাড়ে ১৩ কোটিরও বেশি মানুষের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি করতে হলে আগামী ফেব্রুয়ারি, বড়জোর আগামী বছরের আগস্টের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বাকি ২৬ কোটি ডোজ টিকার প্রয়োজন পড়বে। অর্থাৎ প্রতি মাসে টিকা লাগবে প্রায় ১ কোটি ৮৬ লাখ ডোজ।

কিন্তু বাজেটে বলা হয়েছে, প্রতি মাসে ২৫ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া হবে। এক মাসে নিশ্চয় এক ব্যক্তিকে দুই ডোজ টিকা দেয়া হবে না। বাজেটে টিকা দেয়ার যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তাতে সাড়ে ১৩ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনতে সময় লাগবে পৌনে নয় বছর। নয় বছর ধরে টিকা দেয়া হলে কোন জনগোষ্ঠীর মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন সম্ভব হবে কীভাবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের ক্ষেত্রে সময় বড় একটি নিয়ামক। মাসওয়ারি টিকা দেয়ার পরিকল্পনাতে ‘সময়’-এর মতো নিয়ামক যথাযথ গুরুত্ব পায়নি।

হার্ড ইমিউনিটির যে লক্ষ্য সরকার নির্ধারণ করেছে সেটা অর্জনের পথে পরিকল্পনায় দুর্বলতা রয়েছে বলে আমাদের মনে হয়েছে। কেবল মাসওয়ারি টিকা দেয়ার পরিকল্পনাতেই যে দুর্বলতা রয়েছে তা নয়। টিকার সংস্থান করা বড় একটি চ্যালেঞ্জ। কোথা থেকে কত টিকা আসবে সেটা অজানা। মনে রাখতে হবে, সেরাম থেকে টিকা আনার লক্ষ্য পূরণ হয়নি। সরকার বিকল্প উৎস খুঁজে বের করেছে ঠিকই তবে সেখান থেকে যে চাহিদার পুরোটা মেটানো সম্ভব হবে সেটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। কাজেই টিকা কেনা বা আমদানির ক্ষেত্রে বাস্তবায়নযোগ্য বিশদ পরিকল্পনা থাকতে হবে। দেশে টিকা উৎপাদন করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সেই ঘোষণার বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে।

জীবন আর জীবিকা দুটোর জন্যই এখন সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে টিকা। এর কোন বিকল্প নেই। যেভাবেই হোক হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। সরকার বলছে, যত টাকাই লাগুক দেশের সব নাগরিককে বিনামূল্যে টিকা দেয়া হবে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, টাকা কোন সমস্যা না। কিন্তু পরিকল্পনা যদি সঠিক না হয় তবে অঢেল টাকা দিয়েও লক্ষ্য অর্জন করা যাবে না।

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ নারী দল : অভিনন্দন

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

উপজেলা স্বাস্থ্যসেবায় সংকট

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

tab

সম্পাদকীয়

টিকা দেয়ার পরিকল্পনায় গলদ থাকলে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ অর্জন করা সম্ভব হবে না

শনিবার, ০৫ জুন ২০২১

নোভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ গড়ে তোলার দুটি পথ আছে। একটি হচ্ছে, দেশের সিংহভাগ মানুষের এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়া ও সুস্থ হয়ে ওঠা। অন্যটি হচ্ছে, ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষকে দুই ডোজ করে টিকা দেয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিংহভাগ জনগোষ্ঠীকে এই টিকা দিতে হবে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে। কারণ, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা অ্যান্টিবডি মানুষের শরীরে সক্রিয় থাকে কমবেশি এক বছর।

বাজেটে বলা হয়েছে, ৮০ ভাগ লোককে টিকার আওতায় আনা হবে। হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রাটা ঠিকই আছে। প্রশ্ন হচ্ছে, বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে এই লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে কিনা। দেশের জনসংখ্যা কমবেশি ১৭ কোটি। মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ হিসাবে সাড়ে ১৩ কোটিরও বেশি মানুষকে ২ ডোজ করে মোট ২৭ কোটিরও বেশি ডোজ টিকা দিতে হবে। এখন পর্যন্ত ১ কোটি ডোজের চেয়ে কিছু বেশি টিকা দেয়া হয়েছে। দেশে টিকা দেয়া শুরু হয়েছে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে। বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে সাড়ে ১৩ কোটিরও বেশি মানুষের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি করতে হলে আগামী ফেব্রুয়ারি, বড়জোর আগামী বছরের আগস্টের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বাকি ২৬ কোটি ডোজ টিকার প্রয়োজন পড়বে। অর্থাৎ প্রতি মাসে টিকা লাগবে প্রায় ১ কোটি ৮৬ লাখ ডোজ।

কিন্তু বাজেটে বলা হয়েছে, প্রতি মাসে ২৫ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া হবে। এক মাসে নিশ্চয় এক ব্যক্তিকে দুই ডোজ টিকা দেয়া হবে না। বাজেটে টিকা দেয়ার যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তাতে সাড়ে ১৩ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনতে সময় লাগবে পৌনে নয় বছর। নয় বছর ধরে টিকা দেয়া হলে কোন জনগোষ্ঠীর মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন সম্ভব হবে কীভাবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের ক্ষেত্রে সময় বড় একটি নিয়ামক। মাসওয়ারি টিকা দেয়ার পরিকল্পনাতে ‘সময়’-এর মতো নিয়ামক যথাযথ গুরুত্ব পায়নি।

হার্ড ইমিউনিটির যে লক্ষ্য সরকার নির্ধারণ করেছে সেটা অর্জনের পথে পরিকল্পনায় দুর্বলতা রয়েছে বলে আমাদের মনে হয়েছে। কেবল মাসওয়ারি টিকা দেয়ার পরিকল্পনাতেই যে দুর্বলতা রয়েছে তা নয়। টিকার সংস্থান করা বড় একটি চ্যালেঞ্জ। কোথা থেকে কত টিকা আসবে সেটা অজানা। মনে রাখতে হবে, সেরাম থেকে টিকা আনার লক্ষ্য পূরণ হয়নি। সরকার বিকল্প উৎস খুঁজে বের করেছে ঠিকই তবে সেখান থেকে যে চাহিদার পুরোটা মেটানো সম্ভব হবে সেটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। কাজেই টিকা কেনা বা আমদানির ক্ষেত্রে বাস্তবায়নযোগ্য বিশদ পরিকল্পনা থাকতে হবে। দেশে টিকা উৎপাদন করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সেই ঘোষণার বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে।

জীবন আর জীবিকা দুটোর জন্যই এখন সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে টিকা। এর কোন বিকল্প নেই। যেভাবেই হোক হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। সরকার বলছে, যত টাকাই লাগুক দেশের সব নাগরিককে বিনামূল্যে টিকা দেয়া হবে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, টাকা কোন সমস্যা না। কিন্তু পরিকল্পনা যদি সঠিক না হয় তবে অঢেল টাকা দিয়েও লক্ষ্য অর্জন করা যাবে না।

back to top